হাদিসটি ইমেইলে পাঠাতে অনুগ্রহ করে নিচের ফর্মটি পুরন করুন
security code
৪০৩৭

পরিচ্ছেদঃ ৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - জিয্ইয়াহ্-এর বর্ণনা

৪০৩৭-[৩] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একই দেশে (বিপরীতমুখী) দু’ ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)র লোক বসবাস করা সঙ্গত নয় এবং কোনো মুসলিম থেকে জিয্ইয়াহ্ নেয়া হবে না। (আহমাদ, তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَصْلُحُ قِبْلَتَانِ فِي أَرْضٍ وَاحِدَةٍ وَلَيْسَ عَلَى الْمُسْلِمِ جِزْيَةٌ» . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد

ব্যাখ্যা: (لَا تَصْلُحُ قِبْلَتَانِ فِى اَرْضٍ وَاحِدَةٍ) ‘‘একই ভূখণ্ডে দু’ ক্বিবলাহ্ একত্রে হওয়া সম্ভব নয়।’’ তূরিবিশতী বলেনঃ একই ভূখণ্ডে দু’ ধর্মের লোক বিজয়ী হতে পারে না। মুসলিমের জন্য এটা বৈধ নয় যে, সে কাফিরদের মাঝে বসবাস করবে। কেননা কোনো মুসলিম যদি তা করে তাহলে সে নিজেকে মুসলিম দেশে যিম্মির মতো করে ফেললো। আর মুসলিমের জন্য এটা বৈধ নয় যে, সে এ ধরনের যিল্লাতি নিয়ে বসবাস করবে। আবার কোনো অমুসলিম মুসলিম দেশে জিয্ইয়াহ্ ব্যতীত বসবাস করতে পারবে না। সেই সাথে তাকে স্বীয় ধর্ম প্রচার করার সুযোগ দেয়া যাবে না। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৩য় খন্ড, হাঃ ৬৩৩; মিরকাতুল মাফাতীহ)

(لَيْسَ عَلَى الْمُسْلِمِ جِزْيَةٌ) ‘‘মুসলিমের ওপর জিয্ইয়াহ্ নেই’’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য সে ভূমি, যে ভূমি বিজয় করা হয়েছে সন্ধি চুক্তির মাধ্যমে এবং তার অধিবাসীদের ওপর করারোপ করা হয়েছে এই শর্তে যে, নির্ধারিত করের বিনিময়ে তারা উক্ত ভূমির মালিক থেকে যাবে। তবে যদি তারা ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে তাদের ভূমির উপর থেকে কর রহিত হয়ে যাবে এবং ব্যক্তির ওপর থেকে জিয্ইয়াহ্ রহিত হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে যদি কোনো ভূমি যুদ্ধ করে বিজয় করা হয় অথবা জমির মালিকানা মুসলিমদের হবে- এই শর্তে সন্ধি চুক্তি করা হয় এবং ঐ ভূমিতে অমুসলিমগণ বাস করবে কর দেয়ার বিনিময়ে তাহলে এ কর অব্যাহত থাকবে তা কোনভাবেই রহিত হবে না যদিও তার অধিবাসীগণ পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ অথবা মৃত্যুবরণ করে।

ইবনুল হুমাম বলেনঃ যে যিম্মির উপর জিয্ইয়াহ্ ধার্য আছে সে যদি বৎসর পূর্ণ হওয়ার পরও ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে তার থেকে জিয্ইয়াহ্ রহিত হয়ে যাবে। অনুরূপভাবে সে যদি বৎসরের মাঝখানে ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে তার জিয্ইয়াহ্ রহিত হয়ে যাবে। তবে ইমাম শাফি‘ঈ-এর মতে তার ওপর ঐ বৎসরের কর থেকে যাবে। সে বৎসরের মাঝখানে ইসলাম গ্রহণ করুক অথবা বৎসরের শেষে ইসলাম গ্রহণ করুক। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

ইমাম খত্ত্বাবী বলেনঃ মুসলিমদের ওপর জিয্ইয়াহ্ নেই- এর দু’টি ব্যাখ্যা হতে পারে :

১. এখানে জিয্ইয়াহ্ অর্থ ভূমিকর। অর্থাৎ যদি কোনো ইয়াহূদীর আয়ত্তে এমন ভূমি থাকে যার ওপর কর ধার্য আছে সে যদি ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে তার ওপর থেকে জিয্ইয়াহ্ রহিত হয়ে যাবে এবং ঐ ভূমির করও রহিত হয়ে যাবে। এটাই সুফ্ইয়ান সাওরী এবং ইমাম শাফি‘ঈ-এর অভিমত।

২. যে যিম্মি বৎসরের কিয়দংশ পার হয়ে যাওয়ার পর ইসলাম গ্রহণ করে তার নিকট থেকে বৎসরের ঐ অংশের জিয্ইয়াহ্ আদায় করা হবে না। যেমন কোনো মুসলিম যদি বৎসরের কিছু অংশ চলে যাওয়ার পর তার পশুপাল বিক্রি করে তাহলে তার নিকট থেকে ঐ বৎসরের পশুর যাকাত আদায় করা হবে না। কেননা বৎসর পূর্ণ হওয়ার পর পশুতে যাকাত ওয়াজিব হয়। আর সে পশু বিক্রি করেছে বৎসর পূর্ণ হওয়ার আগেই। তাই তার ওপর ঐ পশুতে যাকাত ওয়াজিব হয়নি। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ৩০৫১)