পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সকাল সন্ধ্যা ও শয্যা গ্রহণকালে যা বলবে

الصباح বা সকাল হলো- ফজর উদিত হওয়া থেকে সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত। আর সন্ধ্যা সূর্য অস্ত হওয়া থেকে। যেমনটি রাগিব (রহঃ) বর্ণনা করেছেন।

নাফি’ ইবনু আযরাক (রহঃ) ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) এর কাছে এসে বললেনঃ আপনি কুরআনুল কারীমে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পেয়েছেন কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। অতঃপর তিলাওয়াত করলেনঃفَسُبْحَانَ اللهِ حِيْنَ تُمْسُوْنَ তিনি বলেন, এর দ্বারা মাগরিব ও ’ইশার সালাত উদ্দেশ্য।وَحِيْنَ تُصْبِحُوْنَ এর দ্বারা ফজরের সালাত উদ্দেশ্য, وَعَشِيًّا এর দ্বারা ’আসরের সালাত এবং وَحِيْنَ تُظْهِرُوْنَ এর দ্বারা যুহরের সালাত উদ্দেশ্য। (সূরা আর্ রূম ৩০ : ১৭-১৮)

আর এ হলো সাহাবায়ে কিরামদের صباح (সকাল) مساء (সন্ধ্যা)-এর ব্যাখ্যা। আর মুজাহিদ (রহঃ) হতে অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে যে, সূর্য অস্ত যাওয়ার পর ব্যতীত المساء বা সন্ধ্যা হবে না। অতএব উক্ত সময়ের জিকিরগুলো(أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلّٰهِ) এরূপ হবে। ’আল্লামা নাবাবী (রহঃ) এ অধ্যায়ের অধীনে উল্লেখিত জিকির-আযকার সম্পর্কে বলেনঃ আমি জানি যে, নিশ্চয় এ অধ্যায়টি অত্যন্ত ব্যাপক, এ অধ্যায়ের তুলনায় ব্যাপক কোন অধ্যায় কিতাবটি (মিশকাতুল মাসাবীহ)-তে নেই। আর আমি এ ব্যাপকতার মাঝেও সংক্ষিপ্তকরণের ক্ষেত্রে কিছু আলোচনা করব ইনশা-আল্ল-হ। সুতরাং যে তার সমস্ত ’আমল (অধ্যায়ে উল্লেখিত সমস্ত জিকির-আযকার) করতে সক্ষম হবে এটা তার জন্য নিয়ামত, আল্লাহ তা’আলার পক্ষ হতে অনুগ্রহ এবং তার জন্য সুখবর। আর যে সমস্ত জিকির-আযকার করতে অক্ষম, সে যেন সংক্ষিপ্তাকারে হলেও এ জিকির-আযকারগুলো করে, এমনকি একটি জিকির হলেও। অতঃপর ’আল্লামা নাবাবী (রহঃ) সকাল-সন্ধ্যা, ইশরাক, সূর্য উদিত হওয়ার আগে এবং অস্ত যাওয়ার পরের জিকির, তাসবীহ ও দু’আর নির্দেশ সংক্রান্ত কুরআনুল কারীমের আয়াতে কারীমাগুলো উল্লেখ করলেন।


২৩৮১-[১] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্ধ্যার সময় বলতেন,

’’আম্‌সায়না- ওয়া আমসাল মুলকু লিল্লা-হি ওয়াল হামদুলিল্লা-হি ওয়ালা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুওয়া ’আলা- কুল্লি শাইয়িন কদীর, আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা মিন খয়রি হা-যিহিল লায়লাতি ওয়া খয়রি মা- ফীহা- ওয়া আ’ঊযুবিকা মিন শার্‌রিহা- ওয়া শার্‌রি মা- ফীহা- আল্ল-হুম্মা ইন্নী আ’ঊযুবিকা মিনাল কাসালি ওয়াল হারামি ওয়াসূয়িল কিবারি ওয়া ফিত্‌নাতিদ্ দুন্ইয়া- ওয়া ’আযা-বিল কবরি’’

(অর্থাৎ- আমরা সন্ধ্যায় প্রবেশ করলাম এবং সন্ধ্যায় প্রবেশ করল সাম্রাজ্যসমূহ আল্লাহর উদ্দেশে। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মা’বূদ নেই। তিনি একক, তার কোন শারীক নেই। তাঁরই সাম্রাজ্য। তাঁরই সমস্ত প্রশংসা এবং তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে এ রাতের কল্যাণ চাই এবং এতে যা আছে তার কল্যাণ। আর আমি আশ্রয় চাই তোমার কাছে রাতের অকল্যাণ হতে আর এতে যা আছে তার অকল্যাণ হতে। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই, অলসতা, বার্ধক্য ও বার্ধক্যের অপকারিতা এবং দুনিয়ার বিপদাপদ ও কবরের ’আযাব হতে।)।

আর যখন ভোর হতো তখনও তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরূপ বলতেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতেন, ’’আস্‌বাহনা- ওয়া আস্‌বাহাল মুলকু লিল্লা-হি’’ (অর্থাৎ- আমরা ভোরে প্রবেশ করলাম, ভোরে প্রবেশ করল সাম্রাজ্যসমূহ আল্লাহর উদ্দেশে)। আর এক বর্ণনায় রয়েছে, ’’রব্বি ইন্নী আ’ঊযুবিকা মিন ’আযা-বিন ফিন্‌না-রি ওয়া ’আযা-বিন ফিল কবরি’’ (অর্থাৎ- হে রব! আমি আশ্রয় চাই তোমার কাছে জাহান্নামের ’আযাব ও কবরের শাস্তি হতে)। (মুসলিম)[1]

بَابُ مَا يَقُوْلُ عِنْدَ الصَّبَاحِ وَالْمَسَاءِ وَالْمَنَامِ

عَن عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَمْسَى قَالَ: «أَمْسَيْنَا وَأَمْسَى الْمُلْكُ لِلَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِ هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَخَيْرِ مَا فِيهَا وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا فِيهَا اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكَسَلِ وَالْهَرَمِ وَسُوءِ الْكِبَرِ وَفِتْنَةِ الدُّنْيَا وَعَذَابِ الْقَبْرِ»
وَإِذَا أَصْبَحَ قَالَ أَيْضًا: «أَصْبَحْنَا وَأَصْبَحَ الْمُلْكُ لِلَّهِ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «رَبِّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابٍ فِي النَّار وَعَذَاب فِي الْقَبْر» . رَوَاهُ مُسلم

عن عبد الله قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا امسى قال امسينا وامسى الملك لله والحمد لله ولا اله الا الله وحده لا شريك له له الملك وله الحمد وهو على كل شيء قدير اللهم اني اسالك من خير هذه الليلة وخير ما فيها واعوذ بك من شرها وشر ما فيها اللهم اني اعوذ بك من الكسل والهرم وسوء الكبر وفتنة الدنيا وعذاب القبرواذا اصبح قال ايضا اصبحنا واصبح الملك لله وفي رواية رب اني اعوذ بك من عذاب في النار وعذاب في القبر رواه مسلم

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসটিতে রুবূবিয়্যাতের দিকে দাসত্ব ও মুখাপেক্ষিতার প্রকাশ ঘটেছে। নিশ্চয়ই প্রত্যেকটি বিষয়ের ভাল ও মন্দ আল্লাহ তা‘আলার হাতেই রয়েছে। আর বান্দার হাতে তার কিছুই নেই এবং এখানে মুসলিম মিল্লাতের জন্য দু‘আ করার আদব জানার ব্যাপারেও শিক্ষা রয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সকাল সন্ধ্যা ও শয্যা গ্রহণকালে যা বলবে

২৩৮২-[২] হুযায়ফাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে ঘুমানোর সময় গালের নীচে হাত রাখতেন আর বলতেন, ’’আল্ল-হুম্মা বিস্‌মিকা আমূতু ওয়া আহ্ইয়া-’’ (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার নামে মৃত্যুবরণ করি ও তোমার নামেই জীবিত হই)। আবার তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘুম থেকে জেগে বলতেন, ’’আলহাম্‌দু লিল্লা-হিল্লাযী আহ্ইয়া-না- বা’দা মা- আমা-তানা- ওয়া ইলায়হিন্ নুশূর’’ (অর্থাৎ- সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার, যিনি আমাদেরকে মৃত্যুর পর আবার জীবিত করলেন এবং তারই দিকে আমাদেরকে প্রত্যাবর্তন)। (বুখারী)[1]

بَابُ مَا يَقُوْلُ عِنْدَ الصَّبَاحِ وَالْمَسَاءِ وَالْمَنَامِ

وَعَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَخَذَ مَضْجَعَهُ مِنَ اللَّيْلِ وَضَعَ يَدَهُ تَحْتَ خَدِّهِ ثُمَّ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا» . وَإِذَا اسْتَيْقَظَ قَالَ: «الْحَمْدُ الله الَّذِي أَحْيَانًا بَعْدَمَا مَا أماتنا وَإِلَيْهِ النشور» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن حذيفة قال كان النبي صلى الله عليه وسلم اذا اخذ مضجعه من الليل وضع يده تحت خده ثم يقول اللهم باسمك اموت واحيا واذا استيقظ قال الحمد الله الذي احيانا بعدما ما اماتنا واليه النشور رواه البخاري

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা খাত্ত্বাবী (রহঃ) বলেনঃ উল্লেখিত দু‘আয় (...أَحْيَانًا) অর্থাৎ- ‘‘মৃত্যুর পর জীবিত করলেন’’ এটি মাজায, কেননা ঘুমের সময় জীবন আলাদা হয় না। কিন্তু ঘুমের সময় নড়াচড়া বন্ধ ও শক্তি দূরীভূত হয়, যা মৃত্যুরই নামান্তর। অতঃপর তিনি বলেনঃ (بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا) অর্থাৎ- ঘুমের পরবর্তীতে তিনি আমাদের ওপর শক্তি ও চলাফেরার ক্ষমতা ফিরিয়ে দিলে, এগুলো (নড়াচড়া ও চলাফেরার শক্তি) দূর হয়ে যাওয়ার পর। ‘আল্লামা ত্বীবী (রহঃ) মুত্বলাকভাবে (সাধারণভাবে) ঘুমের উপর মৃত্যু উল্লেখ করার হিকমাত সম্পর্কে বলেন যে, নিশ্চয় মানুষের উপকৃত হওয়াটা জীবিত থাকার সাথে সম্পৃক্ত, আর তা হলো আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি অনুসন্ধান করা, তাঁর আনুগত্য করা, তাঁর রাগ ও শাস্তি থেকে বেঁচে থাকা। সুতরাং যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন এ সকল উপকার তার থেকে দূর হয়ে যায় এবং জীবনের কোন অংশই সে গ্রহণ করতে পারে না, কাজেই তা তো মৃত্যুর মতই।

অতএব নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা (اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ) অর্থাৎ- সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য। এটা নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা, যা জীবিত থাকার উপকারগুলো দূর হওয়ার পর ফিরিয়ে পাবার কৃতজ্ঞতা।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সকাল সন্ধ্যা ও শয্যা গ্রহণকালে যা বলবে

২৩৮৩-[৩] আর ইমাম মুসলিম বারা (রাঃ) হতে (বর্ণনা করেন)।[1]

بَابُ مَا يَقُوْلُ عِنْدَ الصَّبَاحِ وَالْمَسَاءِ وَالْمَنَامِ

وَمُسلم عَن الْبَراء

ومسلم عن البراء

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা কারী (রহঃ) বলেনঃ আলোচ্য হাদীসটি মুত্তাফাকুন আলায়হি তথা বুখারী ও মুসলিমের সম্মিলিত বর্ণনা। তবে সাহাবীদের ক্ষেত্রে ভিন্নতা রয়েছে। আমি বলব, (মির্‘আত প্রণেতা) মুহাদ্দিসীনাদের পরিভাষা অনুযায়ী তা মুত্তাফাকুন আলায়হি-এর নয়। কারণ মুত্তাফাকুন আলায়হি তথা বুখারী ও মুসলিমের সম্মিলিত বর্ণনার ক্ষেত্রে তাঁরা (اتحاد الصحابى) বা সাহাবীদের ঐকমত্য হওয়া শর্ত করেছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সকাল সন্ধ্যা ও শয্যা গ্রহণকালে যা বলবে

২৩৮৪-[৪] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ বিছানায় ঘুমানোর সময় যেন নিজের পরিধেয় বস্ত্রের ভিতর দিক দিয়ে বিছানা ঝেড়ে নেয়। কেননা সে জানে না, তারপর বিছানায় কি এসে পড়েছে। অতঃপর সে যেন এ দু’আ পড়ে,

’’বিস্‌মিকা রব্বী ওয়া য’তু জাম্‌বী ওয়াবিকা আরফা’উহ ইন্ আম্‌সাকতা নাফসী ফারহাম্‌হা- ওয়া ইন্ আরসালতাহা- ফাহফাযহা- বিমা- তাহফাযু বিহী ’ইবা-দাকাস্ স-লিহীন’’

(অর্থাৎ- হে রব! তোমার নামে আমার দেহ রাখলাম এবং তোমার নামেই আবার তা উঠাব। যদি তুমি আমার আত্মাকে (মৃত্যু হতে) ফিরিয়ে রাখো, তবে তুমি আমার আত্মার উপর দয়া করো। আর যদি একে ছেড়ে দাও, তাহলে এর রক্ষা করো, যা দিয়ে তুমি তোমার নেক বান্দাদেরকে রক্ষা করে থাকো।)। অন্য এক বর্ণনায় আছে, অতঃপর সে যেন নিজের ডান পাশে ঘুমায়, তারপর বলে, ’’বিসমিকা’’ (অর্থাৎ- তোমারই নামে)। (বুখারী, মুসলিম) [1]

অন্য আর এক বর্ণনায় আছে, ’’তারপর সে যেন পরিধেয় বস্ত্রের ভিতরের দিক দিয়ে (বিছানা) তিনবার ঝেড়ে নেয়, আর তুমি যদি আমার আত্মাকে রেখে দাও, তবে ক্ষমা করে দিও।’’

بَابُ مَا يَقُوْلُ عِنْدَ الصَّبَاحِ وَالْمَسَاءِ وَالْمَنَامِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا أَوَى أَحَدُكُمْ إِلَى فِرَاشِهِ فَلْيَنْفُضْ فِرَاشَهُ بِدَاخِلَةِ إِزَارِهِ فَإِنَّهُ لَا يَدْرِي مَا خَلَفَهُ عَلَيْهِ ثُمَّ يَقُولُ: بِاسْمِكَ رَبِّي وَضَعْتُ جَنْبِي وَبِكَ أرفعه إِن أَمْسَكت نَفسِي فارحمهما وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ . وَفِي رِوَايَةٍ: ثُمَّ لْيَضْطَجِعْ عَلَى شِقِّهِ الْأَيْمن ثمَّ ليقل: بِاسْمِك
وَفِي رِوَايَةٍ: «فَلْيَنْفُضْهُ بِصَنِفَةِ ثَوْبِهِ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ وَإِن أَمْسَكت نَفسِي فَاغْفِر لَهَا»

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا اوى احدكم الى فراشه فلينفض فراشه بداخلة ازاره فانه لا يدري ما خلفه عليه ثم يقول باسمك ربي وضعت جنبي وبك ارفعه ان امسكت نفسي فارحمهما وان ارسلتها فاحفظها بما تحفظ به عبادك الصالحين وفي رواية ثم ليضطجع على شقه الايمن ثم ليقل باسمكوفي رواية فلينفضه بصنفة ثوبه ثلاث مرات وان امسكت نفسي فاغفر لها

ব্যাখ্য: ‘আল্লামা কারী (রহঃ) বলেনঃ তদানীন্তন সময়ে ‘আরবদের নিকট লুঙ্গি বা চাদর ছাড়া অন্য কোন কাপড় ছিল না বিধায় বিছানা ঝাড়া বা পরিষ্কার করার সাথে পরিধেয় বস্ত্রকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। আর এটাই সহজ ছিল এবং এতে আবরু খুলে যাওয়ার সম্ভাবনাও এতে কম থাকে। ‘আল্লামা নাবাবী (রহঃ) বলেনঃ বিছানায় যাওয়ার পূর্বে তা ঝাড়া মুস্তাহাব। কেননা তাতে সাপ, বিচ্ছু বা অন্য কোন কষ্টদায়ক বস্ত্ত থাকতে পারে যা সে জানে না, কাজেই বিছানা ঝাড়াটা জরুরী। আর পরিধেয় বস্ত্র দ্বারা হাত আবৃত থাকবে যাতে বিছানায় খারাপ কিছু থাকলেও তা দ্বারা অনিষ্ট সাধিত না হয়।

উল্লেখ্য যে, আলোচ্য হাদীসটি আল্লাহ তা‘আলার কথারই সমর্থক।

اللّٰهُ يَتَوَفَّى الْأَنْفُسَ حِيْنَ مَوْتِهَا وَالَّتِىْ لَمْ تَمُتْ فِىْ مَنَامِهَا فَيُمْسِكُ الَّتِىْ قَضٰى عَلَيْهَا الْمَوْتَ وَيُرْسِلُ الأُخْرٰى إِلٰى أَجَلٍ مُّسَمًّى

অর্থাৎ- ‘‘আল্লাহ তা‘আলা মানুষের প্রাণ হরণ করেন তার মৃত্যুর সময়, আর যে মরে না তার নিদ্রাকালে.....।’’ (সূরা আয্ যুমার ৩৯ : ৪২)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সকাল সন্ধ্যা ও শয্যা গ্রহণকালে যা বলবে

২৩৮৫-[৫] বারা ইবনু ’আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিছানায় ডান কাত হয়ে ঘুমাতেন। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতেন,

’’আল্ল-হুম্মা আস্‌লামতু নাফসী ইলায়কা ওয়া ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহী ইলায়কা ওয়া ফাও্ওয়াযতু আমরী ইলায়কা ওয়া আলজা’তু যহরী ইলায়কা রগবাতান ওয়া রহ্বাতান ইলায়কা লা- মালজাআ ওয়ালা- মানজা- মিনকা ইল্লা- ইলায়কা আ-মানতু বিকিতা-বিকাল্লাযী আনযালতা ওয়া নাবিয়্যিকাল্লাযী আরসালতা’’

(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম, তোমার দিকে চেয়ে থাকলাম, আমার কাজ তোমার ওপর সমর্পণ করলাম এবং ভয়ে ও আগ্রহ ভরে তোমার সাহায্যের উপর ভরসা করলাম। তুমি ছাড়া আর কারো কাছে আশ্রয় ও মুক্তি পাওয়ার কোন স্থান নেই। যে কিতাব তুমি অবতীর্ণ করেছ ও যে নবী তুমি পাঠিয়েছ, সম্পূর্ণরূপে আমি এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করি।)। অতঃপর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি এ দু’আ পড়বে তারপর ঐ রাতেই মারা যাবে, সে ইসলামের উপর মৃত্যুবরণ করবে।

অন্য এক বর্ণনায় আছে, বর্ণনাকারী [বারা (রাঃ)] বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক ব্যক্তিকে বললেন, হে অমুক! তুমি বিছানায় ঘুমানোর সময় সালাতের ওযূর মতো ওযূ করবে এবং ডান কাত হয়ে ঘুমাবে, অতঃপর বলবে, ’’আল্ল-হুম্মা আস্‌লামতু নাফসী ইলায়কা.....আরসালতা’’ (অর্থাৎ- ’হে আল্লাহ! আমি আমার নিজেকে আপনার কাছে আত্মসমর্পণ করলাম ...... পাঠিয়েছ’ পর্যন্ত।) অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যদি তুমি এ রাতেই মৃত্যুবরণ করো, তাহলে ইসলামের উপর মৃত্যুবরণ করবে। আর যদি ভোরে (জীবিত) ওঠো, তাহলে কল্যাণের উপর উঠবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ مَا يَقُوْلُ عِنْدَ الصَّبَاحِ وَالْمَسَاءِ وَالْمَنَامِ

وَعَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ نَامَ عَلَى شِقِّهِ الْأَيْمَنِ ثُمَّ قَالَ: «اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفَسِي إِلَيْكَ وَوَجَّهْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ لَا مَلْجَأَ وَلَا مَنْجَا مِنْكَ إِلَّا إِلَيْكَ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ وَنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ» . وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ قَالَهُنَّ ثُمَّ مَاتَ تَحْتَ لَيْلَتِهِ مَاتَ عَلَى الْفِطْرَةِ»
وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِرَجُلٍ: يَا فُلَانُ إِذَا أَوَيْتَ إِلَى فِرَاشِكَ فَتَوَضَّأْ وُضُوءَكَ لِلصَّلَاةِ ثُمَّ اضْطَجِعْ عَلَى شِقِّكَ الْأَيْمَنِ ثُمَّ قُلِ: اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفَسِي إِلَيْكَ إِلَى قَوْلِهِ: أَرْسَلْتَ وَقَالَ: «فَإِنْ مِتَّ مِنْ لَيْلَتِكَ مِتَّ عَلَى الْفِطْرَةِ وإِن أصبحتَ أصبتَ خيرا»

وعن البراء بن عازب قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا اوى الى فراشه نام على شقه الايمن ثم قال اللهم اسلمت نفسي اليك ووجهت وجهي اليك وفوضت امري اليك والجات ظهري اليك رغبة ورهبة اليك لا ملجا ولا منجا منك الا اليك امنت بكتابك الذي انزلت ونبيك الذي ارسلت وقال رسول الله صلى الله عليه وسلم من قالهن ثم مات تحت ليلته مات على الفطرةوفي رواية قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لرجل يا فلان اذا اويت الى فراشك فتوضا وضوءك للصلاة ثم اضطجع على شقك الايمن ثم قل اللهم اسلمت نفسي اليك الى قوله ارسلت وقال فان مت من ليلتك مت على الفطرة وان اصبحت اصبت خيرا

ব্যাখ্যা: তিরমিযীতে রাফি' ইবনু খাদীজ (রাঃ)-এর বর্ণিত হাদীসে রয়েছে যে, (ইমাম আত্ তিরমিযী উক্ত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন) যদি ঐ রাতে সে মারা যায় তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

আহমাদ-এর অপর বর্ণনায় আলোচ্য হাদীসে উল্লেখিত শব্দের পরিবর্তে রয়েছে সে ফিতরাতের উপর মৃত্যুবরণ করবে, তার জন্য জান্নাতে ঘর নির্মাণ করা হবে।

‘আল্লামা নাবাবী (রহঃ) বলেনঃ আলোচ্য হাদীসে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত রয়েছে যা পালন করা মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়।

১. ঘুমানোর সময় উযূ করা। যদি সে উযূ অবস্থায় থাকে তবে সে উযূই তার যথেষ্ট। কেননা রাতে মৃত্যুর আশংকায় পবিত্র অবস্থায় ঘুমানো উদ্দেশ্য, যাতে সত্য স্বপ্ন দেখা যায় এবং ঘুমন্ত অবস্থায় শয়তানের খেলনা হওয়া থেকে বেঁচে থাকা যায়।

২. ডান কাতে ঘুমানো। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতিটি কাজ ডান দিক থেকে করা ভালবাসতেন।

৩. ঘুমানোর সময় আল্লাহর জিকির করা, যাতে জিকিরই তাঁর শেষ ‘আমল হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সকাল সন্ধ্যা ও শয্যা গ্রহণকালে যা বলবে

২৩৮৬-[৬] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিছানায় ঘুমানোর সময় বলতেন,

’’আলহাম্‌দু লিল্লা-হিল্লাযী আত্ব’আমানা- ওয়া সাকা-না- ওয়া কাফা-না- ওয়াআ-ওয়া-না- ফাকাম মিম্‌মান্ লা-কা-ফিয়া লাহূ ওয়ালা- মু’বিয়া’’

(অর্থাৎ- প্রশংসা শুধুমাত্র আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে খাওয়ালেন, পান করালেন, আমাদের প্রয়োজন পূরণ করলেন এবং আমাদেরকে আশ্রয় দিলেন। অথচ এমন অনেক লোক আছে যাদের না আছে কেউ প্রয়োজন মিটাবার আর না আছে কোন আশ্রয়দাতা।)। (মুসলিম)[1]

بَابُ مَا يَقُوْلُ عِنْدَ الصَّبَاحِ وَالْمَسَاءِ وَالْمَنَامِ

وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ قَالَ: «الحمدُ للَّهِ الَّذِي أطعمنَا وَسَقَانَا وكفانا وَآوَانَا فَكَمْ مِمَّنْ لَا كَافِيَ لَهُ وَلَا مؤوي» . رَوَاهُ مُسلم

وعن انس ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان اذا اوى الى فراشه قال الحمد لله الذي اطعمنا وسقانا وكفانا واوانا فكم ممن لا كافي له ولا مووي رواه مسلم

ব্যাখ্যা: বলা যায় যে, ঘুমানোর সময় খাদ্য, পানীয় ও পূর্ণতার উপর আল্লাহর প্রশংসা করার উদ্দেশ্য এই যে, নিশ্চয় ঘুম পরিতৃপ্ত হওয়ারই একটি অংশ, কেননা ঘুমের মাধ্যমে ব্যস্ততা থেকে অবসর এবং অনিষ্টতা থেকে নিরাপদ থাকা যায়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সকাল সন্ধ্যা ও শয্যা গ্রহণকালে যা বলবে

২৩৮৭-[৭] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ফাতিমা (রাঃ) (আটার) চাক্কি পিষতে পিষতে তার হাতের কষ্ট অনুভূত হওয়ার অভিযোগ স্বরূপ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে আসলেন। তিনি [ফাতিমা (রাঃ)] জানতে পেরেছিলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে যুদ্ধবন্দী গোলাম এসেছে। কিন্তু তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রসূলের দেখা না পেয়ে মা ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর কাছে এ কথা বললেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন ফিরে আসলেন ’আয়িশাহ্ ফাত্বিমার কথা তাঁকে জানালেন। ’আলী (রাঃ) বলেন, অতঃপর খবর পেয়ে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন আমাদের এখানে আসলেন, তখন আমরা বিছানায় শুয়ে পড়ছিলাম। তাঁকে দেখে আমরা উঠতে চাইলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা নিজ নিজ জায়গায় থাকো। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের কাছে এসে আমার ও ফাত্বিমার মাঝে বসে গেলেন। এমনকি আমি আমার পেটে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর পায়ের শীতলতা অনুভব করলাম। তারপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা যা আমার কাছে চেয়েছ এর (গোলামের) চেয়ে অনেক উত্তম এমন কথা আমি কি তোমাদেরকে বলে দেবো না? আর তা হলো যখন তোমরা ঘুমাবে তখন তেত্রিশবার ’সুবহা-নাল্ল-হ’, তেত্রিশবার ’আলহামদুলিল্লা-হ’ এবং চৌত্রিশবার ’আল্ল-হু আকবার’ পড়বে। এটা তোমাদের জন্য খাদিম (গোলাম) হতে অনেক উত্তম হবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ مَا يَقُوْلُ عِنْدَ الصَّبَاحِ وَالْمَسَاءِ وَالْمَنَامِ

وَعَن عَليّ: أَن فَاطِمَة أَنْت النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَشْكُو إِلَيْهِ مَا تَلْقَى فِي يَدِهَا مِنَ الرَّحَى وَبَلَغَهَا أَنَّهُ جَاءَهُ رَقِيقٌ فَلَمْ تُصَادِفْهُ فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لِعَائِشَةَ فَلَمَّا جَاءَ أَخْبَرَتْهُ عَائِشَةُ قَالَ: فَجَاءَنَا وَقَدْ أَخَذْنَا مَضَاجِعَنَا فَذَهَبْنَا نَقُومُ فَقَالَ: عَلَى مَكَانِكُمَا فَجَاءَ فَقَعَدَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ قَدَمِهِ عَلَى بَطْنِي فَقَالَ: «أَلَا أَدُلُّكُمَا عَلَى خَيْرٍ مِمَّا سَأَلْتُمَا؟ إِذَا أَخَذْتُمَا مَضْجَعَكُمَا فَسَبِّحَا ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ وَاحْمَدَا ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ وَكَبِّرَا ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ فَهُوَ خير لَكمَا من خَادِم»

وعن علي ان فاطمة انت النبي صلى الله عليه وسلم تشكو اليه ما تلقى في يدها من الرحى وبلغها انه جاءه رقيق فلم تصادفه فذكرت ذلك لعاىشة فلما جاء اخبرته عاىشة قال فجاءنا وقد اخذنا مضاجعنا فذهبنا نقوم فقال على مكانكما فجاء فقعد بيني وبينها حتى وجدت برد قدمه على بطني فقال الا ادلكما على خير مما سالتما اذا اخذتما مضجعكما فسبحا ثلاثا وثلاثين واحمدا ثلاثا وثلاثين وكبرا ثلاثا وثلاثين فهو خير لكما من خادم

ব্যাখ্যা: অপর বর্ণনায় ‘আল্লামা ‘আবদুর রহমান মুবারকপূরী (রহঃ) বলেনঃ অপর বর্ণনায় আত্ তাকবীর ‘‘আল্ল-হু আকবার’’ ৩৩ বার উল্লেখ রয়েছে, আবার অপর বর্ণনায় ‘‘সুবহা-নাল্ল-হ’’ ৩৪ বার রয়েছে। আবার অন্য বর্ণনায় ‘‘আলহামদু লিল্লা-হ’’ ৩৪ বার রয়েছে। তবে অধিকাংশ বর্ণনার ঐকমত্যে ‘‘আল্ল-হু আকবার’’ ৩৪ বার বলাই অগ্রগণ্য।

‘আল্লামা ইবনুল বাত্ত্বাল (রহঃ) বলেনঃ ঘুমের সময় এ ধরনের জিকির করা বা সম্ভব মতো উল্লেখিত সমস্ত জিকির করা তাঁর উম্মাতের জন্য যথেষ্ট হবে, আর এ মর্মে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইঙ্গিত দিয়েছেন। আর এর অর্থ হলো এটি মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়।

‘আল্লামা ‘ইয়ায (রহঃ) বলেনঃ অবস্থা ও সময়ভেদে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বিভিন্ন জিকির বর্ণিত হয়েছে। আর এ প্রতিটি তাসবীহ বা জিকির উল্লেখিত সময়ে পড়লেই হবে।

আলোচ্য হাদীস থেকে এটা প্রতীয়মান হয় যে, তরকারী পাকানো, রুটি বানানো বা বাড়ীর কাজে সক্ষম মহিলার বাবার বাড়ীতে থাকা অবস্থায় যদি তার খাদেম না থাকে তবে স্বামীর উপর তার জন্য খাদেম নিয়োগ দেয়া আবশ্যক নয়। কেননা ফাতিমা (রাঃ) খাদিম চাওয়ার পরও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মর্মে ‘আলী (রাঃ) তার খিদমাত করার কোন খাদিম নিয়োগের নির্দেশ দেননি।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - সকাল সন্ধ্যা ও শয্যা গ্রহণকালে যা বলবে

২৩৮৮-[৮] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ফাতিমা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে একজন খাদিম চাইতে আসলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি কি তোমাকে এমন পথ দেখাবো না, যা তোমার জন্য খাদিমের চেয়ে অনেক উত্তম হবে? তা হলো প্রত্যেক সালাতের সময় ও ঘুমানোর সময় পড়বে তেত্রিশবার ’সুবহা-নাল্ল-হ’, তেত্রিশবার ’আলহামদুলিল্লা-হ’ ও চৌত্রিশবার ’আল্ল-হু আকবার’। (মুসলিম)[1]

بَابُ مَا يَقُوْلُ عِنْدَ الصَّبَاحِ وَالْمَسَاءِ وَالْمَنَامِ

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: جَاءَتْ فَاطِمَةُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَسْأَلُهُ خَادِمًا فَقَالَ: «أَلَا أَدُلُّكِ عَلَى مَا هُوَ خَيْرٌ مِنْ خَادِمٍ؟ تُسَبِّحِينَ اللَّهَ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ وَتَحْمَدِينَ اللَّهَ ثَلَاثًا وَثَلَاثِينَ وَتُكَبِّرِينَ اللَّهَ أَرْبَعًا وَثَلَاثِينَ عِنْدَ كُلِّ صَلَاةٍ وَعِنْدَ مَنَامِكِ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

وعن ابي هريرة قال جاءت فاطمة الى النبي صلى الله عليه وسلم تساله خادما فقال الا ادلك على ما هو خير من خادم تسبحين الله ثلاثا وثلاثين وتحمدين الله ثلاثا وثلاثين وتكبرين الله اربعا وثلاثين عند كل صلاة وعند منامك رواه مسلم

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে এ মর্মে দলীল রয়েছে যে, যে ব্যক্তি ঘুমানোর সময় অধ্যবসার সাথে এ জিকির করবে, তাকে ক্লান্তি ধরবে না। কেননা এখানে ফাতিমা (রাঃ) কাজের কষ্টের কথা বললেন, আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এটা পূর্ণ করতে বললেন। ইমাম ইবনু তায়মিয়্যাহ্ (রহঃ) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ‘আল্লামা হাফেয আসকালানী (রহঃ) বলেনঃ এতে লক্ষণীয় বিষয় রয়েছে, আর এখানে কষ্ট দূর হওয়ার ব্যাপারটি নির্দিষ্ট করা হয়নি। বরং যে সেটার (উল্লেখিত দু‘আ) প্রতি যত্নবান হবে, কাজের আধিক্যের কারণে তার কষ্ট না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর কাজ তার ওপর কঠিন হবে না, যদিও তাতে কষ্ট সাধিত হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১০: আল্লাহ তা‘আলার নামসমূহ (كتاب اسماء الله تعالٰى)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৮ পর্যন্ত, সর্বমোট ৮ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে