পরিচ্ছেদঃ ৩৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২৩৪-[১৬] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আমর ইবনুল ’আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, হে ’আবদুল্লাহ! তুমি অমুক লোকের মতো হয়ো না। সে রাত্রে (সজাগ হয়ে) তাহাজ্জুদের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করত, পরে তা ছেড়ে দিয়েছে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا عَبْدَ اللَّهِ لَا تَكُنْ مِثْلَ فُلَانٍ كَانَ يَقُومُ مِنَ اللَّيْلِ فَتَرَكَ قيام اللَّيْل»

عن عبد الله بن عمرو بن العاص قال قال لي رسول الله صلى الله عليه وسلم يا عبد الله لا تكن مثل فلان كان يقوم من الليل فترك قيام الليل

ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা যে, ‘তুমি অমুকের মত হয়ো না’ এর অর্থ হলো তার স্বভাত ও বৈশিষ্ট্য যেন তোমার মধ্যে না হয়। অর্থাৎ ক্বিয়ামুল লায়ল কিছুদিন করার পর বিনা ওযরে তা বর্জন করা যেন না হয়। এ হাদীস থেকে জানা যায় যে, কোন ‘আমল সদা-সর্বদা করা ভাল, তবে বেশি বাড়াবাড়ী করে নয়। আরো জানা যায় যে, ক্বিয়ামুল লায়ল ওয়াজিব নয়। এ হাদীস থেকে আরো জানা যায় যে, কোন ব্যক্তির মধ্যে কোন ত্রুটি বা দোষ থাকলে তার কর্ম থেকে ফিরানোর লক্ষ্যে তার নাম আলোচনায় বা দৃষ্টান্তে আনা জায়িয।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২৩৫-[১৭] ’উসমান ইবনু আবুল ’আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ দাঊদ (আঃ)-এর জন্যে রাত্রের (শেষাংশের একটি) সময় নির্ধারিত ছিল। যে সময়ে তিনি নিজের পরিবারের সদস্যদেরকে উঠাতেন। তিনি বলতেন, হে দাঊদের পরিবারের লোকেরা! (ঘুম থেকে) জাগো এবং সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় কর। কারণ এটা এমন এক মুহূর্ত, যে সময় আল্লাহ তা’আলা দু’আ কবূল করেন। কিন্তু জাদুকর ও ছিনতাইকারীর দু’আ কবূল হয় না। (আহমাদ)[1]

وَعَنْ عُثْمَانَ بْنِ أَبِي الْعَاصِ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم يَقُول: كَانَ لِدَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِنَ اللَّيْلِ سَاعَةٌ يُوقِظُ فِيهَا أَهْلَهُ يَقُولُ: يَا آلَ دَاوُدَ قُومُوا فَصَلُّوا فَإِنَّ هَذِهِ سَاعَةٌ يَسْتَجِيبُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِيهَا الدُّعَاءَ إِلَّا لِسَاحِرٍ أَوْ عشار . رَوَاهُ أَحْمد

وعن عثمان بن ابي العاص قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول كان لداود عليه السلام من الليل ساعة يوقظ فيها اهله يقول يا ال داود قوموا فصلوا فان هذه ساعة يستجيب الله عز وجل فيها الدعاء الا لساحر او عشار رواه احمد

ব্যাখ্যা: দাঊদ (আঃ) রাতের কোন সময়টিতে তার পরিবারের লোকদের জাগিয়ে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের নির্দেশ দিতেন তা অস্পষ্ট। কিন্তু ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আমর ইবনুল ‘আস-এর হাদীসে পাওয়া যায় যে, তিনি অর্ধরাত্রি ঘুমাতেন এবং এক তৃতীয়াংশ সালাত আদায় করতেন। সুতরাং তিনি যে সময় সালাত আদায় করতেন সেই সময়ই লোকজনকে জাগাতেন। এ সময়টি দু‘আ কবূলের একটি মোক্ষম সময়, এই দু‘আ বলতে আলাদা কোন দু‘আর মুনাজাতও হতে পারে আবার মুখ্য সালাতও হতে পারে। কেননা বান্দার পুরো সালতটাই তো দু‘আ। কারণ সানা পাঠ এটা একটি দু‘আ, ক্বিয়ামটা মাওলার দরবারে কিছু পাওয়ার জন্য ধর্ণা ধরা ও আরজী পেশ করা। রসূলের ওপর সালাত বা দরূদটা দু‘আ এবং সর্বশেষে দু‘আ মাসূরাসমূহ দ্বারাই তার পরিসমাপ্তি। এরপর সালামান্তে দু‘আ তো আছেই।

আশশার বলা হয় জাহিলী যুগের রীতি পদ্বতিতে মানুষের সম্পদ থেকে ওশর গ্রহণকারী। তারা আল্লাহর নির্ধারিত বিধান পরিত্যাগ করে নিজেদের ইচ্ছামত যে কোন সম্পদের উপর ধার্য করত এবং প্রজাসাধারণ থেকে তা ছিনিয়ে নিত। কিন্তু আল্লাহর বিধান মতো ওশর আদায়কারী এ হুকুমের অন্তর্ভুক্ত হবে না। সে যদি বাড়াবাড়ী বা সীমালঙ্ঘন না করে তবে সেটা বরং উত্তম কাজ, অনেক সাহাবী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট খলীফাগণের নিকট ওশর আদায় করে প্রেরণ করতেন। হাদীসে এ নামে নামাঙ্কিত করা হয়েছে যেহেতু ওশর সংশ্লিষ্ট অংশ তারা বিধি বহির্ভূতভাবে গ্রহণ করত। এতে তারা কখনো এক চতুর্থাংশ কখনো অর্ধাংশ ওশর গ্রহণ করত। আবার যিম্মীদের নিকট থেকেও ওশর উত্তোলন করত। কেউ কেউ বলেন, এর অর্থ হলো ব্যবসায়িক মালের অংশগ্রহণ করা। কেউ বলেছেনঃ এটা নির্দিষ্ট পণ্য সামগ্রীর উপর রাষ্ট্রীয় ভ্যাটের ন্যয় এক প্রকার কর বিশেষ।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২৩৬-[১৮] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ ফরয সালাতের পর অধিক উত্তম সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হলো মাঝ রাত্রের সালাত। (আহমাদ)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «أَفْضَلُ الصَّلَاةِ بَعْدَ الْمَفْرُوضَةِ صَلَاةٌ فِي جَوف اللَّيْل» . رَوَاهُ أَحْمد

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول افضل الصلاة بعد المفروضة صلاة في جوف الليل رواه احمد

ব্যাখ্যা: এই উত্তম হলো সময়ের ভিত্তিতে, অন্যথায় স্থানের ভিত্তিতে হলো বাড়ীতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) উত্তম। এ হাদীসে আরো প্রমাণিত যে, দিনের নফল সালাত থেকে রাতের সাধারণ নফল উত্তম, এটা ‘উলামাদের সর্বসম্মত মত। কেননা রাতের সালাতে পরিপূর্ণ খুশু অর্জিত হয় এবং এতে নাফসের কষ্টও বেশি হয়। কিন্তু কেউ কেউ সালাতুর রাতিবাকে উত্তম মনে করেন, কেননা এটা ফরয এর সাথে সাদৃশ্যশীল সালাত। আল্লামা নাবাবী বলেন, প্রথম মতটি অধিক শক্তিশালী এবং যুক্তিসঙ্গত। তাহাজ্জুদ বা রাতের নফল সালাতের ফাযীলাত সম্পর্ক কুরআনুল কারীমে অনেক আয়াত রয়েছে, যেমন আল্লাহর বাণীঃ ‘ওয়া মিনাল লায়লি ফাতাহাজ্জাদ বিহী নাফিলাতাল লাক ....’। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, ‘তাতাজাফা জনুবুহুম আনিল মাযাজিয়ে......’


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২৩৭-[১৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে এ হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, এক লোক রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এলো এবং তাঁকে বলল, অমুক লোক রাত্রে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে কিন্তু ভোরে উঠে চুরি করে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ খুব তাড়াতাড়ি তার সালাত তাকে এ ’আমল থেকে বাধা দিবে, তার যে ’আমলের কথা তুমি বলছ। (আহমাদ, বায়হাক্বী’র শু’আবুল ’ঈমান)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: جَاءَ رجل إِلَى النَّبِي صلى فَقَالَ: إِن فلَانا يُصَلِّي بِاللَّيْلِ فَإِذَا أَصْبَحَ سَرَقَ فَقَالَ: إِنَّهُ سَيَنْهَاهُ مَا تَقُولُ. رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَانِ

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال جاء رجل الى النبي صلى فقال ان فلانا يصلي بالليل فاذا اصبح سرق فقال انه سينهاه ما تقول رواه احمد والبيهقي في شعب الايمان

ব্যাখ্যা: আগন্তুক ব্যক্তির নাম জানা যায়নি। যে রাতে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে, আর দিনে চুরি করে তার সম্পর্কে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আল্লামা ত্বীবী বলেন, হাদীসের ভাষা প্রমাণ করে যে, সে সালাত আদায়কারী। যে রাতের সালাত আদায়কারী হয় সে দিনের সালাত বর্জন করতে পারে না। সুতরাং তার জন্য এ দৃষ্টান্ত যে, ঐ সালাত তাকে অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখবে, অতঃপর সে তার চৌর্য বৃত্তি থেকে তাওবাহ্ করবেই।

হাফিয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, এর অর্থ হলোঃ তার ঐ রাতের সালাতই নিশ্চিত তাকে চৌর্যবৃত্তি থেকে ফিরিয়ে রাখবে এবং সত্তর তাওবাহ্ করবে। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা (سَيَنْهَاهُ) শব্দের মধ্যে (س) অক্ষরটি ‘তানফীস’ মূলে সময়সাপেক্ষ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সুতরাং বলা হবে যে, সালাত যে তাকে পাপ থেকে বিরত রাখবে তার জন্য সময়ের প্রয়োজন, সময়ের আবহে তার অন্তরের মধ্যে এমন একটি ভাবের উদয় হবে যা তাকে পাপ (বা ঐ চৌর্যবৃত্তি) থেকে বিরত রাখবে। যেমন পবিত্র কুরআনের আয়াতঃ ‘‘নিশ্চয় সালাত অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে’’- (সূরাহ্ আল ‘আনকাবূত ২৯ : ৪৫)। এর ব্যাখ্যা হলোঃ নিশ্চয় নিয়মিত সালাত আদায় তাকে অশ্লীল গর্হিত কাজ বর্জনে উদ্ধুব্ধ করবে এবং এক সময় তাকে বিরত করেই ফেলবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২৩৮-[২০] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ যখন কোন লোক তার স্ত্রীকে ঘুম থেকে উঠায় ও উভয়ে এক সাথে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে অথবা তিনি এ কথা বলেছেন, তাদের প্রত্যেকে দু’ রাক্’আত করে সালাত এক সাথে পড়ে, তাহলে এ দুই (স্বামী-স্ত্রী) লোকের নাম আল্লাহকে স্মরণকারী নর ও নারীদের দলের মাঝে লিপিবদ্ধ করা হয়। (আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذا أَيْقَظَ الرَّجُلُ أَهْلَهُ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّيَا أَوْ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ جَمِيعًا كُتِبَا فِي الذَّاكِرِينَ وَالذَّاكِرَاتِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه

وعن ابي سعيد وابي هريرة قالا قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا ايقظ الرجل اهله من الليل فصليا او صلى ركعتين جميعا كتبا في الذاكرين والذاكرات رواه ابو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যা: এই অর্থের ও বিষয়ের হাদীস দ্বিতীয় অধ্যায়ে ব্যাখ্যাসহ অতিবাহিত হয়েছে নারী পুরুষ যে কেউই একে অপরকে অথবা পরিবারের অন্য কাউকে জাগাবে এবং সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবে তাদের উভয়কে আল্লাহর যিকরকারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে নেন এবং তাদের মহা পুরস্কারে পুরস্কৃত করেন। আল্লাহর বাণীঃ ‘‘অধিক হারে আল্লাহর যিকরকারী পুরুষ এবং নারীর জন্য আল্লাহ ক্ষমা ও মহা পুরস্কার তৈরি করে রেখেছেন’’- (সূরাহ্ আল আহযাব ৩৩ : ৩৫)। অত্র হাদীসটি যেন কুরআনুল কারীমের এ আয়াতেরই তাফসীর।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২৩৯-[২১] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ আমার উম্মাতের মাঝে বেশী সম্ভ্রান্ত অর্থাৎ উন্নত মর্যাদার অধিকারী ব্যক্তি তারাই, যারা কুরআন বহনকারী ও সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের মাধ্যমে রাত জাগরণকারী। (বায়হাক্বী- শু’আবুল ঈমান)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَشْرَافُ أُمَّتَيْ حَمَلَةُ الْقُرْآنِ وَأَصْحَابُ اللَّيْلِ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَان

وعن ابن عباس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اشراف امتي حملة القران واصحاب الليل رواه البيهقي في شعب الايمان

ব্যাখ্যা: কুরআন বহন অর্থ ধারণ করা, কুরআন মুখস্থ করা এবং সদাসর্বদা তা তিলাওয়াত ও তার হুকুম আহকাম মেনে চলা। আল্লামা ত্বীবী বলেন, এর অর্থ হলো কুরআনের চাহিদা ও দাবি মোতাবেক ‘আমল করা। ‘আসহাবুল লায়ল’ এর দ্বারা রাতের ‘ইবাদাতকারী উদ্দেশ্য। তা সালাত, যিকর আযকার, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি দ্বারা হতে পারে। তবে এখানে মূল উদ্দেশ্য হলো রাতে অধিক হারে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা।


হাদিসের মানঃ জাল (Fake)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২৪০-[২২] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তাঁর পিতা ’উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) রাত্রে আল্লাহর ইচ্ছা মতো সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতেন। রাত্রের শেষভাগে নিজ পরিবারকে সালাত আদায়ের জন্যে উঠিয়ে দিতেন। তিনি তাদের বলতেন, সালাত আদায় কর। তারপর এ আয়াত পাঠ করতেনঃ ’’ওয়া’মুর আহলাকা বিস্‌সলা-তি ওয়াসত্বাবির ’আলায়হা- লা- নাস্আলুকা রিযকবান। নাহনু নারযুকুকা ওয়াল ’আ-ক্বিবাতু লিত্ তাক্বওয়া-’’। অর্থাৎ ’’তোমার পরিবারের লোকজনদেরকে সালাতের আদেশ করতে থাকো। নিজেও (এ কষ্টের) জন্যে ধৈর্য ধারণ করতে থাকো। আমি তোমার নিকট রিযক্ব (রিজিক/রিযিক) চাই না। রিযক্ব তো আমিই তোমাকে দান করি। আখিরাতের সফলতা তো মুত্তাক্বী লোকদের জন্য’’- (সূরাহ্ ত্ব-হা- ২০: ১৩২)। (মালিক)[1]

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ أَبَاهُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ كَانَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ مَا شَاءَ اللَّهُ حَتَّى إِذَا كَانَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ أَيْقَظَ أَهْلَهُ لِلصَّلَاةِ يَقُولُ لَهُمْ: الصَّلَاةُ ثُمَّ يَتْلُو هَذِهِ الْآيَةَ: (وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقًا نَحن نرزقك وَالْعَاقبَة للتقوى)
رَوَاهُ مَالك

وعن ابن عمر ان اباه عمر بن الخطاب رضي الله عنه كان يصلي من الليل ما شاء الله حتى اذا كان من اخر الليل ايقظ اهله للصلاة يقول لهم الصلاة ثم يتلو هذه الاية وامر اهلك بالصلاة واصطبر عليها لا نسالك رزقا نحن نرزقك والعاقبة للتقوىرواه مالك

ব্যাখ্যা: উমার (রাঃ) রাতে পরিবারের লোকদের যে সালাতের জন্য জাগাতেন সেটা হলো তাহাজ্জুদের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ)। কেউ কেউ অবশ্য ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাতের সম্ভাবনার কথাও বলেছেন, তবে প্রথম মতটিই অধিক প্রকাশ বরং এটাই নির্দিষ্ট। কেননা তিনি এ সালাতের জন্য পরিবারের কাউকে উঠতে বাধ্য করেননি।

এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল-কুরআনের যে আয়াত পাঠ করেছেন, তাতে বলা হয়েছেঃ ‘তুমি তোমার আহলে পরিবারকে সালাতের নির্দেশ কর....।’ এখানে সালাত বলতে সকল প্রকার সালাতই এর অন্তর্ভুক্ত চাই ফরয হোক চাই নফল, চাই দিনের সালাত হোক চাই রাতের। উক্ত আয়াতের শেষে বলা হয়েছে, ‘আমিই তোমাকে রিযক্ব (রিজিক/রিযিক) দান করি....।’ এর ব্যাখ্যা হলোঃ রিযক্ব সন্ধানের ব্যস্ততা সালাত পরিহার করো না অথবা তা অসময়ে অনিয়মে আদায় করো না। ইমাম ইবনু কাসীর (রহঃ) বলেন, তুমি যদি যথাযথভাবে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) কায়িম করতে পার তাহলে আল্লাহ এমনভাবে রিযক্ব (রিজিক/রিযিক) দান করবেন যা তুমি কল্পনাও করতে পারনি, যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ ‘‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহ তার পথ করে দিবেন, আর তাকে ধারণাতীত উৎস থেকে রিযক্ব দান করবেন.......’’- (সূরাহ্ আত্ব ত্বলাক্ব ৯ : ২-৩)।

ইবনুন নাজ্জার, ইবনু ‘আসাকির, ইবনু মারদূবিয়াহ প্রমুখ আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, এ আয়াত যখন নাযিল হলো তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায় আট মাস পর্যন্ত ফাজ্‌রের (ফজরের) সালাতের সময় দরজায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলেন, ‘হে কক্ষবাসীগণ! নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের গুনাহের নাপাকী দূরীভূত করে পূর্ণরূপে পবিত্র করতে চাচ্ছেন।’ সম্ভবত ‘উমার (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই কর্মের অনুরসণ করে তিনিও তার পরিবারের লোকদেরকে ডাকতেন। অথবা ‘উমার (রাঃ) ডাকার জন্য পরিবারের লোকজনের বিরক্তি বা কষ্ট ক্লেশের অভিযোগের বিরুদ্ধে আত্মপক্ষের দলীল উপস্থাপনের জন্য উক্ত আয়াত তিলাওয়াত করতেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৭ পর্যন্ত, সর্বমোট ৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে