৯৯ আস-সবুর ٱلصَّبُورُ
অর্থঃ অত্যধিক ধৈর্যধারণকারী
✸ As-Sabur
- The One who does not quickly punish the sinners.
- The most Patient, the Enduring.

ٱلصَّبُورُ  | আস-সাবূর (অত্যধিক ধৈর্যধারণকারী)[1] | Aṣ-Ṣabūr | The Patient

আস-সাবূর (অত্যধিক ধৈর্যধারণকারী) নামটি সহীহ হাদীসে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী থেকে নেওয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«لَا أَحَدَ أَصْبَرُ عَلَى أَذًى يَسْمَعُهُ مِنَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ، إِنَّهُ يُشْرَكُ بِهِ، وَيُجْعَلُ لَهُ الْوَلَدُ، ثُمَّ هُوَ يُعَافِيهِمْ وَيَرْزُقُهُمْ».

“কষ্টদায়ক কোন কথা শ্রবণ করার পর আল্লাহ তা‘আলা থেকে অধিক ধৈর্যশীল আর কেউ নেই। মানুষ আল্লাহর সঙ্গে শরীক করে এবং তাঁর জন্য সন্তান সাব্যস্ত করে; এরপরও তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দেন এবং তাদেরকে রিযিক দেন।”[2]

অন্য সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

«كَذَّبَنِي ابْنُ آدَمَ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذَلِكَ، وَشَتَمَنِي وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذَلِكَ، أَمَّا تَكْذِيبُهُ إِيَّايَ أَنْ يَقُولَ: إِنِّي لَنْ أُعِيدَهُ كَمَا بَدَأْتُهُ، وَأَمَّا شَتْمُهُ إِيَّايَ أَنْ يَقُولَ: اتَّخَذَ اللَّهُ وَلَدًا، وَأَنَا الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ أَلِدْ وَلَمْ أُولَدْ، وَلَمْ يَكُنْ لِي كُفُؤًا أَحَدٌ».

“আদম সন্তান আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছেন; অথচ এরূপ করা তার জন্য উচিত হয় নি। সে আমাকে গালি দিয়েছে; অথচ এমন করা তার পক্ষে সমীচীন হয় নি। আমার প্রতি তার মিথ্যা আরোপ করার মানে হচ্ছে এই যে, সে বলে, আমি পুনর্জীবিত করতে সক্ষম নই যেমনিভাবে আমি তাকে প্রথমে সৃষ্টি করেছি। আমাকে তার গালি দেয়া হচ্ছে এই যে, সে বলে, আল্লাহ তা‘আলা সন্তান গ্রহণ করেছেন; অথচ আমি কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী। আমি এমন এক সত্তা যে, আমি কাউকে জন্ম দেইনি, আমাকেও জন্ম দেয়নি এবং আমার সমকক্ষও কেউ নেই।”[3] আল্লাহ তা‘আলা বাধ্য ও অবাধ্য সকলকেই রিযিক দান করেন। আল্লাহর অবাধ্যরা যদিও তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধে রত, তাঁকে মিথ্যারোপ করে, তাঁর রাসূলগণকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, তাঁর দীনকে ফুৎকারে নিভিয়ে দিতে চায়; অথচ তিনি তাদের এসব অবাধ্য কথা ও কাজের উপর ধৈর্যধারণ করেন, তাদের এসব অবাধ্য কাজ সহ্য করেন। তারা অকল্যাণ কাজ একটার পরে একটা করতে থাকে; অথচ তিনি তাদেরকে তাঁর নি‘আমত ধারাবাহিক ভাবে দিতে থাকেন। তাঁর ধৈর্য পরিপূর্ণ ধৈর্য; কেননা তাঁর ধৈর্য তাঁর পূর্ণ কুদরতের ও তিনি সৃষ্টিকুল থেকে সম্পূর্ণ অমুখাপেক্ষী এবং তাঁর রহমত ও ইহসান পরিপূর্ণ। মহান দয়াময় রব যার ধৈর্যের অনুরূপ কারো ধৈর্য নেই, যিনি ধৈর্যশীলদেরকে ভালোবাসেন এবং তাদেরকে প্রত্যেক কাজে সাহায্য করেন।[4]


[1] ধৈর্যশীলতা আল্লাহর গুণ। আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীস এ নামের প্রমাণ। সামনে এ হাদীসের বিস্তারিত ব্যাখ্যা আসছে।

[2] সহীহ মুসলিম, ৪/২১৬০, কিতাবু সিফাতিল মুনাফিকীন, বাব, কষ্টদায়ক কোন কথা শ্রবণ করার পর আল্লাহ তা‘আলা থেকে অধিক ধৈর্যশীল আর কেউ নেই। হাদীস নং ২৮০৪, আবু মূসা আশ‘আরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীস।

[3] সহীহ বুখারী, ৪/৭৩, হাদীস নং ৪৯৭৫, কিতাবু বাদইল খালক, বাব, আল্লাহ তা‘আলার বাণী,

﴿ وَهُوَ ٱلَّذِي يَبۡدَؤُاْ ٱلۡخَلۡقَ ثُمَّ يُعِيدُهُۥ وَهُوَ أَهۡوَنُ عَلَيۡهِ٢٧ ﴾ [الروم: ٢٧]

“আর তিনিই সৃষ্টির সূচনা করেন তারপর তিনিই এর পুনরাবৃত্তি করবেন। আর এটা তো তাঁর জন্য অধিকতর সহজ।” [সূরা আর-রূম, আয়াত: ২৭]

 

[4] আল-হাক্কুল ওয়াদিহ আল-মুবীন, পৃ. ৫৭-৫৮; তাওদীহুল কাফিয়া আশ-শাফিয়া, পৃ. ১২১; ফাতাওয়া আস-সা‘দিয়্যাহ, পৃ. ২৯।

নামের তালিকা