৫০৭৩

পরিচ্ছেদঃ ১৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - নম্রতা, লজ্জাশীলতা ও উত্তম স্বভাব

৫০৭৩-[৬] নাও্ওয়াস ইবনু সাম্’আন (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে পুণ্য ও পাপ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ পুণ্য হলো উত্তম স্বভাব, আর পাপ হলো যা তোমার অন্তরে যাতনা সৃষ্টি করে এবং তুমি ঐ কাজ জনসমাজে প্রকাশ হওয়াকে খারাপ মনে করো। (মুসলিম)[1]

بَابُ الرِّفْقِ وَالْحَيَاءِ وَحُسْنِ الْخُلُقِ

وَعَن النَّواس بن سمْعَان قَالَ: سَأَلَتْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْبِرِّ وَالْإِثْمِ فَقَالَ: «الْبِرُّ حُسْنُ الْخُلُقِ وَالْإِثْمُ مَا حَاكَ فِي صَدْرِكَ وَكَرِهْتَ أَن يطلع عَلَيْهِ النَّاس» . رَوَاهُ مُسلم

وعن النواس بن سمعان قال سالت رسول الله صلى الله عليه وسلم عن البر والاثم فقال البر حسن الخلق والاثم ما حاك في صدرك وكرهت ان يطلع عليه الناس رواه مسلم

ব্যাখ্যাঃ (الْبِرُّ حُسْنُ الْخُلُقِ) এখানে الْبِرُّ শব্দের বিভিন্ন তাফসীর করা হয়েছে। এক স্থানে তাফসীর করা হয়েছে যে, যেখানে আত্মা ও অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। অন্যস্থানে ঈমানের স্থানে তাফসীর করা হয়েছে। অন্যস্থানে যেটা আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয় আর এই দু’টিই হলো (حُسْنُ الْخُلُقِ) বা উত্তম চরিত্র। উত্তম চরিত্রের আরেকটি ব্যাখ্যা আছে তা হলো কষ্টদায়ক বস্তু দূর করা, রাগ কমিয়ে ফেলা, হাসি-খুশি থাকা, ভালো কথা বলা, আর এ সবগুলো চরিত্রের মধ্যে শামিল।

ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ এখানে الْبِرُّ হলো সদাচরণ, দান করা, আনুগত্য করা যার সমষ্টি হয় (حُسْنُ الْخُلُقِ) বা উত্তম চরিত্র। কোন কোন মুহাক্কিক ‘আলিম বলেছেন, الْبِرُّ বলা হয়, এমন সমষ্টিগত নামকে যা সকল প্রকার আনুগত্য ও সকল প্রকার নৈকট্যমূলক কর্মকাণ্ডকে শামিল করে নেয়। আর এখান থেকেই বলা হয় بِرُّ الْوَالِدَيْنِ বা পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণ করা। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)

(حَاكَ فِي صَدْرِكَ) অর্থাৎ বুকে নাড়া দেয় ও সন্দিহান হয়। আর তার বক্ষ তাকে কাজটি করার অনুমোদন দেয় না, বরং তার অন্তরে সন্দেহের সৃষ্টি হয়, সে মনে মনে ভয় পায় যে, এ কাজটি করলে হয়ত তার পাপ হবে। (শারহুন নাবাবী ১৬শ খন্ড, হাঃ ১৪/২৫৫৩)

(وَكَرِهْتَ أَن يطلع عَلَيْهِ النَّاس) অর্থাৎ তারা নিজেদের চোখ দিয়ে দেখুক বা অন্য কোন কিছু দিয়ে দেখুক (হয়ত বা সিসি ক্যামেরা)। এখানে النَّاس এর ‘আলিফ’ ‘লাম’ جنس (জিনস্) এর জন্য এসেছে। আর জিনস্ বা জাতি পরিপূর্ণতার দিকেই ফিরে। এর কারণ, মানুষের স্বভাব হলো তার মন চায় মানুষ তার ভালোটা লক্ষ্য করুক। আর যখন সে তার কোন কোন কাজ অন্য কেউ দেখুক এটা অপছন্দ করে তখন বুঝতে হবে এ কাজটি তাকে আল্লাহর নিকটবর্তী করাবে না। অথবা এ কাজটি করার জন্য শারী‘আত তাকে অনুমোদন দেয়নি। বুঝতে হবে যে, এ কাজে তার কোন কল্যাণ নেই। এটা ভালো কাজ নয়। সুতরাং এ কাজটি পাপ ও অকল্যাণকর। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৩৮৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৫: শিষ্টাচার (كتاب الآداب)