পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না

৫৩৩৯-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূল কাসিম (মুহাম্মাদ) (সা.) বলেছেন: সেই মহান সত্তার শপথ (নাফরমানদের জন্য আল্লাহর শাস্তি এবং হিসাব-নিকাশের দিনের ভয়াবহতা সম্পর্কে) যদি তোমরা তা জানতে, আমি যা জানি, তাহলে তোমরা কাঁদতে বেশি এবং হাসতে কম। (বুখারী)

الفصل الاول (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا وَلَضَحِكْتُمْ قَلِيلا» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (6485) ۔
(صَحِيح)

عن ابي هريرة قال قال ابو القاسم صلى الله عليه وسلم والذي نفسي بيده لو تعلمون ما اعلم لبكيتم كثيرا ولضحكتم قليلا رواه البخاريرواہ البخاری 6485 ۔صحيح

ব্যাখ্যা : (لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ) পরকালে পাপী বান্দাদের কঠিন জিজ্ঞাসাবাদ এবং শাস্তির কথা যদি তোমরা জানতে যেমনিভাবে আমি জেনেছি তাহলে তোমরা অনেক কান্নাকাটি করতে অথবা আল্লাহর ভয়ে দীর্ঘসময় কাঁদতে। আর শেষ পরিণতি মন্দ হওয়ার আশঙ্কাকে বেশি প্রাধান্য দিতে অধিক আশা ভরসার চাইতে।
(وَلَضَحِكْتُمْ قَلِيلا) এবং খুব কম হাসতে। সম্ভবত হাদীসটি আল্লাহর তা'আলার ঐ বাণীর অনুকূলে হয়েছে যেখানে তিনি বলেন, (فَلۡیَضۡحَکُوۡا قَلِیۡلًا وَّ لۡیَبۡکُوۡا کَثِیۡرً) “তারা যেন কম হাসে এবং বেশি কাঁদে।” (সূরাহ্ আত্ তাওবাহ্ ৯ : ৮২)

‘আল্লামাহ্ হাফিয (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আলোচ্য হাদীসে (علم) বা জানার দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহ তা'আলার মহত্ত্ব সম্পৃক্ত জ্ঞান এবং পাপী বান্দাদের জন্য তাঁর শাস্তি, মৃত্যুর সময়ের কঠিন অবস্থা, মৃত্যু এবং কিয়ামত সম্পর্কের জ্ঞান। অতএব এ স্থানে বেশি করে কান্না এবং কম করে হাসার কারণ সুস্পষ্ট। মূলত উদ্দেশ্য হলো বান্দাকে ভয় দেখানো। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬/২৩১৩, মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না

৫৩৪০-[২] উম্মুল আলা আনসারিয়্যাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আল্লাহর শপথ! আমি জানি না যে, আমার সাথে (পরকালে) কি ব্যবহার করা হবে? আর এটাও জানি না যে, তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবে? অথচ আমি হলাম আল্লাহর প্রেরিত দূত। (বুখারী)

الفصل الاول (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)

وَعَنْ أُمِّ الْعَلَاءِ الْأَنْصَارِيَّةِ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «وَاللَّهِ لَا أَدْرِي وَاللَّهِ لَا أَدْرِي وَأَنَا رَسُولُ اللَّهِ مَا يُفْعَلُ بِي وبكم» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

رواہ البخاری (1243) ۔
(صَحِيح)

وعن ام العلاء الانصارية قالت قال رسول الله صلى الله عليه وسلم والله لا ادري والله لا ادري وانا رسول الله ما يفعل بي وبكم رواه البخاريرواہ البخاری 1243 ۔صحيح

ব্যাখ্যা : রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, (وَاللَّهِ لَا أَدْرِي وَاللَّهِ لَا أَدْرِي وَأَنَا رَسُولُ اللَّهِ مَا يُفْعَلُ بِي وبكم) আল্লাহর কসম আমি জানি না, আমার প্রতি পরকালে কি আচরণ করা হবে এবং তোমাদের প্রতিও কি ব্যবহার করা হবে, তা আমি জানি না। আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, আলোচ্য হাদীসের কয়েকটি দিক রয়েছে।

এক : রাসূলুল্লাহ (সা.) এ কথাটি তখন বলেছিলেন যখন উসমান ইবনু মায'ঊন মারা গেলে তার স্ত্রী তাকে লক্ষ্য করে বলেছিল, (هَنِئًالَكَ الْجَنَّةُ) “তোমার জন্য সুসংবাদ তুমি জান্নাতী।” গায়েবের ব্যাপারে জ্ঞান না থাকা সত্ত্বেও এমন মন্তব্য করা নবী (সা.) তাকে ধমকিস্বরূপ এ হাদীসটি বলেছিলেন।

দুই : রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর এ কথাটি রহিত হয়েছে, আল্লাহ তা'আলার এ বাণীর মাধ্যমে, (یَغۡفِرَ لَکَ اللّٰهُ مَا تَقَدَّمَ مِنۡ ذَنۡۢبِکَ وَ مَا تَاَخَّرَ) “যাতে আল্লাহ তোমার আগের ও পরের যাবতীয় ভুলভ্রান্তি ক্ষমা করেন (সূরাহ্ আল ফাতহ ৪৮ : ২)।

তিন : রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর না জানার বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জানার সাথে সম্পৃক্ত। একদম জানেন না তা নয়।

চার : রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর না জানার বিষয়টি পার্থিব বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত। অর্থাৎ তিনি ক্ষুধার্থ হবে নাকি পিপাসার্ত, সুস্থ না অসুস্থ, ধনী নাকি গরীব ইত্যাদি বিষয়ে। তবে পরকালীন ব্যাপারে তার কোন সন্দেহ ছিল না। যেহেতু তিনি এ মর্মে সংবাদ দিয়েছেন যে, পরকালে তিনি (সা.) হবেন সবার চেয়ে সম্মানী, সর্বপ্রথম সুপারিশকারী এবং তার সুপারিশ সর্বাগ্রে গ্রহণ করা হবে ইত্যাদি। (ফাতহুল বারী ১২/৭০১৮, মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না

৫৩৪১-[৩] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: (মি’রাজ রাত্রে অথবা স্বপ্নে) আমার সামনে জাহান্নামকে উপস্থাপন করা হয়। তাতে আমি বনী ইসরাঈলের এমন একজন মহিলাকে দেখতে পাই যাকে একটি বিড়ালের কারণে শাস্তি দেয়া হচ্ছিল। সে বিড়ালটিকে বেঁধে রেখেছিল, তাকে খাদ্যও দেয়নি বা তাকে ছেড়েও দেয়নি যাতে সে জমিনে চলাফেরা করে পোকামাকড় ইত্যাদি খেতে পারত। পরিশেষে বিড়ালটি ক্ষুধায় মরে গেল। আমি আরো ’আম্‌র ইবনু ’আমির আল খুযা’ঈ-কে দেখতে পাই যে, সে জাহান্নামের আগুনে স্বীয় নাড়িভুড়িকে টানছে। এ ব্যক্তিই (দেবতার নামে) ষাঁড় ছাড়ার কু-রীতি সর্বপ্রথম চালু করেছিল। (মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «عُرِضَتْ عَلَيَّ النَّارُ فَرَأَيْتُ فِيهَا امْرَأَةً مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ تُعَذَّبُ فِي هِرَّةٍ لَهَا رَبَطَتْهَا فَلَمْ تُطْعِمْهَا وَلَمْ تَدَعْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الْأَرْضِ حَتَّى مَاتَتْ جُوعًا وَرَأَيْتُ عَمْرَو بْنَ عَامِرٍ الْخُزَاعِيَّ يَجُرُّ قُصْبَهُ فِي النَّارِ وَكَانَ أَوَّلَ مَنْ سَيَّبَ السَّوَائِبَ» . رَوَاهُ مُسلم

رواہ مسلم (9 / 904)، (2100) ۔
(صَحِيح)

وعن جابر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم عرضت علي النار فرايت فيها امراة من بني اسراىيل تعذب في هرة لها ربطتها فلم تطعمها ولم تدعها تاكل من خشاش الارض حتى ماتت جوعا ورايت عمرو بن عامر الخزاعي يجر قصبه في النار وكان اول من سيب السواىب رواه مسلمرواہ مسلم 9 904 2100 ۔صحيح

ব্যাখ্যা : (عُرِضَتْ عَلَيَّ النَّارُ) আমার সামনে জাহান্নাম পেশ করা হলো, আমি দেখলাম সেখানে বনী ইসরাঈলের এক মহিলাকে তার একটি বিড়ালের জন্য শাস্তি দেয়া হচ্ছিল। সে তাকে বেঁধে রেখেছিল। কিন্তু তাকে কোন প্রকার খাবার দেয়নি বা ছেড়েও দেয়নি যাতে সে পোকা-মাকড় শিকার করে খেতে পারে। ফলে বিড়ালটি ক্ষুধার কারণে মারা যায়।
(وَرَأَيْتُ عَمْرَو بْنَ عَامِرٍ الْخُزَاعِيَّ) এবং আমি আরো দেখতে পেলাম ‘আম্‌র ইবনু ‘আমির আল খুযা’ঈ কে।
‘আল্লামাহ্ তুরিবিশতী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, সে ছিল ঐ ব্যক্তি যে সর্বপ্রথম মক্কায় মূর্তি পূজা চালু করে এবং মূর্তির উদ্দেশে পশু ছেড়ে দেয়ার প্রথাকে চালু করে।
(يَجُرُّ قُصْبَهُ فِي النَّارِ) সে জাহান্নামে তার নাড়িভুড়ি নিয়ে টেনে বেড়াচ্ছে।
(وَكَانَ أَوَّلَ مَنْ سَيَّبَ السَّوَائِبَ) আর সেই সর্বপ্রথম মূর্তির উদ্দেশে পশু ছেড়ে দেয়ার প্রথা চালু করে। তার ধরণ হচ্ছে: কোন উট যখন অসুস্থ থেকে সুস্থ হয় অথবা কেউ সফর থেকে ফিরে আসে তখন বলে, আমার এ উটনীটি সায়িবা। উটনীকে বাঁধনমুক্ত করে ছেড়ে দিলে তা যথায় ইচ্ছা চড়ে বেড়াবে, খাদ্য খাবে। তার ওপর কোন বোঝা চাপাবে না, কেউ আরোহণ করবে না, তার দুগ্ধকে দহন করবে না। আর এসব কিছু করত মূর্তির নৈকট্য হাসিল করার জন্য। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, শারহুন নাবাবী ৬/৯০৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না

৫৩৪২-[8] যায়নাব বিনতু জাহশ (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) এ ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় তাঁর নিকট এসে বললেন, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা’বুদ নেই। আরবের জন্য মহাবিপদ সেই দুর্যোগের কারণে, যা অতি কাছাকাছি। ইয়াজুজ মাজুজ-এর প্রাচীর আজ এই পরিমাণ খুলে গিয়েছে। এটা বলে তিনি স্বীয় বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তার নিকটবর্তী (তর্জনি) অঙ্গুলি গোল করে (ছিদ্রের পরিমাণটি) দেখালেন। তখন যায়নাব (রাঃ) প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের মধ্যে ভালো লোক থাকাবস্থায়ও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাব? তিনি (সা.) বললেন, হ্যা, যখন পাপাচার বেড়ে যাবে। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)

وَعَن زينبَ بنتِ جحشٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دخل يَوْمًا فَزِعًا يَقُولُ: «لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَيلٌ للعربِ مِنْ شَرٍّ قَدِ اقْتَرَبَ فُتِحَ الْيَوْمَ مِنْ رَدْمِ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مِثْلُ هَذِهِ» وَحَلَّقَ بِأُصْبَعَيْهِ: الْإِبْهَامَ وَالَّتِي تَلِيهَا. قَالَتْ زَيْنَبُ: فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَنُهْلَكُ وَفِينَا الصَّالِحُونَ؟ قَالَ: «نَعَمْ إِذا كثُرَ الخَبَثُ» . مُتَّفق عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری (3346) و مسلم (2 / 1880)، (7237) ۔
(مُتَّفق عَلَيْهِ)

وعن زينب بنت جحش ان رسول الله صلى الله عليه وسلم دخل يوما فزعا يقول لا اله الا الله ويل للعرب من شر قد اقترب فتح اليوم من ردم ياجوج وماجوج مثل هذه وحلق باصبعيه الابهام والتي تليها قالت زينب فقلت يا رسول الله افنهلك وفينا الصالحون قال نعم اذا كثر الخبث متفق عليهمتفق علیہ رواہ البخاری 3346 و مسلم 2 1880 7237 ۔متفق عليه

ব্যাখ্যা : (وَيلٌ للعربِ مِنْ شَرٍّ قَدِ اقْتَرَبَ) আরবদের জন্য দুর্ভোগ। দুঃখ-কষ্টে পতিত হওয়াকে (وَيلٌ) বলা হয়। আরবদেরকে নির্দিষ্ট করে বলার কারণ হলো : সে সময় অধিকাংশ ‘আরবরাই ইসলাম গ্রহণ করেছিল। ইয়াজুজ মাজুজ বাহিনীর অনিষ্টের কারণে, যারা ‘আরবদের সাথে যুদ্ধ করবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) তার বৃদ্ধাঙ্গুলি ও তার সংলগ্ন আঙ্গুলকে একত্রিত করে বৃত্ত তৈরি করে দেখিয়ে বললেন, ইয়াজুজ মাজুজ তাদের প্রাচীরের এই পরিমাণ খুলে ফেলেছে। আর প্রাচীর খুলে বাহিরে বের হওয়া কিয়ামতের আলামত। তারা দাজ্জাল বের হওয়ার পরেই এখান থেকে বেরিয়ে পড়বে। মূলত ইয়াজুজ ও মাজুজ আদম 'আলায়হিস সালাম-এর বংশধরের দুটি কাফির সম্প্রদায়।

(قَالَتْ زَيْنَبُ: فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَنُهْلَكُ وَفِينَا الصَّالِحُونَ؟) যায়নাব (রাঃ) বললেন, আমরা কি ধ্বংসপ্রাপ্ত হব অথচ আমাদের মাঝে অনেক নেক বান্দা থাকবে, বলা হয়েছে সৎ বান্দার ওপর নির্ভর করার ভিত্তিতে। রসূল ও উত্তর দিলেন : হ্যাঁ, ভালো রয়েছে। লোকেরাও ধ্বংস হবে যখন অশ্লীলতা বেড়ে যাবে। অশ্লীলতা বলতে পাপাচার, শিরক, কুফরী ইত্যাদি বুঝানো হয়েছে। আবার কেউ বলেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো যিনা-ব্যভিচার বৃদ্ধি পাওয়া। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ৬/২১৮৭)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না

৫৩৪৩-[৫] আবূ ’আমির অথবা আবূ মালিক আল আশ’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) -কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মতের মধ্যে কতিপয় সম্প্রদায় জন্মাবে যারা রেশমি কাতান এবং রেশমি কাপড় ব্যবহার করা, মদ্যপান করা এবং গান-বাদ্য করা বৈধ মনে করবে। আর অনেক সম্প্রদায় এমনও হবে যারা পর্বতের পাদদেশে বসবাস করবে। সন্ধ্যায় যখন তারা পশুপাল নিয়ে বাড়িঘরে প্রস্থান করবে (এমনি সময় তাদের নিকট কোন লোক তার প্রয়োজন নিয়ে আসলে তারা বলবে), আগামীকাল সকালে আমাদের কাছে এসো, কিন্তু রাত্রের আধারেই আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে দেবেন এবং পর্বতটিকে (তাদের ওপর) ধসিয়ে দেবেন। আর কারো কারো আকৃতিকে বানর ও শূকরে পরিবর্তিত করে দেবেন, কিয়ামত পর্যন্ত যা বহাল থাকবে। (বুখারী)

মাসাবীহের কোন কোন গ্রন্থে (الْخَزُّ) -এর স্থলে (ح<الْحَرَّ>) ر দ্বারা শব্দ গঠিত রয়েছে। কিন্তু তা অশুদ্ধ। বস্তুত এখানে (الْحَزُّ)  অর্থাৎ خ ز সংযুক্ত শব্দই হবে। হুমায়দী ও ইবনু আসীর (রহিমাহুল্লাহ) অত্র হাদীসের বর্ণনায় অনুরূপই বলেছেন। আর হুমায়দীর কিতাবে বুখারী থেকে এবং ঐভাবে বুখারীর শরাহ গ্রন্থে ইমাম খত্ত্বাবী হতে হাদীসে বর্ণিত বাক্যটি নীচে উল্লিখিত শব্দে বর্ণিত রয়েছে- (تَرُوحُ عَلَيْهِمْ سَارِحَةٌ لَهُمْ يَأَتِيهِمْ لِحَاجَةٍ) “এমনি সময় তাদের নিকট কোন লোক তার প্রয়োজন নিয়ে আসলে তারা বলবে”।

الفصل الاول (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)

وَعَنْ أَبِي عَامِرٍ أَوْ أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: لَيَكُونَنَّ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ يَسْتَحِلُّونَ الْخَزَّ وَالْحَرِيرَ وَالْخَمْرَ وَالْمَعَازِفَ وَلَيَنْزِلَنَّ أَقْوَامٌ إِلَى جَنْبِ عَلَمٍ يَرُوحُ عَلَيْهِمْ بِسَارِحَةٍ لَهُمْ يَأْتِيهِمْ رَجُلٌ لِحَاجَةٍ فَيَقُولُونَ: ارْجِعْ إِلَيْنَا غَدًا فَيُبَيِّتُهُمُ اللَّهُ وَيَضَعُ الْعَلَمَ وَيَمْسَخُ آخَرِينَ قِرَدَةً وَخَنَازِيرَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ «. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ. وَفَى بَعْضِ نُسَخِ» الْمَصَابِيحِ : «الْحَرَّ» بِالْحَاءِ وَالرَّاءِ الْمُهْمَلَتَيْنِ وَهُوَ تَصْحِيفٌ وَإِنَّمَا هُوَ بِالْخَاءِ وَالزَّايِ الْمُعْجَمَتَيْنِ نَصَّ عَلَيْهِ الْحُمَيْدِيُّ وَابْنُ الْأَثِيرِ فِي هَذَا الْحَدِيثِ. وَفَى كِتَابِ «الْحُمَيْدِيِّ» عَنِ الْبُخَارِيِّ وَكَذَا فِي «شَرحه» للخطابي: «تروح سارحة لَهُم يَأْتِيهم لحَاجَة»

رواہ البخاری (5590) و ذکرہ البغوی فی مصابیح السنۃ (3 / 453 ح 4113) و اخطا من ضعفہ ۔
(صَحِيح)

وعن ابي عامر او ابي مالك الاشعري قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ليكونن من امتي اقوام يستحلون الخز والحرير والخمر والمعازف ولينزلن اقوام الى جنب علم يروح عليهم بسارحة لهم ياتيهم رجل لحاجة فيقولون ارجع الينا غدا فيبيتهم الله ويضع العلم ويمسخ اخرين قردة وخنازير الى يوم القيامة رواه البخاري وفى بعض نسخ المصابيح الحر بالحاء والراء المهملتين وهو تصحيف وانما هو بالخاء والزاي المعجمتين نص عليه الحميدي وابن الاثير في هذا الحديث وفى كتاب الحميدي عن البخاري وكذا في شرحه للخطابي تروح سارحة لهم ياتيهم لحاجةرواہ البخاری 5590 و ذکرہ البغوی فی مصابیح السنۃ 3 453 ح 4113 و اخطا من ضعفہ ۔صحيح

ব্যাখ্যা : (لَيَكُونَنَّ مِنْ أُمَّتِي أَقْوَامٌ يَسْتَحِلُّونَ الْخَزَّ) আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হবে যার খাস বা এক ধরনের রেশমী কাপড় যা ঘোড়ার পিঠে পিছিয়ে বসা হয়, পাতলা রেশমী কাপড়, মদ এবং বাদ্যযন্ত্র হালাল মনে করবে। হাদীসের ভাবার্থ হচ্ছে কিছু সম্প্রদায় উল্লেখিত হারাম সামগ্রীকে কিছু বানোয়াট মনগড়া দলীলের ভিত্তিতে বৈধ মনে করবে। যেমন তাদের কোন কোন ‘আলিম বলবে : রেশমী কাপড় যদি শরীরের সাথে লেগে থাকে তাহলে হারাম হবে। কিন্তু যদি কাপড়ের উপর দিয়ে পরিধান করে তাহলে কোন অসুবিধা নেই। এটা রসূল (সা.) -এর হাদীসের স্পষ্ট বিরোধী। তিনি (সা.) বলেছেন, (مَنْ لَبِسَ الْحَرِيرَفِي الدُّنْيَا،لَمْا يَلْبَسْهُ فِي الْاٰخِرَةِ) “যারা দুনিয়াতে রেশমী কাপড় পরিধান করবে তারা পরকালে তা পরিধান করতে পরবে না।” (সহীহুল বুখারী)

তারা আরো বলে থাকে, পূর্ব যুগের অনেক বাদশাহ এবং বিচারকগণ রেশমী কাপড় পরতেন। যদি হারামই হত তাহলে পরতেন না ইত্যাদি।

(لَيَنْزِلَنَّ أَقْوَامٌ إِلَى جَنْبِ عَلَمٍ يَرُوحُ عَلَيْهِمْ بِسَارِحَةٍ لَهُمْ) আর কিছু সম্প্রদায় পাহাড়ের পাদদেশে তাদের চতুস্পদ জন্তু নিয়ে বিচরণ করতে থাকবে। আলিমদের কাছে হাদীস-কুরআনের শিক্ষা থেকে দূরে থাকবে। অথবা, তাদের রাখাল সকাল বিকাল চতুষ্পদ প্রাণী নিয়ে আসবে। ওগুলোর দুধ ও গোবর দ্বারা উপকৃত হবে।
(يَأْتِيهِمْ رَجُلٌ لِحَاجَةٍ فَيَقُولُونَ: ارْجِعْ إِلَيْنَا غَدً) তাদের কাছে কোন লোক কোন কিছুর প্রয়োজনে আসলে বলবে, আগামীকালে আমাদের কাছে এসো। অতঃপর রাত্রিতেই আল্লাহ তা'আলা তাদের ওপর শাস্তি বর্ষণ করবেন, ফলে তাদের কিছু অংশের উপর পাহাড় ভেঙ্গে পড়বে এবং কিছু লোককে বানর ও শুকরে পরিণত করবেন। তারা বিকৃত অবস্থায় মৃত্যু পর্যন্ত থাকবে অথবা তারা এই বিকৃত চেহারা নিয়ে হাশরের ময়দানে উপস্থিত হবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, ফাতহুল বারী ১০/৫৫৯০, ‘আওনুল মা'বুদ ৭/৪০৩৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না

৫৩৪৪-[৬] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যখন আল্লাহ তা’আলা কোন সম্প্রদায়ের প্রতি শাস্তি অবতীর্ণ করেন তখন উক্ত শাস্তি তাদের সকলকে পেয়ে বসে। অতঃপর আখিরাতে তাদেরকে আপন ’আমল অনুযায়ী উঠানো হবে। (বুখারী ও মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا أَنْزَلَ اللَّهُ بِقَوْمٍ عَذَابًا أَصَابَ الْعَذَابُ مَنْ كَانَ فِيهِمْ ثُمَّ بُعِثُوا عَلَى أَعْمَالِهِمْ» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

متفق علیہ ، رواہ البخاری 7108) و مسلم (84 / 2879)، (7234) ۔
(مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

وعن ابن عمر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا انزل الله بقوم عذابا اصاب العذاب من كان فيهم ثم بعثوا على اعمالهم متفق عليهمتفق علیہ رواہ البخاری 7108 و مسلم 84 2879 7234 ۔متفق عليه

ব্যাখ্যা: (إِذَا أَنْزَلَ اللَّهُ بِقَوْمٍ عَذَابًا) আল্লাহ তা'আলা যখন কোন সম্প্রদায়কে তাদের খারাপ কৃতকর্মের জন্য শাস্তি প্রদান করেন, তখন সম্প্রদায়ের ভালো মন্দ সকলের ওপর শাস্তি বর্ষিত হয়। অতঃপর হাশরের মাঠে প্রত্যেকেই তাদের কৃতকর্ম নিয়ে উঠবে। ভালোরা ভালো ‘আমল দিয়ে এবং মন্দরা মন্দ ‘আমল নিয়ে। অতঃপর প্রত্যেকেই তাদের কর্ম অনুযায়ী ফল ভোগ করবে। ভালো হলে ভালো আর মন্দ হলে মন্দ পরিণতি ভোগ করবে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, ফাতহুল বারী ১৩/৭১০৮)।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না

৫৩৪৫-[৭] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: প্রত্যেক বান্দাকে কিয়ামতের দিন সেই অবস্থায় উঠানো হবে যে অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করেছে। (মুসলিম)

الفصل الاول (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)


وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُبْعَثُ كُلُّ عَبْدٍ عَلَى مَا ماتَ عَلَيْهِ» . رَوَاهُ مُسلم

رواہ مسلم (83 / 2878)، (7232) ۔
(صَحِيح)

وعن جابر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يبعث كل عبد على ما مات عليه رواه مسلمرواہ مسلم 83 2878 7232 ۔صحيح

ব্যাখ্যা : (يُبْعَثُ كُلُّ عَبْدٍ عَلَى مَا ماتَ عَلَيْهِ) প্রত্যেক বান্দাকে হাশরের মাঠে তার কৃতকর্ম নিয়ে উঠানো হবে। তা ভালো হোক কিংবা মন্দ হোক। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ প্রথম অনুচ্ছেদ - ভয় ও কান্না

৫৩৫১-[১৩] উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাত্রের দুই-তৃতীয়াংশ যখন অতিবাহিত হয়, তখন নবী (সা.) উঠে (সাহাবীগণকে লক্ষ্য করে) বললেন, হে লোকসকল! আল্লাহকে স্মরণ কর। আল্লাহকে স্মরণ কর। প্রলয়ঙ্কারী কম্পন আগত। তার পিছনে আসছে আর এক কম্পন (কিয়ামতপূর্ব প্রথম ও দ্বিতীয় শিঙ্গার ফুৎকার) মৃত্যু তার সাথে জড়িত বিষয়সমূহ নিয়ে আগত হবে, মৃত্যু তার সাথে জড়িত (তার পূর্ব-পশ্চাতের বিপদসহ) বিষয়সমূহ নিয়ে আগত হবে। (তিরমিযী)

الفصل الاول (بَاب الْبكاء وَالْخَوْف)

وَعَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا ذَهَبَ ثُلُثَا اللَّيْلِ قَامَ فَقَالَ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ اذْكُرُوا اللَّهَ اذْكُرُوا اللَّهَ جَاءَتِ الرَّاجِفَةُ تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2457 وقال : حسن) * سفیان الثوری مدلس ولم اجد تصریح سماعہ فی ھذا الحدیث ۔

وعن ابي بن كعب قال كان النبي صلى الله عليه وسلم اذا ذهب ثلثا الليل قام فقال يا ايها الناس اذكروا الله اذكروا الله جاءت الراجفة تتبعها الرادفة جاء الموت بما فيه جاء الموت بما فيه رواه الترمذياسنادہ ضعیف رواہ الترمذی 2457 وقال حسن سفیان الثوری مدلس ولم اجد تصریح سماعہ فی ھذا الحدیث ۔

ব্যাখ্যা : (يَا أَيُّهَا النَّاسُ) হে লোক সকল! নবী (সা.) এখানে ‘লোক বলতে’ ঐ সমস্ত সাহাবীদেরকে উদ্দেশ্য করেছেন যারা আল্লাহ তা'আলার যিকর করা ও তাহাজ্জুদ ছেড়ে ঘুমিয়ে থাকত। এখান থেকে এ কথা সুস্পষ্ট হয়েছে যে, রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকী থাকতে জেগে উঠে তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ্।
(جَاءَتِ الرَّاجِفَةُ تَتْبَعُهَا الرَّادِفَةُ) নিহায়াহ্ গ্রন্থে বলা হয়েছে, (رَاجِفَة) হলো শিঙ্গার প্রথম ফুঁৎকার, যার দরুন সমস্ত প্রাণী মৃত্যুবরণ করবে। আর (رَادِفَة) হলো দ্বিতীয় ফুৎকার, যার ফলে কিয়ামতের দিন সকল প্রাণী জীবিত হয়ে উঠে দাঁড়াবে। মূলত (رجف) শব্দের অর্থ প্রকম্পিত হওয়া, নড়াচড়া করা। আর পবিত্র কুরআনে এ কথার প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছেন, (یَوۡمَ تَرۡجُفُ الرَّاجِفَۃُ ۙ﴿۶﴾ تَتۡبَعُهَا الرَّادِفَۃُ ؕ﴿۷﴾) “সেদিন ভূকম্পন প্রকম্পিত করবে, তারপর আসবে আরেকটি ভূকম্পন”- (সূরাহ্ আন্ নাযি'আত ৭৯ : ৬-৭)। হাদীসে অতীতকালীন সীগা ব্যবহার করা হয়েছে এ কথা বুঝনোর জন্য যে, তা অবশ্যই সংঘটিত হবে। অতএব (جاءت) (আগত) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তা অবশ্যই সংঘটিত হবে। অতএব তোমরা এর ভীতিকর বিষয়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাও।
(جَاءَ الْمَوْتُ بِمَا فِيهِ) মৃত্যু তার সাথে যা আছে তা নিয়ে এসে গেছে। অর্থাৎ মৃত্যুকালীন সময়ে ও কবরে যে কষ্ট রয়েছে এবং তৎপরবর্তীকালে।
এখানে এ কথার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, যার মৃত্যু হয়েছে তার উপর কিয়ামত তথা ছোট কিয়ামত ঘটে গেছে যা মূলত বড় কিয়ামতের প্রমাণ বহনকারী। হাদীসে প্রথম (جَاءَ الْمَوْتُ) বলে আমাদের
পূর্বে ঘটে যাওয়া মৃত্যুর ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে বলা হয়েছে। আর দ্বিতীয়বার (بِمَا فِيهِ جَاءَ الْمَوْتُ) দ্বারা যারা বেঁচে আছে তাদের ক্ষেত্রেও এটা অবশ্যই ঘটবে- এ কথার ইঙ্গিত করা হয়েছে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৫/২৪৫৭, মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
বর্ণনাকারীঃ উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৮ পর্যন্ত, সর্বমোট ৮ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে