পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - পানীয় দ্রব্যের বর্ণনা

৪২৭৫-[১৩] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জামানায় চলা অবস্থায় খেতাম এবং দাঁড়ানো অবস্থায় পান করতাম। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)[1]ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ এ হাদীসটি হাসান, সহীহ ও গরীব।

عَن ابنِ عمَرَ قَالَ: كُنَّا نَأْكُلُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ نَمْشِي وَنَشْرَبُ وَنَحْنُ قِيَامٌ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ

عن ابن عمر قال كنا ناكل على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم ونحن نمشي ونشرب ونحن قيام رواه الترمذي وابن ماجه والدارمي وقال الترمذي هذا حديث حسن صحيح غريب

ব্যাখ্যাঃ হাদীস প্রমাণ করে দাঁড়িয়ে খাওয়া বৈধ কোন প্রকার অপছন্দ ছাড়াই তা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ‘আমল এবং তাকরীর দ্বারা প্রমাণিত। তবে ‘উলামাদের নিকট ভালো হলো চলন্ত, হাঁটা ও দাঁড়ানো অবস্থায় না খাওয়া যা ইবনু মালিক স্পষ্ট করেছেন। ইতিপূর্বে দাঁড়ানো অবস্থায় পান করার আলোচনা গেছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة) 21. Foods

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - পানীয় দ্রব্যের বর্ণনা

৪২৭৬-[১৪] ’আমর ইবনু শু’আয়ব (রহঃ) তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দাঁড়ানো এবং বসা উভয় অবস্থায় পান করতে দেখেছি। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جده قَالَ: رَأَيْت رَسُول لله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَشْرَبُ قَائِمًا وَقَاعِدًا. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده قال رايت رسول لله صلى الله عليه وسلم يشرب قاىما وقاعدا رواه الترمذي

ব্যাখ্যাঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পান করেছেন জীবনে একবার অথবা দু’বার বৈধতার জন্য অথবা স্থানের অসুবিধার জন্য আর বসে সর্বাবস্থায় পান করেছেন এবং যা উত্তম অভ্যাস। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة) 21. Foods

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - পানীয় দ্রব্যের বর্ণনা

৪২৭৭-[১৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (কিছু পান করার সময়) পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস ফেলতে এবং তার মধ্যে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। (আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يُتَنَفَّسَ فِي الْإِنَاءِ أَوْ يُنْفَخَ فِيهِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَابْن مَاجَه

وعن ابن عباس رضي الله عنهما قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم ان يتنفس في الاناء او ينفخ فيه رواه ابو داود وابن ماجه

ব্যাখ্যাঃ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান করার সময় পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস ফেলতে নিষেধ করেছেন। এই ভয়ে মুখের লালা বা থুথু পানীয়ের মধ্যে পড়তে পারে।

সবচেয়ে উত্তম হলো নিঃশ্বাস নিবে, না ফুঁ দিবে, না অপেক্ষা করবে ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত আর যদি কোন ময়লা দেখে তাহলে তা আঙ্গুল, কাঠি বা অন্য কোন জিনিস দিয়ে উঠাবে বা সরাবে। আর গরম অবস্থায় খাবে না, কেননা বারাকাত চলে যায় আর গরম হলো জাহান্নামীদের খাদ্য। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৭২৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة) 21. Foods

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - পানীয় দ্রব্যের বর্ণনা

৪২৭৮-[১৬] উক্ত রাবী [ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা উটের ন্যায় এক শ্বাসে পান করবে না; বরং দু’ কিংবা তিন শ্বাসে পান করবে। আর যখন পান করবে (শুরুতে) বিসমিল্লা-হ পড়বে এবং যখন (পানান্তে) পেয়ালা মুখ হতে আলাদা করবে, তখন আলহামদুলিল্লা-হ বলবে। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَشْرَبُوا وَاحِدًا كَشُرْبِ الْبَعِيرِ وَلَكِنِ اشْرَبُوا مَثنى وثُلاثَ وَسَمُّوا إِذَا أَنْتُمْ شَرِبْتُمْ وَاحْمَدُوا إِذَا أَنْتُمْ رفعتُم» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا تشربوا واحدا كشرب البعير ولكن اشربوا مثنى وثلاث وسموا اذا انتم شربتم واحمدوا اذا انتم رفعتم رواه الترمذي

ব্যাখ্যাঃ (وَسَمُّوا إِذَا أَنْتُمْ شَرِبْتُمْ) যখন তোমরা পান করার ইচ্ছা পোষণ কর, বল- ‘‘বিসমিল্লা-হি’’ আর যখনই পাত্রকে মুখ থেকে সরাবে অথবা পানের শেষে আল্লাহর প্রশংসা করবে। এমনটি মুল্লা ‘আলী কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন।

আমি (ভাষ্যকার) বলি : হাফিয ইবনু হাজার (রহিমাহুল্লাহ) তিনি ফাতহুল বারীতে হাদীস নিয়ে এনেছেন যা ত্ববারানীতে এসেছে সহীহ সনদে।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَشْرَبُ فِي ثَلَاثَةِ أَنْفَاسٍ إِذَا أَدْنَى الْإِنَاءَ إِلٰى فِيهِ يسمي الله فإذا أخره حمد الله بفعل ذلك ثلاثا

আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন নিঃশ্বাসে পান করতেন। আর যখনই পাত্রকে মুখের নিকট নিয়ে আসে তখন বিসমিল্লা-হ বলতেন আর যখন বিলম্বিত করতেন আলহামদুলিল্লা-হ বলতেন এমনটি তিনবার করেছেন।

মূলত হাদীসটির উদ্দেশ্য পানের শুরুতে বিসমিল্লা-হ এবং শেষে আলহামদুলিল্লা-হ বলা।

(তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৮৮৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة) 21. Foods

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - পানীয় দ্রব্যের বর্ণনা

৪২৭৯-[১৭] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানীয় বস্তুতে (পান করার সময়) ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। তখন জনৈক ব্যক্তি বলল, যদি আমি পানির মধ্যে খড়কুটা দেখতে পাই? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তা ফেলে দাও। সে আবার বলল : এক নিঃশ্বাসে পান করলে আমার তৃপ্তি হয় না। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এমতাবস্থায় পেয়ালাটি মুখ হতে পৃথক করে নিঃশ্বাস ত্যাগ করো। (তিরমিযী ও দারিমী)[1]

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ النَّفْخِ فِي الشَّرَابِ فَقَالَ رَجُلٌ: الْقَذَاةَ أَرَاهَا فِي الْإِنَاءِ قَالَ: «أَهْرِقْهَا» قَالَ: فَإِنِّي لَا أُرْوَى مِنْ نَفَسٍ وَاحِدٍ قَالَ: «فَأَبِنِ الْقَدَحَ عَنْ فِيكَ ثُمَّ تَنَفَّسْ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ والدارمي

وعن ابي سعيد الخدري ان النبي صلى الله عليه وسلم نهى عن النفخ في الشراب فقال رجل القذاة اراها في الاناء قال اهرقها قال فاني لا اروى من نفس واحد قال فابن القدح عن فيك ثم تنفس رواه الترمذي والدارمي

ব্যাখ্যাঃ জাযারী নিহায়াতে বলেনঃ নিষেধাজ্ঞা এ কারণে ফুঁ এর মাধ্যমে মুখের লালা বা থুথু পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, ফলে সে এমন কিছু পান করবে যাতে করে সে কষ্ট পাবে।

হাদীসে দলীল হিসেবে সাব্যস্ত হয় যে, এক নিঃশ্বাসে পান করা বৈধ। কেননা ব্যক্তিকে নিষেধ করা হয়নি বরং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি তুমি তৃপ্তি না পাও তাহলে পেয়ালাটিকে মুখ হতে পৃথক করে নিঃশ্বাস ত্যাগ কর।

আর তা মাকরূহ হওয়া সত্ত্বেও বৈধ সাব্যস্ত করে। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৫ম খন্ড, হাঃ ১৮৮৭)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة) 21. Foods

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - পানীয় দ্রব্যের বর্ণনা

৪২৮০-[১৮] উক্ত রাবী [আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেয়ালার ছিদ্র দিয়ে পান করতে এবং পানীয় বস্তুতে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْهُ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الشُّرْبِ مِنْ ثُلْمَةِ الْقَدَحِ وَأَنْ يُنْفَخَ فِي الشَّرَابِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

وعنه قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن الشرب من ثلمة القدح وان ينفخ في الشراب رواه ابو داود

ব্যাখ্যাঃ পেয়ালার ছিদ্র দিয়ে পান করার নিষেধের কারণ হলো পান করার সময় পানি পড়বে এবং পানির ফোটা মুখে এবং শরীরে পড়বে। কেননা ভাঙ্গা বা ছিদ্র পেয়ালায় ঠোঁট শক্তভাবে আঁকড়িয়ে ধরে রাখতে পারে না।

কারও মতে, ছিদ্রের স্থানটিতে শয়তানের বসার স্থান।

হতে পারে ছিদ্রের স্থানটি অপরিষ্কার থাকে ভালো করে পরিষ্কার করলেও, ফলে পান করাটা অপরিষ্কার অবস্থায় হয়। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৭১৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة) 21. Foods

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - পানীয় দ্রব্যের বর্ণনা

৪২৮১-[১৯] কাবশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার গৃহে এলেন এবং একটি লটকানো মশক হতে দাঁড়ানো অবস্থায় পান করলেন। পরে আমি মশকের নিকট গিয়ে মশকের সে মুখখানা কেটে রেখে দিলাম। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ) [1]আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ হাদীসটি হাসান, গরীব ও সহীহ।

وَعَن كبْشَةَ قَالَتْ: دَخَلَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَشَرِبَ مِنْ فِي قِرْبَةٍ مُعَلَّقَةٍ قَائِمًا فَقُمْتُ إِلَى فِيهَا فَقَطَعْتُهُ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غريبٌ صَحِيح

وعن كبشة قالت دخل على رسول الله صلى الله عليه وسلم فشرب من في قربة معلقة قاىما فقمت الى فيها فقطعته رواه الترمذي وابن ماجه وقال الترمذي هذا حديث حسن غريب صحيح

ব্যাখ্যাঃ হাদীসের সমর্থনে যা তিরমিযী বর্ণনা করেছেন উম্মু সুলায়ম (রাঃ) হতে অনুরূপ অর্থে তবে তাতে অতিরিক্ত এসেছে, وَقَالَتْ: لَا يَشْرَبُ مِنْهَا أَحَدٌ بَعْدَ شُرْبِ رَسُولِ اللهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান করার পর আর কেউ যেন পান না করে।

আর ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) তিরমিযী হতে বর্ণনা করেন, মশকের মুখ কাটার দু’টি উদ্দেশ্য। সে স্থানটিকে সংরক্ষণ করা যেখানে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুখ লেগেছে যাতে করে প্রত্যেকে তা স্পর্শ করতে পারে।

আর দ্বিতীয় মতে, তা হতে বারাকাত হাসিল করতে পারে এবং আরোগ্য লাভ করতে পারে। আর হাদীস প্রমাণ করে কলসের মুখ দিয়ে পান করার নিষেধাজ্ঞা হারাম নয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ কাবশাহ্ (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة) 21. Foods

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - পানীয় দ্রব্যের বর্ণনা

৪২৮২-[২০] যুহরী (রহিমাহুল্লাহ) ’উরওয়াহ্ হতে বর্ণনা করেন। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেছেনঃ ঠাণ্ডা মিষ্টি পানি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে সর্বাধিক প্রিয় পানীয় ছিল। (তিরমিযী)[1]আর ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেনঃ সহীহ ও নির্ভরযোগ্য কথা হলো, এ হাদীসটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে যুহরী কর্তৃক মুরসাল হিসেবেই বর্ণিত হয়েছে (অর্থাৎ- বর্ণনায় অন্য কোন সাহাবীর নাম উল্লেখ নেই)।

وَعَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ أَحَبُّ الشَّرَابِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْحُلْوَ الْبَارِدَ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: وَالصَّحِيحُ مَا رُوِيَ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُرْسَلًا

وعن الزهري عن عروة عن عاىشة قالت كان احب الشراب الى رسول الله صلى الله عليه وسلم الحلو البارد رواه الترمذي وقال والصحيح ما روي عن الزهري عن النبي صلى الله عليه وسلم مرسلا

ব্যাখ্যাঃ মুল্লা ‘আলী কারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ (أَحَبُّ) অধিক প্রিয়। অর্থ সুস্বাদু, কেননা যমযমের পানি অধিক উত্তম। অনুরূপ তার নিকট দুধও প্রিয়। এ গুণগুলো ‘আমভাবে বর্ণনা হয়েছে; এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত বিশুদ্ধ পানি, দুধ, মিশানো পানি বা অন্যান্য যেমন মধু, ভিজানো খেজুর, কিসমিস। কারও মতে, ঠাণ্ডা পানি প্রিয় ছিল বা এ বস্তুগুলো বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে প্রিয়। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ১৫শ খন্ড, হাঃ ১৮৮৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة) 21. Foods

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - পানীয় দ্রব্যের বর্ণনা

৪২৮৩-[২১] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ খাবার খায়, তখন সে যেন এ দু’আটি পড়ে- اَللّٰهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيْهِ وَاَطْعِمْنَا خَيْرًا مِّنْهُ. ’’আল্ল-হুম্মা বা-রিক লানা- ফীহি ওয়া আত্ব’ইমনা- খয়রম্ মিনহু’’ (হে আল্লাহ! তার মধ্যে আমাদের জন্য বারাকাত দাও এবং তা অপেক্ষা উত্তম খাদ্য দান করো)। আর যখন দুধ পান করবে তখন যেন বলে, ’’আল্ল-হুম্মা বা-রিক লানা- ফীহি ওয়াযিদনা- মিনহ’’ (হে আল্লাহ! এর মধ্যে আমাদের জন্য বারাকাত দাও এবং তা আরো অধিক দান করো)। কেননা দুধ ব্যতীত অন্য কোন জিনিসই খাদ্য ও পানীয় উভয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। (তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا أَكَلَ أَحَدُكُمْ طَعَامًا فَلْيَقُلِ: اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ وَأَطْعِمْنَا خَيْرًا مِنْهُ. وَإِذَا سُقِيَ لَبَنًا فَلْيَقُلِ: اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهِ وَزِدْنَا مِنْهُ فَإِنَّهُ لَيْسَ شَيْء يجزى مِنَ الطَّعَامِ وَالشَّرَابِ إِلَّا اللَّبَنُ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُد

وعن ابن عباس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا اكل احدكم طعاما فليقل اللهم بارك لنا فيه واطعمنا خيرا منه واذا سقي لبنا فليقل اللهم بارك لنا فيه وزدنا منه فانه ليس شيء يجزى من الطعام والشراب الا اللبن رواه الترمذي وابو داود

ব্যাখ্যাঃ হাদীসে স্পষ্ট প্রমাণ বহন করে দুধের চেয়ে উত্তম আর কিছু নেই। এজন্য নবজাত শিশুর খাদ্য হলো দুধ আর তাতে আল্লাহর সুস্পষ্ট নিদর্শনও রয়েছে, যেমন বলেনঃ

نُسْقِيكُمْ مِمَّا فِي بُطُونِه# مِنْ بَيْنِ فَرْثٍ وَدَمٍ لَبَنًا خَالِصًا سَائِغًا لِلشَّارِبِينَ

‘‘তোমাদের জন্য চতুস্পদ জন্তুদের মধ্যে চিন্তা করার অবকাশ রয়েছে। আমরা তোমাদেরকে পান করাই তাদের উদরস্থিত বস্তুসমূহের মধ্যে থেকে গোবর ও রক্ত নিঃসৃত দু যা পানকারীদের জন্য উপাদেয়।’’ (সূরাহ্ আন্ নাহল ১৬ : ৬৬)

হাদীসের শেষাংশে উত্তম হওয়ার কারণও বর্ণনা করা হয়েছে।

(فَإِنَّهٗ لَيْسَ شَيْء يُجْزِىُ مِنَ الطَّعَامِ وَالشَّرَابِ إِلَّا اللَّبَنُ) কেননা দুধ ব্যতীত অন্য কোন জিনিসই খাদ্য ও পানীয় উভয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة) 21. Foods

পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - পানীয় দ্রব্যের বর্ণনা

৪২৮৪-[২২] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য সুকইয়া হতে মিঠা পানি সংগ্রহ করা হত। কথিত আছে যে, সুকইয়া একটি ঝরণা। তার ও মদীনার মধ্যবর্তী ব্যবধান হলো দু’দিনের পথ। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُسْتَعْذَبُ لَهُ الْمَاءُ مِنَ السُّقْيَا. قِيلَ: هِيَ عَيْنٌ بَيْنَهَا وَبَيْنَ الْمَدِينَةِ يَوْمَانِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن عاىشة قالت كان النبي صلى الله عليه وسلم يستعذب له الماء من السقيا قيل هي عين بينها وبين المدينة يومان رواه ابو داود

ব্যাখ্যাঃ মিষ্ট পানি দ্বারা উদ্দেশ্য লবণাক্ত না, কেননা মদীনার পানি হলো লবণাক্ত। সুয়ূত্বী বলেনঃ সুকইয়া একটি গ্রাম যা মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।

হাকিম-এর বর্ণনায় রয়েছে, كَانَ يُسْتَعْذَبُ لَهُ الْمَاءُ مِنْ بِئْرِ السُّقْيَا

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য সুকইয়া-এর কূপ হতে মিঠা পানি সংগ্রহ করা হত।

আমি (ভাষ্যকার) বলি : সম্ভবত দু’টি দু’ স্থান। কোন অসঙ্গতিপূর্ণ নেই হাদীসে একটি ঝর্ণা, অপরটি কূপ। হতে পারে বিভিন্ন স্থান। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব ২১: খাদ্য (كتاب الأطعمة) 21. Foods
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ১০ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে