হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৩৮৭২

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - যুদ্ধাস্ত্রের প্রস্তুতিকরণ

৩৮৭২-[১২] ’উকবা ইবনু ’আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা একটি তীরের বিনিময়ে তিন (শ্রেণীর) লোককে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। ১- তীর প্রস্তুতকারী, যে সাওয়াবের নিয়্যাতে তা প্রস্তুত করে। ২- তীর নিক্ষেপকারী ও ৩- তীর দানকারী। সুতরাং তোমরা তীর নিক্ষেপ ও সওয়ারীর (যুদ্ধযানের) প্রশিক্ষণ গ্রহণ কর। তবে তীর নিক্ষেপের প্রশিক্ষণ আমার নিকট তোমাদের সওয়ারীতে আরোহণ অপেক্ষা অধিক পছন্দনীয়। তিনটি খেলা ছাড়া সকল প্রকারের খেলা যা লোকেরা খেলে থাকে তা অন্যায় ও বাতিল। ১- ধনুকের সাহায্যে তীর নিক্ষেপ করা। ২- ঘোড়ার প্রশিক্ষণ ও ৩- স্ত্রীর সঙ্গে আমোদণ্ডপ্রমোদ করা। এগুলো শারী’আতে বৈধ ও স্বীকৃত। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ)[1]

আর আবূ দাঊদ ও দারিমী অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি তীর নিক্ষেপের শিক্ষা গ্রহণ করার পর অবহেলা বা অনীহা প্রকাশ করে তা বর্জন করে, প্রকৃতপক্ষে সে আল্লাহর একটি নি’আমাত পরিহার করল। অথবা বলেছেন, সে আল্লাহর নি’আমাতের অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল।

عَن عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يُدْخِلُ بِالسَّهْمِ الْوَاحِدِ ثَلَاثَةَ نَفَرٍ الْجَنَّةَ: صَانِعَهُ يَحْتَسِبُ فِي صَنْعَتِهِ الْخَيْرَ وَالرَّامِيَ بِهِ وَمُنَبِّلَهُ فَارْمُوا وَارْكَبُوا وَأَنْ تَرْمُوا أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ تَرْكَبُوا كُلُّ شَيْءٍ يَلْهُو بِهِ الرَّجُلُ بَاطِلٌ إِلَّا رَمْيَهُ بِقَوْسِهِ وَتَأْدِيبَهُ فَرَسَهُ وَمُلَاعَبَتَهُ امْرَأَتَهُ فَإِنَّهُنَّ مِنَ الْحَقِّ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَزَادَ أَبُو دَاوُد والدارمي: «ومَنْ تركَ الرَّميَ بعدَ مَا عَلِمَهُ رَغْبَةً عَنْهُ فَإِنَّهُ نِعْمَةٌ تَرَكَهَا» . أَوْ قَالَ: «كفرها»

ব্যাখ্যা: (صَانِعَه يَحْتَسِبُ فِىْ صَنْعَتِهِ الْخَيْرَ) তা প্রস্তুতকারী যে তা প্রস্তুত করার মাধ্যমে কল্যাণের আশা করে, অর্থাৎ যে তীরের কারণে তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে যাবে তার মধ্যে এক শ্রেণীর লোক তারা যারা তীর তৈরি করে এবং এর দ্বারা কল্যাণের তথা সাওয়াবের আশা করে।

(الرَّامِىَ بِه) তা নিক্ষেপকারী, অর্থাৎ তীর নিক্ষেপকারী যিনি তার তীর নিক্ষেপের দ্বারা সাওয়াবের আশা করে তিনিও জান্নাতে যাবেন।

(وَمُنَبِّلَه) তাকে তীর প্রদানকারী অর্থাৎ যিনি তীর নিক্ষেপকারীর হাতে তীর তুলে দেন সাওয়াবের প্রত্যাশায় তিনিও জান্নাতে প্রবেশ করবেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ ৭ম খন্ড, পৃঃ ৩৯৫)

(ارْمُوْا وَارْكَبُوْا) তোমরা তীর নিক্ষেপ কর এবং (বাহনে) আরোহণ কর, শুধুমাত্র পায়ে হেঁটে তীর নিক্ষেপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং বাহনে আরোহণ করেও তীর নিক্ষেপ করবে। অর্থাৎ তোমরা যেমন তীর নিক্ষেপ করা শিখবে অনুরূপভাবে বাহনে আরোহণ করাও শিখবে যাতে বাহনে আরোহণ করে তীর নিক্ষেপ করতে পার।

ত্বীবী (রহ) বলেনঃ وَارْكَبُوْا দ্বারা উদ্দেশ্য বাহনে আরোহণ করে বর্শা নিক্ষেপ করা। অতএব হাদীসের পরবর্তী অংশ। (وَأَنْ تَرْمُوْا أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ أَنْ تَرْكَبُوْا) বর্শা নিক্ষেপ করার চাইতে তীর নিক্ষেপ করা আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়। তবে হাদীসের প্রকাশমান অর্থ হলো তীর নিক্ষেপের প্রশিক্ষণ, বাহনে আরোহণের প্রশিক্ষণের চাইতে উত্তম। কেননা বাহনে আরোহণের প্রশিক্ষণের মধ্যে অহংকারিতা রয়েছে বিপরীতে শুধুমাত্র তীর নিক্ষেপের মধ্যে এ অহংকার নেই অথচ এর উপকারিতা ব্যাপক।

(মিরকাতুল মাফাতীহ ৭ম খন্ড, পৃঃ ৩৯৬; তুহফাতুল আহ্ওযাযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৬৩৭)

(كُلُّ شَيْءٍ يَلْهُوْ بِهِ الرَّجُلُ بَاطِلٌ إِلَّا) হাদীসে উল্লেখিত তিন প্রকার খেল-তামাশা বৈধ। তাছাড়া যত প্রকার খেলা আছে তা সবই বাতিল। অর্থাৎ তাতে কোনো সাওয়াব নেই। পক্ষান্তরে তীর নিক্ষেপ করা, যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করার উদ্দেশে ঘোড়দৌড় শিক্ষা এবং স্ত্রীর সাথে খেল-তামাশা করার মধ্যে পূর্ণ সাওয়াব বিদ্যমান।

(مَنْ تَرَكَ الرَّمْىَ بَعْدَ مَا عَلِمَه رَغْبَةً عَنْهُ) যে ব্যক্তি তীর চালনা শিখার পর তা হতে বিমুখ হয়ে তা পরিত্যাগ করল, অর্থাৎ এ বিদ্যার প্রতি অমনোযোগী হয়ে তা ছেড়ে দিল।

(فَإِنَّه نِعْمَةٌ تَرَكَهَا) সে একটি নি‘আমাত ছেড়ে দিল অথবা সে এ নি‘আমাতের প্রতি অকৃতজ্ঞ হলো। আল্লাহর দেয়া নি‘আমাতকে অবহেলা করল। (মিরকাতুল মাফাতীহ ৭ম খন্ড, পৃঃ ৩৯৬)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ উকবাহ ইবনু আমির (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ