হাদীস সম্ভার ২৫/ আম্বিয়া
২৭০৩

পরিচ্ছেদঃ আদম (আঃ) এর সৃষ্টিকথা

(২৭০৩) আবূ হুরাইরা কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ আদমকে তার আকারে সৃষ্টি করেছেন, যার দৈর্ঘ্য হল ষাট হাত। সুতরাং যখন তাঁকে সৃষ্টি করলেন, তখন বললেন, ’তুমি যাও এবং ঐ যে ফিরিশতামণ্ডলীর একটি দল বসে আছে, তাদের উপর সালাম পেশ কর। আর ওরা তোমার সালামের কি জবাব দিচ্ছে তা মন দিয়ে শুনো। কেননা, ওটাই হবে তোমার ও তোমার সন্তান-সন্ততির সালাম বিনিময়ের রীতি।’ সুতরাং তিনি (তাঁদের কাছে গিয়ে) বললেন, ’আসসালামু আলায়কুম’। তাঁরা উত্তরে বললেন, ’আসসালামু আলাইকা অরহমাতুল্লাহ’। অতএব তাঁরা ’অরহমাতুল্লাহ’ শব্দটা বেশী বললেন। যারা বেহেশতে প্রবেশ করবে, তাদের প্রত্যেকে হবে তাঁর আকারের (ষাট হাত)। তখন থেকে এ যাবৎ সৃষ্টি (মানুষের দৈর্ঘ্য) কম হয়ে আসছে।

عَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ خَلَقَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ آدَمَ عَلٰى صُورَتِهِ طُولُهُ سِتُّونَ ذِرَاعًا فَلَمَّا خَلَقَهُ قَالَ اذْهَبْ فَسَلِّمْ عَلٰى أُولَئِكَ النَّفَرِ وَهُمْ نَفَرٌ مِنَ الْمَلاَئِكَةِ جُلُوسٌ فَاسْتَمِعْ مَا يُجِيبُونَكَ فَإِنَّهَا تَحِيَّتُكَ وَتَحِيَّةُ ذُرِّيَّتِكَ قَالَ فَذَهَبَ فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ فَقَالُوا السَّلاَمُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللهِ - قَالَ - فَزَادُوهُ وَرَحْمَةُ اللهِ قَالَ فَكُلُّ مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ عَلٰى صُورَةِ آدَمَ وَطُولُهُ سِتُّونَ ذِرَاعًا فَلَمْ يَزَلِ الْخَلْقُ يَنْقُصُ بَعْدَهُ حَتّٰـى الآنَ

عن ابي هريرة قال قال رسول الله ﷺ خلق الله عز وجل ادم على صورته طوله ستون ذراعا فلما خلقه قال اذهب فسلم على اولىك النفر وهم نفر من الملاىكة جلوس فاستمع ما يجيبونك فانها تحيتك وتحية ذريتك قال فذهب فقال السلام عليكم فقالوا السلام عليك ورحمة الله قال فزادوه ورحمة الله قال فكل من يدخل الجنة على صورة ادم وطوله ستون ذراعا فلم يزل الخلق ينقص بعده حتى الان

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২৫/ আম্বিয়া
২৭০৪

পরিচ্ছেদঃ আদম (আঃ) এর সৃষ্টিকথা

(২৭০৪) আবূ মূসা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করেছেন এক মুষ্টি মাটি থেকে, যা তিনি সারা পৃথিবী থেকে গ্রহণ করেছেন। তাই আদম সন্তান মাটি অনুসারে বিকাশ লাভ করেছে। তাদের কেউ রক্তিমবর্ণ, কেউ গৌরবর্ণ, কেউ কৃষ্ণবর্ণ, আবার কেউ এ সবের মাঝামাঝি। কেউ সহজ-সরল, কেউ দুর্দম-কঠিন, কেউ নোংরা চরিত্রের, কেউ সুন্দর চরিত্রের এবং কেউ এ সবের মাঝামাঝি।

عَنْ أَبِـيْ مُوسَى عَنْ النَّبِيِّ ﷺقَالَ: إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ خَلَقَ آدَمَ مِنْ قَبْضَةٍ قَبَضَهَا مِنْ جَمِيعِ الْأَرْضِ فَجَاءَ بَنُو آدَمَ عَلٰى قَدْرِ الْأَرْضِ جَاءَ مِنْهُمْ الْأَبْيَضُ وَالْأَحْمَرُ وَالْأَسْوَدُ وَبَيْنَ ذٰلِكَ وَالْخَبِيثُ وَالطَّيِّبُ وَالسَّهْلُ وَالْحَزْنُ وَبَيْنَ ذٰلِكَ

عن ابي موسى عن النبي ﷺقال ان الله عز وجل خلق ادم من قبضة قبضها من جميع الارض فجاء بنو ادم على قدر الارض جاء منهم الابيض والاحمر والاسود وبين ذلك والخبيث والطيب والسهل والحزن وبين ذلك

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২৫/ আম্বিয়া
২৭০৫

পরিচ্ছেদঃ আদম (আঃ) এর সৃষ্টিকথা

(২৭০৫) আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ যখন জান্নাতে আদমের মূর্তি তৈরি করলেন, তখন তাঁর ইচ্ছামতো কিছুদিন তাকে বর্জন করলেন। ইবলীস তার চারিপার্শ্ব ঘুরতে লাগল এবং দেখতে লাগল সেটা কী। অতঃপর সে যখন দেখল, তা ফাঁপা, তখন সে জানতে পারল, সে হবে এমন সৃষ্টি, যে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।

عَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ ﷺ قَالَ لَمَّا صَوَّرَ اللهُ آدَمَ فِى الْجَنَّةِ تَرَكَهُ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَتْرُكَهُ فَجَعَلَ إِبْلِيسُ يُطِيفُ بِهِ يَنْظُرُ مَا هُوَ فَلَمَّا رَآهُ أَجْوَفَ عَرَفَ أَنَّهُ خُلِقَ خَلْقًا لاَ يَتَمَالَكُ

عن انس ان رسول الله ﷺ قال لما صور الله ادم فى الجنة تركه ما شاء الله ان يتركه فجعل ابليس يطيف به ينظر ما هو فلما راه اجوف عرف انه خلق خلقا لا يتمالك

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২৫/ আম্বিয়া
২৭০৬

পরিচ্ছেদঃ আদম (আঃ) এর সৃষ্টিকথা

(২৭০৬) আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদা) আমার হাত ধরে বললেন, আল্লাহ তাআলা শনিবার যমীন সৃষ্টি করেছেন, রবিবার তার মধ্যে পর্বতমালা সৃষ্টি করেছেন। সোমবার সৃষ্টি করেছেন গাছ-পালা। মঙ্গলবার মন্দ বস্তু সৃষ্টি করেছেন। বুধবার আলো সৃষ্টি করেছেন। তাতে (যমীনে) জীবজন্তুছড়িয়েছেন বৃহস্পতিবার। আর সমস্ত জিনিস সৃষ্টি করার পর পরিশেষে জুমআর দিন আসরের পর দিনের শেষভাগে আসর ও রাতের মাঝামাঝি সময়ে (আদি পিতা) আদম (আঃ)কে সৃষ্টি করেছেন।

وَعَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ قَالَ : أَخَذَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ بِيَدِي فَقَالَ خَلَقَ اللهُ التُّرْبَةَ يَومَ السَّبْتِ وَخَلَقَ فِيهَا الجِبَالَ يَومَ الأَحَدِ وَخَلَقَ الشَّجَرَ يَومَ الاِثْنَينِ وَخَلَقَ المَكْرُوهَ يَومَ الثُّلاَثَاءِ وَخَلَقَ النُّورَ يَوْمَ الأَربِعَاءِ وَبَثَّ فِيهَا الدَّوابَّ يَومَ الخَمِيسِ وَخَلَقَ آدَمَ ﷺ بَعْدَ العَصْرِ مِنْ يَومِ الجُمُعَةِ في آخِرِ الخَلْقِ فِي آخِرِ سَاعَةٍ مِنَ النَّهَارِ فِيمَا بَيْنَ العَصْرِ إِلٰـى اللَّيْلِ رواه مسلم

وعن ابي هريرة قال اخذ رسول الله ﷺ بيدي فقال خلق الله التربة يوم السبت وخلق فيها الجبال يوم الاحد وخلق الشجر يوم الاثنين وخلق المكروه يوم الثلاثاء وخلق النور يوم الاربعاء وبث فيها الدواب يوم الخميس وخلق ادم ﷺ بعد العصر من يوم الجمعة في اخر الخلق في اخر ساعة من النهار فيما بين العصر الى الليل رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২৫/ আম্বিয়া
২৭০৭

পরিচ্ছেদঃ ইব্রাহীম (আঃ) ও ইসমাঈল (আঃ) এর কথা

(২৭০৭) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, ইব্রাহীম (আঃ) ইসমাঈলের মা (হাজার; যা বাংলায় প্রসিদ্ধ হাজেরা) ও তাঁর দুধের শিশু ইসমাঈলকে সঙ্গে নিয়ে কা’বা ঘরের নিকট এবং যমযমের উপরে একটি বড় গাছের তলে (বর্তমান) মসজিদের সবচেয়ে উঁচু জায়গায় তাঁদেরকে রাখলেন। তখন মক্কায় না ছিল জনমানব, না ছিল কোন পানি। সুতরাং সেখানেই তাদেরকে রেখে গেলেন এবং একটি থলের মধ্যে কিছু খেজুর আর একটি মশকে স্বল্প পরিমাণ পানি দিয়ে গেলেন। তারপর ইব্রাহীম (আঃ) ফিরে যেতে লাগলেন। তখন ইসমাঈলের মা তাঁর পিছু পিছু ছুটে এসে বললেন, ’হে ইব্রাহীম! আমাদেরকে এমন এক উপত্যকায় ছেড়ে দিয়ে আপনি কোথায় যাচ্ছেন, যেখানে না আছে কোন সঙ্গী-সাথী আর না আছে অন্য কিছু?’ তিনি বারংবার এ কথা বলতে থাকলেন। কিন্তু ইব্রাহীম (আঃ) সেদিকে ভ্রূক্ষেপ করলেন না। তখন হাজেরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ’আল্লাহ কি আপনাকে এর হুকুম দিয়েছেন?’ তিনি উত্তরে বললেন, ’হ্যাঁ।’ উত্তর শুনে হাজেরা বললেন, ’তাহলে তিনি আমাদেরকে ধ্বংস ও বরবাদ করবেন না।’ অতঃপর হাজেরা ফিরে এলেন।

ইব্রাহীম (আঃ) চলে গেলেন। পরিশেষে যখন তিনি (হাজূনের কাছে) সানিয়্যাহ নামক স্থানে এসে পৌঁছলেন, যেখানে স্ত্রী-পুত্র আর তাঁকে দেখতে পাচ্ছিলেন না, তখন তিনি কা’বা ঘরের দিকে মুখ ক’রে দু’হাত তুলে এই দু’আ করলেন, ’’হে আমাদের প্রতিপালক! আমি আমার কিছু বংশধরকে ফল-ফসলহীন উপত্যকায় তোমার পবিত্র গৃহের নিকট বসবাস করালাম; হে আমাদের প্রতিপালক! যাতে তারা নামায কায়েম করে। সুতরাং তুমি কিছু লোকের অন্তরকে ওদের প্রতি অনুরাগী ক’রে দাও এবং ফলাদি দ্বারা তাদের জীবিকার ব্যবস্থা কর; যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।’’ (সূরা ইব্রাহীম ৩৭)

(অতঃপর ইব্রাহীম (আঃ) চলে গেলেন।) ইসমাঈলের মা শিশুকে দুধ পান করাতেন আর নিজে ঐ মশক থেকে পানি পান করতেন। পরিশেষে ঐ মশকের পানি শেষ হয়ে গেলে তিনি নিজেও পিপাসিত হলেন এবং (ঐ কারণে বুকের দুধ শুকিয়ে যাওয়ায়) তাঁর শিশুপুত্রটিও পিপাসায় কাতর হয়ে পড়ল। তিনি শিশুর প্রতি তাকিয়ে দেখলেন, (পিপাসায়) শিশু মাটির উপর ছট্ফট্ করছে। শিশু পুত্রের (এ করুণ অবস্থার) দিকে তাকানো তার পক্ষে সহ্য হচ্ছিল না। তিনি সরে পড়লেন এবং তাঁর অবস্থান ক্ষেত্রের নিকটতম পর্বত হিসাবে ’স্বাফা’কে পেলেন। তিনি তার উপর উঠে দাঁড়িয়ে উপত্যকার দিকে মুখ ক’রে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলেন, কাউকে দেখা যায় কি না। কিন্তু তিনি কাউকে দেখতে পেলেন না। তখন স্বাফা পর্বত থেকে নেমে আসলেন। অতঃপর যখন তিনি উপত্যকায় পৌঁছলেন, তখন আপন পিরানের (ম্যাঙির) নিচের দিক তুলে একজন শ্রান্তকস্নান্ত মানুষের মত দৌড়ে উপত্যকা পার হলেন। অতঃপর ’মারওয়া’ পাহাড়ে এসে তার উপরে উঠে দাঁড়ালেন। অতঃপর চারিদিকে দৃষ্টিপাত ক’রে কাউকে দেখার চেষ্টা করলেন। কিন্তু কাউকে দেখতে পেলেন না। (এইভাবে তিনি পাহাড়দ্বয়ের মাঝখানে) সাতবার (আসা-যাওয়া) করলেন। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’এ কারণে (হজ্জের সময়) হাজীগণের এই পাহাড়দ্বয়ের মধ্যে সাতবার সায়ী বা দৌড়াদৌড়ি করতে হয়।’’

এভাবে শেষবার যখন তিনি মারওয়া পাহাড়ের উপর উঠলেন, তখন একটি আওয়াজ শুনতে পেলেন। তখন তিনি নিজেকেই বললেন, ’চুপ!’ অতঃপর তিনি কান খাড়া ক’রে ঐ আওয়াজ শুনতে লাগলেন। আবারও সেই আওয়ায শুনতে পেলেন। তখন তিনি বললেন, ’তোমার আওয়াজ তো শুনতে পেলাম। এখন যদি তোমার কাছে সাহায্যের কিছু থাকে, তবে আমাকে সাহায্য কর।’ হঠাৎ তিনি যমযম যেখানে অবস্থিত সেখানে ( জিবরীল) ফিরিশতাকে দেখতে পেলেন। ফিরিশতা তাঁর পায়ের গোড়ালি দিয়ে অথবা নিজ ডানা দিয়ে আঘাত করলেন। ফলে (আঘাতের স্থান থেকে) পানি প্রকাশ পেল। হাজেরা এর চার পাশে নিজ হাত দ্বারা বাঁধ দিয়ে তাকে হওযের রূপদান করলেন এবং অঞ্জলি ভরে তার মশকটিতে পানি ভরতে লাগলেন। হাজেরার ভরা শেষ হলেও পানি উথলে উঠতে থাকল।

ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’আল্লাহ ইসমাঈলের মায়ের উপর করুণা বর্ষণ করুন। যদি তিনি যমযমকে (বাঁধ না দিয়ে ঐভাবে) ছেড়ে দিতেন। অথবা যদি তিনি অঞ্জলি দিয়ে মশক না ভরতেন, তবে যমযম (কূপ না হয়ে) একটি প্রবহমান ঝর্ণা হত।’’

বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর হাজেরা নিজে পানি পান করলেন এবং শিশু পুত্রকেও দুধ পান করালেন। তখন ফিরিশতা তাঁকে বললেন, ’ধ্বংসের কোন আশংকা করবেন না। কেননা, এখানেই মহান আল্লাহর ঘর রয়েছে। এই শিশু তার পিতার সাথে মিলে এটি পুনর্নির্মাণ করবেন। আর আল্লাহ তাঁর খাস লোককে ধ্বংস করেন না।’ ঐ সময় বায়তুল্লাহ (আল্লাহর ঘরের পরিত্যক্ত স্থানটি) যমীন থেকে টিলার মত উঁচু হয়ে ছিল। স্রোতের পানি এলে তার ডান-বাম দিয়ে বয়ে যেত।

হাজেরা এইভাবে দিন যাপন করছিলেন। শেষ পর্যন্ত জুরহুম গোত্রের কিছু লোক ’কাদা’ নামক স্থানের পথ বেয়ে পার হয়ে যাচ্ছিল। তারা মক্কার নীচু ভূমিতে অবতরণ করল এবং দেখতে পেল কতকগুলো পাখী চক্রাকারে উড়ছে। তখন তারা বলল, ’নিশ্চয় এই পাখিগুলি পানির উপরই ঘুরছে। অথচ আমরা এ ময়দানে বহুকাল কাটিয়েছি। কিন্তু কখনো এখানে কোন পানি দেখিনি।’ অতঃপর তারা একজন বা দু’জন দূত সেখানে পাঠাল। তারা গিয়েই পানি দেখতে পেল। ফিরে এসে সবাইকে পানির খবর দিল। খবর পেয়ে সবাই সেদিকে এসে দেখল, ইসমাঈলের মা পানির নিকট বসে আছেন। তারা তাঁকে বলল, ’আমরা আপনার নিকটবর্তী স্থানে বসবাস করতে চাই। আপনি আমাদেরকে অনুমতি দেবেন কি?’ তিনি উত্তরে বললেন, ’হ্যাঁ। তবে এ পানির উপর তোমাদের কোন স্বত্বাধিকার থাকবে না।’ তারা বলল, ’ঠিক আছে।’

ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’এ ঘটনা ইসমাঈলের মায়ের জন্য এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দিল। যেহেতু তিনি তো সঙ্গী-সাথীই চাচ্ছিলেন। সুতরাং তারা তাদের পরিবার-পরিজনের কাছেও খবর পাঠাল। তারাও এসে তাদের সাথে বসবাস করতে লাগল। শেষ পর্যন্ত সেখানে তাদের অনেক ঘর-বাড়ি হল। ইসমাঈলও বড় হলেন। তাদের নিকট থেকে (তাদের ভাষা) আরবী শিখলেন। বড় হলে তারা তাঁকে পছন্দ করল এবং তাঁর প্রতি মুগ্ধ হল। অতঃপর তিনি যৌবনপ্রাপ্ত হলে তারা তাদেরই এক মেয়ের সঙ্গে তাঁর বিবাহ দিলেন। এরপর ইসমাঈলের মা মৃত্যুবরণ করলেন।

ইসমাঈলের বিবাহের পর ইব্রাহীম (আঃ) তাঁর পরিত্যক্ত পরিজনকে দেখার জন্য এখানে এলেন। কিন্তু এসে ইসমাঈলকে পেলেন না। পরে তাঁর স্ত্রীর নিকট তাঁর সম্পর্কে জানতে চাইলেন। স্ত্রী বললেন, ’তিনি আমাদের রুযীর সন্ধানে বেরিয়ে গেছেন।’ এক বর্ণনা অনুযায়ী -’আমাদের জন্য শিকার করতে গেছেন।’ আবার তিনি পুত্রবধূর কাছে তাঁদের জীবনযাত্রা ও অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলেন। বধূ বললেন, ’আমরা অতিশয় দুর্দশা, দুরবস্থা, টানাটানি এবং ভীষণ কষ্টের মধ্যে আছি।’ তিনি ইব্রাহীম (আঃ)-এর নিকট নানা অভিযোগ করলেন। তিনি তাঁর পুত্রবধূকে বললেন, ’তোমার স্বামী বাড়ি এলে তাঁকে আমার সালাম জানাবে এবং বলবে, সে যেন তার ঘরের দরজার চৌকাঠ বদলে নেয়।’ এই বলে তিনি চলে গেলেন।

ইসমাঈল যখন বাড়ি ফিরে এলেন, তখন তিনি ইব্রাহীমের আগমন সম্পর্কে একটা কিছু ইঙ্গিত পেয়ে স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন, ’তোমাদের নিকট কেউ কি এসেছিলেন?’ স্ত্রী বললেন, ’হ্যাঁ, এই এই আকৃতির একজন বয়স্ক লোক এসেছিলেন। আপনার সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞেস করছিলেন। আমি তাঁকে আপনার খবর দিলাম। পুনরায় আমাকে আমাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে আমি তাuঁক জানালাম যে, আমরা খুবই দুঃখকষ্ট ও অভাবে আছি।’ ইসমাঈল বললেন, ’তিনি তোমাকে কোন কিছু অসিয়ত ক’রে গেছেন কি?’ স্ত্রী জানালেন, ’হ্যাঁ, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়ে গেছেন, আপনাকে তার সালাম পৌঁছাতে এবং আরো বলেছেন, আপনি যেন আপনার দরজার চৌকাঠ বদলে ফেলেন।’ ইসমাঈল (আঃ) বললেন, ’তিনি ছিলেন আমার পিতা এবং তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়ে গেছেন, যেন তোমাকে আমি তালাক দিয়ে দিই। কাজেই তুমি তোমার বাপের বাড়ি চলে যাও।’

সুতরাং ইসমাঈল (আঃ) তাঁকে তালাক দিয়ে দিলেন এবং ’জুরহুম’ গোত্রের অন্য একটি মেয়েকে বিবাহ করলেন। অতঃপর যতদিন আল্লাহ চাইলেন ইব্রাহীম (আঃ) ততদিন এঁদের থেকে দূরে থাকলেন। পরে আবার দেখতে এলেন। কিন্তু ইসমাঈল (আঃ) সেদিনও বাড়িতে ছিলেন না। তিনি পুত্রবধূর ঘরে প্রবেশ করলেন এবং ইসমাঈল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। স্ত্রী জানালেন তিনি আমাদের খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে গেছেন। ইব্রাহীম (আঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, ’তোমরা কেমন আছ?’ তিনি তাঁর নিকট তাঁদের জীবনযাত্রা ও সাংসারিক অবস্থা সম্পর্কেও জানতে চাইলেন? পুত্রবধূ উত্তরে বললেন, ’আমরা ভাল অবস্থায় এবং সচ্ছলতার মধ্যে আছি।’ এ বলে তিনি আল্লাহর প্রশংসাও করলেন। ইব্রাহীম (আঃ) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ’তোমাদের প্রধান খাদ্য কী?’ পুত্রবধূ উত্তরে বললেন, ’মাংস।’ বললেন, ’তোমাদের পানীয় কী?’ বধূ বললেন, ’পানি।’ ইব্রাহীম (আঃ) দু’আ করলেন, ’হে আল্লাহ! এদের মাংস ও পানিতে বরকত দাও।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ’’ঐ সময় তাদের এলাকায় খাদ্যশস্য উৎপন্ন হত না। যদি হত, তাহলে ইব্রাহীম (আঃ) সে ব্যাপারে তাঁদের জন্য দু’আ ক’রে যেতেন।’’

বর্ণনাকারী বলেন, মক্কার বাইরে কোন লোকই শুধু মাংস এবং পানি দ্বারা জীবন-যাপন করতে পারে না। কেননা, শুধু মাংস ও পানি (সর্বদা) তার স্বাস্থ্যের অনুকূল হতে পারে না।

আলাপ শেষে ইব্রাহীম (আঃ) পুত্রবধূকে বললেন, ’তোমার স্বামীকে আমার সালাম বলবে এবং তাকে আমার পক্ষ থেকে হুকুম করবে, সে যেন তার দরজার চৌকাঠ বহাল রাখে।’

অন্য এক বর্ণনায় আছে, ইব্রাহীম (আঃ) এসে বললেন, ’ইসমাঈল কোথায়?’ পুত্রবধূ বললেন, ’তিনি শিকার করতে গেছেন।’ অতঃপর তিনি বললেন, ’আপনি কি নামবেন না, কিছু পানাহার করবেন না।’ তিনি বললেন, ’তোমাদের খাদ্য ও পানীয় কী?’ বধূ বললেন, ’আমাদের খাদ্য মাংস এবং পানীয় পানি।’ তিনি দু’আ দিয়ে বললেন, ’’হে আল্লাহ! এদের গোসত ও পানিতে বরকত দাও।’’ আবুল কাসেম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ’’ইব্রাহীমের দু’আর বরকত, (মক্কায় প্রকাশ পেয়েছে)।’’

ইব্রাহীম (আঃ) বললেন, ’তোমার স্বামী এলে তাকে সালাম বলে দিয়ো এবং আদেশ করো, সে যেন তার দরজার চৌকাঠ অপরিবর্তিত রাখে।’

অতঃপর ইসমাঈল (আঃ) যখন বাড়ি এসে স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলেন, ’তোমাদের নিকট কেউ এসেছিলেন কি?’ স্ত্রী বললেন, ’হ্যাঁ, একজন সুন্দর আকৃতির বৃদ্ধ এসেছিলেন। (অতঃপর স্ত্রী তাঁর প্রশংসা করলেন ও বললেন,) তারপর তিনি আপনার সম্পর্কে জানতে চাইলেন, আমি তখন তাঁকে আপনার খবর বললাম। অতঃপর তিনি আমাদের জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলেন। আমি তাঁকে খবর দিলাম যে, আমরা ভালই আছি।’ স্বামী বললেন, ’আর তিনি তোমাকে কোন অসিয়ত করেছেন কি?’ স্ত্রী বললেন, ’তিনি আপনাকে সালাম বলেছেন এবং আপনার দরজার চৌকাঠ অপরিবর্তিত রাখার নির্দেশ দিয়ে গেছেন।’ ইসমাঈল (আঃ) তাঁর স্ত্রীকে বললেন, ’তিনি আমার আববা, আর তুমি হলে চৌকাঠ। তিনি নির্দেশ দিয়ে গেছেন, আমি যেন তোমাকে স্ত্রী হিসাবে বহাল রাখি।’

অতঃপর ইব্রাহীম (আঃ) আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী কিছুদিন তাঁদের থেকে দূরে থাকলেন। পরে আবারো তাঁদের নিকট এলেন। ইসমাঈল (আঃ) তখন যমযমের নিকটস্থ একটি বড় গাছের নীচে বসে নিজের তীর ছুলছিলেন। পিতাকে আসতে দেখে দাঁড়িয়ে তাঁর দিকে এগিয়ে গেলেন। অতঃপর উভয়ে পিতা-পুত্রের সাক্ষাৎকালীন যথাযথ আচরণ প্রদর্শন করলেন। তারপর ইব্রাহীম (আঃ) বললেন, ’হে ইসমাঈল! আল্লাহ আমাকে একটি কাজের হুকুম দিয়েছেন।’ ইসমাঈল (আঃ) বললেন, ’আপনার প্রতিপালক যা আদেশ দিয়েছেন, তা সম্পাদন ক’রে ফেলুন।’ ইব্রাহীম (আঃ) বললেন, ’তুমি আমার সহযোগিতা করবে কি?’ ইসমাঈল (আঃ) বললেন, ’(হ্যাঁ, অবশ্যই) আমি আপনার সহযোগিতা করব।’ ইব্রাহীম (আঃ) পার্শ্ববর্তী যমীনের তুলনায় উঁচু একটি টিলার দিকে ইঙ্গিত ক’রে বললেন, ’এখানে একটি ঘর বানাতে আল্লাহ আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন।’

অতঃপর ইব্রাহীম (আঃ) কা’বা ঘরের ভিত উঠাতে লেগে গেলেন। পুত্র ইসমাঈল (আঃ) তাঁকে পাথর যোগান দিতে থাকলেন। আর তিনি দেওয়াল গাঁথতে লাগলেন। অতঃপর যখন দেওয়াল উঁচু হল, তখন ইসমাঈল এই পাথর (মাক্বামে ইব্রাহীম) নিয়ে এসে তাঁর সামনে রাখলেন। তিনি তার উপর খাড়া হয়ে পাথর গাঁথতে লাগলেন। আর ইসমাঈল (আঃ) তাঁকে পাথর তুলে দিতে থাকলেন। সেই সময় উভয়েই এই দু’আ করতে থাকলেন ’হে আমাদের মহান প্রতিপালক! আমাদের নিকট থেকে এ কাজটুকু গ্রহণ কর। নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞাতা।’ (সূরা বাক্বারাহ ১২৭)

অন্য এক বর্ণনায় আছে, ইব্রাহীম ইসমাঈল ও তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে বের হলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিল একটি মশক; তাতে পানি ছিল। ঈসমাঈলের মা সেই পানি পান করতেন ও তাতেই তাঁর শিশুর জন্য দুধ জমে উঠত। পরিশেষে মক্কায় পৌঁছে ইব্রাহীম তাঁদেরকে বড় গাছের নিচে রেখে নিজ (অন্যান্য) পরিজনের নিকট ফিরে যেতে লাগলেন। ইসমাঈলের মা তাঁর পিছন ধরলেন। অতঃপর যখন তাঁরা কাদা’ নামক স্থানে উপস্থিত হলেন, তখন তিনি তাঁর পিছন থেকে ডাক দিলেন, ’হে ইব্রাহীম! আপনি আমাদেরকে কার ভরসায় ছেড়ে যাচ্ছেন?’ তিনি বললেন, ’আল্লাহর ভরসায়।’ (হাজেরা) বললেন, ’আল্লাহকে নিয়ে আমি সন্তুষ্ট।’ তারপর তিনি ফিরে এলেন। তিনি সেই পানি পান করতে লাগলেন ও তাতেই তাঁর শিশুর জন্য দুধ জমে উঠতে লাগল। অবশেষে যখন পানি শেষ হয়ে গেল, তখন তিনি (মনে মনে) বললেন, ’অন্যত্র গিয়ে দেখি, যদি কারো সন্ধান পাই।’

বর্ণনাকারী বলেন, ’’সুতরাং তিনি গিয়ে স্বাফা পর্বতে চড়লেন। অতঃপর তিনি চারিদিকে নজর ফিরিয়ে দেখতে লাগলেন, কেউ কোথাও আছে কি না? কিন্তু কেউ কোথাও আছে বলে তিনি অনুভব করলেন না। অতএব (স্বাফা থেকে নেমে অন্যত্র হাঁটতে লাগলেন এবং) যখন উপত্যকায় এসে পৌঁছলেন, তখন ছুটতে লাগলেন। অতঃপর মারওয়াতে এসে পৌঁছলেন। এইভাবে তিনি কয়েক চক্র করলেন। তারপর (মনে মনে) বললেন, ’গিয়ে দেখি আবার ছেলে কী করছে?’ সুতরাং তিনি গিয়ে দেখলেন, সে পূর্বের অবস্থায় আছে। সে যেন মৃত্যুযন্ত্রণায় ছট্ফট্ করছে। তা দেখে তিনি অস্থির হয়ে উঠলেন। তিনি (মনে মনে) বললেন, ’গিয়ে দেখি, যদি কারো সন্ধান পাই।’ সুতরাং তিনি গিয়ে স্বাফা পর্বতে চড়লেন। অতঃপর তিনি চারিদিকে নজর ফিরিয়ে দেখতে লাগলেন, কেউ কোথাও আছে কি না? কিন্তু কেউ কোথাও আছে বলে তিনি অনুভব করলেন না। এইভাবে তিনি সাতবার (আসা-যাওয়া) পূর্ণ করলেন। তারপর (মনে মনে) বললেন, ’গিয়ে দেখি আবার ছেলে কী করছে?’ এমন সময় এক (গায়বী) আওয়াজ শুনলেন। তিনি বললেন, ’আপনার নিকট যদি কোন মঙ্গল থাকে, তাহলে আমাদেরকে সাহায্য করুন।’ দেখলেন, তিনি জিবরীল (আঃ)। তিনি তাঁর পায়ের গোড়ালি দ্বারা এইভাবে আঘাত করলেন। আর অমনি পানির ঝর্ণাধারা বের হয়ে এল। তা দেখে ইসমাঈলের মা বিস্ময়াবিষ্টা হলেন এবং অঞ্জলি ভরে মশকে ভরতে লাগলেন----।’’ অতঃপর বর্ণনাকারী বাকী দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করলেন। (এ সকল বর্ণনাগুলি বুখারীর ৩৩৬৪-৩৩৬৫)

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا، قَالَ: جَاءَ إِبرَاهِيمُ ﷺ بِأُمِّ إِسْمَاعِيلَ وَبِابْنِهَا إِسْمَاعِيل وَهِيَ تُرْضِعُهُ حَتّٰـى وَضَعهَا عِنْدَ البَيْتِ عِنْدَ دَوْحَةٍ فَوقَ زَمْزَمَ فِي أَعْلَى المَسْجِدِ، وَلَيْسَ بِمَكَّةَ يَوْمَئِذٍ أَحَدٌ وَلَيْسَ بِهَا مَاءٌ فَوَضَعَهُمَا هُنَاكَ وَوَضَعَ عِنْدَهُمَا جِرَاباً فِيهِ تَمْرٌ وَسِقَاءً فِيهِ مَاءٌ ثُمَّ قَفَّى إِبْرَاهِيمُ مُنْطَلِقاً فَتَبِعَتْهُ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ فَقَالَتْ : يَا إِبْرَاهِيمُ أَيْنَ تَذْهَبُ وَتَتْرُكُنَا بِهٰذَا الوَادِي الَّذِي لَيْسَ فِيهِ أَنِيسٌ وَلاَ شَيْءٌ ؟ فَقَالَتْ لَهُ ذٰلِكَ مِرَاراً وَجَعَلَ لاَ يَلْتَفِتُ إِلَيْهَا قَالَتْ لَهُ : آللهُ أَمَرَكَ بِهٰذَا ؟ قَالَ : نَعَمْ قَالَتْ : إِذاً لاَ يُضَيِّعُنَا ؛ ثُمَّ رَجَعَتْ فَانْطَلَقَ إِبْرَاهِيمُ ﷺ حَتّٰـى إِذَا كَانَ عِنْدَ الثَّنِيَّةِ حَيْثُ لاَ يَرَونَهُ اسْتَقْبَلَ بِوَجْهِهِ البَيْتَ ثُمَّ دَعَا بِهَؤُلاَءِ الدَّعَوَاتِ فَرَفَعَ يَدَيْهِ فَقَالَ رَبِّ إنِّي أَسْكَنْتُ مِنْ ذُرِّيَّتِي بِوَادٍ غَيْرِ ذِي زَرْعٍ حَتّٰـى بَلَغَ يَشْكُرُونَ إبراهيم : وَجَعَلَتْ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ تُرْضِعُ إِسْمَاعِيلَ وَتَشْرَبُ مِنْ ذٰلِكَ المَاءِ حَتّٰـى إِذَا نَفِدَ مَا فِي السِّقَاءِ عَطِشَتْ، وَعَطِشَ ابْنُهَا وَجَعَلَتْ تَنْظُرُ إِلَيْهِ يَتَلَوَّى - أَوْ قَالَ يَتَلَبَّطُ - فَانْطَلَقَتْ كَرَاهِيَةَ أَنْ تَنْظُرَ إِلَيْهِ فَوَجَدَتِ الصَّفَا أَقْرَبَ جَبَلٍ فِي الأرْضِ يَلِيهَا فَقَامَتْ عَلَيْهِ ثُمَّ اسْتَقْبَلَتِ الوَادِي تَنْظُرُ هَلْ تَرَى أَحَداً ؟ فَلَمْ تَرَ أَحَداً فَهَبَطَتْ مِنَ الصَّفَا حَتّٰـى إِذَا بَلَغَتِ الوَادِي رَفَعَت طَرفَ دِرْعِهَا ثُمَّ سَعَتْ سَعْيَ الإنْسَانِ المَجْهُودِ حَتّٰـى جَاوَزَتِ الوَادِي ثُمَّ أَتَتِ المَرْوَةَ فَقَامَتْ عَلَيْهَا فَنَظَرَتْ هَلْ تَرَى أَحَداً ؟ فَلَمْ تَرَ أَحَداً فَفَعَلَتْ ذٰلِكَ سَبْعَ مَرَّاتٍ قَالَ ابنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا : قَالَ النَّبِيُّ ﷺ فَلِذٰلِكَ سَعْيُ النَّاسِ بَيْنَهُمَا فَلَمَّا أَشْرَفَتْ عَلَى المَرْوَةِ سَمِعَتْ صَوْتاً فَقَالَتْ : صَهْ – تُريدُ نَفْسَهَا – ثُمَّ تَسَمَّعَتْ فَسَمِعَتْ أَيضاً فَقَالَتْ : قَدْ أَسْمَعْتَ إنْ كَانَ عِنْدَكَ غَوَاثٌ فَإِذَا هِيَ بِالمَلَكِ عِنْدَ مَوْضِعِ زَمْزَمَ فَبَحَثَ بِعَقِبِهِ – أَوْ قَالَ بِجَنَاحِهِ – حَتّٰـى ظَهَرَ المَاءُ فَجَعَلَتْ تُحَوِّضُهُ وَتَقُولُ بِيَدِهَا هَكَذَا وَجَعَلَتْ تَغْرِفُ مِنَ المَاءِ فِي سِقَائِهَا وَهُوَ يَفُورُ بَعْدَ مَا تَغْرِفُ وَفِي رِوَايَةٍ : بِقَدَرِ مَا تَغْرِفُ قَالَ ابنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا : قَالَ النَّبِيُّ ﷺ رَحِمَ اللهُ أُمَّ إِسْمَاعِيلَ لَوْ تَرَكَتْ زَمْزَمَ – أَوْ قَالَ لَوْ لَمْ تَغْرِفْ مِنَ المَاءِ - لَكَانَتْ زَمْزَمُ عَيْناً مَعِيناً قَالَ : فَشَرِبَتْ وَأَرْضَعَتْ وَلَدَهَا فَقَالَ لَهَا المَلَكُ : لاَ تَخَافُوا الضَّيْعَةَ فَإِنَّ هَاهُنَا بَيْتاً للهِ يَبْنِيهِ هٰذَا الغُلاَمُ وَأَبُوهُ وَإِنَّ اللهَ لاَ يُضَيِّعُ أَهْلَهُ وَكَانَ البَيْتُ مُرْتَفِعاً مِنَ الأَرْضِ كَالرَّابِيَةِ تَأتِيهِ السُّيُولُ فَتَأخُذُ عَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ فَكَانَتْ كَذٰلِكَ حَتّٰـى مَرَّتْ بِهِمْ رُفْقَةٌ مِنْ جُرْهُمٍ أَوْ أَهْلُ بَيْتٍ مِنْ جُرْهُمٍ مُقْبِلينَ مِنْ طَرِيقِ كَدَاءَ فَنَزلُوا فِي أَسْفَلِ مَكَّةَ ؛ فَرَأَوْا طَائِراً عائِفاً فَقَالُوا : إِنَّ هٰذَا الطَّائِرَ لَيَدُورُ عَلٰى مَاءٍ، لَعَهْدُنَا بِهَذا الوَادِي وَمَا فِيهِ مَاءٌ فَأَرْسَلُوا جَرِيّاً أَوْ جَرِيَّيْنِ فَإِذَا هُمْ بِالمَاءِ فَرَجَعُوا فَأَخْبَرُوهُمْ ؛ فَأَقْبَلُوا وَأُمُّ إِسْمَاعِيلَ عِنْدَ المَاءِ فَقَالُوا : أَتَأذَنِينَ لَنَا أَنْ نَنْزِلَ عِنْدَكِ ؟ قَالَتْ : نَعَمْ، وَلَكِنْ لاَ حَقَّ لَكُمْ فِي المَاءِ، قَالُوا : نَعَمْ قَالَ ابنُ عَبَّاسٍ : قَالَ النَّبِيُّ ﷺ فَأَلْفَى ذٰلِكَ أُمَّ إِسْمَاعِيلَ وَهِيَ تُحِبُّ الأُنْسَ فَنَزَلُوا فَأَرْسَلُوا إِلٰـى أَهْلِهِمْ فَنَزَلُوا مَعَهُمْ حَتّٰـى إِذَا كَانُوا بِهَا أَهْلَ أَبْيَاتٍ وَشَبَّ الغُلاَمُ وَتَعَلَّمَ العَرَبِيَّةَ مِنْهُمْ وَأَنْفَسَهُمْ وَأَعْجَبَهُمْ حِيْنَ شَبَّ فَلَمَّا أَدْرَكَ زَوَّجُوهُ امْرَأةً مِنْهُمْ : وَمَاتَتْ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ فَجَاءَ إِبْرَاهِيمُ بَعْدَما تَزَوَّجَ إِسْمَاعِيلُ يُطَالِعُ تَرِكَتَهُ فَلَمْ يَجِدْ إِسْمَاعِيلَ ؛ فَسَأَلَ امْرَأتَهُ عَنْهُ فَقَالَتْ : خَرَجَ يَبْتَغِي لَنَا - وفي روايةٍ : يَصِيدُ لَنَا - ثُمَّ سَأَلَهَا عَنْ عَيْشِهِمْ وَهَيْئَتِهِمْ فَقَالَتْ : نَحْنُ بِشَرٍّ نَحْنُ فِي ضِيقٍ وَشِدَّةٍ ؛ وَشَكَتْ إِلَيْهِ قَالَ : فَإِذَا جَاءَ زَوْجُكِ اقْرَئِي عَلَيْهِ السَّلاَمَ وَقُولِي لَهُ يُغَيِّرْ عَتَبَةَ بَابِهِ فَلَمَّا جَاءَ إِسْمَاعِيلُ كَأَنَّهُ آنَسَ شَيْئاً فَقَالَ: هَلْ جَاءَكُمْ مِنْ أَحَدٍ ؟ قَالَتْ : نَعَمْ جَاءَنا شَيْخٌ كَذَا وَكَذَا فَسَأَلَنَا عَنْكَ فَأَخْبَرْتُهُ فَسَأَلَنِي : كَيْفَ عَيْشُنَا فَأَخْبَرْتُهُ أَنَّا في جَهْدٍ وَشِدَّةٍ قَالَ : فَهَلْ أَوْصَاكِ بِشَيءٍ ؟ قَالَتْ : نَعَمْ أَمَرَنِي أَنْ أَقْرَأَ عَلَيْكَ السَّلاَمَ وَيَقُوْلُ : غَيِّرْ عَتَبَةَ بَابِكَ قَالَ : ذَاكَ أَبِـيْ وَقَدْ أَمَرَنِي أَنْ أُفَارِقَكِ اِلْحَقِي بِأَهْلِكِ فَطَلَّقَهَا وَتَزَوَّجَ مِنْهُمْ أُخْرَى فَلَبِثَ عَنْهُمْ إِبْرَاهِيمُ مَا شَاءَ اللهُ ثُمَّ أَتَاهُمْ بَعْدُ فَلَمْ يَجِدْهُ فَدَخَلَ عَلٰى امْرَأتِهِ فَسَألَ عَنْهُ قَالَتْ : خَرَجَ يَبْتَغِي لَنَا قَالَ : كَيفَ أنْتُمْ ؟ وَسَأَلَهَا عَنْ عَيْشِهِمْ وَهَيْئَتِهِمْ فَقَالَتْ : نَحْنُ بِخَيرٍ وَسَعَةٍ وَأَثْنَتْ عَلَى اللهِ فَقَالَ : مَا طَعَامُكُمْ ؟ قَالَتْ : اللَّحْمُ قَالَ : فمَا شَرَابُكُمْ ؟ قَالَت : الماءُ قَالَ : اللَّهُمَّ بَارِكْ لَهُمْ فِي اللَّحْمِ وَالمَاءِ قَالَ النَّبيُّ ﷺ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ يَوْمَئِذٍ حَبٌّ وَلَوْ كَانَ لَهُمْ دَعَا لَهُمْ فِيهِ، قَالَ : فَهُمَا لاَ يَخْلُو عَلَيْهِمَا أَحَدٌ بِغَيْرِ مَكَّةَ إِلاَّ لَمْ يُوَافِقَاهُ
وَفِي رواية : فَجَاءَ فَقَالَ : أَيْنَ إِسْمَاعِيلُ ؟ فَقَالَتْ امْرأتُهُ : ذَهَبَ يَصِيدُ ؛ فَقَالَتِ امْرَأتُهُ : أَلاَ تَنْزِلُ فَتَطْعَمَ وَتَشْرَبَ ؟ قَالَ : وَمَا طَعَامُكُمْ وَمَا شَرَابُكُمْ ؟ قَالَتْ : طَعَامُنَا اللَّحْمُ وَشَرَابُنَا المَاءُ، قَالَ : اللَّهُمَّ بَارِكْ لَهُمْ فِي طَعَامِهِمْ وَشَرابِهِمْ قَالَ : فَقَالَ أَبُو القَاسِمِ ﷺ بَرَكَةُ دَعوَةِ إبْرَاهِيمَ قَالَ : فَإِذَا جَاءَ زَوْجُكِ فَاقْرَئِي عَلَيْهِ السَّلاَمَ وَمُرِيِهِ يُثَبِّتُ عَتَبَةَ بَابِهِ فَلَمَّا جَاءَ إِسْمَاعِيلُ قَالَ: هَلْ أَتَاكُمْ مِنْ أَحَدٍ ؟ قَالَتْ : نَعَمْ أَتَانَا شَيْخٌ حَسَنُ الهَيْئَةِ وَأثْنَتْ عَلَيْهِ فَسَألَنِي عَنْكَ فَأَخْبَرتُهُ فَسَألَنِي كَيْفَ عَيْشُنَا فَأَخْبَرْتُهُ أَنَّا بِخَيْرٍ قَالَ : فَأَوْصَاكِ بِشَيءٍ ؟ قَالَتْ : نَعَمْ يَقْرَأُ عَلَيْكَ السَّلاَمَ وَيَأمُرُكَ أَنْ تُثَبِّتَ عَتَبَةَ بَابِكَ قَالَ : ذَاكَ أَبِـيْ وَأَنْتِ العَتَبَةُ أَمَرَنِي أَنْ أُمْسِكَكِ ثُمَّ لَبِثَ عَنْهُمَ مَا شَاءَ اللهُ ثُمَّ جَاءَ بَعدَ ذٰلِكَ وَإِسْمَاعِيلُ يَبْرِي نَبْلاً لَهُ تَحْتَ دَوْحَةٍ قَريباً مِنْ زَمْزَمَ فَلَمَّا رَآهُ قَامَ إِلَيْهِ فَصَنَعَا كَمَا يَصْنَعُ الوَالِدُ بِالوَلَدِ وَالوَلَدُ بِالوَالدِ قَالَ : يَا إِسْمَاعِيلُ إِنَّ اللهَ أَمَرَنِي بِأَمْرٍ قَالَ : فَاصْنَعْ مَا أمَرَكَ رَبُّكَ ؟ قالَ : وَتُعِينُنِي قَالَ : وَأُعِينُكَ قَالَ : فَإِنَّ اللهَ أَمَرَنِي أَنْ أَبْنِي بَيْتاً هَاهُنَا وَأَشَارَ إِلٰـى أَكَمَةٍ مُرْتَفِعَةٍ عَلٰى مَا حَوْلَهَا، فَعِنْدَ ذٰلِكَ رَفَعَ القَوَاعِدَ مِنَ البَيْتِ، فَجَعَلَ إِسْمَاعِيلُ يَأتِي بِالحِجَارَةِ وَإِبْرَاهِيمُ يَبْنِي حَتّٰـى إِذَا ارْتَفَعَ البِنَاءُ، جَاءَ بِهذَا الحَجَرِ فَوَضَعَهُ لَهُ فَقَامَ عَلَيْهِ، وَهُوَ يَبْنِي وَإِسْمَاعِيلُ يُنَاوِلُهُ الحِجَارَةَ وَهُمَا يَقُولاَنِ: رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّا إِنَّكَ أنْتَ السَّمِيعُ العَلِيمُ: وفي روايةٍ : إِنَّ إِبْرَاهِيمَ خَرَجَ بِإِسْمَاعِيلَ وَأُمِّ إِسْمَاعِيلَ، مَعَهُمْ شَنَّةٌ فِيهَا مَاءٌ فَجَعَلَتْ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ تَشْرَبُ مِنَ الشَّنَّةِ فَيَدِرُّ لَبَنُهَا عَلٰى صَبِيِّهَا حَتّٰـى قَدِمَ مَكَّةَ فَوَضَعَهَا تَحْتَ دَوْحَةٍ ثُمَّ رَجَعَ إِبْرَاهِيمُ إِلٰـى أَهْلِهِ فَاتَّبَعَتْهُ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ حَتّٰـى لَمَّا بَلَغُوا كَدَاءَ نَادَتْهُ مِنْ وَرَائِهِ : يَا إِبْرَاهِيمُ إِلٰـى مَنْ تَتْرُكُنَا ؟ قَالَ : إِلٰـى اللهِ قَالَتْ : رَضِيْتُ بِاللهِ فَرَجَعَتْ وَجَعَلَتْ تَشْرَبُ مِنَ الشِّنَّةِ وَيَدُرُّ لَبَنُهَا عَلٰى صَبِيِّهَا حَتّٰـى لَمَّا فَنِيَ المَاءُ قَالَتْ : لَوْ ذَهَبْتُ فَنَظَرْتُ لَعَلِّي أُحِسُّ أَحَداً قَالَ : فَذَهَبَتْ فَصَعِدَتِ الصَّفَا فَنَظَرَتْ وَنَظَرَتْ هَلْ تُحِسُّ أَحَداً فَلَمْ تُحِسَّ أَحَداً فَلَمَّا بَلَغَتِ الوَادِيَ سَعَتْ، وَأَتَتِ المَرْوَةَ وَفَعَلَتْ ذٰلِكَ أَشْوَاطَاً ثُمَّ قَالَتْ : لَوْ ذَهَبْتُ فَنَظَرْتُ مَا فَعَلَ الصَّبِيُّ، فَذَهَبَتْ فَنَظَرَتْ فَإِذَا هُوَ عَلٰى حَالِهِ كَأنَّهُ يَنْشَغُ لِلْمَوْتِ فَلَمْ تُقِرَّهَا نَفْسُهَا فَقَالَتْ : لَوْ ذَهَبْتُ فَنَظَرْتُ لَعَلِّي أُحِسُّ أَحَداً فَذَهَبَتْ فَصَعِدَتِ الصَّفَا فَنَظَرَتْ وَنَظَرَتْ فَلَمْ تُحِسَّ أَحَداً حَتّٰـى أَتَمَّتْ سَبْعاً، ثُمَّ قَالَتْ : لَوْ ذَهَبْتُ فَنَظَرْتُ مَا فَعَلَ فَإِذَا هِيَ بِصَوْتٍ فَقَالَتْ : أَغِثْ إِنْ كَانَ عِنْدَكَ خَيْرٌ فَإِذَا جِبْرِيلُ ﷺ فَقَالَ بِعقِبِهِ هَكَذَا وَغَمَزَ بِعَقِبِهِ عَلَى الأَرْضِ فَانْبَثَقَ المَاءُ فَدَهِشَتْ أُمُّ إِسْمَاعِيلَ، فَجَعَلَتْ تَحْفِنُ وَذَكَرَ الحَديثَ بِطُولِهِ رواه البخاري بهذه الروايات كلها

وعن ابن عباس رضي الله عنهما قال جاء ابراهيم ﷺ بام اسماعيل وبابنها اسماعيل وهي ترضعه حتى وضعها عند البيت عند دوحة فوق زمزم في اعلى المسجد وليس بمكة يومىذ احد وليس بها ماء فوضعهما هناك ووضع عندهما جرابا فيه تمر وسقاء فيه ماء ثم قفى ابراهيم منطلقا فتبعته ام اسماعيل فقالت يا ابراهيم اين تذهب وتتركنا بهذا الوادي الذي ليس فيه انيس ولا شيء فقالت له ذلك مرارا وجعل لا يلتفت اليها قالت له الله امرك بهذا قال نعم قالت اذا لا يضيعنا ثم رجعت فانطلق ابراهيم ﷺ حتى اذا كان عند الثنية حيث لا يرونه استقبل بوجهه البيت ثم دعا بهولاء الدعوات فرفع يديه فقال رب اني اسكنت من ذريتي بواد غير ذي زرع حتى بلغ يشكرون ابراهيم وجعلت ام اسماعيل ترضع اسماعيل وتشرب من ذلك الماء حتى اذا نفد ما في السقاء عطشت وعطش ابنها وجعلت تنظر اليه يتلوى او قال يتلبط فانطلقت كراهية ان تنظر اليه فوجدت الصفا اقرب جبل في الارض يليها فقامت عليه ثم استقبلت الوادي تنظر هل ترى احدا فلم تر احدا فهبطت من الصفا حتى اذا بلغت الوادي رفعت طرف درعها ثم سعت سعي الانسان المجهود حتى جاوزت الوادي ثم اتت المروة فقامت عليها فنظرت هل ترى احدا فلم تر احدا ففعلت ذلك سبع مرات قال ابن عباس رضي الله عنهما قال النبي ﷺ فلذلك سعي الناس بينهما فلما اشرفت على المروة سمعت صوتا فقالت صه تريد نفسها ثم تسمعت فسمعت ايضا فقالت قد اسمعت ان كان عندك غواث فاذا هي بالملك عند موضع زمزم فبحث بعقبه او قال بجناحه حتى ظهر الماء فجعلت تحوضه وتقول بيدها هكذا وجعلت تغرف من الماء في سقاىها وهو يفور بعد ما تغرف وفي رواية بقدر ما تغرف قال ابن عباس رضي الله عنهما قال النبي ﷺ رحم الله ام اسماعيل لو تركت زمزم او قال لو لم تغرف من الماء لكانت زمزم عينا معينا قال فشربت وارضعت ولدها فقال لها الملك لا تخافوا الضيعة فان هاهنا بيتا لله يبنيه هذا الغلام وابوه وان الله لا يضيع اهله وكان البيت مرتفعا من الارض كالرابية تاتيه السيول فتاخذ عن يمينه وعن شماله فكانت كذلك حتى مرت بهم رفقة من جرهم او اهل بيت من جرهم مقبلين من طريق كداء فنزلوا في اسفل مكة فراوا طاىرا عاىفا فقالوا ان هذا الطاىر ليدور على ماء لعهدنا بهذا الوادي وما فيه ماء فارسلوا جريا او جريين فاذا هم بالماء فرجعوا فاخبروهم فاقبلوا وام اسماعيل عند الماء فقالوا اتاذنين لنا ان ننزل عندك قالت نعم ولكن لا حق لكم في الماء قالوا نعم قال ابن عباس قال النبي ﷺ فالفى ذلك ام اسماعيل وهي تحب الانس فنزلوا فارسلوا الى اهلهم فنزلوا معهم حتى اذا كانوا بها اهل ابيات وشب الغلام وتعلم العربية منهم وانفسهم واعجبهم حين شب فلما ادرك زوجوه امراة منهم وماتت ام اسماعيل فجاء ابراهيم بعدما تزوج اسماعيل يطالع تركته فلم يجد اسماعيل فسال امراته عنه فقالت خرج يبتغي لنا وفي رواية يصيد لنا ثم سالها عن عيشهم وهيىتهم فقالت نحن بشر نحن في ضيق وشدة وشكت اليه قال فاذا جاء زوجك اقرىي عليه السلام وقولي له يغير عتبة بابه فلما جاء اسماعيل كانه انس شيىا فقال هل جاءكم من احد قالت نعم جاءنا شيخ كذا وكذا فسالنا عنك فاخبرته فسالني كيف عيشنا فاخبرته انا في جهد وشدة قال فهل اوصاك بشيء قالت نعم امرني ان اقرا عليك السلام ويقول غير عتبة بابك قال ذاك ابي وقد امرني ان افارقك الحقي باهلك فطلقها وتزوج منهم اخرى فلبث عنهم ابراهيم ما شاء الله ثم اتاهم بعد فلم يجده فدخل على امراته فسال عنه قالت خرج يبتغي لنا قال كيف انتم وسالها عن عيشهم وهيىتهم فقالت نحن بخير وسعة واثنت على الله فقال ما طعامكم قالت اللحم قال فما شرابكم قالت الماء قال اللهم بارك لهم في اللحم والماء قال النبي ﷺ ولم يكن لهم يومىذ حب ولو كان لهم دعا لهم فيه قال فهما لا يخلو عليهما احد بغير مكة الا لم يوافقاه وفي رواية فجاء فقال اين اسماعيل فقالت امراته ذهب يصيد فقالت امراته الا تنزل فتطعم وتشرب قال وما طعامكم وما شرابكم قالت طعامنا اللحم وشرابنا الماء قال اللهم بارك لهم في طعامهم وشرابهم قال فقال ابو القاسم ﷺ بركة دعوة ابراهيم قال فاذا جاء زوجك فاقرىي عليه السلام ومريه يثبت عتبة بابه فلما جاء اسماعيل قال هل اتاكم من احد قالت نعم اتانا شيخ حسن الهيىة واثنت عليه فسالني عنك فاخبرته فسالني كيف عيشنا فاخبرته انا بخير قال فاوصاك بشيء قالت نعم يقرا عليك السلام ويامرك ان تثبت عتبة بابك قال ذاك ابي وانت العتبة امرني ان امسكك ثم لبث عنهم ما شاء الله ثم جاء بعد ذلك واسماعيل يبري نبلا له تحت دوحة قريبا من زمزم فلما راه قام اليه فصنعا كما يصنع الوالد بالولد والولد بالوالد قال يا اسماعيل ان الله امرني بامر قال فاصنع ما امرك ربك قال وتعينني قال واعينك قال فان الله امرني ان ابني بيتا هاهنا واشار الى اكمة مرتفعة على ما حولها فعند ذلك رفع القواعد من البيت فجعل اسماعيل ياتي بالحجارة وابراهيم يبني حتى اذا ارتفع البناء جاء بهذا الحجر فوضعه له فقام عليه وهو يبني واسماعيل يناوله الحجارة وهما يقولان ربنا تقبل منا انك انت السميع العليم وفي رواية ان ابراهيم خرج باسماعيل وام اسماعيل معهم شنة فيها ماء فجعلت ام اسماعيل تشرب من الشنة فيدر لبنها على صبيها حتى قدم مكة فوضعها تحت دوحة ثم رجع ابراهيم الى اهله فاتبعته ام اسماعيل حتى لما بلغوا كداء نادته من وراىه يا ابراهيم الى من تتركنا قال الى الله قالت رضيت بالله فرجعت وجعلت تشرب من الشنة ويدر لبنها على صبيها حتى لما فني الماء قالت لو ذهبت فنظرت لعلي احس احدا قال فذهبت فصعدت الصفا فنظرت ونظرت هل تحس احدا فلم تحس احدا فلما بلغت الوادي سعت واتت المروة وفعلت ذلك اشواطا ثم قالت لو ذهبت فنظرت ما فعل الصبي فذهبت فنظرت فاذا هو على حاله كانه ينشغ للموت فلم تقرها نفسها فقالت لو ذهبت فنظرت لعلي احس احدا فذهبت فصعدت الصفا فنظرت ونظرت فلم تحس احدا حتى اتمت سبعا ثم قالت لو ذهبت فنظرت ما فعل فاذا هي بصوت فقالت اغث ان كان عندك خير فاذا جبريل ﷺ فقال بعقبه هكذا وغمز بعقبه على الارض فانبثق الماء فدهشت ام اسماعيل فجعلت تحفن وذكر الحديث بطوله رواه البخاري بهذه الروايات كلها

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২৫/ আম্বিয়া
২৭০৮

পরিচ্ছেদঃ সুলাইমান (আঃ) এর কথা

(২৭০৮) আবূ হুরাইরা (রাঃ) (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা ক’রে) বলেন, একদা সুলাইমান (আঃ) বললেন, ’আজ রাতে আমি অবশ্যই আমার একশ’জন স্ত্রীর সাথে মিলন করব। তাতে প্রত্যেকটি স্ত্রী একটি করে পুত্র সন্তান প্রসব করবে, যে আল্লাহর পথে জিহাদ করবে।’ ফিরিশতা বললেন, ’আপনি ইন শাআল্লাহ বলুন।’ কিন্তু তিনি ’ইন শাআল্লাহ’ বলতে ভুলে গেলেন। ফলে তিনি স্ত্রীদের সাথে সহবাস করলেন, কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র একজন একটি অর্ধাকৃতির শিশু ভূমিষ্ঠ করল। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ আছে! তিনি যদি ’ইন শাআল্লাহ’ বলতেন, তাহলে (তাঁর আশানুরূপ সন্তান জন্মগ্রহণ করত এবং) তারা সকলে অশ্বারোহী হয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করত।

عَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ عَلَيْهِمَا السَّلَام لَأَطُوفَنَّ اللَّيْلَةَ بِمِائَةِ امْرَأَةٍ تَلِدُ كُلُّ امْرَأَةٍ غُلَامًا يُقَاتِلُ فِي سَبِيلِ اللهِ فَقَالَ لَهُ الْمَلَكُ قُلْ إِنْ شَاءَ اللهُ فَلَمْ يَقُلْ وَنَسِيَ فَأَطَافَ بِهِنَّ وَلَمْ تَلِدْ مِنْهُنَّ إِلَّا امْرَأَةٌ نِصْفَ إِنْسَانٍ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ لَوْ قَالَ إِنْ شَاءَ اللهُ لَمْ يَحْنَثْ وَكَانَ أَرْجَى لِحَاجَتِهِ

عن ابي هريرة قال قال سليمان بن داود عليهما السلام لاطوفن الليلة بماىة امراة تلد كل امراة غلاما يقاتل في سبيل الله فقال له الملك قل ان شاء الله فلم يقل ونسي فاطاف بهن ولم تلد منهن الا امراة نصف انسان قال النبي ﷺ لو قال ان شاء الله لم يحنث وكان ارجى لحاجته

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২৫/ আম্বিয়া
২৭০৯

পরিচ্ছেদঃ মূসা (আঃ) এর কথা

(২৭০৯) আবূ হুরাইরা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,) মূসা (আঃ)-এর কাছে তাঁর জান কবজ করতে মালাকুল মাওত (মানুষের বেশে) এলে তিনি তাঁকে এমন এক চড় মারলেন যে, তাতে তাঁর একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেল! ফিরিশতা ফিরে গিয়ে আল্লাহকে বললেন, ’আপনি আমাকে এমন এক বান্দার জান নিতে পাঠালেন, যিনি মরতে চান না।’ আল্লাহ তাঁর চোখ ফিরিয়ে দিয়ে বললেন, ’ফিরে যাও এবং তাকে বল, সে যেন বলদের পিঠে হাত রাখে। অতঃপর তার হাত যত পরিমাণ লোম ঢেকে নেবে, তত পরিমাণ বছর সে দুনিয়ায় থাকতে পারবে।’ (সুতরাং তাই বলা হল।) মূসা (আঃ) বললেন, ’হে আমার প্রতিপালক! তারপর কী হবে?’ আল্লাহ বললেন, ’মৃত্যু।’ তখন মূসা (আঃ) বললেন, ’তাহলে এখনই (মরব)।

عَنْ أَبِـيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أُرْسِلَ مَلَكُ الْمَوْتِ إِلٰـى مُوسَى عَلَيْهِمَا السَّلَام فَلَمَّا جَاءَهُ صَكَّهُ فَرَجَعَ إِلٰـى رَبِّهِ فَقَالَ أَرْسَلْتَنِي إِلٰـى عَبْدٍ لَا يُرِيدُ الْمَوْتَ فَرَدَّ اللهُ عَلَيْهِ عَيْنَهُ وَقَالَ ارْجِعْ فَقُلْ لَهُ يَضَعُ يَدَهُ عَلٰى مَتْنِ ثَوْرٍ فَلَهُ بِكُلِّ مَا غَطَّتْ بِهِ يَدُهُ بِكُلِّ شَعْرَةٍ سَنَةٌ قَالَ أَيْ رَبِّ ثُمَّ مَاذَا قَالَ ثُمَّ الْمَوْتُ قَالَ فَالْآنَ

عن ابي هريرة رضي الله عنه قال ارسل ملك الموت الى موسى عليهما السلام فلما جاءه صكه فرجع الى ربه فقال ارسلتني الى عبد لا يريد الموت فرد الله عليه عينه وقال ارجع فقل له يضع يده على متن ثور فله بكل ما غطت به يده بكل شعرة سنة قال اي رب ثم ماذا قال ثم الموت قال فالان

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২৫/ আম্বিয়া
২৭১০

পরিচ্ছেদঃ অহীর ধরন

(২৭১০) আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, একদা হারেস বিন হিশাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন, ’আপনার নিকট কীভাবে অহী আসে?’ উত্তরে তিনি বললেন, ’’কখনো ঘন্টির শব্দের মতো আসে। আর সেটা আমার জন্য বড় কঠিন হয়। অতঃপর সেই অবস্থা দূর হয় আর আমি তা স্মৃতিস্থ করে নিই, যা ফিরিশতা বলেন। কখনো ফিরিশতা পুরুষের বেশে এসে আমার সাথে কথা বলেন। তখন তিনি যা বলেন, আমি তা স্মৃতিস্থ করে নিই।

عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ الْحَارِثَ بْنَ هِشَامٍ سَأَلَ النَّبِىَّ ﷺ كَيْفَ يَأْتِيكَ الْوَحْىُ فَقَالَ أَحْيَانًا يَأْتِينِى فِى مِثْلِ صَلْصَلَةِ الْجَرَسِ وَهُوَ أَشَدُّهُ عَلَىَّ ثُمَّ يَفْصِمُ عَنِّى وَقَدْ وَعَيْتُهُ وَأَحْيَانًا مَلَكٌ فِى مِثْلِ صُورَةِ الرَّجُلِ فَأَعِى مَا يَقُوْلُ

عن عاىشة ان الحارث بن هشام سال النبى ﷺ كيف ياتيك الوحى فقال احيانا ياتينى فى مثل صلصلة الجرس وهو اشده على ثم يفصم عنى وقد وعيته واحيانا ملك فى مثل صورة الرجل فاعى ما يقول

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২৫/ আম্বিয়া
২৭১১

পরিচ্ছেদঃ অহীর ধরন

(২৭১১) জাবের বিন আব্দুল্লাহ আনসারী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একদা আমি পথ চলছিলাম। এমতাবস্থায় আমি আকাশ থেকে একটি আওয়ায শুনি। মাথা তুলে দেখতেই সেই ফিরিশতাকে দেখতে পেলাম, যিনি হিরা গুহায় আমার নিকট এসেছিলেন। আমি আতঙ্কিত হয়ে বাড়ি ফিরলাম এবং বললাম, আমাকে কাপড় ঢাকা দাও।

عن جَابِرٍ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيِّ (أَنَّ النَّبِـيَّ ﷺ قال) بَيْنَا أَنَا أَمْشِي إِذْ سَمِعْتُ صَوْتًا مِنْ السَّمَاءِ فَرَفَعْتُ بَصَرِي فَإِذَا الْمَلَكُ الَّذِي جَاءَنِي بِحِرَاءٍ جَالِسٌ عَلٰى كُرْسِيٍّ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ فَرُعِبْتُ مِنْهُ فَرَجَعْتُ فَقُلْتُ زَمِّلُونِي

عن جابر بن عبد الله الانصاري ان النبي ﷺ قال بينا انا امشي اذ سمعت صوتا من السماء فرفعت بصري فاذا الملك الذي جاءني بحراء جالس على كرسي بين السماء والارض فرعبت منه فرجعت فقلت زملوني

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
২৫/ আম্বিয়া
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৯ পর্যন্ত, সর্বমোট ৯ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে