ঝাড়-ফুঁকের সময় রোগী যদি কষ্ট অনুভব করে অথবা কাপতে থাকে, ঝাকুনি আসে অথবা মাথায় খুব বেশি ব্যাথা অনুভব করে বেহুশ না হয়, তবে এ অবস্থায় তিনবার করে শরয়ী ঝাড়-ফুক করবে। যদি রোগী বেহুশ হয়ে যায় তবে পূর্বে উল্লেখিত পদ্ধতি গ্রহণ করবে। আর যদি বেহুশ না হয় মাথা ব্যাথা ও কাপনি কমতে থাকে তবে কিছুদিন তাকে ঝাড়-ফুক করবে। ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই সে আরোগ্য লাভ করবে। যদি সুস্থ না হয়, তবে নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলি গ্রহণ করবেঃ
১। সূরা সাফফাত সম্পূর্ণ একবার এবং আয়াতুল কুরসী একাধিকবার রেকর্ড করবে। এরপর রোগীকে দিনে তিনবার শোনাবে।
২। নামায জামাআতের সাথে আদায় করবে।
৩। রোগী ফজর নামাযের পর নিম্নের এই দুআ
(لا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير)
একশত বার করে এক মাস পর্যন্ত পড়বে; কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, রোগীর কষ্ট ১০ অথবা ১৫ দিন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে; কিন্তু ধীরে ধীরে কমতে থাকবে এবং মাসের শেষে সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যাবে।
এবার যখন পুনরায় ঝাড়-ফুক করবে তাতে রোগী কোন কষ্ট অনুভব করবে না। ইনশাআল্লাহ যাদু ধ্বংস হয়ে যাবে। এমনও হতে পারে যে, অসুস্থ রোগীর কষ্ট এক মাসেও লাঘব হয়নি। সাথে সাথে রোগীর উদ্বেগও থাকে। এ অবস্থায় যখন রোগী চিকিৎসকের কাছে আসবে তাকে তখন পূর্বের উল্লেখিত আয়াত ও সূরা সমূহ পড়ে ফুক দিবে। এরপর শীঘ্রই বেহুশ হয়ে যাবে। অতঃপর প্রথম অবস্থার পূর্বের পদ্ধতি গ্রহণ করবে।
যদি ঝাড়-ফুক করার সময় কোন পরিবর্তন পরিলক্ষিত না হয়; তবে তাকে পুনরায় তার লক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে হবে এরপর যদি অধিকাংশ লক্ষণই অবর্তমান হয়, তবে বুঝতে হবে সে যাদুগ্ৰস্ত বা অন্য কোন রোগী নয়। অবস্থা নিশ্চিত হবে, অতঃপর তিনবার করে ঝাড়-ফুক করবে এরপরও যদি লক্ষণ ফুটে না ওঠে আর বার বার ঝাড়-ফুক করা হয়; কিন্তু কিছুই অনুভব না করে, তবে এ অবস্থা খুবই কম। এমতাবস্থায় নিম্নোক্ত পদ্ধতি গ্রহণ করবেঃ
১ । সূরা ইয়াসীন, দুখান এবং সূরা জ্বিন ক্যাসেটে রেকর্ড করাবে এবং তা প্রত্যেক দিন তিনবার রোগীকে শোনানো হবে।
২ । বেশি বেশি তাওবা এ ইস্তেগফার করবে কমপক্ষে দিনে ১০০ বার অথবা বেশি।
৩। প্রত্যেক দিন ১০০ বার অথবা এর থেকে বেশি (লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ) পড়বে। এই পদ্ধতি একমাস পর্যন্ত করতে থাকবে।
তারপর তার উপর ঝাড়-ফুক করবে এবং পূর্বের দুই অবস্থা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে।
যদি আল্লাহ তায়ালা আপনার প্রচেষ্টায় রোগীকে সুস্থ করে দেন আর রোগী প্রশান্তি লাভ করে তাহলে আপনি আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করুন যিনি আপনাকে এই সুযোগ দান করেছেন। আর আল্লাহকে বেশি করে স্মরণ করতে হবে যেন আল্লাহ আপনাকে অন্যের জন্যও আরো তাওফীক প্রদান করেন। আর আপনার চিকিৎসায় এ সফলতা যেন আপনার সীমালজঘনও অহংকারের কারণ না হয়।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِنْ شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِنْ كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ
অর্থঃ “আর যখন আল্লাহ তায়ালা (আপনার প্রভু) প্রকাশ্যে ঘোষণা করে দিয়েছেন যে, যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে তবে আমি তোমাদেরকে আরও বেশি দিব। আর যদি তোমরা অকৃজ্ঞ হও তবে জেনে রাখ যে আমার শাস্তি বড়ই কঠিন।" (সূরা ইবরাহীমঃ ৭)
আর রোগী সুস্থ হওয়ার পরও আশঙ্কা মুক্ত নয়, কোথাও আবার কেউ দ্বিতীয়বার তার যাদু পুনরাবৃত্তি না করে। কেননা যারা যাদু করিয়েছে তারা যদি তার চিকিৎসকের নিকট গিয়ে সুস্থ হওয়ার বিষয় জানতে পারে তবে তারা দ্বিতীয়বার যাদুকরের নিকট গিয়ে যাদু করতে সচেষ্ট হবে। সুতরাং রোগী তার চিকিৎসকের নিকট যাওয়ার বিষয় গোপন রাখবে। আর রোগীর সুরক্ষার জন্যে নিম্নের নির্দেশাবলী তাকে প্রদান করুনঃ
১ । জামাতের সাথে নামায আদায় করা ।
২। গান-বাজনা শ্রবণ না করা।
৩। ঘুমানোর পূর্বে ওযু করে নেয়া এবং আয়াতুল কুরসী তিলাওয়াত করা।
৪। সব কাজ বিসমিল্লাহ বলে করা।
৫। ফজরের নামাযের পর দৈনিক নিম্নের দু'আ ১০০ বার পড়া।
(لا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير)
৬। প্রত্যহ সামান্য হলেও কুরআনের তিলাওয়াত অবশ্যই করা। যদি কুরআন পড়তে না জানে তবে অন্য কারো থেকে অথবা ক্যাসেটে শুনবে। (কুরআন কারীমের শিক্ষা গ্রহণ করবে। কেননা মুসলমানদের জন্য তা অবশ্যই জরুরী।)
৭। সৎলোকদের সংস্পর্শে ওঠা-বসা করবে।
৮। সকাল-সন্ধ্যার মাসনুন দু'আসমূহ পড়বে।
এক মহিলা তার স্বামীকে অত্যন্ত ঘৃণা করত। যার উপর যাদুর প্রভাব ও আলামত অনেক স্পষ্ট ছিল। এমনকি সে তার স্বামী এবং তার বাড়ির সংসারকে চরম ঘৃণা করত। আর তার স্বামীকে খুব ভয়ঙ্কর দৃষ্টিতে দেখত। পরিশেষে তার স্বামী তাকে এমন এক ব্যক্তির কাছে নিয়ে গেল; যে কুরআনে কারীমের মাধ্যমে চিকিৎসা করে। সেখানে জিন কথা বলা শুরু করল ও বললঃ সে যাদুকরের মাধ্যমে এসেছে, তার দায়িত্ব হলো এ লোকটি ও তার স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটান। এরপর চিকিৎসক তাকে অনেক পিটাই করল; কিন্তু তারপরও কোন ফল হল না; এমন কি মহিলার স্বামী আমাকে বলল, সে সেই চিকিৎসকের কাছে দীর্ঘ একমাস ব্যাপী যেতে থাকে। পরিশেষে একদিন সেই জ্বিন আবদার করল যে, এই ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেয়, যদিও এক তালাক তবে আমি তাকে ছেড়ে যাব। দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, সেই ব্যক্তি তার স্ত্রীকে এক তালাক দিয়ে দেয়। এরপর আবার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিল। ফলে মাঝখানে এক সপ্তাহ সম্পূর্ণরূপে মহিলাটি সুস্থ থাকল। এরপর মহিলার উপর পূর্বের অবস্থা ফিরে আসল। এরপর সেই ব্যক্তি তার স্ত্রীকে আমার কাছে নিয়ে আসল। আমি যখন কুরআন পড়তে লাগলাম তখন সে বেহুশ হয়ে গেল। আর নিম্নের কথোপকথন জ্বিন ও আমার মাঝে চলতে লাগল যা আমি অতি সংক্ষেপে বর্ণনা করছিঃ
আমি জ্বিনকে বললাম যে, তোমার নাম কি?
সে উত্তরে বললঃ শাকওয়ান।
আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ তোর ধর্ম কি?
সে উত্তরে বললঃ খ্রিস্টান ধর্ম।
আমি জানতে চাইলাম এই মহিলাকে কেন আক্রমণ করেছিস?
উত্তরে বললঃ স্বামী-স্ত্রী বিচ্ছেদের জন্যে।
আমি বললাম আমি তোমাকে একটি প্রস্তাব দিচ্ছি তুমি যদি ইসলাম গ্রহণ কর তবে আলহামদু লিল্লাহ। নতুবা তোমার ইচ্ছা।
জ্বিন বললঃ তুমি নিজেকে কষ্টে ফেল না।
আমি এই মহিলা থেকে বের হব না। এর পূর্বেও ওর স্বামী অনেকের কাছে চিকিৎসার জন্যে গিয়েছে, কোন কাজ হয়নি। আমি জিনকে বললাম আমি তোমাকে মহিলা থেকে বের হতে বলছি না।
জ্বিন বললঃ তবে তুমি কি চাও আমার কাছে? আমি বললাম যে, আমি চাই তোমার নিকট ইসলাম পেশ করতে। যদি তুমি ইসলাম গ্রহণ কর তবে আলহামদুলিল্লাহ না হয় ইসলাম গ্রহণে কোন জোর জবরদস্তি নেই। অনেকক্ষণ কথা বলাবলির পর সে ইসলাম গ্রহণ করল। আলহামদুলিল্লাহ সেই জ্বিন মুসলমান হয়ে গেল। আমি জ্বিনকে বললাম যে, তুমি কি সত্যিই ইসলাম গ্রহণ করেছ না কি তুমি আমাকে ধোকা দিচ্ছ? জ্বিন উত্তর করলঃ তুমি আমাকে জবরদস্তি করতে পার না। আমি প্রকৃতপক্ষেই ইসলাম গ্রহণ করেছি। তবে মহিলা থেকে বের হয়ে যেতে তোমার আর কি বাধা? সে বলল যে, এই সময় খ্রিস্টান জ্বিনের এক দল আমার সামনে রয়েছে আর আমি ভয় করছি যে, তারা আমাকে হয়ত মেরে ফেলবে। তারা আমাকে ভয় দেখাচ্ছে। আমি বললাম তোমাকে তাদের থেকে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। যদি তুমি আমাকে কথা দাও যে তুমি সত্যিই মুসলমান হয়েছ। তবে আমি তোমাকে এক এমন শক্তিশালী অস্ত্র দিব যে, তাদের কেউ তোমার কাছেই আসতে পারবে না।
জ্বিন বললঃ তবে এখনই দিন।
আমি বললামঃ হ্যাঁ দিব তবে আরও কথা আছে যে, তুমি যদি সত্যিকার অর্থে মুসলমান হয়ে থাক তবে তোমার তাওবা কেবল তখনই গ্রহণীয় হবে যখন তুমি এই মহিলাকে ছেড়ে যাবে এবং অন্যায় পাপ থেকে বিরত থাকবে । জ্বিন বললঃ হ্যাঁ আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি; কিন্তু যাদুকরদের থেকে আমি কিভাবে মুক্তি পাব। অতঃপর আমি বললাম এটা সহজ বিষয়; কিন্তু তোমাকে আমার কথা মানতে হবে।
জ্বিন বললঃ ঠিক আছে আমি বললাম তুমি আমাকে বল, যাদু করে কোথায় রাখা হয়েছে।
জ্বিন উত্তর দিলঃ যে ঘরে মহিলাটি বাস করে সেই ঘরের আঙ্গনায় কিন্তু আমি নির্দিষ্ট স্থান নির্ণয় করতে পারব না, কেননা সেখানে এক জ্বিনকে যাদুর হেফাযতের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আর যখনই সেই স্থান কেউ জানতে পারে তখন সেই জ্বিন যাদুকে স্থানান্তরিত করে। আমি বললাম তোমার এই যাদুকরের সাথে কত কাল থেকে সম্পর্ক?
আমার সঠিক স্মরণ নেই জ্বিন কি উত্তর দিয়েছিল তবে এতটুকু স্মরণ আছে যে, সে দশ অথবা বিশ বছর বলেছিল। আরও সে বলেছিল যে, সে এর পূর্বেও তিনটি মহিলাকে আক্রমণ করেছে। আর সে তিন মহিলা সম্পর্কে ঘটনা খুলে বলেছে। যখন তার কথায় আমি বিশ্বস্ত হলাম তখন আমি বললাম। এবার আমি তোমাকে যেই অস্ত্র দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলাম তা তুমি নিয়ে নাও। জ্বিন বলল সেটা কি? তখন আমি উত্তর দিলাম যে, তা হল আয়াতুল কুরসি। যখনই তোমার নিকট কোন জ্বিন আসতে চাইবে তোমাকে আঘাত করার জন্যে তুমি সেই আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত করবে; তাহলে সেই জ্বিন পালিয়ে যাবে।
আমি জিনকে জিজ্ঞেস করলাম তোমার কি আয়াতুল কুরসি মুখস্ত আছে? উত্তরে বললঃ হ্যাঁ কেননা এই মহিলা আয়াতুল কুরসি বেশি বেশি পড়ত তাই শুনতে শুনতে মুখস্ত হয়ে গেছে। সে বললঃ আমি যাদুকর থেকে কিভাবে মুক্তি পাব? আমি বললাম তুমি এই মহিলা থেকে বের হয়ে মক্কায় চলে যাও এবং সেখানে মুসলমান জ্বিনদের মাঝে বসবাস কর। জ্বিন বললঃ আমাকে কি আল্লাহ সত্যি সত্যিই ক্ষমা করে দিবেন? কেননা আমি এই মহিলার প্রতি অনেক অন্যায় অত্যাচার করেছি এবং আরও তিন মহিলাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। আমি বললামঃ তোমাকে আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই ক্ষমা করবেন। সূরা যুমারে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেনঃ
قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
অর্থঃ “বল হে আমার বান্দাগণ! যারা (পাপ করে) নিজের উপর অন্যায় করেছে, তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হইও না, কেননা আল্লাহ তায়ালা সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল ও করুণাময়।" (সূরা যুমারঃ ৫৩)
অতঃপর সে কেদে ফেলল এবং বলল যখন আমি এই মহিলাকে ছেড়ে চলে যাব তখন আমার পক্ষ থেকে এই মহিলার কাছে আমাকে ক্ষমা করে দেয়ার আবদার করবেন। কেননা আমি তাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। সে ওয়াদা করল এবং মহিলার ভিতর থেকে বের হয়ে গেল।
এরপর আমি কিছু কুরআনের আয়াত পড়ে পানিতে ফুঁক দিয়ে সেই ব্যক্তিকে দিয়ে বললাম যে, এই পানি আঙ্গনায় ছিটিয়ে দিবেন। এরপর কিছু দিন পর সেই ব্যক্তি আমাকে জানাল যে, তার স্ত্রী এখন সম্পূর্ণ সুস্থ । (এতে আমার কোন কৃতিত্ব নেই, সবকিছু আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়েছে।)
এক মহিলার স্বামী আমার কাছে এসে বললঃ যখন আমি এই মহিলাকে বিয়ে করলাম তখন থেকেই আমাদের মাঝে বিবাদ সৃষ্টি হয়। এমনকি সে আমাকে খুবই ঘৃণা করতো। আমার একটি কথাও শুনতে প্রস্তুত নয় সে। তার একটিই চাওয়া-পাওয়া যে, সে যেন আমার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আশ্চর্য বিষয় হল যে আমি বাড়ির বাইরে থাকলে সে খুবই আনন্দে থাকে। আর যখনই আমি বাড়িতে প্রবেশ করি, আর সে আমার চেহারা দেখে তখনই সে রাগে ফেটে পড়ে। ফলে আমি কুরআনের আয়াত মহিলার সামনে তেলাওয়াত করি এরপর সে নিস্তব্ধ হতে লাগল এবং তার মাথা ব্যথা শুরু হল কিন্তু স্বাভাবিকভাবে সে বেহুশ হয়নি। অতঃপর আমি কুরআনের এক ক্যাসেট রেকর্ড করে তাকে দিলাম এবং বললাম যে, এই সূরা পয়তাল্লিশ দিন পর্যন্ত শুনে এরপর আমার কাছে আসবে। সেই ব্যক্তি বলল যে, পয়তাল্লিশ দিন পর যখন তারা স্বামী-স্ত্রী উভয়েই আমার কাছে আসতে চাইল তখন তার স্ত্রী বেহুশ হয়ে গেল এবং তার কণ্ঠে জ্বিন বলতে লাগলঃ আমি তোমাকে সব কিছু বলব কিন্তু শর্ত হল যে, তুমি আমাকে সেই আলেমের কাছে নিয়ে যাবে না। সে বলল, আমাকে যাদুর মাধ্যমে এই মহিলার কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। যদি তুমি আমার সত্যতা যাচাই করতে চাও তাহলে শয়ন কক্ষে বালিশের দিকে ইঙ্গিত করে বলল, সেটা আমার কাছে নিয়ে আস। আমি সেই বালিশ উঠিয়ে নিয়ে আসলাম এবং সে বালিশটি খুলতে বলল। যখন আমি বালিশটি খুললাম তখন আমি দেখতে পাই যে, তাতে কাগজের কতক টুকরা যাতে কিছু লেখা রয়েছে। অতঃপর জ্বিন বলল যে, এই কাগজগুলো জ্বালিয়ে দাও আমি আর কখনও আসব না; কিন্তু একটি শর্ত হল, আমি এই মহিলার সামনে প্রকাশ লাভ করে তার সাথে মুসাফাহা করব। তখন সেই ব্যক্তি বলল অসুবিধা নেই।
এরপর তার স্ত্রী বেহুশী থেকে জাগ্রত হয়ে তার হাত সম্মুখে বাড়িয়ে দিল যেন সে কারো সাথে মোসাফাহা করছে। আমি এই সব ঘটনা শোনার পর বললাম তুমি এক বড় ভুল করেছ। তোমার স্ত্রীকে ওর সাথে মোসাফাহার জন্যে অনুমতি দিয়েছ; যা না জায়েয এবং হারাম। কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নারীদেরকে পর পুরুষের সাথে মোসাফাহা করা নিষেধ করেছেন।
অতঃপর এক সপ্তাহ পর সেই মহিলা পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়ল। আর সেই ব্যক্তি তার স্ত্রীকে নিয়ে আমার কাছে নিয়ে আসল। যখনই আমি আউযুবিল্লাহ পড়লাম মহিলাটি বেহুশ হয়ে পড়ে গেল তারপর (তার প্রতি আসর করা) জিনের সাথে কথোপকথন আরম্ভ হল। আমি বললাম হে মিথ্যাবাদী তুমি ওয়াদা করেছিলে আর দ্বিতীয়বার আসবে না; এরপরও কেন আসলে? জ্বিন বলল আমি সব কিছুই বলব আপনি আমাকে মারবেন না। আমি বললাম ঠিক আছে বল। জ্বিন বলতে লাগল, আমি তাকে মিথ্যা বলেছিলাম যে, আমি আর আসব না। সেই বালিশে আমিই কাগজ রেখেছিলাম যাতে তার বিশ্বাস হয়। আমি বললাম তুমি মহিলার সাথে প্রতারণা করেছ। জ্বিন বলল শেষ পর্যন্ত আমি কি করতে পারি। যাদুর দ্বারা আমাকে এই মহিলার ভিতরে বন্দি করে দেয়া হয়েছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তুমি কি মুসলমান?
সেই উত্তর দিল যে, হ্যাঁ। মুসলমানের জন্যে জায়েয নয়, যাদুকরের স্বার্থে কাজ করা বরং এটা হারাম, মহাপাপ ও কবীরা গুনাহ। তুমি কি জান্নাতে যেতে চাও না? জ্বিন বলল হ্যাঁ আমি জান্নাতে যেতে চাই, আমি বললাম তাই যদি চাও তাহলে যাদুকরকে ত্যাগ কর এবং মুসলমানদের সাথে একীভূত হয়ে আল্লাহর ইবাদত কর। কেনানা যাদুর কাজ দুনিয়ার জন্যও অমঙ্গল আর আখেরাতে এর পরিণাম জাহান্নাম। জ্বিন বললঃ আমি কি করে ছাড়তে পারব অথচ যাদুকরের জাল থেকে বের হয়ে আসার সামর্থ আমার নেই।
আমি বললাম এ সবের কারণ তোমার পাপ। আর যদি তুমি নিষ্ঠার সাথে তাওবা কর তবে সবকিছুই ঠিক হয়ে যাবে।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
وَلَنْ يَجْعَلَ اللَّهُ لِلْكَافِرِينَ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ سَبِيلًا
অর্থঃ “আল্লাহ তায়ালা কাফেরদেরকে মু'মিনদের উপর কোন সামর্থ রাখেননি।" (সূরা নিসাঃ ১৪১)
জ্বিন বললঃ আমি তাওবা করছি এবং এই মহিলা থেকে বের হয়ে যাচ্ছি এবং আর কোন সময় ফিরে আসব না। এরপর সে ওয়াদা করে বের হয়ে গেল আর ফিরে আসেনি।
সমস্ত প্রশংসার অধিকারী কেবলমাত্র আল্লাহ তায়ালা। আর তাকে ব্যতীত কেউ কারো কল্যাণ ও অকল্যাণ করতে পারে না । মহিলার স্বামী অনেক দিন পর আমার কাছে এসে বলল যে, তার স্ত্রী সম্পূর্ণরূপে সুস্থ।
এক মহিলার স্বামী আমার কাছে এসে বলল যে তার স্ত্রী তাকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে এবং তার সাথে থাকতে চায় না অথচ সে তাকে খুব ভালোবাসে। আর বিষয়টি হঠাৎ এমন হয়েছে। আমি সেই মহিলাকে কুরআনের কিছু আয়াত শুনালাম যার ফলে সে বেহুশ হয়ে পড়ল। আর সাথে সাথে তার সাথে কথোপকথন শুরু হল । আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম তুমি মুসলমান?
জ্বিন উত্তর দিলঃ হ্যাঁ আমি মুসলমান।
আমি বললামঃ তাহলে তুমি এই মহিলাকে ধরেছ কেন?
জ্বিন উত্তর দিল যে, আমাকে যাদুর মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়েছে। অমুক মহিলা এই মহিলাকে যাদু করেছে। আর যাদু করে এক আতরের শিশিতে রেখে দিয়েছিল যা এই মহিলার কাছে রয়েছে। আমি এই মহিলার পিছে লেগেছিলাম অনেক দিন থেকে। এরই মধ্যে তার ঘরে এক চোর আসল আর সে ভীত হয়ে গেল। অতঃপর আমি তাকে আয়ত্বে নিয়ে নিলাম। এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট করছি, যাদুকর জ্বিন প্রেরণ করে সেই ব্যক্তির কাছে যাকে যাদু করতে চায়। জ্বিন সেই ব্যক্তির পিছু করতে থাকে, আর যখন সে সুযোগ পেয়ে যায় সে ব্যক্তির ভিতরে প্রবেশ করে। চারটি এমন সুযোগ যে সুযোগে জ্বিন মানুষের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে। (১) খুব বেশি ভীত হলে। (২) অতিমাত্রায় রাগাম্বিত হলে। (৩) অতিমাত্রায় উদাসীন অবস্থায়। (৪) মানুষ যখন প্রবৃত্তির দাসে পরিণত হয়।
মানুষ যদি এই চার অবস্থার একটিতে থাকে শয়তান তার ভেতর প্রবেশ করে। হ্যাঁ! তবে যদি সে তখন ওযু অবস্থায় থাকে বা দু'আ যিকির করে থাকে কোন জ্বিন তার ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। (বলা হয় যেমন অনেক জ্বিন আমাকে বলেছে তা সত্যও হতে পারে।) যদি জ্বিন প্রবেশ করার সময় আল্লাহ তায়ালার যিকির (দু’আ পড়া) সেই ব্যক্তি করে তবে জ্বিন জ্বলে যায়। এজন্য জ্বিনের প্রবেশকালীন সময়টি খুব কঠিন মুহূর্ত এ জিনের সমস্ত জীবনের মধ্যে।
জ্বিন বলল যে, এই মহিলা খুবই ভাল। আমি বললাম যে তুমি এই মহিলাকে ছেড়ে চলে যাও। জ্বিন বলল শর্ত হল যে, তার স্বামী দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিলে আমি চলে যাব। আমি বললাম তোমার শর্ত গ্রহণীয় নয়। তুমি এখনি এই মহিলা থেকে বের হয়ে যাও নতুবা আমি তোমাকে শায়েস্তা করব। জিন বললঃ ঠিক আছে আমি এখন বের হয়ে যাব।
আলহামদুলিল্লাহ জ্বিন বের হয়ে চলে গেল। এরপর আমি তার স্বামীকে বললাম যে, তোমার স্ত্রীকে কেউ যাদু করেনি। জিন অনেক বেশী মিথ্যা বলে থাকে যাতে মানুষের মধ্যে শক্রতা ও বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং তুমি আল্লাহকে ভয় কর আর জ্বিনের কথা বিশ্বাস করো না।
আমার কাছে এক মহিলার স্বামী এসে বলতে লাগল যে, তার স্ত্রী তাকে একেবারেই দেখতে পারে না। আমি তার থেকে দূরে থাকলে খুব খুশি । যখন আমি বাড়ীতে আসি তার অবস্থা পরিবর্তন হয়ে যায়। সুতরাং যখন আমি মহিলাকে কিছু লক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম তাতে বুঝতে পারলাম যে, তাকে বিচ্ছেদের যাদু করা হয়েছে। অতঃপর যখন তার উপর শরয়ী ঝাড়ফুক করলাম তখন জ্বিন কথা বলতে শুরু করলঃ
জ্বিনের সাথে আমার কথোপকথনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা এইঃ
আমি বললামঃ তোমার নাম কি?
জ্বিনঃ আমি বলব না।
আমি বললামঃ তোমার ধর্ম কি?
জ্বিনঃ ইসলাম।
আমি বললামঃ মুসলমানদের জন্য কি জায়েয মুসলিম মহিলাকে কষ্ট দেয়া?
জ্বিনঃ আমার সাথে তার ভালবাসা হয়ে গেছে, আমি তাকে কষ্ট দেই না; কিন্তু আমি চাই যে, তার নিকট হতে তার স্বামী বিচ্ছিন্ন হয়ে যাক।
আমি বললামঃ তুমি কি স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদ চাও?
জ্বিনঃ হ্যাঁ।
আমি বললামঃ তোমার জন্য এটা হারাম, আল্লাহর নির্দেশ মেনে বের হয়ে যাও।
জ্বিনঃ না না আমি ওকে ভালবাসি।
আমি বললামঃ কিন্তু সে তো ঘৃণা করে।
জ্বিনঃ না, এও আমাকে ভালবাসে।
আমি বললামঃ তুমি মিথ্যাবাদী। সত্য হল যে, সে তোমাকে ঘৃণা করে
যার কারণে এই মহিলা এখানে এসেছে যাতে তোমাকে তার দেহ হতে বের করতে পারে।
জ্বিনঃ আমি কখনো যাব না।
আমি বললামঃ আমি কুরআন পড়ে আল্লাহর সাহায্য ও তোমাকে জ্বালিয়ে দিব।
এরপর আমি কুরআনের আয়াত পড়া শুরু করলাম যার ফলে জ্বিন চিল্লাতে লাগল।
আমি বললামঃ এখন বের হবি কিনা?
জ্বিন হ্যাঁ! কিন্তু এক শর্তে
আমি বললামঃ কি সেই শর্ত?
জ্বিনঃ আমি এই মহিলা থেকে বের হয়ে তোমার ভেতরে প্রবেশ করব।
আমি বললামঃ তাতে কোন সমস্যা নেই যদি তুই আমার মধ্যে প্রবেশ করতে পারিস কর। অল্পক্ষণ অপেক্ষা করার পর সে কাঁদতে লাগল।
আমি বললামঃ কিসে তোকে কাদাল?
জিনঃ কোন জিন আজ তোমার ভেতর প্রবেশ করতে পারবে না।
আমি বললামঃ কেন? এর কি কারণ
জিনঃ এজন্য যে, আজ তুমি সকালে (لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ) একশ বার পড়েছ।
আমি ভাবলামঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সত্যই বলেছেন, যে ব্যাক্তি সকালে (لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ) ১০০ বার পড়বে সে যেন দশটি দাস মুক্ত করল, আর তার আমলনামায় একশ নেকী লেখা হবে, আর তার থেকে একশত গুনাহ মিটিয়ে দেয়া হবে, আর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সে শয়তান থেকে হেফাজতে থাকবে। তার অপেক্ষা কেউ এমন ফযীলত পাবে না, তবে যে তার অপেক্ষা বেশি আমল করবে। এরপর আমি তাকে বললামঃ অতএব তুমি এই মুহুর্তে এই মহিলাকে ছেড়ে চলে যাও। সব একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছায় আলহামদুলিল্লাহ সে এমনটিই করল এবং বের হয়ে গেল ।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ অবৈধ ঝাড়-ফুঁক, তাবীজ-কবজ ও “তেওয়ালা” (আসক্ত করা যাদু) নিশ্চয়ই শিরকের অন্তর্ভুক্ত। (মুসনাদে আহমদঃ ১/৩৮১, আবু দাউদঃ ৩৮৮৩ ইত্যাদি আলবানী (রহঃ) সহীহ বলেছেন।)
আল্লামা ইবনে আছীর (রাহেমাহুল্লাহ) বলেন, “তেওয়ালা" অর্থ হল এমন পস্থা অবলম্বন করা যার ফলে স্ত্রী স্বামীর নিকট যাদু বা অন্য কিছুর মাধ্যমে প্রিয় হয়ে যায়। যা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শিরক বলে আখ্যায়িত করেছেন। কেননা তাদের বিশ্বাস হয় যে, এসব কিছু আল্লাহর নির্ধারিত তাকদীর ব্যতীতই এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে এমনটি হয়ে গেল। (আন-নিহায়াঃ ১/২০০)। আমি এ বিষয়টি স্পষ্ট করতে চাই যে, হাদীসে যে বিষয়ের ঝাড়-ফুক নিষেধ এসেছে তা সেই সব ঝাড়-ফুক যার দ্বারা জ্বিন শয়তান ও অন্য কিছুর সাহায্য নেয়া হয় ও যার মধ্যে শিরক আছে। তবে যেই ঝাড়-ফুক কুরআন আর হাদীস থেকে হবে তা জায়েয তাতে কোন মতবিরোধ নেই। সহীহ মুসলিমে আছে, ঝাড়-ফুকে কোন সমস্যা নেই যদি তাতে কোন শিরক না থাকে।
আসক্তকারী যাদুর লক্ষণসমূহঃ
১। অতিমাত্রায় আসক্ত হয়ে যাওয়া ও ভালোবাসা।
২। সর্বদায় সহবাস করতে চাওয়া।
৩। সহবাসের জন্য অধৈর্য হয়ে যাওয়া।
৪। স্ত্রীকে দেখার জন্যে অস্থির হয়ে যাওয়া।
৫। স্ত্রীর বশে ও তাবে হয়ে যাওয়া ।
সাধারণত স্বামী-স্ত্রীর মাঝে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়েই থাকে আবার তা স্বাভাবিক হয়ে যায়; কিন্তু কতক মহিলা অধৈর্য হয়ে যাদুকরের কাছে ছুটে যায় যাতে যাদুর মাধ্যমে ভালবাসা অধিক মাত্রায় আদায় করতে পারে। এর কারণ মহিলার দ্বীনদারীর অভাব ও তার অজ্ঞতা যে, এটি নিশ্চয়ই হারাম। যাদুকর মহিলার কাছে তার স্বামীর কোন কাপড় যেমনঃ রুমাল, টুপি, জামা, গেঞ্জি ইত্যাদি চায় যাতে তার ঘামের গন্ধ থাকে যা নতুন অথবা ধোয়া নয়, বরং ব্যবহৃত। যাদুকর তা থেকে সূতা নেয় আর তাতে গিরা লাগিয়ে কিছু পড়ে ফু দেয়। এরপর সেই মহিলাকে বলে, এই সূতাগুলো নির্জন স্থানে পূতে রাখার জন্যে অথবা খাদ্য দ্রব্যে অথবা পানিতে যাদুর ফু দিয়ে দেয়। এই যাদুর নিকৃষ্ট পদ্ধতি হল, অপবিত্র জিনিষ দ্বারা যাদু করা। যেমনঃ হয়েযের রক্ত দিয়ে যাদু করা। অতঃপর সেই মহিলাকে বলা হয়, তা তার স্বামীকে খাইয়ে দিবে বা তার আতর সুগন্ধির সাথে মিশিয়ে দেবে।
১ । কখনো যাদুর দ্বারা স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমি এমন ব্যক্তি সম্পর্কে জানি, যে তিন বছর এই প্রকার যাদুর প্রভাবে অসুস্থ ছিল।
২। কখনো আবার ভালবাসার পরিবর্তে ঘৃণা সৃষ্টি হতে থাকে। আর এটা এজন্য যে, কিছু যাদুকর যাদুর মৌলিক বিষয়ে জ্ঞান রাখে না।
৩। কখনো স্ত্রী তার স্বামীর জন্য এমন যাদু করে বসে যে, তার স্বামী যেন সব মহিলাকে ঘৃণা করে কেবল তাকেই ভালবাসে। যার ফলে সেই ব্যক্তি নিজের মা-বোন এবং তার আত্মীয় মহিলাদের ঘৃণা করতে থাকে।
৪। কখনও তার দ্বিমূখী যাদুর ক্রিয়া উল্টে গিয়ে স্বামী সকল মহিলাকে ঘৃণার সাথে স্ত্রীকেও ঘৃণা করা শুরু করে। এমন খবরও পেয়েছি যে, স্বামী কাছে যায় যাতে যাদুর প্রভাব নষ্ট করে দেয়; কিন্তু ঘটনাক্রমে যাদুকর তার পোঁছার আগেই মারা গেছে।