পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭১৫-[২৭] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পূর্ব ও পশ্চিমের মাঝখানেই ’ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)হ্ (কিবলাহ/কিবলা)’। (তিরমিযী)[1]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا بَيْنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ قِبْلَةٌ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ

عن ابي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ما بين المشرق والمغرب قبلة رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: ‘উলামাদের ভাষ্যমতে এ হাদীসটি শামবাসী (সিরিয়াবাসী) ও মদীনাহ্বাসীর জন্য খাস।

আর হাদীসটি দলীল হিসেবে প্রমাণ করে অবশ্যই ক্বিবলামুখী হওয়া তাদের জন্য যারা মনে করে পৃথিবীর কিছু কিছু প্রান্তে কা‘বার অভিমুখী হওয়ার প্রয়োজন নেই।

আপনি যদি দেশসমূহের পরিচিতি ও প্রদেশের সীমানা সম্পর্কে পারঙ্গম হন তাহলে বুঝতে পারবেন যে, মানুষের কা‘বার দিকে অভিমুখী হওয়াটা কেন্দ্র হিসেবে বৃত্তের মতো।

সুতরাং যে কা‘বাঘর হতে পশ্চিম দিকে হবে সালাতে তার ক্বিবলাহ্ (কিবলাহ/কিবলা) হবে পূর্ব দিকে। যে পূর্ব দিকে হবে তার ক্বিবলাহ্ হবে পশ্চিম দিকে। কা‘বাহ্ ঘর হতে যে উত্তর দিকে হবে তার ক্বিবলাহ্ হবে দক্ষিণে। যে দক্ষিণে হবে তার ক্বিবলাহ্ হবে উত্তরে। আর যে কা‘বাহ্ ঘর হতে পূর্ব এবং দক্ষিণের মাঝামাঝিতে অবস্থানে করবে তার ক্বিবলাহ্ হবে উত্তর ও পশ্চিমের মধ্যে। আর যে দক্ষিণ ও পশ্চিমের মধ্যে হবে তার ক্বিবলাহ্ উত্তর ও পূর্বের মধ্যবর্তী স্থানে আর যে পূর্ব ও উত্তরের মধ্য হবে তার ক্বিবলাহ্ হবে দক্ষিণ ও পশ্চিমের মধ্যবর্তীস্থানে আর যে উত্তর ও পশ্চিমে হবে তার ক্বিবলাহ্ হবে দক্ষিণ ও পূর্বের মধ্যবর্তী স্থানে।

অনেকে মনে করেন যে, ক্বিবলামুখী হওয়ার ব্যাপারে যার সন্দেহ হয় তার চেষ্টানুযায়ী সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) যে দিকেই হোক না কেন তা সহীহ বলে গণ্য হবে যেমন আল্লাহ বলেনঃ ‘‘পূর্ব-পশ্চিম আল্লাহরই। অতএব তোমরা যেদিকে মুখ ফেরাও সেদিকেই আল্লাহর চেহারা।’’ (সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ ২ : ১১৫)

কারো মতে এটা প্রযোজ্য সওয়ারীবস্থায় নফল সালাতের ক্ষেত্রে যেদিকেই মুখ হোক।

কারো মতে অসুস্থ ব্যক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট যে ক্বিবলামুখী হতে পারে না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭১৬-[২৮] ত্বলক্ব ইবনু ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আমাদের গোত্রের প্রতিনিধি হিসেবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলাম। তাঁর হাতে বায়’আত গ্রহণ করলাম। তাঁর সাথে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করলাম। এরপর আমরা তাঁর কাছে আবেদন করলাম, আমাদের এলাকায় আমাদের একটি গির্জা আছে। এটাকে আমরা এখন কী করবো? আমরা তাঁর নিকট তাঁর উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করা কিছু পানি তাবাররুক হিসেবে চাইলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পানি আনালেন, উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করলেন, কুলি করলেন এবং তা আমাদের জন্য একটি পাত্রে ঢাললেন। আমাদেরকে নির্দেশ দিয়ে বললেন, তোমরা রওনা হয়ে যাও। তোমরা যখন তোমাদের এলাকায় পৌঁছবে, তোমাদের গির্জাটিকে ভেঙ্গে ফেলবে। গির্জার জায়গায় পানি ছিটিয়ে দিবে। তারপর একে মাসজিদ বানিয়ে নিবে। আমরা আবেদন করলাম, আমাদের এলাকা অনেক দূরে। ভীষণ খরা। পানি তো শুকিয়ে যাবে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আরও পানি মিশিয়ে এ পানি বাড়িয়ে নিবে। এ পানি তার পবিত্রতা ও বারাকাত বৃদ্ধি হওয়া ছাড়া কমাবে না। (নাসায়ী)[1]

وَعَنْ طَلْقِ بْنِ عَلِيٍّ قَالَ: خَرَجْنَا وَفْدًا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَايَعْنَاهُ وَصَلَّيْنَا مَعَهُ وَأَخْبَرْنَاهُ أَنَّ بِأَرْضِنَا بِيعَةً لَنَا فَاسْتَوْهَبْنَاهُ مِنْ فَضْلِ طَهُورِهِ. فَدَعَا بِمَاءٍ فَتَوَضَّأ وتمضمض ثمَّ صبه فِي إِدَاوَةٍ وَأَمَرَنَا فَقَالَ: «اخْرُجُوا فَإِذَا أَتَيْتُمْ أَرْضَكُمْ فَاكْسِرُوا بِيعَتَكُمْ وَانْضَحُوا مَكَانَهَا بِهَذَا الْمَاءِ وَاتَّخِذُوهَا مَسْجِدًا» قُلْنَا: إِنَّ الْبَلَدَ بَعِيدٌ وَالْحَرَّ شَدِيدٌ وَالْمَاءَ يُنْشَفُ فَقَالَ: «مُدُّوهُ مِنَ الْمَاءِ فَإِنَّهُ لَا يَزِيدُهُ إِلَّا طِيبًا» . رَوَاهُ النَّسَائِيُّ

وعن طلق بن علي قال خرجنا وفدا الى رسول الله صلى الله عليه وسلم فبايعناه وصلينا معه واخبرناه ان بارضنا بيعة لنا فاستوهبناه من فضل طهوره فدعا بماء فتوضا وتمضمض ثم صبه في اداوة وامرنا فقال اخرجوا فاذا اتيتم ارضكم فاكسروا بيعتكم وانضحوا مكانها بهذا الماء واتخذوها مسجدا قلنا ان البلد بعيد والحر شديد والماء ينشف فقال مدوه من الماء فانه لا يزيده الا طيبا رواه النساىي

ব্যাখ্যা: (وَاتَّخِذُوهَا مَسْجِدًا) আর গির্জাকে মসজিদে রূপান্তর করো। এটা দলীল হিসেবে প্রমাণিত যে, গির্জাকে মাসজিদ বানানো যাবে এবং এটা ছাড়াও যে কোন উপাসনালয় ও মূর্তির ঘরও অনুরূপ মসজিদে পরিণত করা বৈধ।

আর হাদীসের ভাষ্য হতে জানা যায় যে, রসূলের উযূর অতিরিক্ত পানি বারাকাতপূর্ণ ও তা অন্য দেশে স্থানান্তর করা বৈধ যেমন যম্যমের পানি।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭১৭-[২৯] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহল্লায় মাসজিদ গড়ে তোলার, তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ও এতে সুগন্ধি ছড়াবার হুকুম দিয়েছেন। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ্)[1]

وَعَن عَائِشَة قَالَت: أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِبِنَاءِ الْمَسْجِدِ فِي الدُّورِ وَأَنْ يُنَظَّفَ وَيَطَيَّبَ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه

وعن عاىشة قالت امر رسول الله صلى الله عليه وسلم ببناء المسجد في الدور وان ينظف ويطيب رواه ابو داود والترمذي وابن ماجه

ব্যাখ্যা: দৃশ্যতঃ এখানে أَمَرَ দ্বারা উদ্দেশ্য মুস্তাহাব, ওয়াজিব উদ্দেশ্য না।

يُنَظَّفَ মাসজিদকে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখতে ইবনু মাজার বর্ণনায় ময়লা আবর্জনা হতে পরিচ্ছন্ন রাখা।

وَيُطَيَّبَ মসজিদে সুগন্ধি লাগায় মসজিদে বাখুর সুগন্ধি লাগানো বৈধ।

ইবনু আবী শায়বাতে আছে, ইবনুয্ যুবায়র যখন কা‘বাঘর সংস্কার করেন তার দেয়ালের সাথে সুগন্ধির প্রলেপ দিয়েছিলেন।

মাসজিদকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যে মুস্তাহাব তা হাদীস প্রমাণ করে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭১৮-[৩০] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে মাসজিদ বানিয়ে তা চাকচিক্যময় করে রাখার হুকুম দেয়া হয়নি। ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেন, কিন্তু দুঃখের বিষয় যেভাবে ইয়াহূদী-খৃষ্টানরা তাদের ’ইবাদাতখানাকে (স্বর্ণ-রূপা দিয়ে) চাকচিক্যময় করে রাখত তোমরাও একইভাবে তোমাদের মসজিদের শোভা বর্ধন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا أَمَرْتُ بِتَشْيِيدِ الْمَسَاجِدِ» . قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: لَتُزَخْرِفُنَّهَا كَمَا زَخْرَفَتِ الْيَهُود وَالنَّصَارَى. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابن عباس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ما امرت بتشييد المساجد قال ابن عباس لتزخرفنها كما زخرفت اليهود والنصارى رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: ইবনু রাসলান বলেন, মাসজিদসমূহ সুসজ্জিত করার অর্থ হলো ভিত্তিকে মজবুত ও উঁচু করা।

মাসজিদ সুসজ্জিত করা বৈধ যদি নাম-কাম ও যশ-সুখ্যাতির জন্য এবং লোক দেখানোর উদ্দেশ্য না হয়। যেমন- ইতোপূর্বে হাদীস গত হয়েছে, ‘উসমান (রাঃ) হতে বর্ণিত, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে মাসজিদ নির্মাণ করে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর নির্মাণ করবেন। এ হাদীসের আলোকে ‘উসমান (রাঃ) তাঁর শাসনামলে মসজিদে নাবাবীকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেছিলেন।

ইমাম খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেছেনঃ (لَتُزَخْرِفُنَّهَا) অর্থ (لتزيننها) মূলত স্বর্ণ দ্বারা সৌন্দর্য করাকে বুঝায়। আর এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো মাসজিদকে স্বর্ণ বা অনুরূপ কিছু দিয়ে সজ্জিত করা।

যেমন ‘আরবদের কথা- কোন ব্যক্তি তার কথাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করল ও তার কথায় প্রলেপ দিলো এবং তার কথাকে বাতিল দ্বারা সাজালো। যেমনভাবে ইয়াহূদী, নাসারারা সৌন্দর্য করেছে। নাসারারা তাদের মাসজিদকে সজ্জিত করছে। যখন তারা তাদের দীনের বিষয়গুলো বিকৃত করেছে এবং তাদের কিতাবের মধ্যে যে বিষয়গুলো রয়েছে তা ‘আমল করা পরিত্যাগ করেছে।

অতএব তোমরা তাদের মতো হয়ে যাবে যখন তোমরা দীনের মাধ্যমে দুনিয়া অন্বেষণ করবে এবং ‘আমলের মধ্যে ইখলাস তথা একনিষ্ঠতা পরিত্যাগ করবে। আর তোমাদের মাসজিদকে সুসজ্জিত করে সাজানো গর্ব করা এবং লোক দেখানোর জন্য হয়ে যাবে।

ক্বারী বলেনঃ মসজিদে এ ধরনের সৌন্দর্য করা বিদ্‘আত। কেননা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের কাজ করেননি এবং এ কাজগুলোর মধ্যে আহলে কিতাবের সামঞ্জস্য রয়েছে।

ইমাম বুখারী (রহঃ) তাঁর সহীহ গ্রন্থে বলেছেন, ‘উমার (রাঃ) মাসজিদ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন এবং তিনি বলেছেনঃ আমি মানুষকে বৃষ্টি থেকে রক্ষা করব এবং তুমি লাল রং এবং হলুদ রং করা থেকে সাবধান থাকবে। কারণ এর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ফিতনাহ্ (ফিতনা) সৃষ্টি হবে।

এ হাদীসটি প্রকাশ্য মু‘জিযা। কেননা এতে এমন বিষয় অবহিত করা হয়েছে যা অচিরেই সংঘটিত হবে।

অতঃপর মাসজিদ সৌন্দর্যকরণ এবং মসজিদের সৌন্দর্য নিয়ে গর্ব করা শুধু নাজ্দ শহর ছাড়া সমগ্র মুসলিম শহরে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে। অতঃপর নাজ্দবাসীদের প্রতি শান্তি এবং যারা নাজ্দে আগমন করেছে তাদের প্রতিও শান্তি।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭১৯-[৩১] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের (কিয়ামতের) আলামতসমূহের একটি হচ্ছে মানুষেরা মাসজিদ নিয়ে পরস্পর গর্ব করবে। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী, দারিমী ও ইবনু মাজাহ্)[1]

وَعَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم: «من أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يَتَبَاهَى النَّاسُ فِي الْمَسَاجِدِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَالدَّارِمِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ

وعن انس رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من اشراط الساعة ان يتباهى الناس في المساجد رواه ابو داود والنساىي والدارمي وابن ماجه

ব্যাখ্যা: মাসজিদকে নিয়ে গর্ব অহংকার করার তাৎপর্য প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের মাসজিদ নিয়ে গর্ব করে আর বলে, আমার মাসজিদ সবচেয়ে উঁচু, সৌন্দর্যময়, প্রশস্ত, চাকচিক্যময় ইত্যাদি। মানুষকে দেখানো, শুনানো ও প্রশংসা পাওয়ার উদ্দেশে।

আবূ দাঊদ এবং দারিমীতে এ শব্দ বর্ণিত হয়েছে-  لَا تَقُوْمُ السَّاعَةُ حَتّى يَتَبَاهَى النَّاسُ فِي الْمَسَاجِدِ

অর্থাৎ- ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) ততদিন পর্যন্ত সংঘটিত হবে না যতদিন পর্যন্ত মানুষ মাসজিদ নিয়ে পরস্পর গর্ব না করবে।

ইবনু খুযায়মার সহীহ গ্রন্থে এ শব্দ রয়েছে।

ياتى على الناس زمان يتبا هون بالمسجر ثم لا يعمرو نها الا قليلا

অর্থাৎ- মানুষের মাঝে এমন একটি সময় আসবে তারা মাসজিদ নিয়ে পরস্পর গর্ব করবে, কিন্তু তারা খুব কম সংখ্যকই মাসজিদ আবাদ করবে।

হাদীসের ভাবার্থের সত্যতা চলমান সময়ে পরিলক্ষিত হচ্ছে আর এটা যে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুস্পষ্ট মু‘জিযা তা’ প্রমাণিত।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭২০-[৩২] উক্ত রাবী (আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার সামনে আমার উম্মাতের সাওয়াবগুলো পেশ করা হয়, এমনকি একটি খড়-কুটার সাওয়াবও পেশ করা হয় যা একজন মানুষ মাসজিদ হতে বাইরে ফেলে দেয়। ঠিক একইভাবে আমার সামনে পেশ করা হয় আমার উম্মাতের গুনাহসমূহ। তখন আমি কারও কুরআনের একটি সূরাহ্ বা একটি আয়াত যা তাকে দেয়া হয়েছে (তারপর ভুলে গেছে, মুখস্থ করার পর তা ভুলে যাওয়া) এর চেয়ে আর কোন বড় গুনাহ আমি দেখিনি। (তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «عُرِضَتْ عَلَيَّ أُجُورُ أُمَّتِي حَتَّى الْقَذَاةُ يُخْرِجُهَا الرَّجُلُ مِنَ الْمَسْجِدِ وَعُرِضَتْ عَلَيَّ ذُنُوبُ أُمَّتِي فَلَمْ أَرَ ذَنْبًا أَعْظَمَ مِنْ سُورَةٍ مِنَ الْقُرْآنِ أَوْ آيَةٍ أُوتِيهَا رَجُلٌ ثُمَّ نَسِيَهَا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُد

وعن انس بن مالك قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم عرضت علي اجور امتي حتى القذاة يخرجها الرجل من المسجد وعرضت علي ذنوب امتي فلم ار ذنبا اعظم من سورة من القران او اية اوتيها رجل ثم نسيها رواه الترمذي وابو داود

ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীঃ (عُرِضَتْ عَلَيَّ) ‘‘আমার নিকট উপস্থাপন করা হয়েছে’’ সম্ভবত এ উপস্থাপনাটি মি‘রাজের রাতে হয়েছিল।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীঃ (أُجُوْرُ أُمَّتِىْ) তাদের ‘আমলের সাওয়াব।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণীঃ (حَتَّى الْقَذَاةُ) অর্থাৎ- কংকর পরিমাণ এবং সেটা হলো এমন জিনিস যা মাটি খড়কুটা এবং ময়লা যা সাধারণ চোখে পড়ে।

এখানে উদ্দেশ্য হলো সামান্য বস্তু যা মুসলিমদেরকে কষ্ট দেয় হোক না তা খড়কুটা বা ময়লা অথবা অন্য কোন বস্তু। কোন ব্যক্তি মাসজিদ থেকে যা কিছু বের করে যদিও তা কম হয় তবুও এ ক্ষেত্রে প্রতিদান রয়েছে। কেননা মাসজিদ থেকে কোন কিছু বের করার মধ্যে আল্লাহর ঘর পরিচ্ছন্ন করা হয়।

হাদীসের মর্মার্থ হতে বুঝা যায় যে, মসজিদে আবর্জনা বা ময়লা প্রবেশ করানো পাপ কাজের অন্তর্ভুক্ত।

গুনাহে কাবীরাহ্ (কবিরা) এর বিশ্লেষণঃ কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহের অধ্যায়ের মধ্যে অর্থাৎ- ‘‘আল্লাহর নিকট কোন গুনাহ সবচেয়ে বড় এর জবাবে শির্ককে বড় গুনাহ বলা হয়েছে।’’ এখানে সূরাকে ভুলে যাওয়া কিভাবে أَعْظَمُ الذُّنُوْبُ তথা বড় গুনাহ বলা হলো?

এর উত্তর এই যে, যদি أَعْظَمُ এবং اَكْبَرُ উভয় শব্দকে প্রতিশব্দ হিসেবে মেনে নেয়া হয় তাহলে উত্তরে বলা যাবে সূরাকে ভুলে যাওয়া أَعْظَمُ (বড় গুনাহ) বলা আহকামের দৃষ্টিতে সঠিক। তার ভুলে যাওয়াটা চেষ্টার ত্রুটির কারণে।

অথবা বলা যায় যে, ভুলে যাওয়াটা যদি কুরআনের প্রতি স্বল্প মর্যাদা বা তাকে হালকাভাবে গ্রহণ করার ভিত্তিতে না হয় তাহলে সূরাকে ভুলে যাওয়া সগীরাহ্ গুনাহের মধ্যে أَعْظَمُ

ইমাম ত্বীবী বলেন, পবিত্র কুরআনের কিছু অংশ বা সূরাহ্ মুখস্থ করার শক্তি লাভ করা আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ ছাড়া কিছুই নয়। সুতরাং সে যেন এর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। আর যখন সে তা ভুলে গেল সে নি‘আমাতের অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলো। সুতরাং এ দৃষ্টিভঙ্গিতে أَعْظَمُ جُرْمًا বড় অপরাধ।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭২১-[৩৩] বুরায়দাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিনের পূর্ণ জ্যোতির সুসংবাদ দাও তাদেরকে যারা অন্ধকারে মসজিদে যায়। (তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ بُرَيْدَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «بَشِّرِ الْمَشَّائِينَ فِي الظُّلَمِ إِلَى الْمَسَاجِدِ بِالنُّورِ التَّامِّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد

وعن بريدة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم بشر المشاىين في الظلم الى المساجد بالنور التام يوم القيامة رواه الترمذي وابو داود

ব্যাখ্যা: ‘অন্ধকার রাত্রে’ হাদীসের ভাষ্যমতে ‘ইশা ও ফাজরের (ফজরের) সালাত উদ্দেশ্য। কেননা এ দু’টি সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) অন্ধকারে অনুষ্ঠিত হয়।

نُّوْرٌِ আলো, আলোর বৈশিষ্ট্য পরিপূর্ণভাবে। আর এটা নির্ধারিত ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিনের সাথে যেদিন মু’মিনদের চেহারাগুলো আলোয় চমকাবে। ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিনে আল্লাহর বাণীঃ

نُورُهُمْ يَسْعى بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَبِأَيْمَانِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا أَتْمِمْ لَنَا نُوْرَنَا

‘‘তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানদিকে ছুটোছুটি করবে; তারা বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের নূরকে পূর্ণ করে দিন।’’ (সূরাহ্ আত্ তাহরীম ৬৬ : ৮)

আর মুনাফিক্বদের অবস্থা। আল্লাহ বলেনঃ

يَوْمَ يَقُولُ الْمُنَافِقُونَ وَالْمُنَافِقَاتُ لِلَّذِيْنَ امَنُوا انْظُرُوْنَا نَقْتَبِسْ مِنْ نُورِكُمْ

‘‘যেদিন কপট বিশ্বাসী পুরুষ ও কপট বিশ্বাসিনী নারীরা মু’মিনদেরকে বলবেঃ তোমরা আমাদের জন্য অপেক্ষা করো আমরাও কিছু আলো নিব তোমাদের জ্যোতি হতে।’’ (সূরাহ্ আল হাদীদ ৫৭ : ১৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭২২-[৩৪] ইবনু মাজাহ্ সাহল ইবনু সা’দ ও আনাস (রাঃ) হতে।[1]

وَرَوَاهُ ابْنُ مَاجَهْ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ وَأنس

ورواه ابن ماجه عن سهل بن سعد وانس

ব্যাখ্যা: যে ব্যক্তি মসজিদের যত্ন নেয়, দেখা-শুনা করে, মাসজিদ নির্মাণ করে অথবা সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) প্রতিষ্ঠা ও জামা‘আতের জন্য মসজিদে যাওয়া-আসা করে তার ঈমানের ব্যাপারে তোমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করবে। এখানে সাক্ষ্য দ্বারা নিশ্চয়তাজ্ঞাপক এমন কথা উদ্দেশ্য যা অন্তরের গভীর থেকে বের হয়। তবে বুখারী, মুসলিমে বর্ণিত সা‘দ (রাঃ)-এর হাদীসটি সন্দেহের সৃষ্টি করে। হাদীসটি হলো, সা‘দ (রাঃ) কোন ব্যক্তি সম্পর্কে বলেন, ‘‘সে মু’মিন (বিশ্বাসী)’’। এ কথা শুনে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘অথবা মুসলিম (আত্মসমর্পণকারী)’’ এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কাউকে ঈমানের ব্যাপারে দৃঢ়তাসূচক সাক্ষ্য দেয়া নিষেধ। তবে তার বাহ্যিক ইসলামী কার্যকলাপ দেখে মুসলিম বলার সুযোগ থাকেই। তাই এখানে ঈমান দ্বারা ইসলাম উদ্দেশ্য হতে পারে। সঠিক কথা হলো, এখানে সাক্ষ্য দ্বারা উদ্দেশ্য হলো বিশ্বাস ও বাহ্যিক ‘আমল। আল্লাহর বাণীঃ ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহর ঘর মাসজিদসমূহ আবাদ করে, অর্থাৎ- নির্মাণ করে অথবা তা সংস্কার করে কিংবা ‘ইবাদাত ও শিক্ষা কার্যক্রমের দ্বারা মাসজিদকে জীবিত রাখে, সেই যে আল্লাহর প্রতি এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে।’’ (সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ ৯ : ১৯)

এ আয়াত يَعْمُرُ ‘‘আবাদ করে’’। এর ব্যাখ্যায় ‘আল্লামা যামাখশারী তার তাফসীর গ্রন্থ আল-কাশশাফে লিখেছেন, মাসজিদ আ‘বাদ করা অর্থ হচ্ছে, মসজিদে ঝাড়ু দেয়া, পরিষ্কার করা, বাতি দ্বারা আলোকিত করা, মাসজিদকে সম্মান করা, মসজিদে ‘ইবাদাত ও যিকিরের (জিকিরের) অভ্যাস করা এবং মসজিদে পার্থিব অতিরিক্ত অনর্থক কথাবার্তা থেকে সুরক্ষা করা যার জন্য একে তৈরি করা হয়নি।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭২৩-[৩৫] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কাউকে তোমরা যখন নিয়মিত মসজিদে যাতায়াত করতে দেখবে তখন তার ঈমান আছে বলে সাক্ষ্য দিবে। কারণ আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ ’’আল্লাহর ঘর মাসজিদসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ করে সেই ব্যক্তি যে আল্লাহর ওপর ও পরকালের ওপর ঈমান এনেছে’’- (সূরাহ্ আত্ তওবা্ ৯: ১৮)। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ্ ও দারিমী)[1]

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا رَأَيْتُمُ الرَّجُلَ يَتَعَاهَدُ الْمَسْجِد فَاشْهَدُوا لَهُ بِالْإِيمَان فَإِن الله تَعَالَى يَقُولُ (إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللَّهِ مَنْ آمَنَ بِاللَّه وَالْيَوْم الآخر وَأقَام الصَّلَاة وَآتى الزَّكَاة)
رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه والدارمي

عن ابي سعيد قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا رايتم الرجل يتعاهد المسجد فاشهدوا له بالايمان فان الله تعالى يقول انما يعمر مساجد الله من امن بالله واليوم الاخر واقام الصلاة واتى الزكاةرواه الترمذي وابن ماجه والدارمي

হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭২৪-[৩৬] ’উসমান ইবনু মায্’ঊন (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে খাসি হয়ে যাবার অনুমতি দিন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, সেই লোক আমাদের মধ্যে নেই, যে কাউকে খাসি করে অথবা নিজে খাসি হয়। বরং আমার উম্মাতের খাসি হওয়া হলো সিয়াম পালন করা। ’উসমান (রাঃ) আবেদন করলেন, তাহলে আমাকে ভ্রমণ করার অনুমতি দিন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, আমার উম্মাতের ভ্রমণ হলো আল্লাহর পথে জিহাদে যাওয়া। তারপর ’উসমান (রাঃ) বললেন, তাহলে আমাকে বৈরাগ্য অবলম্বন করার অনুমতি দিন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার উম্মাতের বৈরাগ্য হচ্ছে সালাতের অপেক্ষায় মসজিদে বসে থাকা। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]

وَعَن عُثْمَان بن مَظْعُون قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ ائْذَنْ لَنَا فِي الِاخْتِصَاءِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيْسَ مِنَّا مَنْ خَصَى وَلَا اخْتَصَى إِنَّ خِصَاءَ أُمَّتِي الصِّيَامُ» . فَقَالَ ائْذَنْ لَنَا فِي السِّيَاحَةِ. فَقَالَ: «إِنْ سِيَاحَةَ أُمَّتَيِ الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ» . فَقَالَ: ائْذَنْ لَنَا فِي التَّرَهُّبِ. فَقَالَ: «إِن ترهب أمتِي الْجُلُوس فِي الْمَسَاجِد انتظارا للصَّلَاة» . رَوَاهُ فِي شرح السّنة

وعن عثمان بن مظعون قال يا رسول الله اىذن لنا في الاختصاء فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم ليس منا من خصى ولا اختصى ان خصاء امتي الصيام فقال اىذن لنا في السياحة فقال ان سياحة امتي الجهاد في سبيل الله فقال اىذن لنا في الترهب فقال ان ترهب امتي الجلوس في المساجد انتظارا للصلاة رواه في شرح السنة

ব্যাখ্যা: ‘উসমান (রাঃ) নারীদের প্রতি কামনা দূরীকরণে খোজা হওয়ার অনুমতি চেয়েছিল। (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন) আমাদের সুন্নাতের যারা অনুসরণ করে এবং আমাদের শার‘ঈ তরীকা (পদ্ধতি) দ্বারা হিদায়াত লাভ করতে যারা চায় সে তাদের বাইরে যে অন্যকে খোজা করায় অথবা নিজে খোজা হয়। ইবনু হাজার বলেন, এ দু’টি কর্মই হারাম। কামনা রহিতের জন্য বেশী করে সওম পালন করতে বলা হয়েছে। কেননা সওম কাম-বাসনা এবং এর অনিষ্টতাকে নষ্ট করে। যেমন- রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘হে যুব সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যে বিবাহ করার সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিবাহ করে। আর যে বিবাহ করতে সক্ষম নয় সে সওম পালন করবে। এটাই তার জন্য ঢাল।’’

‘উসমান (রাঃ) ভ্রমণ করার অনুমতি প্রার্থনা করেন। এখানে ভ্রমণ (اَلسَّيَاحَةُ) দ্বারা নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যাত্রা করা, যেমন বানী ইসরাঈলের ‘ইবাদাতগুজার বান্দারা করেছিল বুঝাবে। আল্লাহর রাস্তায় জিহাদে যাওয়াকে ভ্রমণের সমতুল্য করা হয়েছে। এটাই সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ। আর এটা খুবই কষ্টকর ‘ইবাদাত। এটা বড় জিহাদ ও ছোট জিহাদকে শামিল করে।

‘উসমান (রাঃ) আবার বৈরাগ্যবাদ অবলম্বনের অনুমতি চাইলেন। বৈরাগ্যবাদ হলো ঘর-বাড়ি, লোকালয় ছেড়ে পাহাড়ের চূড়ায় একাকী জীবন যাপন করা যেমন বৈরাগীরা করে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, উম্মাতের বৈরাগ্য নির্ধারণ করা হলো সালাতের অপেক্ষায় মসজিদে বসে থাকাকে। কেননা মসজিদে বসে থাকা বৈরাগ্যের একাকিত্ব আনতে পারে।


হাদিসের মানঃ সহিহ/যঈফ [মিশ্রিত]
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭২৫-[৩৭] ’আবদুর রহমান ইবনু ’আয়িশ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি আমার ’রবকে’ অতি উত্তম অবস্থায় স্বপ্নে দেখলাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ’’মালা-উল আ’লা’’ তথা শীর্ষস্থানীয় মালায়িকাহ্ কী ব্যাপারে ঝগড়া করছে? আমি বললাম, তা তো আপনিই ভালো জানেন। তখন আল্লাহ তা’আলা তাঁর হাত আমার দুই কাঁধের মাঝখানে রাখলেন। হাতের শীতলতা আমি আমার বুকের মধ্যে অনুভব করলাম। আমি তখন আসমানসমূহ ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছুই জানতে পারলাম। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ আয়াত তিলাওয়াত করলেনঃ ’’এভাবে আমি ইব্রহীমকে দেখালাম আকাশমণ্ডলী ও জমিনের রাজ্যসমূহ যাতে সে বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়’’- (সূরাহ্ আল আন্’আমঃ ৭৫)। (দারিমী ও তিরমিযী হাদীসটি মুরসাল হিসেবে বর্ণনা করেছেন)[1]

وَعَن عبد الرَّحْمَن بن عائش قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: رَأَيْتُ رَبِّيَ عَزَّ وَجَلَّ فِي أَحْسَنِ صُورَةٍ قَالَ: فَبِمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الْأَعْلَى؟ قُلْتُ: أَنْتَ أَعْلَمُ قَالَ: فَوَضَعَ كَفَّهُ بَيْنَ كَتِفِيَّ فَوَجَدْتُ بَرْدَهَا بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَعَلِمْتُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَتَلَا: (وَكَذَلِكَ نُرِي إِبْرَاهِيمَ مَلَكُوتَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَلِيَكُونَ من الموقنين)
رَوَاهُ الدَّارمِيّ مُرْسلا وللترمذي نَحوه عَنهُ

وعن عبد الرحمن بن عاىش قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم رايت ربي عز وجل في احسن صورة قال فبم يختصم الملا الاعلى قلت انت اعلم قال فوضع كفه بين كتفي فوجدت بردها بين ثديي فعلمت ما في السماوات والارض وتلا وكذلك نري ابراهيم ملكوت السماوات والارض وليكون من الموقنينرواه الدارمي مرسلا وللترمذي نحوه عنه

ব্যাখ্যা: এ হাদীস রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দেখা স্বপ্নের বর্ণনা। এ হাদীসের মতো যেসব হাদীসে আল্লাহর গুণাবলী বর্ণিত হয়েছে তা সহীহ হলে সে সব গুণাবলী কোনরূপ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ব্যতীতই বিশ্বাস করতে হবে। গুণ এবং তার উদাহরণ বর্ণনা করা থেকে চুপ থাকতে হবে। সাথে সাথে এই দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আল্লাহ তা‘আলার সাদৃশ্যমূলক কোন কিছু নেই। তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমার রব বলেন, নৈকট্য-প্রাপ্ত মালায়িকাহ্ কোন বিষয়ে বিতর্ক বা বাদানুবাদ করছে? ইমাম ত্বীবী বলেন, এখানে বিতর্ক দ্বারা ঐসব মালায়িকাহ্’র মধ্যে ‘‘কাফফারাহ্’’ এর ‘‘দারাজাত’’ বিষয়ে আলাপ-আলোচনাকে বুঝানো হয়েছে। দুই বিতর্ককারীর মধ্যে যেমন প্রশ্নোত্তর হয় তাদের মধ্যেও তা চলছিল। প্রশ্নের উত্তরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার রব তাঁর হাত আমার দুই কাঁধের মাঝে রাখলেন।

কেউ কেউ বলেন, এর দ্বারা রূপকভাবে বিশেষ করে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি অতিরিক্ত অনুগ্রহ এবং রহমাতের প্রাচুর্য পৌঁছানোর কথা বুঝানো হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে সালাফগণের মত হলো, কোন তুলনা উপমা, সাদৃশ্য বর্ণনা ব্যতীত এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। সৃষ্টির গুণাবলীকে যেভাবে ব্যাখ্যা করা হয় সেভাবে তাঁর গুণাবলীকে ব্যাখ্যা করা যাবে না। গুণাবলীর প্রকৃতির জ্ঞান আল্লাহর দিকেই সোপর্দ হবে।

আকাশসমূহে এবং সাত জমিনের মধ্যে যা কিছু আছে তা জানতে পারলাম। ক্বারী বলেন অর্থাৎ- আকাশসমূহ এবং জমিনের মাঝে অবস্থিত মালাক, গাছ-পালা ইত্যাদির মধ্যে যা আল্লাহ তা‘আলা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জানিয়েছেন। এ কথা দ্বারা আল্লাহ কর্তৃক রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেয়া জ্ঞানের প্রশস্ততার কথা বুঝানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আকাশসমূহ দ্বারা উপরের দিকে সবকিছু এবং জমিন দ্বারা নিচের দিকের সবকিছু বুঝানো হয়েছে তবে হাদীসের বাহ্যিক অর্থ দ্বারা সাধারণভাবে সব কিছুর জ্ঞান বুঝা গেলেও তা বুঝানো বিশুদ্ধ নয়। আমরা যেমনটা উল্লেখ করেছি তেমনভাবে এ জ্ঞানকে সীমাবদ্ধ করা আবশ্যক।

এরপর আল্লাহ তা‘আলা ইবরাহীম (আঃ)-কে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সমস্ত সাম্রাজ্য (এতদুভয়ের মধ্যে যা কিছু সৃষ্টি আছে) দেখিয়েছেন এবং তার জন্য তা উন্মোচন করেছেন। তার রিসালাতের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যতটুকু ততটুকু অদৃশ্যের জ্ঞান তার সামনে খুলে দিয়েছেন। যাতে করে তিনি আমার (আল্লাহর) একত্ব প্রমাণ করতে পারেন এবং নিশ্চিত বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। তাই আমি এরূপ করেছি।

বহু আয়াত ও স্পষ্ট সহীহ হাদীস রয়েছে যেগুলো প্রমাণ করে যে, কিছু জিনিসের বা ব্যাপারে বা কর্মের জ্ঞান রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ছিল না। আর এগুলো এদিকে স্পষ্ট ইঙ্গিত করে যে, হাদীসে ব্যবহৃত ما ‘‘মা’’ শব্দটি সীমাহীনতা বা অপরিসীমতা বুঝাচ্ছে না। আর এটা কবরপূজারীদের দাবীকে বাতিল করে দেয়। কবরপূজারীদের নিকট এসব আয়াত হাদীস পেশ করলে তারা বলে, আয়াত এবং হাদীসসমূহে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট অদৃশ্যের জ্ঞান নেই মর্মে যে বর্ণনা এসেছে তা দ্বারা সত্ত্বাগত জ্ঞান ما না থাকাকে বুঝাচ্ছে। দান থেকে অর্জিত জ্ঞানকে বুঝাচ্ছে না। এগুলো শুধুমাত্র তাদের দাবী। এর পক্ষে কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা, ক্বিয়াস বা কোন জ্ঞানসম্মত প্রমাণ নেই। বরং তাদের এ দাবীকে বাতিল করে দেয় আল্লাহ তা‘আলার বাণী। তিনি বলেন, ‘‘তাঁর অনন্ত জ্ঞানের কোন বিষয়ই কেউ আয়ত্ব করতে পারে না’’- (সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ ২ : ২৫৫)। তিনি আরো বলেন, ‘‘তোমার প্রতিপালকের বাহিনী সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানেন’’- (সূরাহ্ আল মুদ্দাস্সির ৭৪ : ৩১)। অতএব হে পাঠক! ব্যাপারটি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-গবেষণা করুন, তাড়াহুড়া করবেন না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭২৬-[৩৮] তিরমিযীতে এ হাদীসটি কিছু শব্দগত পার্থক্যসহ ’আবদুর রহমান ইবনু ’আয়িশ, ইবন ’আব্বাস ও মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। আর এতে আরো আছেঃ আল্লাহ তা’আলা বলেছেন (অর্থাৎ- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আসমান ও জমিনের জ্ঞান দেয়ার পর জিজ্ঞেস করলেন), হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন ’’মালা-উল আ’লা-’’ কী বিষয়ে তর্ক করছে? আমি বললাম, হ্যাঁ! জানি, ’কাফফারাহ্’ নিয়ে তর্কবিতর্ক করছে। আর এই কাফফারাহ্ হলো, সালাতের পর মসজিদে আর এক সালাতের ওয়াক্ত আসা পর্যন্ত অপেক্ষা বা যিকর-আযকার করার জন্য বসে থাকা। জামা’আতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার জন্য পায়ে হেঁটে চলে যাওয়া। কঠিন সময়ে (যেমন অসুস্থ বা শীতের মৌসুমে) উযূ (ওযু/ওজু/অজু)-র স্থানে ভালো করে পানি পৌঁছানো। যারা এভাবে উল্লিখিত ’আমলগুলো করলো কল্যাণের উপর বেঁচে থাকবে, কল্যাণের উপর মৃত্যুবরণ করবে। আর তার গুনাহসমূহ হতে এমনভাবে পাক-পবিত্র হয়ে যাবে যেমন আজই তার মা তাকে প্রসব করেছে।

আর আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, হে মুহাম্মাদ! সালাত আদায় শেষ করার পর এ দু’আটি পড়ে নিবেঃ ’’আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা ফি’লাল খয়র-তি ওয়াতারকাল মুনকার-তি ওয়া হুববাল মাসা-কীনি ফায়িযা- আরাত্তা বি’ইবা-দিকা ফিতনাতান্ ফাক্ববিযনী ইলায়কা গয়রা মাফতূন’’- (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ’নেক কাজ’ করার, ’বদ কাজ’ ছাড়ার, গরীব-মিসকীনদের বন্ধুত্বের আবেদন করছি। যখন তুমি বান্দাদের মধ্যে পথভ্রষ্টতা ফিত্‌নাহ্-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করার ইচ্ছা করবে তখন আমাকে ফিতনামুক্ত রেখে তোমার কাছে উঠিয়ে নিবে।)।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বললেন, ’দারাজাত’ হলো সালামের প্রসার করা, গরীবকে খাবার দেয়া, রাতে মানুষ যখন ঘুমে থাকে তখন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা।[1]

মিশকাতের সংকলক বলেন, যে হাদীস ’আবদুর রহমান হতে মাসাবীহ-তে বর্ণিত হয়েছে তা আমি শারহুস্ সুন্নাহ্ ছাড়া আর কোন কিতাবে দেখিনি।

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ وَمُعَاذِ بْنِ جبل وَزَادَ فِيهِ: قَالَ: يَا مُحَمَّدُ {هَلْ تَدْرِي فِيمَ يَخْتَصِمُ الْمَلَأُ الْأَعْلَى؟ قُلْتُ: نَعَمْ فِي الْكَفَّارَاتِ. وَالْكَفَّارَاتُ: الْمُكْثُ فِي الْمَسَاجِدِ بَعْدَ الصَّلَوَاتِ وَالْمَشْيِ عَلَى الْأَقْدَامِ إِلَى الْجَمَاعَاتِ وَإِبْلَاغِ الْوَضُوءِ فِي الْمَكَارِهِ فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ عَاشَ بِخَيْرٍ وَمَاتَ بِخَيْرٍ وَكَانَ مِنْ خَطِيئَتِهِ كَيَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ وَقَالَ: يَا مُحَمَّدُ} إِذَا صَلَّيْتَ فَقُلِ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَإِذَا أَرَدْتَ بِعِبَادِكَ فِتْنَةً فَاقْبِضْنِي إِلَيْكَ غَيْرَ مَفْتُونٍ. قَالَ: وَالدَّرَجَاتُ: إِفْشَاءُ السَّلَامِ وَإِطْعَامُ الطَّعَامِ وَالصَّلَاةُ بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نِيَامٌ. وَلَفْظُ هَذَا الْحَدِيثِ كَمَا فِي الْمَصَابِيحِ لَمْ أَجِدْهُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَن إِلَّا فِي شرح السّنة.

وعن ابن عباس ومعاذ بن جبل وزاد فيه قال يا محمد هل تدري فيم يختصم الملا الاعلى قلت نعم في الكفارات والكفارات المكث في المساجد بعد الصلوات والمشي على الاقدام الى الجماعات وابلاغ الوضوء في المكاره فمن فعل ذلك عاش بخير ومات بخير وكان من خطيىته كيوم ولدته امه وقال يا محمد اذا صليت فقل اللهم اني اسالك فعل الخيرات وترك المنكرات وحب المساكين واذا اردت بعبادك فتنة فاقبضني اليك غير مفتون قال والدرجات افشاء السلام واطعام الطعام والصلاة بالليل والناس نيام ولفظ هذا الحديث كما في المصابيح لم اجده عن عبد الرحمن الا في شرح السنة

ব্যাখ্যা: এ হাদীসটি পূর্বোক্ত হাদীসের কিয়দংশের ব্যাখ্যা হিসেবে গ্রহণ করা যায় এবং তার প্রেক্ষিতে বান্দার কী করণীয় সে বিষয়ে অবগত হওয়া যায়। এ কাজগুলো হলোঃ

এক- প্রত্যেক সালাতের পরে অপর সালাতের জন্য মসজিদের অবস্থান করে অপেক্ষা করা।

দুই- পায়ে হেটে জামা‘আতে উপস্থিত হওয়া, মসজিদে আগমনকারী আল্লাহর সাক্ষ্যপ্রার্থী। আর পায়ে হেঁটে সাক্ষাৎ করতে আসা বিনয় ও নম্রতার অধিক নিকটবর্তী।

তিন- অপছন্দ বা কষ্টের সময় যেমন, শীতের দিনে ঠাণ্ডা পানি উযূর ফরয ও সুন্নাত স্থানগুলোতে বেশি করে পৌঁছানো।

আর যে ব্যক্তি উপর্যুক্ত কার্যাবলী সম্পাদন করলো সে কল্যাণের সাথে বাঁচবে এবং কল্যাণের সাথে মরবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘‘মু’মিন পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকর্ম করবে তাকে আমি নিশ্চয়ই পবিত্র জীবন দান করবো এবং তাদেরকে তাদের কাজের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করবো’’- (সূরাহ্ আন্ নাহল ১৬ : ৯৭)। আর সে সেরূপ পাপমুক্ত হবে যেরূপ পাপমুক্ত সেদিন ছিল যেদিন তাকে তার মা প্রসব করেছে বা জন্ম দিয়েছে।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যা দ্বারা মর্যাদা বৃদ্ধি পায় তা হলো, পরিচিত-অপরিচিত প্রত্যেককে সালাম প্রদান এবং মানুষ ঘুমন্ত থাকা অবস্থায় রাতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা। এ সমস্ত কাজ মর্যাদা বৃদ্ধি করে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭২৭-[৩৯] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন ব্যক্তি আল্লাহর জিম্মাদারীতে রয়েছে। (১) যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে যুদ্ধে বের হয়েছে সে আল্লাহর জিম্মাদারীতে রয়েছে, যে পর্যন্ত আল্লাহ তাকে উঠিয়ে না নেন এবং জান্নাতে প্রবেশ না করান। অথবা তাকে ফিরিয়ে আনেন, যে সাওয়াব বা যে গনীমাতের মাল সে যুদ্ধে লাভ করেছে তার সাথে। (২) যে ব্যক্তি মসজিদে গমন করেছে সে আল্লাহর দায়িত্বে রয়েছে এবং (৩) যে ব্যক্তি সালাম দিয়ে নিজের ঘরে প্রবেশ করেছে, সে আল্লাহর জিম্মাদারীতে রয়েছে। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن أبي أُمَامَة الْبَاهِلِيّ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «ثَلَاثَة كلهم ضَامِن على الله عز وَجل رَجُلٌ خَرَجَ غَازِيًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَهُوَ ضَامِن على الله حَتَّى يتوفاه فيدخله الْجنَّة أَو يردهُ بِمَا نَالَ من أجرأوغنيمة وَرَجُلٌ رَاحَ إِلَى الْمَسْجِدِ فَهُوَ ضَامِنٌ عَلَى الله حَتَّى يتوفاه فيدخله الْجنَّة أَو يردهُ بِمَا نَالَ مِنْ أَجْرٍ وَغَنِيمَةٍ وَرَجُلٌ دَخَلَ بَيْتَهُ بِسَلَامٍ فَهُوَ ضَامِنٌ عَلَى اللَّهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابي امامة الباهلي عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ثلاثة كلهم ضامن على الله عز وجل رجل خرج غازيا في سبيل الله فهو ضامن على الله حتى يتوفاه فيدخله الجنة او يرده بما نال من اجراوغنيمة ورجل راح الى المسجد فهو ضامن على الله حتى يتوفاه فيدخله الجنة او يرده بما نال من اجر وغنيمة ورجل دخل بيته بسلام فهو ضامن على الله رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: সকল ক্ষতি, বিপদ, বিপর্যয়, অনিষ্ট থেকে ঐ তিন ব্যক্তিকে নিরাপত্তাদান আল্লাহ নিজ অঙ্গীকার বাস্তবায়নে নিজের ওপর আবশ্যক করে নিয়েছেন। ঐ তিন ব্যক্তি হলোঃ

১। যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধে বের হয়েছে, তাকে সকল অনিষ্ট থেকে নিরাপদ রাখা আল্লাহর ওপর ওয়াজিব যেভাবে নিরাপত্তাপ্রাপ্ত কোন জিনিসকে সংরক্ষণ করা হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ মৃত্যুর মাধ্যমে কিংবা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হওয়ার মাধ্যমে তার রূহকে তিনি কবয করেন। অতঃপর জান্নাতে প্রবেশ করান। অথবা তাকে ফিরিয়ে আনেন সে সাওয়াব বা যুদ্ধলব্ধ সম্পদসহ যা সে অর্জন করেছে।

২। যে ব্যক্তি মসজিদে গমন করেছে সেও আল্লাহর দায়িত্বে। কারণ সে আল্লাহর যিকিরে রয়েছে। তাকে বিপদাপদ থেকে রক্ষা করা ও দেখাশুনা করা আল্লাহর ওপর আবশ্যক।

৩। যে ব্যক্তি সালাম সহকারে নিজের ঘরে প্রবেশ করে। এক- ঐ ব্যক্তি যখন তার ঘরে প্রবেশ করে তখন তার পরিবারকে সালাম দেয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘যখন তোমরা ঘরে পবেশ করবে তখন তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম দাও।’’ (সূরাহ্ আন্ নূর ২৪ : ৬১)

তখন আল্লাহ তার ও তার পরিবার এবং স্বজনের ওপর বারাকাত অবতীর্ণ করা। কারণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনাস (রাঃ)-কে উদ্দেশ্য করে বলেন, যখন তুমি তোমার পরিবার-পরিজনদের নিকট প্রবেশ করবে তখন তুমি সালাম দাও। এই সালাম তোমার ও তোমার পরিবারের বারাকাত নিয়ে আসবে। দুই- ঐ ব্যক্তি সকল ফিতনাহ্ (ফিতনা) থেকে মুক্ত ও নিরাপদ অবস্থায় তার বাড়িতে প্রবেশ করে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭২৮-[৪০] উক্ত রাবী [আবূ উমামাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি নিজের ঘর হতে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করে ফরয সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার জন্য বের হয়েছে তার সাওয়াব একজন ইহরাম বাঁধা হাজির সাওয়াবের সমান। আর যে ব্যক্তি সালাতুয্ যুহার জন্য বের হয়েছে আর এই সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ব্যতীত অন্য কোন জিনিস তাকে এদিকে ধাবিত করে না সে সাওয়াব পাবে একজন ’উমরাহকারীর সমান। এক সালাতের পর অপর সালাত আদায় করা, যার মাঝখানে কোন বেহুদা কথা বলেনি তা ’’ইল্লিয়্যিন’’-এ লেখা হয়ে থাকে। (আহমাদ ও আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم قَالَ: «مَنْ خَرَجَ مِنْ بَيْتِهِ مُتَطَهِّرًا إِلَى صَلَاةٍ مَكْتُوبَة فَأَجره كَأَجر الْحَاج الْمُحْرِمِ وَمَنْ خَرَجَ إِلَى تَسْبِيحِ الضُّحَى لَا يُنْصِبُهُ إِلَّا إِيَّاهُ فَأَجْرُهُ كَأَجْرِ الْمُعْتَمِرِ وَصَلَاةٌ عَلَى إِثْرِ صَلَاةٍ لَا لَغْوَ بَيْنَهُمَا كِتَابٌ فِي عليين» . رَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو دَاوُد

وعنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم قال من خرج من بيته متطهرا الى صلاة مكتوبة فاجره كاجر الحاج المحرم ومن خرج الى تسبيح الضحى لا ينصبه الا اياه فاجره كاجر المعتمر وصلاة على اثر صلاة لا لغو بينهما كتاب في عليين رواه احمد وابو داود

ব্যাখ্যা: কোন মুহরিম হাজী মীকাতের দিকে গেলে তার সাওয়াব যেমনিভাবে পূর্ণতর হয়, তেমনি কোন ব্যক্তি পবিত্রাবস্থায় তার ঘর থেকে বের হয়ে সালাতের দিকে গেলে তার সাওয়াবও ফাযীলাতপূর্ণ হয়।

ইহরামধারী হাজীর ন্যায় ফরয সালাতের সংকল্পকারীরও অধিক ফাযীলাত রয়েছে। সেই সাথে রুকূ‘কারীদের সাথে রুকূ‘ করা তথা জামা‘আতে সালাত আদায়ের জন্য উৎসাহ দান করা হয়েছে।

এখানে ফরয সালাতের ফাযীলাতের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। এ ফাযীলাত নফল সালাতে নেই। ফরয এবং নফল উভয় সালাতের জন্য বের হবার মধ্যে ফাযীলাত হলো হাজ্জ (হজ/হজ্জ) ও ‘উমরার ফাযীলাতের মতো।

এ হাদীস দ্বারা এটাও প্রমাণ করে যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাজরের (ফজরের) শেষে সূর্যোদয় পর্যন্ত সালাতের স্থানে বসে থাকতেন। অতঃপর তিনি দুই রাক্‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন। অবস্থানকালীন সময়ে উত্তম কথা ব্যতীত কোন কথা না বললে তাহলে তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। সফর হতে ফেরার পথে গৃহে প্রবেশের পূর্বে মসজিদে দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাহ।

দিনে বা রাতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ করে পরবর্তী সালাতের জন্য অপেক্ষা করাকালে কোন বেহুদা কথা বলা ও কাজ করা না হলে ঐ ‘আমল ‘ইল্লিয়্যিনে লেখা হয়ে থাকে। এটা সপ্তাকাশে অবস্থিত লিখিত ফলক। মু’মিনের সৎ ‘আমল নিয়ে আল্লাহর নিকটবর্তী মালায়িকাহ্ সেখানে আরোহণ করেন। এটা সর্বোচ্চ স্থান ও সর্বোচ্চ মর্যাদাময় স্তর।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭২৯-[৪১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যখন জান্নাতের বাগানের কাছ দিয়ে যাবে, এর ফল খাবে। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! জান্নাতের বাগান কী? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ মাসজিদ। আবার জিজ্ঞেস করা হলো এর ফল খাওয়া কী? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ’’সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াল হামদু লিল্লা-হি ওয়ালা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্ল-হু আকবার’’ (আল্লাহ পবিত্র, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর এবং আল্লাহ ভিন্ন কোন মা’বূদ নেই, আল্লাহ মহান) এ বাক্য বলা। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «إِذَا مَرَرْتُمْ بِرِيَاضِ الْجَنَّةِ فَارْتَعُوا» قِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا رِيَاضُ الْجَنَّةِ؟ قَالَ: «الْمَسَاجِدُ» . قُلْتُ: وَمَا الرَّتْعُ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَالله أكبر» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا مررتم برياض الجنة فارتعوا قيل يا رسول الله وما رياض الجنة قال المساجد قلت وما الرتع يا رسول الله قال سبحان الله والحمد لله ولا اله الا الله والله اكبر رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যখন তোমরা জান্নাতের বাগানসমূহের নিকট দিয়ে যাবে তখন তার ফল খাবে, অর্থাৎ- তখন তোমরা এসব যিকর বলবে। এখানে মাসজিদকে জান্নাতের বাগান বলে উল্লেখ করা হয়েছে এজন্য যে, মসজিদে যে ‘ইবাদাত করা হয় তা জান্নাতে প্রবেশের অধিকারের কারণ হবে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মতে, জান্নাতের বাগান হচ্ছে মাসজিদ। আহমাদ ও তিরমিযী তাদের কিতাবে আনাস (রাঃ) থেকে ‘‘মসজিদের স্থলে’’ যিকর এর বৈঠক (حِلَقُ ذِكْرٍ) শব্দ উল্লেখ করেছেন।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আবারো জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! ফল খাওয়া কী? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, سُبْحَانَ اللهِ ইত্যাদি বলা। ফল খাওয়া শুধু এই যিকিরের (জিকিরের) মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং এটা দ্বারা অন্যান্য যিকরও বুঝানো হয়েছে যেগুলো জান্নাতের বাগানে প্রবেশের কারণ হবে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৩০-[৪২] উক্ত রাবী [আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মসজিদে যে কাজের নিয়্যাত করে আসবে, সে সেই কাজেরই অংশ পাবে। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَتَى الْمَسْجِدَ لِشَيْءٍ فَهُوَ حَظُّهُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من اتى المسجد لشيء فهو حظه رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা অনুযায়ী যে ব্যক্তি পরকালীন বা পার্থিব কোন কাজ সম্পাদনের উদ্দেশে মসজিদে আসে সে কাজই তার প্রাপ্য হবে। যেমন সুপ্রসিদ্ধ কিতাব সহীহুল বুখারীতে রয়েছে, প্রত্যেকের জন্য তাই প্রতিদান রয়েছে যা সে নিয়্যাত করে। এ হাদীসে মসজিদে আসার উদ্দেশ্য বিশুদ্ধ করার বাপারে সতর্ক বার্তা রয়েছে। যাতে করে মসজিদে আসার উদ্দেশ্য তামাশা, বন্ধু ও সাথীদের সাথে সাক্ষাত ইত্যাদি পার্থিব কর্ম না হয়। ‘ইবাদাত তথা সালাত (সালাত/নামায/নামাজ), ই‘তিকাফ, শার‘ঈ জ্ঞান আহরণ ও বিতরণ ইত্যাদিই হবে উদ্দেশ্য।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৩১-[৪৩] ফাত্বিমাহ্ বিনতু হুসায়ন (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি তার দাদী ফাত্বিমাতুল কুবরা (রাঃ)হতে বর্ণনা করেছেন যে, ফাত্বিমাতুল কুবরা (রাঃ)বলেছেন, (আমার পিতা) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মসজিদে প্রবেশ করতেন, মুহাম্মাদের (অর্থাৎ- নিজের) ওপর সালাম ও দরূদ পাঠ করতেন আর বলতেন, ’’রব্বিগফির্ লী যুনূবী ওয়াফতাহ লী আব্ওয়া-বা রহমতিকা’’ (অর্থাৎ- হে পরওয়ারদিগার! আমার গুনাহসমূহ মাফ কর। তোমার রহমতের দুয়ার আমার জন্য খুলে দাও।)। তিনি যখন মাসজিদ হতে বের হতেন, তখন মুহাম্মাদের ওপর দরূদ ও সালাম পাঠ করতেন আর বলতেন, ’’রব্বিগফির্ লী যুনূবী ওয়াফতাহ লী আব্ওয়াবা ফাযলিকা’’ (অর্থাৎ- হে পরওয়ারদিগার! আমার গুনাহসমূহ মাফ করে দাও। আমার জন্য দয়ার দুয়ার খুলে দাও।)। (তিরমিযী, আহমাদ ও ইবনু মাজাহ্)[1]

কিন্তু আহমাদ ও ইবনু মাজার বর্ণনায় রয়েছে, ফাত্বিমাতুল কুবরা (রাঃ)বলেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মসজিদে প্রবেশ করতেন এবং এভাবে মাসজিদ হতে বের হতেন, তখন মুহাম্মাদের ওপর দরূদের পরিবর্তে বলতেনঃ আল্লাহর নামে এবং আল্লাহ তা’আলার রসূলের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।[2]

ইমাম তিরমিযী বলেন, হাদীসটির সানাদ মুত্তাসিল নয়। কেননা নাতনী ফাত্বিমাহ্ তার দাদী ফাত্বিমাহ্ (রাঃ)-এর সাক্ষাৎ পাননি।

وَعَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ الْحُسَيْنِ عَنْ جَدَّتِهَا فَاطِمَةَ الْكُبْرَى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا دَخَلَ الْمَسْجِدَ صَلَّى عَلَى مُحَمَّدٍ وَسَلَّمَ وَقَالَ: «رَبِّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ» وَإِذَا خَرَجَ صَلَّى عَلَى مُحَمَّدٍ وَسَلَّمَ وَقَالَ رَبِّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ فَضْلِكَ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَحْمَدُ وَابْنُ مَاجَهْ وَفِي رِوَايَتِهِمَا قَالَتْ: إِذَا دَخَلَ الْمَسْجِدَ وَكَذَا إِذَا خَرَجَ قَالَ: «بِسْمِ اللَّهِ وَالسَّلَامُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ» بَدَلَ: صَلَّى عَلَى مُحَمَّدٍ وَسَلَّمَ. وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ لَيْسَ إِسْنَادُهُ بِمُتَّصِلٍ وَفَاطِمَةُ بِنْتُ الْحُسَيْنِ لَمْ تدْرك فَاطِمَة الْكُبْرَى

وعن فاطمة بنت الحسين عن جدتها فاطمة الكبرى رضي الله عنهم قالت كان النبي صلى الله عليه وسلم اذا دخل المسجد صلى على محمد وسلم وقال رب اغفر لي ذنوبي وافتح لي ابواب رحمتك واذا خرج صلى على محمد وسلم وقال رب اغفر لي ذنوبي وافتح لي ابواب فضلك رواه الترمذي واحمد وابن ماجه وفي روايتهما قالت اذا دخل المسجد وكذا اذا خرج قال بسم الله والسلام على رسول الله بدل صلى على محمد وسلم وقال الترمذي ليس اسناده بمتصل وفاطمة بنت الحسين لم تدرك فاطمة الكبرى

ব্যাখ্যা: এ হাদীস দ্বারা মসজিদে প্রবেশ করা ও বের হবার সময় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ও সালাম পেশ করা শারী‘আতসম্মত বলে প্রমাণিত হলো। আহমাদ ও ইবন মাজাহর বর্ণনায় মসজিদে প্রবেশ ও বাহিরের সময় বিসমিল্লা-হ বলা এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ও সালাম পেশ, ক্ষমা প্রার্থনা করার উল্লেখ রয়েছে। প্রবেশের সময় রহমাতের দরজা এবং বের হওয়ার সময় কল্যাণের দরজা খোলার প্রার্থনা করার শিক্ষা পাওয়া যায়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৩২-[৪৪] ’আমর ইবনু শু’আয়ব (রহঃ) তার পিতা হতে, তার পিতা তার দাদা হতে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে কবিতা আবৃত্তি করতে, ক্রয়-বিক্রয় করতে এবং জুমু’আর দিন জুমু’আর সালাতের পূর্বে গোল হয়ে বৃত্তাকারে বসতে নিষেধ করেছেন। (আবূ দাঊদ ও তিরমিযী)[1]

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ تَنَاشُدِ الْأَشْعَارِ فِي الْمَسْجِدِ وَعَنِ الْبَيْعِ وَالِاشْتِرَاءِ فِيهِ وَأَنْ يَتَحَلَّقَ النَّاسُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ قَبْلَ الصَّلَاةِ فِي الْمَسْجِدِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ

وعن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن تناشد الاشعار في المسجد وعن البيع والاشتراء فيه وان يتحلق الناس يوم الجمعة قبل الصلاة في المسجد رواه ابو داود والترمذي

ব্যাখ্যা: রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের মধ্যে কবিতা পাঠ বলতে ঐসব কবিতা পাঠ নিষিদ্ধ করা হয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে একজন অপরের ওপর গর্ব অহংকার প্রকাশ পায় কৌতুক বা হাস্যরস। কবিতা পাঠ নিন্দিত। অপরদিকে কবিতা পাঠ দ্বারা যদি সত্য ও সত্যপন্থীদের প্রশংসা করা হয় কিংবা বাতিল অথবা মিথ্যার নিন্দা করা হয় অথবা দীনের মূলনীতিসমূহ সহজ করে উপস্থাপন করা হয় তাহলে তা নিন্দিত নয়। যদিও এর মধ্যে প্রেমকাব্য থাকে। এ রকম বৈধ কবিতা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে পাঠ করা হলে তিনি নিষেধ করতেন না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জানতেন যে, এর উদ্দেশ্য ভালো। এখানে কবিতা পাঠ দ্বারা কবিতার মাধ্যমে গর্ব-অহংকার প্রকাশ করা বুঝানো হয়েছে। এ ধরনের কবিতা গোলমাল, চিৎকার বা হৈচৈ সৃষ্টি করে, যা মসজিদের সম্মানকে নষ্ট করে।

দ্বিতীয়ত মসজিদের মধ্যে ক্রয়-বিক্রয় হারাম। ইমাম শাওকানী (রহঃ) বলেন, অধিকাংশ ‘আলিমের মতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই নিষেধাজ্ঞা দ্বারা মাকরূহ (অপছন্দনীয়) বুঝানো হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা দ্বারা হারাম হওয়াই বুঝায়। আর এটাই সত্য কথা।

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমু‘আর দিনে জুমু‘আর সালাতের পূর্বে মসজিদে বৃত্তাকারে বসতে নিষেধ করেছেন। এই নিষেধাজ্ঞা জুমু‘আর দিন জুমু‘আর সালাতের পূর্বে মসজিদে গোল হয়ে বসা হারাম প্রমাণের দলীল। এখানে জুমু‘আর সালাতের পূর্বের সময়কে নির্দিষ্ট করার অর্থ হ’ল ঐ সালাতের পরে জ্ঞান ও যিকিরের (জিকিরের) জন্য বসা বৈধ। এছাড়া জুমু‘আর দিনকে নির্দিষ্ট করার দ্বারা অন্য দিনগুলোতে ঐ কাজের বৈধতার প্রমাণ পাওয়া যায়।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৩৩-[৪৫] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কাউকে মসজিদে বেচা-কেনা করতে দেখলে বলবে, আল্লাহ তোমার এ ব্যবসায়ে তোমাকে লাভবান না করুন। এভাবে কাউকে মসজিদে হারানো জিনিস অনুসন্ধান করতে দেখলে বলবে, আল্লাহ তা তোমাকে ফেরত না দিন। (তিরমিযী ও দারিমী)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا رَأَيْتُمْ مَنْ يَبِيعُ أَوْ يَبْتَاعُ فِي الْمَسْجِدِ فَقُولُوا: لَا أَرْبَحَ اللَّهُ تِجَارَتَكَ. وَإِذَا رَأَيْتُمْ مَنْ يَنْشُدُ فِيهِ ضَالَّةً فَقُولُوا: لَا رَدَّ اللَّهُ عَلَيْكَ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالدَّارِمِيُّ

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا رايتم من يبيع او يبتاع في المسجد فقولوا لا اربح الله تجارتك واذا رايتم من ينشد فيه ضالة فقولوا لا رد الله عليك رواه الترمذي والدارمي

ব্যাখ্যা: এ হাদীস দ্বারা মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। কেউ করলে তার উদ্দেশে বলা যাবে যে, আল্লাহ তোমার বা তোমাদের ব্যবসায় কোন লাভ না দিন এবং তোমাদের দ্বারা কোন উপকার না করুন। এটা তার জন্য বদ্দু‘আ। এছাড়া যদি কাউকে হারানো বস্ত্তর জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে দেখা যায়, তাহলে বলতে হবে, আল্লাহ যেন তোমার জিনিস ফিরিয়ে না দেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৭. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মাসজিদ ও সালাতের স্থান

৭৩৪-[৪৬] হাকিম ইবনু হিযাম (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে ও তথায় কবিতা পাঠ ও হাদ্দ-এর শাস্তি কার্যকর করতে নিষেধ করেছেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُسْتَقَادَ فِي الْمَسْجِدِ وَأَنْ يُنْشَدَ فِيهِ الْأَشْعَارُ وَأَنْ تُقَامَ فِيهِ الْحُدُودُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ فِي سُنَنِهِ وَصَاحِبُ جَامِعِ الْأُصُولِ فِيهِ عَنْ حَكِيمٍ

وعن حكيم بن حزام قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم ان يستقاد في المسجد وان ينشد فيه الاشعار وان تقام فيه الحدود رواه ابو داود في سننه وصاحب جامع الاصول فيه عن حكيم

ব্যাখ্যা: রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে কিসাস স্বরূপ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে নিষেধ করছেন। যেন মসজিদে রক্ত না পড়ে। এছাড়া নিন্দিত বা খারাপ কবিতা পাঠ এবং সকল প্রকার হাদ্দ (ইসলামী দন্ড) প্রয়োগও নিষিদ্ধ। প্রথমে নির্দিষ্টভাবে কিসাসের কথা বলা হলেও পরে সকল দন্ডের কথা বলা হয়েছে। এর দ্বারা বুঝানো হচ্ছে যে, দণ্ড যেমনই হোক মসজিদে এসব কাজ নিষেধ এজন্যে যে, এর দ্বারা মসজিদের সম্মান নষ্ট করা হয়, নোংরা বা দূষিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর এ জন্যেও যে, মাসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ও যিকিরের (জিকিরের) জন্য, দণ্ড কার্যকর করার স্থান নয়।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২০ পর্যন্ত, সর্বমোট ২৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 পরের পাতা »