পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আসা

৫৩৬৩-[৪] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যখন আমার উম্মত গর্বের সাথে চলতে লাগবে এবং রাজা-বাদশাহদের সন্তানরা তথা পারস্য ও রূমের রাজ কুমাররা এদের খিদমতে রত থাকবে, তখন আল্লাহ তা’আলা উম্মতের খারাপ লোকেদেরকে ভালো লোকদের ওপর শাসক হিসেবে চাপিয়ে দেবেন। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب تغير النَّاس)

عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا مَشَتْ أُمَّتِي الْمُطَيْطَاء وَخَدَمَتْهُمْ أَبْنَاءُ الْمُلُوكِ أَبْنَاءُ فَارِسَ وَالرُّومِ سَلَّطَ اللَّهُ شِرَارَهَا عَلَى خِيَارِهَا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيث غَرِيب

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2261) * موسی بن عبیدۃ ضعیف و روی ابن حبان فی صححہ (الاحسان : 6681 / 6716) ان النبی صلی اللہ علیہ و آلہ وسلم قال : ((اذا مشت امتی المطیطاء وخد متھم فارس و الروم سلّط بعضھم علی بعض ۔)) و سندہ حسن وھو یغنی عنہ ۔

عن ابن عمر قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا مشت امتي المطيطاء وخدمتهم ابناء الملوك ابناء فارس والروم سلط الله شرارها على خيارها رواه الترمذي وقال هذا حديث غريبسندہ ضعیف رواہ الترمذی 2261 موسی بن عبیدۃ ضعیف و روی ابن حبان فی صححہ الاحسان 6681 6716 ان النبی صلی اللہ علیہ و الہ وسلم قال اذا مشت امتی المطیطاء وخد متھم فارس و الروم سلط بعضھم علی بعض ۔ و سندہ حسن وھو یغنی عنہ ۔

ব্যাখ্যা: (إِذَا مَشَتْ أُمَّتِي الْمُطَيْطَاء) যখন আমার উম্মাত অহমিকা বেশে দু’হাত দুলিয়ে চলবে।
(وَخَدَمَتْهُمْ أَبْنَاءُ الْمُلُوكِ أَبْنَاءُ فَارِسَ وَالرُّومِ) এবং রোম ও পারস্যের সন্তানরা তাদের খাদেম হবে এবং তাদের আনুগত্য করবে।
(سَلَّطَ اللَّهُ شِرَارَهَا عَلَى خِيَارِهَا) তখন আল্লাহ তা'আলা উত্তমের ওপর নিকৃষ্টদের ক্ষমতা দান করবেন।
মিরকাত ভাষ্যকার বলেন, এ হাদীসটি নবী (সা.) -এর নুবুওয়্যাতের প্রমাণ বহনকারী। কেননা তিনি ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এমন সংবাদ দিয়েছেন যা পরবর্তীতে বাস্তবে পরিণত হয়েছে। কেননা যখন তারা রোম ও পারস্য দখল করল তখন তারা তাদের ধন-সম্পদ হস্তগত করল এবং তাদের সন্তানদেরকে বন্দী করল, যার ফলশ্রুতিতে তারা ক্ষমতা কেড়ে নিল এবং উসমান (রাঃ)-কে হত্যা করল, অতঃপর বানী উমাইয়্যাগণ বানী হাশিম-এর সাথে যা করার তাই করল। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬/২২৬১, মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আসা

৫৩৬৪-[৫] হুযায়ফাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সা.) বলেছেন: ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা নিজেদের খলীফাহ্ বা বাদশাহকে হত্যা না করবে, তলোয়ার দ্বারা একে অপরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত না হবে এবং তোমাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা খারাপ ব্যক্তি তোমাদের দুনিয়ার মালিক (শাসক) না হবে। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب تغير النَّاس)

وَعَنْ حُذَيْفَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَقْتُلُوا إِمَامَكُمْ وَتَجْتَلِدُوا بأسيافكم ويرَث دنياكم شرارُكم» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2170 وقال : حسن)

وعن حذيفة ان النبي صلى الله عليه وسلم قال لا تقوم الساعة حتى تقتلوا امامكم وتجتلدوا باسيافكم ويرث دنياكم شراركم رواه الترمذياسنادہ حسن رواہ الترمذی 2170 وقال حسن

ব্যাখ্যা: (حَتَّى تَقْتُلُوا إِمَامَكُمْ) যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের খলীফাকে হত্যা করবে।
(وَتَجْتَلِدُوا بأسيافكم) এবং তোমাদের তরবারি দ্বারা পরস্পরের মধ্যে মারামারি করবে।
(ويرَث دنياكم شرارُكم) অযোগ্য এবং যালিমরা অন্যায়ভাবে রাজত্ব ও সম্পদের উত্তরাধিকারী হবে।
অত্র হাদীসটি এ অধ্যায়ে নিয়ে আসার দ্বারা এ কথার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, উক্ত ফিতনাহ্ সংঘটিত হওয়ার কারণ হবে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ ছেড়ে দেয়ার জন্য।
(তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬/২১৭০, মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আসা

৫৩৬৫-[৬] উক্ত রাবী [হুযায়ফাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যতক্ষণ দুনিয়ার ব্যাপারে অধমের সন্তান সৌভাগ্যের অধিকারী বলে গণ্য না হবে ততক্ষণ কিয়ামত সংঘটিত হবে না। (তিরমিযী ও বায়হাক্বী’র “দালায়িলুন নুবুওয়্যাহ্”)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب تغير النَّاس)

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَكُونَ أَسْعَدَ النَّاسِ بِالدُّنْيَا لُكَعُ بْنُ لُكَعَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالْبَيْهَقِيّ فِي «دَلَائِل النُّبُوَّة»

اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2209 وقال : حسن) و البیھقی فی دلائل النبوۃ (6 / 392) ۔
(صَحِيح)

وعنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا تقوم الساعة حتى يكون اسعد الناس بالدنيا لكع بن لكع رواه الترمذي والبيهقي في دلاىل النبوةاسنادہ حسن رواہ الترمذی 2209 وقال حسن و البیھقی فی دلاىل النبوۃ 6 392 ۔صحيح

ব্যাখ্যা : (حَتَّى يَكُونَ أَسْعَدَ النَّاسِ) যতক্ষণ না তাদের মধ্যে অধিক সম্পদের মালিক, আরামদায়ক জীবনযাপনের অধিকারী এবং উচ্চ ক্ষমতা ও ক্ষমতা প্রয়োগকারী ব্যক্তি দুনিয়ার মালিক হবে।
(لُكَعُ بْنُ لُكَعَ) নিকৃষ্টের পুত্র নিকৃষ্ট। অথবা এমন ব্যক্তি যার বংশ জানা যাবে না এবং চরিত্রের প্রশংসা করা হবে না। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬২২০৯, মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আসা

৫৩৬৬-[৭] মুহাম্মাদ ইবনু কা’ব আল কুরাযী (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে সে ব্যক্তিই এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন যিনি ’আলী (রাঃ) হতে শ্রবণ করেছেন, তিনি বলেছেন, একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.) -এর সাথে মসজিদে বসা ছিলাম। এমন সময় মুস্’আব ইবনু উমায়র (রাঃ) এমন অবস্থায় সেখানে এসে উপস্থিত হলেন যে, তাঁর চাদরে চামড়ার তালি লাগানো ছিল। তাঁকে দেখে রাসূলুল্লাহ (সা.) কেঁদে দিলেন। (অতীতে) তিনি কতই না সুখ-সাচ্ছন্দে ছিলেন, অথচ আজ তার এ অবস্থা। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: ঐ সময় তোমাদের অবস্থা কেমন হবে? যখন তোমরা সকালে এক জোড়া পরিধান এবং বিকালে আরেক জোড়া পরিধান করে বের হবে। আর তোমাদের সম্মুখে রাখা হবে (পৃথক পৃথক প্রকারের) খানার পেয়ালা এবং তা তুলে নিয়ে রাখা হবে সে স্থলে আরেক পেয়ালা। আর তোমরা ঘরকে এমনভাবে পর্দা দ্বারা আচ্ছাদিত করবে, যেভাবে আচ্ছাদিত করা হয় কা’বা ঘরকে। তখন সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! সেদিন আমরা আজকের তুলনায় অনেক ভালো অবস্থায় থাকব। কেননা তখন আমাদের খাওয়া-পরার দুশ্চিন্তা থাকবে না। ফলশ্রুতিতে আমরা অধিক সময় আল্লাহর ইবাদতের জন্য অবসর ও সুযোগ পাব। নবী (সা.) বললেন, তোমাদের এ আন্দাজ সঠিক নয়, বরং তোমরা সেদিন অপেক্ষা এখনকার সময়ই ভালো আছ। (তিরমিযী)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب تغير النَّاس)

وَعَن مُحَمَّد بن كَعْب الْقرظِيّ قَالَ: حَدَّثَنِي مَنْ سَمِعَ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالب قَالَ: إِنَّا لَجُلُوسٌ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمَسْجِدِ فَاطَّلَعَ عَلَيْنَا مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ مَا عَلَيْهِ إِلَّا بُرْدَةٌ لَهُ مَرْقُوعَةٌ بِفَرْوٍ فَلَمَّا رَآهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَكَى لِلَّذِي كَانَ فِيهِ مِنَ النِّعْمَةِ وَالَّذِي هُوَ فِيهِ الْيَوْمَ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كَيْفَ بِكُمْ إِذَا غَدَا أَحَدُكُمْ فِي حُلَّةٍ وَرَاحَ فِي حُلَّةٍ؟ وَوُضِعَتْ بَيْنَ يَدَيْهِ صَحْفَةٌ وَرُفِعَتْ أُخْرَى وَسَتَرْتُمْ بُيُوتَكُمْ كَمَا تُسْتَرُ الْكَعْبَة؟» . فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ نَحْنُ يَوْمَئِذٍ خَيْرٌ مِنَّا الْيَوْمَ نَتَفَرَّغُ لِلْعِبَادَةِ وَنُكْفَى الْمُؤْنَةَ. قَالَ: «لَا أَنْتُمُ الْيَوْمَ خَيْرٌ مِنْكُمْ يَوْمَئِذٍ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2476 وقال : حسن غریب) * فیہ ’’ من سمع ‘‘ وھو مجھول ۔

وعن محمد بن كعب القرظي قال حدثني من سمع علي بن ابي طالب قال انا لجلوس مع رسول الله صلى الله عليه وسلم في المسجد فاطلع علينا مصعب بن عمير ما عليه الا بردة له مرقوعة بفرو فلما راه رسول الله صلى الله عليه وسلم بكى للذي كان فيه من النعمة والذي هو فيه اليوم ثم قال رسول الله صلى الله عليه وسلم كيف بكم اذا غدا احدكم في حلة وراح في حلة ووضعت بين يديه صحفة ورفعت اخرى وسترتم بيوتكم كما تستر الكعبة فقالوا يا رسول الله نحن يومىذ خير منا اليوم نتفرغ للعبادة ونكفى المونة قال لا انتم اليوم خير منكم يومىذ رواه الترمذياسنادہ ضعیف رواہ الترمذی 2476 وقال حسن غریب فیہ من سمع وھو مجھول ۔

ব্যাখ্যা : (مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ) মুস'আব ইবনু উমায়র (রাঃ) ছিলেন কুরাইশ বংশের। তিনি প্রথমে যারা আবিসিনিয়ার হিজরত করেছিলেন তাদের সাথে আবিসিনিয়ায় হিজরত করেছিলেন। অতঃপর মক্কায় ফিরে এসে তাঁর সমস্ত ধন-সম্পদ ছেড়ে মদীনায় রসূল (সা.)-এর নিকট হিজরত করেন। অতঃপর বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। জাহিলী যুগে তিনি অত্যন্ত আরামপ্রদ জীবনযাপন করতেন এবং সৌখিন পোশাক পরিধান করতেন। ইসলাম গ্রহণ করার পর দুনিয়াবিমুখ ছিলেন এবং অতি সাধারণ জীবনযাপন করতেন।

(مَا عَلَيْهِ إِلَّا بُرْدَةٌ) তিনি চামড়ার তালিযুক্ত একটি পোশাক পরিহিত ছিলেন। নবী (সা.) তার বর্তমান অবস্থা দেখে কেঁদে ফেললেন। কেননা তিনি অতি কষ্টে জীবনযাপন করেছেন। অথচ তিনি তার সম্প্রদায়ের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ছিলেন।
(كَيْفَ بِكُمْ إِذَا غَدَا أَحَدُكُمْ..) তোমাদের অবস্থা কেমন হবে? যখন তোমাদের ধন-সম্পদ বেড়ে যাবে। ফলে তোমাদের প্রত্যেকে সকালে একধরনের পোশাক পরবে আবার বিকালে অন্য পোশাক পরবে। সৌখিন জীবনযাপন করবে আর তার সামনে পেয়ালা ভর্তি এক ধরনের খাবার রাখা হবে এবং সেটা উঠানোর সাথে সাথে আবার আরেক ধরনের খাবার ভর্তি পেয়ালা রাখা হবে। যা মূলত সৌখিন জীবনযাপনকারীরা করে থাকে। আর তোমাদের গৃহকে পর্দা দ্বারা সুসজ্জিত করবে যেমন কা'বাহ্ ঘরকে সাজানো হয়।
(فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ نَحْنُ يَوْمَئِذٍ خَيْرٌ مِنَّا الْيَوْمَ) তারা বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা তখন বর্তমানের চেয়ে ভালো জীবনযাপন করব। ইবাদতের জন্য মুক্ত থাকতে পারব। আর আমাদের খাদেমরা জীবিকা উপার্জনের কাজ করবে।
(قَالَ: «لَا أَنْتُمُ الْيَوْمَ خَيْرٌ مِنْكُمْ يَوْمَئِذٍ») নবী (সা.) বললেন, না, তোমরা সেদিনের চেয়ে এখনই ভালো আছ। কেননা ধনী ব্যক্তির চেয়ে সামান্য জীবিকার দরিদ্ররাই উত্তম। যেহেতু ধনীরা দুনিয়ার কাজে ব্যস্ত থাকে, ‘ইবাদতের জন্য অবসর সময় পায় না। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬/২৪৭৬, মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আসা

৫৩৬৭-[৮] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: মানুষের ওপর এমন এক সময় আসবে, তখন তাদের মধ্যে দীন-শারী’আতের উপর দৃঢ়ভাবে ধৈর্যধারণকারীর অবস্থা হবে হাতের মুষ্টিতে অগ্নিশিখা ধারণকারীর মতো। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, সনদ হিসেবে হাদীসটি গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب تغير النَّاس)

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ الصَّابِرُ فِيهِمْ عَلَى دِينِهِ كَالْقَابِضِ عَلَى الْجَمْرِ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ إِسْنَادًا

سندہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2260) * عمر بن شاکر ضعیف و حدیث الترمذی (3058) یغنی عنہ

وعن انس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ياتي على الناس زمان الصابر فيهم على دينه كالقابض على الجمر رواه الترمذي وقال هذا حديث غريب اسناداسندہ ضعیف رواہ الترمذی 2260 عمر بن شاکر ضعیف و حدیث الترمذی 3058 یغنی عنہ

ব্যাখ্যা: (يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ الصَّابِرُ فِيهِمْ) মানুষের কাছে এমন এক সময় আসবে, যে সময়ে দুনিয়া পরিত্যাগ করে দীনের কার্যকলাপকে হিফাযত করা ঐ রকম কঠিন কাজ হবে, যে রকম জ্বলন্ত আগুনের টুকরাকে হাতের তালুতে ধারণ করা অত্যন্ত কঠিন।
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, জ্বলন্ত আগুনের কয়লাকে যেমনভাবে হাত পুড়ে যাওয়ার ভয়ে ধরে রাখা সম্ভব নয়, ঠিক তদ্রুপ দীনদার ব্যক্তি সে সময় দীনের উপর অটল থাকতে পারবে না। সে সময় পাপীদের দৌরাত্ম, পাপের ছড়াছড়ি হবে ঈমানের দুর্বলতার কারণে।
মুল্লা আলী ক্বারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, ধৈর্যের পরাকাষ্ঠা ব্যতীত যেমনি আগুনের কয়লা হাতে ধারণ করা কঠিন ঠিক তদ্রুপ ঐ সময়ে অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় না দিলে ঈমানের জ্যোতিকে ধরে রাখা সম্ভব নয়। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬/২২৬০, মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আসা

৫৩৬৮-[৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যখন তোমাদের শাসক হবে তোমাদের ভালো লোকেরা, তোমাদের বিত্তবান ব্যক্তিরা হবে দানশীল এবং তোমাদের যাবতীয় কাজকর্ম সম্পাদিত হবে পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতে, তখন জমিনের পেট অপেক্ষা তার পিঠ হবে তোমাদের জন্য শ্রেয়। পক্ষান্তরে যখন তোমাদের খারাপ লোকেরা হবে তোমাদের শাসক, বিত্তবান লোকেরা হবে কৃপণ এবং তোমাদের কাজকর্ম অর্পণ করা হবে নারীদের ওপর তখন জমিনের পিঠ অপেক্ষা তার পেট হবে তোমাদের জন্য শ্রেয়। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন, হাদীসটি গরীব]

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب تغير النَّاس)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا كَانَ أُمَرَاؤُكُمْ خِيَارَكُمْ وَأَغْنِيَاؤُكُمْ سُمَحَاءَكُمْ وَأُمُورُكُمْ شُورَى بَيْنِكُمْ فَظَهْرُ الْأَرْضِ خَيْرٌ لَكُمْ مِنْ بَطْنِهَا. وَإِذَا كَانَ أمراؤكم شِرَاركُمْ وأغنياؤكم بخلاؤكم وَأُمُورُكُمْ إِلَى نِسَائِكُمْ فَبَطْنُ الْأَرْضِ خَيْرٌ لَكُمْ من ظهرهَا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَقَالَ: هَذَا حديثٌ غَرِيب

اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2266) * صالح بن بشیر المری ضعیف و فیہ علۃ أخری ۔
(ضَعِيف)

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا كان امراوكم خياركم واغنياوكم سمحاءكم واموركم شورى بينكم فظهر الارض خير لكم من بطنها واذا كان امراوكم شراركم واغنياوكم بخلاوكم واموركم الى نساىكم فبطن الارض خير لكم من ظهرها رواه الترمذي وقال هذا حديث غريباسنادہ ضعیف رواہ الترمذی 2266 صالح بن بشیر المری ضعیف و فیہ علۃ اخری ۔ضعيف

ব্যাখ্যা: (إِذَا كَانَ أُمَرَاؤُكُمْ خِيَارَكُمْ) যখন তোমাদের শাসকগণ পরহেজগার হবে।
(وَأَغْنِيَاؤُكُمْ سُمَحَاءَكُمْ) এবং তোমাদের ধনবান ব্যক্তিরা দানশীল হবে।
(وَأُمُورُكُمْ شُورَى بَيْنِكُمْ) এবং তোমাদের সকল কর্মকাণ্ড পরস্পরের পরামর্শের মাধ্যমে হবে। যেমনটি আল্লাহ বলেন, (وَ اَمۡرُهُمۡ شُوۡرٰی بَیۡنَهُمۡ) আর তাদের কার্যাবলী তাদের মধ্যে পরস্পরের পরামর্শের ভিত্তিতে হবে। (সূরাহ আশ শূরা ৪২ : ৩৮)।
(فَظَهْرُ الْأَرْضِ خَيْرٌ لَكُمْ مِنْ بَطْنِهَا) তখন পৃথিবীর উপরিভাগ তোমাদের জন্য নিম্নভাগের চেয়ে উত্তম হবে। তথা মৃত্যুর চেয়ে তোমাদের বেঁচে থাকা উত্তম হবে।
(وَأُمُورُكُمْ إِلَى نِسَائِكُمْ) আর যদি তোমাদের কর্মকাণ্ড তাদের মতামতের উপর নির্ভর করে। যেহেতু তারা হাদীসের ভাষায় বুদ্ধি ও দীনদারীতে পুরুষের তুলনায় কম। অন্য অর্থে যে সমস্ত পুরুষ মর্যাদা ও সম্পদের মোহে পড়ে নারীদের মতো অবস্থা হবে, দীনের মৌলিক বিষয় সম্পর্কে অজ্ঞ হবে এবং সম্পদের অপব্যবহারের খারাপ পরিণতি সম্পর্কে অজ্ঞ হবে। আর তাদের হাতে ক্ষমতা চলে আসবে তখন বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুই ভালো। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৬/২২৬৬, মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)

পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আসা

৫৩৬৯-[১০] সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: অদূর ভবিষ্যতে তোমাদের বিরুদ্ধে (ইসলামবিদ্বেষী) অন্যান্য সম্প্রদায় একে অন্যকে আহ্বান করবে, যেরূপ খাবার পাত্রের প্রতি ভক্ষণকারী অন্যান্যদেরকে ডেকে থাকে। বর্ণনাকারী বলেন, এটা শুনে সাহাবীদের কেউ বললেন, তা কি এজন্য হবে যে, আমরা সেই সময় সংখ্যায় অল্প হব? তিনি (সা.) বললেন, বরং তখন তোমরা সংখ্যায় অনেক বেশি হবে, কিন্তু তোমাদের অবস্থা হবে স্রোতে ভেসে যাওয়া আবর্জনার মতো। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা তোমাদের হৃদয়ে ’ওয়াহন’ সৃষ্টি করে দেবেন। তখন কোন একজন প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রসূল! ’ওয়াহন কি? তিনি (সা.) বললেন, দুনিয়ার ভালোবাসা এবং মৃত্যুকে অপছন্দ করা (বাঁচার লোভ)। (আবূ দাউদ ও বায়হাক্বী’র শুআবূল ঈমান গ্রন্থে)

اَلْفصْلُ الثَّنِفْ (بَاب تغير النَّاس)

وَعَنْ ثَوْبَانَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يُوشِكُ الْأُمَمُ أَنْ تَدَاعَى عَلَيْكُمْ كَمَا تَدَاعَى الْأَكَلَةُ إِلَى قَصْعَتِهَا» . فَقَالَ قَائِلٌ: وَمِنْ قِلَّةٍ نَحْنُ يَوْمَئِذٍ؟ قَالَ: «بَلْ أَنْتُم يَوْمئِذٍ كثير وَلَكِن غُثَاءٌ كَغُثَاءِ السَّيْلِ وَلَيَنْزِعَنَّ اللَّهُ مِنْ صُدُورِ عَدُوِّكُمُ الْمَهَابَةَ مِنْكُمْ وَلَيَقْذِفَنَّ فِي قُلُوبِكُمُ الْوَهْنَ» . قَالَ قَائِلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا الْوَهْنُ؟ قَالَ: «حُبُّ الدُّنْيَا وَكَرَاهِيَةُ الْمَوْتِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَانِ»

حسن ، رواہ ابوداؤد (4297) [و عنہ] و البیھقی فی دلائل النبوۃ (6 / 534) ۔
(صَحِيح)

وعن ثوبان قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يوشك الامم ان تداعى عليكم كما تداعى الاكلة الى قصعتها فقال قاىل ومن قلة نحن يومىذ قال بل انتم يومىذ كثير ولكن غثاء كغثاء السيل ولينزعن الله من صدور عدوكم المهابة منكم وليقذفن في قلوبكم الوهن قال قاىل يا رسول الله وما الوهن قال حب الدنيا وكراهية الموت رواه ابو داود والبيهقي في شعب الايمانحسن رواہ ابوداود 4297 و عنہ و البیھقی فی دلاىل النبوۃ 6 534 ۔صحيح

ব্যাখ্যা : (يُوشِكُ الْأُمَمُ أَنْ تَدَاعَى عَلَيْكُمْ) অচিরেই কাফির ও বাতিল সম্প্রদায় তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে তোমাদের শক্তিকে খর্ব করে তোমাদের অধিনস্থ ঘরবাড়ি ও সম্পদ দখল করার জন্য তোমাদের বিরুদ্ধে একে অপরকে আহ্বান করবে।
(كَمَا تَدَاعَى الْأَكَلَةُ إِلَى قَصْعَتِهَا) যেমনিভাবে খাদ্য গ্রহণকারী ব্যক্তিরা একে অপরকে খাদ্যের প্লেটে ডাকে। অর্থাৎ যেমনিভাবে খাদ্যগ্রহণকারী তার প্লেট থেকে বিনা কষ্টে খাদ্য গ্রহণ করে থাকে, ঠিক তেমনিভাবে তারা তোমাদের অধিনস্থ ধন-সম্পদ বিনা বাধায় গ্রহণ করবে।
(وَلَكِن غُثَاءٌ كَغُثَاءِ السَّيْلِ) বরং তোমরা বন্যার পানিতে ভেসে আসা আবর্জনার মতো অনেক থাকবে, কিন্তু তোমাদের কোন শক্তি ও সাহস থাকবে না। তাই তোমাদেরকে বন্যার আবর্জনা ও খড়কুটার সাথে তুলনা দেয়া হয়েছে। ('আওনুল মা'বুদ ৭/৪২৯০, মিরক্বাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ সাওবান (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-২৬: মন-গলানো উপদেশমালা (كتاب الرقَاق)
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৭ পর্যন্ত, সর্বমোট ৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে