ধর্মীয় জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও তা কাউকে না বলা আরেকটি কবীরা গুনাহ্। তাই তো এমন ব্যক্তিকে আল্লাহ্ তা‘আলা লা’নত করেন এবং সকল লা’নতকারীরাও তাকে লা’নত করে।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:
«إِنَّ الَّذِيْنَ يَكْتُمُوْنَ مَآ أَنْزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالْـهُدَى مِنْ بَعْدِ مَا بَيَّنَّاهُ لِلنَّاسِ فِيْ الْكِتَابِ، أُوْلَآئِكَ يَلْعَنُهُمُ اللهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللَّاعِنُوْنَ، إِلاَّ الَّذِيْنَ تَابُوْا وَ أَصْلَحُوْا وَ بَيَّنُوْا فَأُوْلَآئِكَ أَتُوْبُ عَلَيْهِمْ، وَأَنَا التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ»
‘‘আমি যে সকল উজ্জ্বল নিদর্শন ও হিদায়াত নাযিল করেছি তা মানুষকে কুর‘আন মাজীদে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়ার পরও যারা তা লুকিয়ে রাখে তাদেরকে আল্লাহ্ তা‘আলা লা’নত করেন এবং অন্য সকল লা’নতকারীরাও তাদেরকে লা’নত করে। তবে যারা তাওবা করে নিজ কর্ম সংশোধন করে নেয় এবং লুক্কায়িত সত্য প্রকাশ করে আমি তাদের তাওবা গ্রহণ করবো। বস্ত্তত: আমিই তো তাওবা গ্রহণকারী করুণাময়। (বাক্বারাহ্ : ১৫৯-১৬০)
আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেন:
«إِنَّ الَّذِيْنَ يَكْتُمُوْنَ مَآ أَنْزَلَ اللهُ مِنَ الْكِتَابِ وَيَشْتَرُوْنَ بِهِ ثَمَنًا قَلِيْلًا أُولَآئِكَ مَا يَأْكُلُوْنَ فِيْ بُطُوْنِهِمْ إِلاَّ النَّارَ، وَلَا يُكَلِّمُهُمُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَلَا يُزَكِّيْهِمْ، وَلَـهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ، أُوْلَآئِكَ الَّذِيْنَ اشْتَرَوُا الضَّلَالَةَ بِالْـهُدَى وَالْعَذَابَ بِالْـمَغْفِرَةِ، فَمَآ أَصْبَرَهُمْ عَلَى النَّارِ»
‘‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ্ তা‘আলা যে কুর‘আন মাজীদ নাযিল করেছেন তা লুকিয়ে রেখেছে এবং এর পরিবর্তে (দুনিয়ার) সামান্য সম্পদ খরিদ করে নিয়েছে তারা তো নিজ পেটে শুধু আগুন ঢুকাচেছ, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের সাথে কোন কথাই বলবেন না এবং তাদেরকে গুনাহ্ থেকেও পবিত্র করবেন না। উপরন্তু তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। কারণ, এরাই তো হিদায়াতের পরিবর্তে পথভ্রষ্টতা এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি খরিদ করে নিয়েছে। সুতরাং আশ্চর্য! তারা জাহান্নামের ব্যাপারে কতই না ধৈর্যশীল!’’ (বাক্বারাহ্ : ১৭৪-১৭৫)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:
وَاللهِ لَوْلَا آيَتَانِ فِيْ كِتَابِ اللهِ تَعَالَى مَا حَدَّثْتُ عَنْهُ يَعْنَى عَنِ النَّبِيِّ شَيْئًا أَبَدًا، لَوْلَا قَوْلُ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ : «إِنَّ الَّذِيْنَ يَكْتُمُوْنَ مَآ أَنْزَلَ اللهُ مِنَ الْكِتَابِ.. » إِلَى آخِرِ الْآيَتَيْنِ.
‘‘আল্লাহ্’র কসম! যদি দু’টি আয়াত কুর‘আন মাজীদের মধ্যে না থাকতো তা হলে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কখনো কোন কিছু (হাদীস) বর্ণনা করতাম না। আয়াত দু’টি উপরে উল্লিখিত হয়েছে’’। (ইব্নু মাজাহ্ ২৬২)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَنْ سُئِلَ عَنْ عِلْمٍ، وَفِيْ رِوَايَةِ ابْنِ مَاجَةَ : يَعْلَمُهُ فَكَتَمَهُ ؛ أُلْـجِمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِلِجَامٍ مِنْ نَارٍ.
‘‘যাকে এমন কিছু জিজ্ঞাসা করা হলো যা সে জানে অথচ সে তা লুকিয়ে রেখেছে তাকে কিয়ামতের দিন আগুনের লাগাম পরানো হবে’’। (আবূ দাউদ ৩৬৫৮; তিরমিযী ২৬৪৯; ইব্নু মাজাহ্ ২৬৪, ২৬৬)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে আরো বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:
مَا مِنْ رَجُلٍ يَحْفَظُ عِلْمًا فَيَكْتُمُهُ ؛ إِلاَّ أُتِيَ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مُلْجَمًا بِلِجَامٍ مِنَ النَّارِ.
‘‘কেউ কোন কিছু সত্যিকারভাবে জেনেও তা লুকিয়ে রাখলে তাকে কিয়ামতের দিন আগুনের লাগাম পরিয়ে উঠানো হবে’’। (ইব্নু মাজাহ্ ২৬১)