লগইন করুন
উসূলের (মূলনীতি বিষয়ক) কিছু সাধারণ নিয়ম
মানুষের আদত বা অভ্যাস ও প্রথার বিষয়ে মূলনীতি হলো: তা হালাল — যতক্ষণ না হারামের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়।
ইবাদতের বিষয়ে মূলনীতি হলো: কেবল শরী‘আতের দলীলযুক্ত ইবাদতই গ্রহণযোগ্য — দলীল ছাড়া কোনো ইবাদত বৈধ নয়।
মানুষের বিষয়ে মূলনীতি হলো: প্রত্যেক ব্যক্তি দোষমুক্ত (নির্দোষ) — যতক্ষণ না তার অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায়।
অদৃশ্য বিষয়ে (গায়েব সম্পর্কে) মূলনীতি হলো: কেবল শরী‘আতের অনুমোদিত খবরই গ্রহণযোগ্য — দলীল ছাড়া বিশ্বাসযোগ্য নয়।
বস্তু বা জিনিসপত্রের বিষয়ে মূলনীতি হলো: তা পবিত্র (পবিত্র ধরা হবে) — যতক্ষণ না অপবিত্রতার প্রমাণ পাওয়া যায়।
ইবাদত করার ব্যাপারে মূলনীতি হলো: অন্য কেউ কারো পক্ষ থেকে ইবাদত করতে পারে না।
নারী সম্ভোগ বিষয়ক মূলনীতি হলোঃ হারাম হওয়া, যতক্ষণ না শরীআতের নীতি মেনে হালাল করা হয়।
লেনদেন বিষয়ক মূলনীতি হলোঃ ধোঁকা, অজ্ঞতা, প্রতারণা, ক্ষতিকর, সুদ সম্পৃক্ততা, ঝগড়া উৎপাদনকারী না হলে তা বৈধ।
ইবাদত যদি নির্ধারিত সময়ে আদায় করা হয়, তবে তাকে “আদায় (أداء)” বলে, আর নির্ধারিত সময়ের পরে আদায় করলে তাকে “ক্বাযা (قضاء)” বলে — এবং ক্বাযা করার বৈধতা একমাত্র শরী‘আতের দলীল দ্বারা প্রমাণিত হলে তবেই তা বৈধ।
যদি কোনো ফরয (ওয়াজিব) কাজ ও মুস্তাহাব কাজ পরস্পরের বিরোধে পড়ে, তবে ফরযকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
যদি ফরযে কিফায়া ও ফরযে ‘আইন সংঘাতে পড়ে, তবে ফরযে ‘আইনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
যদি দুইটি ক্ষতিকারক বিষয়ের কোনো একটিকে বাছাই করে নিতে হয়, তবে কম ক্ষতিকরটিকে বেছে নিতে হবে।
যদি একটি মুস্তাহাব ইবাদতের সময় অনেক প্রসারিত হয় আর অন্যটি সময়সীমায় সংকীর্ণ হয়, তবে সংকীর্ণ সময়ের মুস্তাহাব ইবাদতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে— একই বিধান ফরয ইবাদতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
ক্ষতি দূরীকরণকে লাভ আনয়নের চেয়ে অগ্রগণ্য করতে হবে, তবে যদি লাভটি অধিকতর প্রাধান্যপ্রাপ্ত স্বার্থ সংরক্ষণ করে এমন হয়, তাহলে সেটিকে অগ্রাধিকার দেওয়া যায়।
যখন কেউ কোনো ফরয কাজ করতে অপারগ হয়, তখন সেটি থেকে তার দায়িত্ব সরে যায়।
হারাম কাজ কোনো নিরুপায় (ضرورة) অবস্থায় হালাল হয়ে যেতে পারে, তবে তা কেবল প্রয়োজনীয়তার পরিমাণ অনুযায়ী — এর বেশি বাড়ানো যাবে না।
কুরআন ও হাদীসের নির্দেশের মূলনীতি হলো: তা ওয়াজিব, যতক্ষণ না কোনো দলীল তা মুস্তাহাবে পরিণত করে।
আর কুরআন ও হাদীসের নিষেধাজ্ঞার মূলনীতি হলো: তা হারাম, যতক্ষণ না কোনো দলীল তা মাকরুহে পরিণত করে।
এবং (জেনে রাখা দরকার যে), হক (সত্য) হলো — যা কুরআন ও সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। মানুষ কী বলেছে বা কী করেছে, সেটা কখনো হক নয়।
বেশিরভাগ মানুষের কোনো কিছু করা বা বলা — সত্যতার প্রমাণ নয়। কারণ, হক নির্ভর করে দলীলের ওপর — মানুষের সংখ্যার ওপর নয়।