হাদীস সম্ভার ৩/ নিয়্যাত
১৫৩

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

আল্লাহ তা’আলা বলেন,

وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاء وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ وَذَلِكَ دِينُ الْقَيِّمَةِ

অর্থাৎ, তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে এবং নামায কায়েম করতে ও যাকাত প্রদান করতে। আর এটাই সঠিক ধর্ম। (সূরা বাইয়িনাহ্ ৫ আয়াত) তিনি আরো বলেন,

لَن يَنَالَ اللهَ لُحُومُهَا وَلاَ دِمَاؤُهَا وَلَكِن يَنَالُهُ التَّقْوَى مِنْكُمْ

অর্থাৎ, আল্লাহর কাছে কখনোও ওগুলির মাংস পৌঁছে না এবং রক্তও না; বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাক্ওয়া (সংযমশীলতা)। (সূরা হাজ্জ্ব ৩৭ আয়াত) তিনি আরো বলেন,

قُلْ إِنْ تُخْفُوا مَا فِي صُدُورِكُمْ أَوْ تُبْدُوهُ يَعْلَمْهُ الله

অর্থাৎ, বল, তোমাদের মনে যা আছে তা যদি তোমরা গোপন রাখ কিংবা প্রকাশ কর, আল্লাহ তা অবগত আছেন। (সূরা আলে ইমরান ২৯ আয়াত)


(১৫৩) উমার বিন খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, যাবতীয় কার্য নিয়ত বা সংকল্পের উপর নির্ভরশীল। আর মানুষের জন্য তাই প্রাপ্য হবে, যার সে নিয়ত করবে। অতএব যে ব্যক্তির হিজরত (স্বদেশত্যাগ) আল্লাহর (সন্তোষ লাভের) উদ্দেশ্যে ও তাঁর রসূলের জন্য হবে; তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের জন্যই হবে। আর যে ব্যক্তির হিজরত পার্থিব সম্পদ অর্জন কিংবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যেই হবে, তার হিজরত যে সংকল্প নিয়ে করবে তারই জন্য হবে।

এই হাদীসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইমাম শাফেয়ী (রঃ) ও ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল (রঃ) এটিকে ’এক তৃতীয়াংশ অথবা অর্ধেক দ্বীন’ বলে অভিহিত করেছেন।

এটিকে ইমাম বুখারী (রঃ) তাঁর গ্রন্থ সহীহ বুখারীতে সাত জায়গায় বর্ণনা করেছেন। (১, ৫৪, ২৫২৯, ৩৮৯৮, ৫০৭০, ৬৬৮৯, ৬৯৫৩) প্রত্যেক স্থানে এই হাদীসটি উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হল কর্মের বিশুদ্ধতা ও কর্মের প্রতিদান নিয়তের সাথে সম্পৃক্ত—সে কথা প্রমাণ করা।

عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّةِ وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوَى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى اللهِ وَرَسُولِهِ فَهِجْرَتُهُ إِلَى اللهِ وَرَسُولِهِ وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ لِدُنْيَا يُصِيبُهَا أَوْ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ (متفقٌ على صحته)

عن عمر بن الخطاب قال قال رسول الله ﷺ انما الاعمال بالنية وانما لامرى ما نوى فمن كانت هجرته الى الله ورسوله فهجرته الى الله ورسوله ومن كانت هجرته لدنيا يصيبها او امراة يتزوجها فهجرته الى ما هاجر اليه (متفق على صحته)

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৫৪

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৫৪) উম্মুল মু’মেনীন উম্মে আব্দুল্লাহ আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একটি বাহিনী কা’বা ঘরের উপর আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে বের হবে। অতঃপর যখন তারা সমতল মরুপ্রান্তরে (বাইদা) পৌঁছবে, তখন তাদের প্রথম ও শেষ ব্যক্তি সকলকেই যমীনে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। তিনি (আয়েশা) বলেন যে, আমি (এ কথা শুনে) বললাম, হে আল্লাহর রসূল! কেমন করে তাদের প্রথম ও শেষ সকলকে ধসিয়ে দেওয়া হবে? অথচ তাদের মধ্যে তাদের বাজারের ব্যবসায়ী এবং এমন লোক থাকবে, যারা তাদের (আক্রমণকারীদের) অন্তর্ভুক্ত নয়। তিনি বললেন, তাদের প্রথম ও শেষ সকলকে ধসিয়ে দেওয়া হবে। তারপর তাদেরকে তাদের নিয়ত অনুযায়ী পুনরুত্থিত করা হবে।

وَعَن أُمِّ المُؤمِنِينَ أُمِّ عَبدِ اللّه عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ : يَغْزُو جَيْشٌ الْكَعْبَةَ فَإِذَا كَانُوا بِبَيْدَاءَ مِنْ الْأَرْضِ يُخْسَفُ بِأَوَّلِهِمْ وَآخِرِهِمْ قَالَتْ: قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ! كَيْفَ يُخْسَفُ بِأَوَّلِهِمْ وَآخِرِهِمْ وَفِيهِمْ أَسْوَاقُهُمْ وَمَنْ لَيْسَ مِنْهُمْ؟ قَالَ: يُخْسَفُ بِأَوَّلِهِمْ وَآخِرِهِمْ ثُمَّ يُبْعَثُونَ عَلَى نِيَّاتِهِمْ (متفقٌ عليه هذا لفظ البخاري)

وعن ام المومنين ام عبد الله عاىشة رضي الله عنها قالت: قال رسول الله ﷺ : يغزو جيش الكعبة فاذا كانوا ببيداء من الارض يخسف باولهم واخرهم قالت: قلت يا رسول الله! كيف يخسف باولهم واخرهم وفيهم اسواقهم ومن ليس منهم؟ قال: يخسف باولهم واخرهم ثم يبعثون على نياتهم (متفق عليه هذا لفظ البخاري)

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৫৫

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৫৫) ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কোন জাতির উপর মহান আল্লাহ আযাব অবতীর্ণ করেন, তখন তাদের মধ্যে বিদ্যমান সমস্ত লোককে তা গ্রাস করে ফেলে। তারপর (বিচারের দিনে) তাদেরকে স্ব স্ব কৃতকর্মের ভিত্তিতে পুনরুত্থিত করা হবে।

وَ عَنْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ إِذَا أَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى بِقَومٍ عَذَاباً أَصَابَ العَذَابُ مَنْ كَانَ فِيهِمْ ثُمَّ بُعِثُوا عَلَى أَعْمَالِهِمْ متفق عليه

و عن ابن عمر رضي الله عنهما قال : قال رسول الله ﷺ اذا انزل الله تعالى بقوم عذابا اصاب العذاب من كان فيهم ثم بعثوا على اعمالهم متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৫৬

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৫৬) আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মক্কা বিজয়ের পর (মক্কা থেকে) হিজরত নেই; বরং বাকী রয়েছে জিহাদ ও নিয়ত। সুতরাং যদি তোমাদেরকে জিহাদের জন্য ডাক দেওয়া হয়, তাহলে তোমরা (জিহাদে) বেরিয়ে পড়।

’মক্কা বিজয়ের পর আর হিজরত নেই’ এর অর্থ এই যে, মক্কা এখন ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত হল। ফলে এখান থেকে মুসলিমেরা আর হিজরত করতে পারবে না।

وعَن عَائِشَةَ رَضِيَ الله عَنهَا قَالَت: قَالَ النَّبِيُّ ﷺ لاَ هِجْرَةَ بَعْدَ الْفَتْحِ وَلَكِنْ جِهَادٌ وَنِيَّةٌ وَإِذَا اسْتُنْفِرْتُمْ فَانْفِرُوا متفق عليه

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت: قال النبي ﷺ لا هجرة بعد الفتح ولكن جهاد ونية واذا استنفرتم فانفروا متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৫৭

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৫৭) আবূ আব্দুল্লাহ জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী (রাঃ) বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে এক অভিযানে ছিলাম। তিনি বললেন, মদীনাতে কিছু লোক এমন আছে যে, তোমরা যত সফর করছ এবং যে কোন উপত্যকা অতিক্রম করছ, তারা তোমাদের সঙ্গে রয়েছে। অসুস্থতা তাদেরকে মদীনায় থাকতে বাধ্য করেছে। আর একটি বর্ণনায় আছে যে, তারা নেকীতে তোমাদের অংশীদার।

وعَنْ أَبيْ عبدِ اللهِ جَابِرٍ بْنِ عَبْدِ اللهِ الأنصاريِّ رَضي اللهُ عَنهما قَالَ : كُنَّا مَعَ النَّبيِّ ﷺ في غَزَاةٍ فَقالَ إِنَّ بالمدِينَةِ لَرِجَالاً ما سِرْتُمْ مَسِيراً وَلاَ قَطَعْتُمْ وَادِياً إلاَّ كَانُوا مَعَكمْ حَبَسَهُمُ الْمَرَضُ وَفي روَايَة إلاَّ شَرَكُوكُمْ في الأجْرِ رواهُ مسلمٌ

وعن ابي عبد الله جابر بن عبد الله الانصاري رضي الله عنهما قال : كنا مع النبي ﷺ في غزاة فقال ان بالمدينة لرجالا ما سرتم مسيرا ولا قطعتم واديا الا كانوا معكم حبسهم المرض وفي رواية الا شركوكم في الاجر رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৫৮

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৫৮) সহীহ বুখারীতে আনাস (রাঃ) থেকে এরূপ বর্ণনা রয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে তাবূক অভিযান থেকে আমাদের প্রত্যাবর্তনকালে তিনি বললেন যে, আমাদের পিছনে মদীনায় এরূপ কিছু লোক আছে যারা প্রত্যেক গিরিপথ বা উপত্যকা অতিক্রমকালে আমাদের সাথে রয়েছে। বিশেষ ওজর তাদেরকে ঘরে থাকতে বাধ্য করেছে।

ورواهُ البخاريُّ عَن أَنَسٍ قَالَ : رَجَعَنا مِنْ غَزْوَةِ تَبُوكَ مَعَ النَّبيِّ ﷺ فقال إنَّ أقْواماً خَلْفَنَا بالْمَدِينَةِ مَا سَلَكْنَا شِعْباً وَلاَ وَادياً إلاّ وَهُمْ مَعَنا حَبَسَهُمُ العُذْرُ

ورواه البخاري عن انس قال : رجعنا من غزوة تبوك مع النبي ﷺ فقال ان اقواما خلفنا بالمدينة ما سلكنا شعبا ولا واديا الا وهم معنا حبسهم العذر

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৫৯

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৫৯) আবূ ইয়াযীদ মা’ন ইবনে ইয়াযীদ ইবনে আখনাস (রাঃ) তিনি (মা’ন) এবং তাঁর পিতা ও দাদা সকলেই সাহাবী—তিনি বলেন, আমার পিতা ইয়াযীদ দান করার জন্য কয়েকটি স্বর্ণমুদ্রা বের করলেন। অতঃপর তিনি সেগুলি (দান করতে) মসজিদে একটি লোককে দায়িত্ব দিলেন। আমি (মসজিদে) এসে তার কাছ থেকে (অন্যান্য ভিÿুকের মত) তা নিয়ে নিলাম এবং তা নিয়ে বাড়ী এলাম। (যখন আমার পিতা এ ব্যাপারে অবগত হলেন তখন) বললেন, আল্লাহর কসম! তোমাকে দেওয়ার নিয়ত আমার ছিল না। (ফলে এগুলি আমার জন্য হালাল হবে কি না তা জানার উদ্দেশ্যে) আমি আমার পিতাকে নিয়ে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে উপস্থিত হলাম। তিনি বললেন, ’’হে ইয়াযীদ! তোমার জন্য সেই বিনিময় রয়েছে যার নিয়ত তুমি করেছ এবং হে মা’ন! তুমি যা নিয়েছ তা তোমার জন্য হালাল।’’ (বুখারী ১৪২২)

وعَنْ أَبيْ يَزِيْدَ مَعَن بنِ يَزيدَ بنِ الأَخْنَسِ وهو وأبوه وَجَدُّه صَحَابيُّون قَالَ : كَانَ أبي يَزيدُ أخْرَجَ دَنَانِيرَ يَتَصَدَّقُ بِهَا فَوَضعَهَا عَندَ رَجُلٍ في الْمَسْجِدِ فَجِئْتُ فأَخذْتُها فَأَتَيْتُهُ بِهَا فقالَ : واللهِ مَا إيَّاكَ أرَدْتُ فَخَاصَمْتُهُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ ﷺ فقَالَ لكَ مَا نَوَيْتَ يَا يزيدُ ولَكَ ما أخَذْتَ يَا مَعَن رواهُ البخاريُّ

وعن ابي يزيد معن بن يزيد بن الاخنس وهو وابوه وجده صحابيون قال : كان ابي يزيد اخرج دنانير يتصدق بها فوضعها عند رجل في المسجد فجىت فاخذتها فاتيته بها فقال : والله ما اياك اردت فخاصمته الى رسول الله ﷺ فقال لك ما نويت يا يزيد ولك ما اخذت يا معن رواه البخاري

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৬০

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৬০) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একটি লোক বলল, (আজ রাতে) আমি অবশ্যই সাদকাহ করব। সুতরাং সে আপন সাদকার বস্তু নিয়ে বের হল এবং (অজান্তে) এক চোরের হাতে তা দিয়ে দিল। লোকে সকালে উঠে বলাবলি করতে লাগল যে, আজ রাতে এক চোরের হাতে সাদকা দেওয়া হয়েছে। সাদকাকারী বলল, হে আল্লাহ! তোমারই যাবতীয় প্রশংসা! (আজ রাতে) অবশ্যই আবার সাদকা করব। সুতরাং সে নিজ সাদকা নিয়ে বের হল এবং (অজান্তে) এক বেশ্যার হাতে তা দিয়ে দিল। সকাল বেলায় লোকে বলাবলি করতে লাগল যে, আজ রাতে এক বেশ্যাকে সাদকা দেওয়া হয়েছে। সে তা শুনে আবার বলল, হে আল্লাহ! তোমারই প্রশংসা যে, বেশ্যাকে সাদকা করা হল। আজ রাতে পুনরায় অবশ্যই সাদকাহ করব।

সুতরাং তার সাদকা নিয়ে বের হয়ে গেল এবং (অজান্তে) এক ধনী ব্যক্তির হাতে সাদকা দিল। সকাল বেলায় লোকেরা আবার বলাবলি করতে লাগল যে, আজ এক ধনী ব্যক্তিকে সাদকা দেওয়া হয়েছে। লোকটি শুনে বলল, হে আল্লাহ! তোমারই সমস্ত প্রসংশা যে, চোর, বেশ্যা তথা ধনী ব্যক্তিকে সাদকা করা হয়েছে। সুতরাং (নবী অথবা স্বপ্নযোগে) তাকে বলা হল যে, (তোমার সাদকা ব্যর্থ যায়নি; বরং) তোমার যে সাদকা চোরের হাতে পড়েছে তার দরুন হয়তো চোর তার চৌর্যবৃত্তি ত্যাগ করে দেবে। বেশ্যা হয়তো তার দরুন তার বেশ্যাবৃত্তি ত্যাগ করবে। আর ধনী; সম্ভবতঃ সে উপদেশ গ্রহণ করবে এবং সে তার আল্লাহ প্রদত্ত ধন-সম্পদ আল্লাহর রাহে ব্যয় করবে।

وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ الله ﷺ قَالَ قَالَ رَجُلٌ لأَتَصَدَّقَنَّ بِصَدَقَةٍ فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِي يَدِ سَارِقٍ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ : تُصُدِّقَ عَلَى سَارِقٍ فَقَالَ : اَللّٰهُمَّ لَكَ الحَمْدُ لأتَصَدَّقَنَّ بِصَدَقَةٍ فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِي يَدِ زَانِيَةٍ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ : تُصُدِّقَ اللَّيْلَةَ عَلَى زَانِيَةٍ فَقَالَ : اَللّٰهُمَّ لَكَ الحَمْدُ عَلَى زَانِيَةٍ لأتَصَدَّقَنَّ بِصَدَقَةٍ فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فوَضَعَهَا فِي يَدِ غَنِيٍّ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ : تُصُدِّقَ عَلَى غَنِيٍّ ؟ فَقَالَ : اَللّٰهُمَّ لَكَ الحَمْدُ عَلَى سَارِقٍ وَعَلَى زَانِيَةٍ وعلى غَنِيٍّ فَأُتِيَ فَقِيلَ لَهُ : أَمَّا صَدَقَتُكَ عَلَى سَارِقٍ فَلَعَلَّهُ أَنْ يَسْتَعِفَّ عَن سَرِقَتِهِ وَأَمَّا الزَّانِيَةُ فَلَعَلَّهَا تَسْتَعِفُّ عَن زِنَاهَا وَأَمَّا الغَنِيُّ فَلَعَلَّهُ أَنْ يَعْتَبِرَ فَيُنْفِقَ مِمَّا أَعْطَاهُ اللهُ رواه البخاري بلفظه ومسلم بمعَناه

وعن ابي هريرة ان رسول الله ﷺ قال قال رجل لاتصدقن بصدقة فخرج بصدقته فوضعها في يد سارق فاصبحوا يتحدثون : تصدق على سارق فقال : اللهم لك الحمد لاتصدقن بصدقة فخرج بصدقته فوضعها في يد زانية فاصبحوا يتحدثون : تصدق الليلة على زانية فقال : اللهم لك الحمد على زانية لاتصدقن بصدقة فخرج بصدقته فوضعها في يد غني فاصبحوا يتحدثون : تصدق على غني ؟ فقال : اللهم لك الحمد على سارق وعلى زانية وعلى غني فاتي فقيل له : اما صدقتك على سارق فلعله ان يستعف عن سرقته واما الزانية فلعلها تستعف عن زناها واما الغني فلعله ان يعتبر فينفق مما اعطاه الله رواه البخاري بلفظه ومسلم بمعناه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৬১

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৬১) সা’দ বিন আবী অক্কাস (রাঃ) বলেন, যে দশজন সাহাবীকে জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছিল ইনি তাঁদের মধ্যে একজন। বিদায় হজ্জ্বের বছর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার রুগ্ন অবস্থায় আমাকে দেখা করতে এলেন। সে সময় আমার শরীরে চরম ব্যথা ছিল। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমার (দৈহিক) জ্বালা-যন্ত্রণা কঠিন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে--যা আপনি স্বচক্ষে দেখছেন। আর আমি একজন ধনী মানুষ; কিন্তু আমার উত্তরাধিকারী বলতে আমার একমাত্র কন্যা। তাহলে আমি কি আমার মাল-সম্পদের দুই তৃতীয়াংশ দান করে দেব? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তাহলে অর্ধেক মাল হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তাহলে কি এক তৃতীয়াংশ দান করতে পারি? তিনি বললেন, এক তৃতীয়াংশ (দান করতে পার), তবে এক তৃতীয়াংশও অনেক। কারণ এই যে, তুমি যদি তোমার উত্তরাধিকারীদের ধনবান অবস্থায় ছেড়ে যাও, তাহলে তা এর থেকে ভাল যে, তুমি তাদেরকে কাঙ্গাল করে ছেড়ে যাবে এবং তারা লোকের কাছে হাত পাতবে।

(মনে রাখ,) আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে তুমি যা ব্যয় করবে তোমাকে তার বিনিময় দেওয়া হবে। এমনকি তুমি যে গ্রাস তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দাও তারও তুমি বিনিময় পাবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি কি আমার সঙ্গীদের ছেড়ে পিছনে (মক্কায়) থেকে যাব? তিনি বললেন, তুমি যদি তোমার সঙ্গীদের মরার পর জীবিত থাক এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোন কাজ কর, তাহলে তার ফলে তোমার মর্যাদা ও সম্মান বর্ধন হবে। আর সম্ভবতঃ তুমি বেঁচে থাকবে। এমনকি তোমার দ্বারা কিছু লোক (মু’মিনরা) উপকৃত হবে। আর কিছু লোক (কাফেররা) ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হে আল্লাহ! তুমি আমার সাহাবীদেরকে হিজরতে পরিপূর্ণতা দান কর এবং তাদেরকে (হিজরত থেকে) পিছনে ফিরিয়ে দিয়ো না। কিন্তু মিসকীন সা’দ ইবনে খাওলা। তাঁর মৃত্যু মক্কায় হওয়ার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুঃখ ও শোক প্রকাশ করেন।

وَعَنْ أَبيْ إسحَاقَ سَعدِ بنِ أبي وَقَّاصٍ مالِكِ بنِ أُهَيْب بنِ عبدِ مَنَافِ بنِ زُهرَةَ بنِ كِلاَبِ بنِ مُرَّةَ بنِ كَعبِ بنِ لُؤيٍّ القُرشِيِّ الزُّهريِّ أَحَدِ العَشَرَةِ المشهودِ لَهُم بِالْجَنَّةِ قَالَ : جَاءَنِي رسولُ اللهِ ﷺ يَعُودُنِي عَامَ حَجَّةِ الوَدَاعِ مِنْ وَجَعٍ اشْتَدَّ بي فقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ إنِّي قَدْ بَلَغَ بي مِنَ الوَجَعِ مَا تَرَى وَأَنَا ذُو مالٍ وَلا يَرِثُني إلا ابْنَةٌ لِي أفأَتَصَدَّقُ بِثُلُثَيْ مَالِي ؟ قَالَ لا قُلْتُ : فالشَّطْرُ يَا رَسُولَ اللهِ؟ فقَالَ لا قُلْتُ : فالثُّلُثُ يَا رَسُولَ اللهِ ؟ قَالَ الثُّلُثُ والثُّلُثُ كَثيرٌ أَوْ كبيرٌ إنَّكَ إنْ تَذَرْ وَرَثَتَكَ أغنِيَاءَ خيرٌ مِنْ أنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يتكفَّفُونَ النَّاسَ وَإنَّكَ لَنْ تُنفِقَ نَفَقَةً تَبْتَغي بِهَا وَجهَ اللهِ إلاَّ أُجِرْتَ عَلَيْهَا حَتَّى مَا تَجْعَلُ في فِيِّ امْرَأَتِكَ قَالَ : فَقُلتُ : يَا رسولَ اللهِ أُخلَّفُ بعدَ أصْحَابي ؟ قَالَ إِنَّكَ لَنْ تُخَلَّفَ فَتَعملَ عَمَلاً تَبتَغي بِهِ وَجْهَ اللهِ إلاَّ ازْدَدتَ بِهِ دَرَجةً ورِفعَةً وَلَعلَّكَ أنْ تُخَلَّفَ حَتّى يَنتَفِعَ بِكَ أقْوَامٌ وَيُضَرَّ بِكَ آخرونَ اَللّٰهُمَّ أَمْضِ لأصْحَابي هِجْرَتَهُمْ ولاَ تَرُدَّهُمْ عَلَى أعقَابهمْ لكنِ البَائِسُ سَعدُ بْنُ خَوْلَةَ يَرْثي لَهُ رَسُولُ الله ﷺ أنْ ماتَ بمَكَّة مُتَّفَقٌ عليهِ

وعن ابي اسحاق سعد بن ابي وقاص مالك بن اهيب بن عبد مناف بن زهرة بن كلاب بن مرة بن كعب بن لوي القرشي الزهري احد العشرة المشهود لهم بالجنة قال : جاءني رسول الله ﷺ يعودني عام حجة الوداع من وجع اشتد بي فقلت : يا رسول الله اني قد بلغ بي من الوجع ما ترى وانا ذو مال ولا يرثني الا ابنة لي افاتصدق بثلثي مالي ؟ قال لا قلت : فالشطر يا رسول الله؟ فقال لا قلت : فالثلث يا رسول الله ؟ قال الثلث والثلث كثير او كبير انك ان تذر ورثتك اغنياء خير من ان تذرهم عالة يتكففون الناس وانك لن تنفق نفقة تبتغي بها وجه الله الا اجرت عليها حتى ما تجعل في في امراتك قال : فقلت : يا رسول الله اخلف بعد اصحابي ؟ قال انك لن تخلف فتعمل عملا تبتغي به وجه الله الا ازددت به درجة ورفعة ولعلك ان تخلف حتى ينتفع بك اقوام ويضر بك اخرون اللهم امض لاصحابي هجرتهم ولا تردهم على اعقابهم لكن الباىس سعد بن خولة يرثي له رسول الله ﷺ ان مات بمكة متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৬২

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৬২) আবূ হুরাইরা আব্দুর রহমান বিন স্বাখর (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা তোমাদের দেহ এবং তোমাদের আকৃতি দেখেন না, বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমল দেখেন।

وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ عَبدِ الرَّحْمَانِ بْنِ صَخْرٍ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺإنَّ الله لاَ ينْظُرُ إِلى أَجْسَادِكُمْ وَلاَ إِلَى صُوَرِكمْ وَلَكن ينْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ وَأَعمَالِكُم رواه مسلم

وعن ابي هريرة عبد الرحمان بن صخر قال : قال رسول الله ﷺان الله لا ينظر الى اجسادكم ولا الى صوركم ولكن ينظر الى قلوبكم واعمالكم رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৬৩

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৬৩) আবূ মূসা আব্দুল্লাহ ইবনে কায়স আশআরী (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এমন ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, যে বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য যুদ্ধ করে, অন্ধ পক্ষপাতিত্বের জন্য যুদ্ধ করে এবং লোক প্রদর্শনের জন্য (সুনাম নেওয়ার উদ্দেশ্যে) যুদ্ধ করে, এর কোন্ যুদ্ধটি আল্লাহর পথে হবে? আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর কালিমাকে উঁচু করার উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে, একমাত্র তারই যুদ্ধ আল্লাহর পথে হয়।

وعَنْ أَبيْ مُوْسَى عَبدْ اللهِ بنِ قَيسٍ الأشعريِّ قَالَ : سُئِلَ رَسُولُ الله ﷺ عَن الرَّجُلِ يُقاتلُ شَجَاعَةً ويُقَاتِلُ حَمِيَّةً ويُقَاتِلُ رِيَاءً أَيُّ ذلِكَ في سبيلِ الله ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ قَاتَلَ لِتَكونَ كَلِمَةُ اللهِ هي العُلْيَا فَهوَ في سَبِيلِ اللهِ مُتَّفَقٌ عَلَيهِ

وعن ابي موسى عبد الله بن قيس الاشعري قال : سىل رسول الله ﷺ عن الرجل يقاتل شجاعة ويقاتل حمية ويقاتل رياء اي ذلك في سبيل الله ؟ فقال رسول الله ﷺ من قاتل لتكون كلمة الله هي العليا فهو في سبيل الله متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৬৪

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৬৪) আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যক্তি বলল, ’হে আল্লাহর রসূল! এক ব্যক্তি জিহাদ করতে চায়, কিন্তু সে তাতে পার্থিব কোন স্বার্থ কামনা করে।’ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার জন্য কোন সওয়াব নেই। লোকটি ঐ একই কথা তিনবার ফিরিয়ে বলল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক বারেই উত্তরে বললেন, তার জন্য কোন সওয়াব নেই।

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ : أَنَّ رَجُلاً قَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ رَجُلٌ يُرِيدُ الْجِهَادَ فِى سَبِيلِ اللهِ وَهُوَ يَبْتَغِى عَرَضًا مِنْ عَرَضِ الدُّنْيَا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ لاَ أَجْرَ لَهُ

عن ابى هريرة : ان رجلا قال : يا رسول الله رجل يريد الجهاد فى سبيل الله وهو يبتغى عرضا من عرض الدنيا فقال رسول الله ﷺ لا اجر له

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৬৫

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৬৫) আবূ বকরাহ নুফাই বিন হারেস সাক্বাফী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন দু’জন মুসলিম তরবারি নিয়ে আপোসে লড়াই করে, তখন হত্যাকারী ও নিহত দু’জনই দোযখে যাবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! হত্যাকারীর দোযখে যাওয়া তো স্পষ্ট; কিন্তু নিহত ব্যক্তির ব্যাপার কি? তিনি বললেন, সেও তার সঙ্গীকে হত্যা করার জন্য লালায়িত ছিল।

وعَنْ أَبيْ بَكرَةَ نُفيع بنِ الحارثِ الثقَفيِّ أَنَّ النَّبيَّ ﷺ قَالَ إِذَا التَقَى المُسلِمَان بسَيْفَيهِمَا فالقَاتِلُ وَالمَقْتُولُ في النّارِ قُلتُ : يا رَسُولَ اللهِ! هذا القَاتِلُ فَمَا بَالُ المقْتُولِ ؟ قَالَ إنَّهُ كَانَ حَريصاً عَلَى قتلِ صَاحِبهِ

وعن ابي بكرة نفيع بن الحارث الثقفي ان النبي ﷺ قال اذا التقى المسلمان بسيفيهما فالقاتل والمقتول في النار قلت : يا رسول الله! هذا القاتل فما بال المقتول ؟ قال انه كان حريصا على قتل صاحبه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ বাকরা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৬৬

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৬৬) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মানুষের জামাআতের সঙ্গে নামায পড়ার নেকী, তার বাজারে ও বাড়ীতে নামায পড়ার চেয়ে (২৫ বা ২৭) গুণ বেশী। আর তা এ জন্য যে, যখন কোন ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযূ করে নামায পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে আসে এবং নামাযই তাকে মসজিদে নিয়ে যায়, তখন তার মসজিদে প্রবেশ করা পর্যন্ত প্রত্যেক পদক্ষেপের বিনিময়ে একটি মর্যাদা উন্নত হয় ও একটি পাপ মোচন করা হয়। অতঃপর যখন সে মসজিদে প্রবেশ করে, তখন যে পর্যন্ত নামায তাকে (মসজিদে) আটকে রাখে, সে পর্যন্ত সে নামাযের মধ্যেই থাকে। আর ফিরিশতারা তোমাদের কোন ব্যক্তির জন্য সে পর্যন্ত রহমতের দু’আ করতে থাকেন—যে পর্যন্ত সে ঐ স্থানে বসে থাকে, যে স্থানে সে নামায পড়েছে। তাঁরা বলেন, ’হে আল্লাহ! এর প্রতি দয়া কর, হে আল্লাহ! একে ক্ষমা কর, হে আল্লাহ! এর তওবাহ কবুল কর।’ (ফিরিশতাদের এই দু’আ সে পর্যন্ত চলতে থাকে) যে পর্যন্ত সে কাউকে কষ্ট না দেয়, যে পর্যন্ত তার ওযূ নষ্ট না হয়।

وعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ صَلاةُ الرَّجلِ في جمَاعَةٍ تَزيدُ عَلَى صَلاتهِ في سُوقِهِ وبيتهِ بضْعاً وعِشرِينَ دَرَجَةً وَذَلِكَ أنَّ أَحدَهُمْ إِذَا تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الوُضوءَ ثُمَّ أَتَى المَسْجِدَ لا يُرِيدُ إلاَّ الصَّلاةَ لاَ يَنْهَزُهُ إِلاَّ الصَلاةُ : لَمْ يَخْطُ خُطْوَةً إِلاَّ رُفِعَ لَهُ بِهَا دَرجَةٌ وَحُطَّ عَنهُ بها خَطِيئَةٌ حَتَّى يَدْخُلَ المَسْجِدَ فإِذا دَخَلَ المَسْجِدَ كَانَ في الصَّلاةِ مَا كَانَتِ الصَّلاةُ هِي تَحْبِسُهُ وَالمَلائِكَةُ يُصَلُّونَ عَلَى أَحَدِكُمْ مَا دَامَ في مَجْلِسِهِ الَّذِي صَلَّى فِيهِ يَقُولُونَ : اَللّٰهُمَّ ارْحَمْهُ اَللّٰهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اَللّٰهُمَّ تُبْ عَلَيهِ مَا لَم يُؤْذِ فيه مَا لَمْ يُحْدِثْ فِيهِ مُتَّفَقٌ عليه وهذا لفظ مسلم

وعن ابي هريرة قال : قال رسول الله ﷺ صلاة الرجل في جماعة تزيد على صلاته في سوقه وبيته بضعا وعشرين درجة وذلك ان احدهم اذا توضا فاحسن الوضوء ثم اتى المسجد لا يريد الا الصلاة لا ينهزه الا الصلاة : لم يخط خطوة الا رفع له بها درجة وحط عنه بها خطيىة حتى يدخل المسجد فاذا دخل المسجد كان في الصلاة ما كانت الصلاة هي تحبسه والملاىكة يصلون على احدكم ما دام في مجلسه الذي صلى فيه يقولون : اللهم ارحمه اللهم اغفر له اللهم تب عليه ما لم يوذ فيه ما لم يحدث فيه متفق عليه وهذا لفظ مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৬৭

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৬৭) আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বরকতময় মহান প্রভু থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন যে, নিশ্চয় আল্লাহ পুণ্যসমূহ ও পাপসমূহ লিখে দিয়েছেন। অতঃপর তিনি তার ব্যাখ্যাও করে দিয়েছেন। যে ব্যক্তি কোন নেকী করার সংকল্প করে; কিন্তু সে তা কর্মে বাস্তবায়িত করতে পারে না, আল্লাহ তাবারাকা অতা’আলা তার জন্য (কেবল নিয়ত করার বিনিময়ে) একটি পূর্ণ নেকী লিখে দেন। আর সে যদি সংকল্প করার পর কাজটি করে ফেলে, তাহলে আল্লাহ তার বিনিময়ে দশ থেকে সাতশ গুণ, বরং তার চেয়েও অনেক গুণ নেকী লিখে দেন। পক্ষান্তরে যদি সে একটি পাপ করার সংকল্প করে; কিন্তু সে তা কর্মে বাস্তবায়িত না করে, তাহলে আল্লাহ তা’আলা তাঁর নিকট একটি পূর্ণ নেকী হিসাবে লিখে দেন। আর সে যদি সংকল্প করার পর ঐ পাপ কাজ করে ফেলে, তাহলে আল্লাহ মাত্র একটি পাপ লিপিবদ্ধ করেন।

وَعَنْ أَبيْ العبَّاسِ عَبدِ اللهِ بنِ عَبَّاسِ بنِ عَبدِ المُطَّلِبِ رَضِيَ اللهُ عَنهما عَن رَسُول الله ﷺ فِيمَا يَروِي عَن رَبّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالى قَالَ إنَّ اللهَ كَتَبَ الحَسَنَاتِ والسَّيِّئَاتِ ثُمَّ بَيَّنَ ذلِكَ فَمَنْ هَمَّ بحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَها اللهُ تَبَارَكَ وتَعَالى عَندَهُ حَسَنَةً كامِلَةً وَإنْ هَمَّ بهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللهُ عَشْرَ حَسَناتٍ إِلى سَبْعمئةِ ضِعْفٍ إِلى أَضعَافٍ كَثيرةٍ وإنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللهُ تَعَالَى عَندَهُ حَسَنَةً كَامِلةً وَإنْ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللهُ سَيِّئَةً وَاحِدَةً مُتَّفَقٌ عليهِ

وعن ابي العباس عبد الله بن عباس بن عبد المطلب رضي الله عنهما عن رسول الله ﷺ فيما يروي عن ربه تبارك وتعالى قال ان الله كتب الحسنات والسيىات ثم بين ذلك فمن هم بحسنة فلم يعملها كتبها الله تبارك وتعالى عنده حسنة كاملة وان هم بها فعملها كتبها الله عشر حسنات الى سبعمىة ضعف الى اضعاف كثيرة وان هم بسيىة فلم يعملها كتبها الله تعالى عنده حسنة كاملة وان هم بها فعملها كتبها الله سيىة واحدة متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৬৮

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৬৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ (পাপ-পুণ্য লেখক ফিরিশতাকে) বলেন, আমার বান্দা যখন কোন পাপ করার ইচ্ছা করে, তখন তা কাজে পরিণত না করা পর্যন্ত তার আমলনামায় পাপ লিপিবদ্ধ করো না। অতঃপর যদি তা কাজে পরিণত করে, তাহলে অনুরূপ (১টি) পাপ লিপিবদ্ধ কর। আর যদি তা আমার কারণে ত্যাগ করে (কাজে পরিণত না করে), তাহলে তার জন্য ১টি নেকী লিপিবদ্ধ কর। পক্ষান্তরে যখন সে কোন নেকীর কাজ করার ইচ্ছা করে এবং তা কাজে পরিণত না করতে পারে, তাহলে তার জন্য ১টি নেকী লিপিবদ্ধ কর। আর যদি তা কাজে পরিণত করে ফেলে, তাহলে তার জন্য ১০ থেকে ৭০০ গুণ নেকী লিপিবদ্ধ কর।

عَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ قَالَ يَقُولُ اللهُ إِذَا أَرَادَ عَبْدِي أَنْ يَعْمَلَ سَيِّئَةً فَلَا تَكْتُبُوهَا عَلَيْهِ حَتَّى يَعْمَلَهَا فَإِنْ عَمِلَهَا فَاكْتُبُوهَا بِمِثْلِهَا وَإِنْ تَرَكَهَا مِنْ أَجْلِي فَاكْتُبُوهَا لَهُ حَسَنَةً وَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَعْمَلَ حَسَنَةً فَلَمْ يَعْمَلْهَا فَاكْتُبُوهَا لَهُ حَسَنَةً فَإِنْ عَمِلَهَا فَاكْتُبُوهَا لَهُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ

عن ابي هريرة ان رسول الله ﷺ قال يقول الله اذا اراد عبدي ان يعمل سيىة فلا تكتبوها عليه حتى يعملها فان عملها فاكتبوها بمثلها وان تركها من اجلي فاكتبوها له حسنة واذا اراد ان يعمل حسنة فلم يعملها فاكتبوها له حسنة فان عملها فاكتبوها له بعشر امثالها الى سبع ماىة ضعف

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৬৯

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৬৯) আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের পূর্বে (বনী ইসরাঈলের যুগে) তিন ব্যক্তি একদা সফরে বের হল। চলতে চলতে রাত এসে গেল। সুতরাং তারা রাত কাটানোর জন্য একটি পর্বত-গুহায় প্রবেশ করল। অল্পক্ষণ পরেই একটা বড় পাথর উপর থেকে গড়িয়ে নীচে এসে গুহার মুখ বন্ধ করে দিল। এ দেখে তারা বলল যে, এহেন বিপদ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে এই যে, তোমরা তোমাদের নেক আমলসমূহকে অসীলা বানিয়ে আল্লাহর কাছে দু’আ কর।’ সুতরাং তারা স্ব স্ব আমলের অসীলায় (আল্লাহর কাছে) দু’আ করতে লাগল।

তাদের মধ্যে একজন বলল, হে আল্লাহ! তুমি জান যে, আমার অত্যন্ত বৃদ্ধ পিতা-মাতা ছিল এবং (এও জান যে,) আমি সন্ধ্যা বেলায় সবার আগে তাদেরকে দুধ পান করাতাম। তাদের পূর্বে স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও কৃতদাস-দাসী কাউকে পান করাতাম না। একদিন আমি গাছের খোঁজে দূরে চলে গেলাম এবং বাড়ী ফিরে দেখতে পেলাম যে পিতা-মাতা ঘুমিয়ে গেছে। আমি সন্ধ্যার দুধ দহন করে তাদের কাছে উপস্থিত হয়ে দেখলাম, তারা ঘুমিয়ে আছে। আমি তাদেরকে জাগানো পছন্দ করলাম না এবং এও পছন্দ করলাম না যে, তাদের পূর্বে সন্তান-সন্ততি এবং কৃতদাস-দাসীকে দুধ পান করাই। তাই আমি দুধের বাটি নিয়ে তাদের ঘুম থেকে জাগার অপেক্ষায় তাদের শিয়রে দাঁড়িয়ে থাকলাম। অথচ শিশুরা ক্ষুধার তাড়নায় আমার পায়ের কাছে চেঁচামেচি করছিল। এভাবে ফজর উদয় হয়ে গেল এবং তারা জেগে উঠল। তারপর তারা নৈশদুধ পান করল। হে আল্লাহ! আমি যদি এ কাজ তোমার সন্তুষ্টি বিধানের জন্য করে থাকি, তাহলে পাথরের কারণে আমরা যে গুহায় বন্দী হয়ে আছি এ থেকে তুমি আমাদেরকে উদ্ধার কর। এই দু’আর ফলস্বরূপ পাথর একটু সরে গেল। কিন্তু তাতে তারা বের হতে সক্ষম ছিল না।

দ্বিতীয়-জন দু’আ করল, হে আল্লাহ! আমার একটি চাচাতো বোন ছিল। সে আমার নিকট সকল মানুষের চেয়ে প্রিয়তমা ছিল। (অন্য বর্ণনা অনুযায়ী) আমি তাকে এত বেশী ভালবাসতাম, যত বেশী ভালবাসা পুরুষরা নারীদেরকে বাসতে পারে। একবার আমি তার সঙ্গে যৌন মিলন করার ইচ্ছা করলাম। কিন্তু সে অস্বীকার করল। পরিশেষে সে যখন এক দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ল, তখন সে আমার কাছে এল। আমি তাকে এই শর্তে ১২০ দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) দিলাম, যেন সে আমার সঙ্গে যৌন-মিলন করে। সুতরাং সে (অভাবের তাড়নায়) রাজী হয়ে গেল। অতঃপর যখন আমি তাকে আয়ত্তে পেলাম। (অন্য বর্ণনা অনুযায়ী) যখন আমি তার দু’পায়ের মাঝে বসলাম, তখন সে বলল, তুমি আল্লাহকে ভয় কর এবং অবৈধভাবে (বিনা বিবাহে) আমার সতীচ্ছদ নষ্ট করো না। সুতরাং আমি তার কাছ থেকে দূরে সরে গেলাম; যদিও সে আমার একান্ত প্রিয়তমা ছিল এবং যে স্বর্ণমুদ্রা আমি তাকে দিয়েছিলাম তাও পরিত্যাগ করলাম। হে আল্লাহ! যদি আমি এ কাজ তোমার সন্তুষ্টির জন্য করে থাকি, তাহলে তুমি আমাদের উপর পতিত মুসীবতকে দূরীভূত কর।’’ সুতরাং পাথর আরো কিছুটা সরে গেল। কিন্তু তাতে তারা বের হতে সক্ষম ছিল না।

তৃতীয়জন দু’আ করল, হে আল্লাহ! আমি কিছু লোককে মজুর রেখেছিলাম। (কাজ সুসম্পন্ন হলে) আমি তাদের সকলকে মজুরী দিয়ে দিলাম। কিন্তু তাদের মধ্যে একজন মজুরী না নিয়ে চলে গেল। আমি তার মজুরীর টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করলাম। (কিছুদিন পর) তা থেকে প্রচুর অর্থ জমে গেল। কিছুকাল পর একদিন সে এসে বলল, হে আল্লাহর বান্দা! তুমি আমার মজুরী দিয়ে দাও। আমি বললাম, এসব উঁট, গাভী, ছাগল এবং গোলাম (আদি) যা তুমি দেখছ তা সবই তোমার মজুরীর ফল। সে বলল, হে আল্লাহর বান্দা! তুমি আমার সঙ্গে উপহাস করবে না। আমি বললাম, আমি তোমার সঙ্গে উপহাস করিনি (সত্য ঘটনাই বর্ণনা করছি)। সুতরাং আমার কথা শুনে সে তার সমস্ত মাল নিয়ে চলে গেল এবং কিছুই ছেড়ে গেল না। হে আল্লাহ! যদি আমি এ কাজ একমাত্র তোমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য করে থাকি, তাহলে যে বিপদে আমরা পড়েছি তা তুমি দূরীভূত কর। এর ফলে পাথর সম্পূর্ণ সরে গেল এবং সকলেই (গুহা থেকে) বের হয়ে চলতে লাগল।

وَعَنْ أَبيْ عَبدِ الرَّحمَانِ عَبدِ اللهِ بنِ عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنهما قَالَ : سمعتُ رسولَ الله ﷺ يقول انطَلَقَ ثَلاثَةُ نَفَرٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ حَتَّى آوَاهُمُ المَبيتُ إِلى غَارٍ فَدَخلُوهُ فانْحَدرَتْ صَخْرَةٌ مِنَ الجَبَلِ فَسَدَّتْ عَلَيْهِمُ الغَارَ فَقَالُوْا : إِنَّهُ لاَ يُنْجِيكُمْ مِنْ هذِهِ الصَّخْرَةِ إِلاَّ أنْ تَدْعُوا اللهَ بصَالِحِ أعْمَالِكُمْ قَالَ رجلٌ مِنْهُمْ : اَللّٰهُمَّ كَانَ لِي أَبَوانِ شَيْخَانِ كبيرانِ وكُنْتُ لا أغْبِقُ قَبْلَهُمَا أهْلاً ولاَ مالاً فَنَأَى بِي طَلَب الشَّجَرِ يَوْماً فلم أَرِحْ عَلَيْهمَا حَتَّى نَامَا فَحَلَبْتُ لَهُمَا غَبُوقَهُمَا فَوَجَدْتُهُما نَائِمَينِ فَكَرِهْتُ أنْ أُوقِظَهُمَا وَأَنْ أغْبِقَ قَبْلَهُمَا أهْلاً أو مالاً فَلَبَثْتُ - والْقَدَحُ عَلَى يَدِي - أنتَظِرُ اسْتِيقَاظَهُما حَتَّى بَرِقَ الفَجْرُ والصِّبْيَةُ يَتَضَاغَوْنَ عَندَ قَدَميَّ فاسْتَيْقَظَا فَشَرِبا غَبُوقَهُما اَللّٰهُمَّ إنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذلِكَ ابِتِغَاء وَجْهِكَ فَفَرِّجْ عَنا مَا نَحْنُ فِيهِ مِنْ هذِهِ الصَّخْرَةِ فانْفَرَجَتْ شَيْئاً لا يَسْتَطيعُونَ الخُروجَ مِنْهُ
قَالَ الآخر : اَللّٰهُمَّ إنَّهُ كانَتْ لِيَ ابْنَةُ عَمّ كَانَتْ أَحَبَّ النّاسِ إليَّ - وفي رواية : كُنْتُ أُحِبُّها كأَشَدِّ مَا يُحِبُّ الرِّجَالُ النساءَ - فأَرَدْتُهَا عَلَى نَفْسِهَا فامْتَنَعَتْ منِّي حَتَّى أَلَمَّتْ بها سَنَةٌ مِنَ السِّنِينَ فَجَاءتْنِي فَأَعْطَيْتُهَا عِشْرِينَ وَمئةَ دينَارٍ عَلَى أنْ تُخَلِّيَ بَيْني وَبَيْنَ نَفْسِهَا فَفعَلَتْ حَتَّى إِذَا قَدَرْتُ عَلَيْهَا - وفي رواية : فَلَمَّا قَعَدْتُ بَينَ رِجْلَيْهَا قالتْ : اتَّقِ اللهَ وَلاَ تَفُضَّ الخَاتَمَ إلاّ بِحَقِّهِ فَانصَرَفْتُ عَنهَا وَهيَ أَحَبُّ النَّاسِ إليَّ وَتَرَكْتُ الذَّهَبَ الَّذِي أعْطَيتُها اَللّٰهُمَّ إنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذلِكَ ابْتِغاءَ وَجْهِكَ فافْرُجْ عَنا مَا نَحْنُ فيهِ فانْفَرَجَتِ الصَّخْرَةُ غَيْرَ أَنَّهُمْ لا يَسْتَطِيعُونَ الخُرُوجَ مِنْهَا
وَقَالَ الثَّالِثُ : اَللّٰهُمَّ اسْتَأْجَرْتُ أُجَرَاءَ وأَعْطَيْتُهُمْ أجْرَهُمْ غيرَ رَجُل واحدٍ تَرَكَ الَّذِي لَهُ وَذَهبَ فَثمَّرْتُ أجْرَهُ حَتَّى كَثُرَتْ مِنهُ الأمْوَالُ فَجَاءنِي بَعدَ حِينٍ فَقالَ : يَا عبدَ اللهِ أَدِّ إِلَيَّ أجْرِي فَقُلْتُ: كُلُّ مَا تَرَى مِنْ أجْرِكَ: مِنَ الإبلِ وَالبَقَرِ والْغَنَمِ والرَّقيقِ فقالَ : يَا عبدَ اللهِ لاَ تَسْتَهْزِىءْ بِي! فَقُلْتُ : لاَ أسْتَهْزِئ بِكَ فَأَخَذَهُ كُلَّهُ فاسْتَاقَهُ فَلَمْ يتْرُكْ مِنهُ شَيئاً الَّلهُمَّ إنْ كُنتُ فَعَلْتُ ذلِكَ ابِتِغَاءَ وَجْهِكَ فافْرُجْ عَنا مَا نَحنُ فِيهِ فانْفَرَجَتِ الصَّخْرَةُ فَخَرَجُوا يَمْشُونَ مُتَّفَقٌ عليهِ

وعن ابي عبد الرحمان عبد الله بن عمر بن الخطاب رضي الله عنهما قال : سمعت رسول الله ﷺ يقول انطلق ثلاثة نفر ممن كان قبلكم حتى اواهم المبيت الى غار فدخلوه فانحدرت صخرة من الجبل فسدت عليهم الغار فقالوا : انه لا ينجيكم من هذه الصخرة الا ان تدعوا الله بصالح اعمالكم قال رجل منهم : اللهم كان لي ابوان شيخان كبيران وكنت لا اغبق قبلهما اهلا ولا مالا فناى بي طلب الشجر يوما فلم ارح عليهما حتى ناما فحلبت لهما غبوقهما فوجدتهما ناىمين فكرهت ان اوقظهما وان اغبق قبلهما اهلا او مالا فلبثت - والقدح على يدي - انتظر استيقاظهما حتى برق الفجر والصبية يتضاغون عند قدمي فاستيقظا فشربا غبوقهما اللهم ان كنت فعلت ذلك ابتغاء وجهك ففرج عنا ما نحن فيه من هذه الصخرة فانفرجت شيىا لا يستطيعون الخروج منه قال الاخر : اللهم انه كانت لي ابنة عم كانت احب الناس الي - وفي رواية : كنت احبها كاشد ما يحب الرجال النساء - فاردتها على نفسها فامتنعت مني حتى المت بها سنة من السنين فجاءتني فاعطيتها عشرين ومىة دينار على ان تخلي بيني وبين نفسها ففعلت حتى اذا قدرت عليها - وفي رواية : فلما قعدت بين رجليها قالت : اتق الله ولا تفض الخاتم الا بحقه فانصرفت عنها وهي احب الناس الي وتركت الذهب الذي اعطيتها اللهم ان كنت فعلت ذلك ابتغاء وجهك فافرج عنا ما نحن فيه فانفرجت الصخرة غير انهم لا يستطيعون الخروج منها وقال الثالث : اللهم استاجرت اجراء واعطيتهم اجرهم غير رجل واحد ترك الذي له وذهب فثمرت اجره حتى كثرت منه الاموال فجاءني بعد حين فقال : يا عبد الله اد الي اجري فقلت: كل ما ترى من اجرك: من الابل والبقر والغنم والرقيق فقال : يا عبد الله لا تستهزىء بي! فقلت : لا استهزى بك فاخذه كله فاستاقه فلم يترك منه شيىا اللهم ان كنت فعلت ذلك ابتغاء وجهك فافرج عنا ما نحن فيه فانفرجت الصخرة فخرجوا يمشون متفق عليه

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৭০

পরিচ্ছেদঃ নিয়ত ও ইখলাস সম্পর্কিত হাদীসসমূহ

(১৭০) আবু দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পৃথিবী অভিশপ্ত এবং অভিশপ্ত তার মধ্যে যা কিছু আছে সে সকল (পার্থিব বিষয় ও) বস্তুও। তবে সেই বস্তু (বা কর্ম) নয় যার মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের আশা করা হয়।

وعَنْ أَبِيْ الدَرْدَاءِ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ قَالَ الدُّنْيا مَلْعُونَةٌ مَلْعُونٌ ما فِيها إلاَّ ما ابْتُغي بِهِ وَجْهُ الله عَزَّ وَجَلَّ

وعن ابي الدرداء عن النبي صلى الله عليه و سلم قال الدنيا ملعونة ملعون ما فيها الا ما ابتغي به وجه الله عز وجل

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবুদ দারদা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৭১

পরিচ্ছেদঃ ‘রিয়া’ (লোক-প্রদর্শনমূলক কার্যকলাপ) হারাম

আল্লাহ তা’আলা বলেন,

وَمَا أُمِرُوا إِلاَّ لِيَعْبُدُوا اللهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ

অর্থাৎ, তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে। (সূরা বাইয়িনাহ ৫ আয়াত) তিনি আরো বলেছেন,

لاَ تُبْطِلُوا صَدَقَاتِكُمْ بِالمَنِّ وَالأَذَى كَالَّذِي يُنْفِقُ مَالَهُ رِئَاءَ النَّاسِ

অর্থাৎ, হে বিশ্বাসিগণ! দানের কথা প্রচার করে এবং কষ্ট দিয়ে তোমরা তোমাদের দানকে নষ্ট করে দিয়ো না; ঐ লোকের মত যে নিজের ধন লোক দেখানোর জন্য ব্যয় করে। (সূরা বাকারাহ ২৬৪ আয়াত) তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন,

إِنَّ الْمُنَافِقِينَ يُخَادِعُونَ اللّهَ وَهُوَ خَادِعُهُمْ وَإِذَا قَامُواْ إِلَى الصَّلاَةِ قَامُواْ كُسَالَى يُرَآؤُونَ النَّاسَ وَلاَ يَذْكُرُونَ اللّهَ إِلاَّ قَلِيلاً

অর্থাৎ, নিশ্চয় মুনাফিক (কপট) ব্যক্তিরা আল্লাহকে প্রতারিত করতে চায়। বস্তুতঃ তিনিও তাদেরকে প্রতারিত করে থাকেন এবং যখন তারা নামাযে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সাথে নিছক লোক-দেখানোর জন্য দাঁড়ায় এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে থাকে। (সূরা নিসা ১৪২)


(১৭১) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, মহান আল্লাহ বলেন, আমি সমস্ত অংশীদারদের চাইতে অংশীদারি (শির্ক) থেকে অধিক অমুখাপেক্ষী। কেউ যদি এমন কাজ করে, যাতে সে আমার সঙ্গে অন্য কাউকে অংশীদার স্থাপন করে, তাহলে আমি তাকে তার অংশীদারি (শির্ক) সহ বর্জন করি। (অর্থাৎ তার আমলই নষ্ট করে দিই।)

وَعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ الله ﷺ يَقُولُ قَالَ الله تَعَالَى : أَنَا أَغْنَى الشُّرَكَاءِ عَن الشِّرْكِ مَنْ عَمِلَ عَمَلاً أَشْرَكَ فِيهِ مَعِي غَيْرِي تَرَكْتُهُ وَشِرْكَهُ رواه مسلم

وعن ابي هريرة قال : سمعت رسول الله ﷺ يقول قال الله تعالى : انا اغنى الشركاء عن الشرك من عمل عملا اشرك فيه معي غيري تركته وشركه رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
১৭২

পরিচ্ছেদঃ ‘রিয়া’ (লোক-প্রদর্শনমূলক কার্যকলাপ) হারাম

(১৭২) আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, আমি সকল অংশীদার অপেক্ষা অধিক শির্ক (অংশীদারী) হতে বেপরোয়া। অতএব যে ব্যক্তি আমার জন্য কোন এমন আমল করবে, যাতে সে আমি ভিন্ন অন্য কাউকে অংশী করবে, আমি তার থেকে সম্পর্কহীন। আর সে আমল তার জন্য হবে যাকে সে শরীক করেছে।

وعَنْ أَبيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ : أَنَا خَيْرُ الشُّرَكَاءِ مَنْ عَمِلَ لِي عَمَلاً أَشْرَكَ فِيهِ غَيْرِي فَأَنَا بَرِىءٌ مِنْهُ وَهُوَ لِلَّذِي أَشْرَكَ

وعن ابي هريرة قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم قال الله عز وجل : انا خير الشركاء من عمل لي عملا اشرك فيه غيري فانا برىء منه وهو للذي اشرك

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
৩/ নিয়্যাত
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ৩৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 পরের পাতা »