পরিচ্ছেদঃ জামা‘আত তরক করার তৃতীয় কারণ ‘ভুলে যাওয়া’, যেই অবস্থা কোন কোন সময় মানুষের উপর আরোপিত হয়
২০৬৬. আবূ হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন হুনাইন যুদ্ধ থেকে ফিরে আসেন, সে সময় তিনি এক রাতে চলছিলেন, অতঃপর যখন তাঁকে তন্দ্রা পেয়ে যায়, তখন তিনি যাত্রা বিরতি দেন এবং বিলাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে বলেন, “আজ রাতে তুমি আমাদেরকে পাহারা দাও। অতঃপর বিলাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সালাত আদায় করতে থাকেন, যতটুকু সালাত আদায় করা তার নসীবে ছিল। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ ঘুমিয়ে পড়েন। অতঃপর যখন ফজরের কাছাকাছি সময় হয়, তখন বিলাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তার বাহনের সাথে হেলান দিয়ে ফজরের প্রতীক্ষায় থাকেন। অতঃপর বাহনে হেলান দেওয়া অবস্থাতেই বিলাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে তার দুই চোখ পরাভূত করে ফেলে (অর্থাৎ তুমি ঘুমিয়ে যান)। তারপর সূর্যের উত্তাপ শরীরে লাগার আগে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ- কেউ জাগ্রত হননি। অতঃপর প্রথম রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বপ্রথম জাগ্রত হন, তিনি ভীত হয়ে যান এবং বলেন, “বিলাল!” বিলাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আপনার জন্য আমার বাবা কুরবান হোক! আমাকে সেই সত্তা ঘুম দিয়েছিলেন, যিনি আপনাকেও ঘুম দিয়েছিলেন। ”রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তোমরা তোমাদের বাহন নিয়ে সামনে চলো।” তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওযূ করেন এবং বিলাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে আদেশ করেন ইকামত দেওয়ার জন্য, ফলে তিনি ইকামত দেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি সালাত আদায় করতে ভুলে যায়, অথবা ঘুমিয়ে থাকে, তবে সে যেন সালাত আদায় করে, যখন তার স্মরণে আসবে। কেননা মহান আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা‘আলা বলেছেন, أَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْري (আমার স্মরণে সালাত আদায় করো। -সূরা ত-হা: ১৪।)”[1]
ইউনূস রহিমাহুল্লাহ বলেন, “ইবনু শিহাব রহিমাহুল্লাহ لِذِكْري স্থলে لِلْذِّكْرَى পড়তেন।”
আবূ হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, “এই হাদীসটি ইবনু কুতাইবায় বর্ণনায় হুনাইন যু্দ্ধের স্থলে খাইবার যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে। আবূ হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু খাইবার যুদ্ধে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি ইসলাম গ্রহণ করে মদীনায় আগমন করেন, এসময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাইবারে ছিলেন আর মদীনার দায়িত্বে ছিলেন সিবা‘ বিন উরফুতাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। যদি হাদীসে খাইবারের বর্ণনা সঠিক হয়, তবে আবূ হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু অন্য সাহাবীর কাছ থেকে হাদীসটি শ্রবণ করে মুরসাল সূত্রে বর্ণনা করেছেন। সাহাবীগণ এরকম অনেক সময় করতেন। আর যদি এটি খাইবার না হয়ে হুনাইন হয়ে থাকে, তাহলে আবূ হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হুনাইনে উপস্থিত ছিলেন, যা বিশুদ্ধসূত্রে প্রমাণিত। ঘটনাটি হুনাইনে সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে মন বেশি সায় দেয়।”
ذِكْرُ الْعُذْرِ الثَّالِثِ وَهُوَ النِّسْيَانُ الَّذِي يَعْرِضُ فِي بَعْضِ الْأَحْوَالِ
2066 - أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْحَسَنِ بْنِ قُتَيْبَةَ وَالْحَسَنُ بْنُ سُفْيَانَ قَالَا: حَدَّثَنَا حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى قَالَ: حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيِّبِ: عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ قَفَلَ مِنْ غَزْوَةِ حُنَيْنٍ سَارَ لَيْلَةً حَتَّى إِذَا أَدْرَكَهُ الْكَرَى عَرَّسَ وَقَالَ لِبِلَالٍ: (اكْلأ لَنَا اللَّيْلَ) فَصَلَّى بِلَالٌ مَا قُدِّرَ لَهُ وَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَصْحَابُهُ فَلَمَّا تَقَارَبَ الصُّبْحُ اسْتَسْنَدَ بِلَالٌ إِلَى رَاحِلَتِهِ يُوَاجِهُ الْفَجْرَ فَغَلَبَتْ بِلَالًا عَيْنَاهُ وَهُوَ مُستسند إِلَى رَاحِلَتِهِ فَلَمْ يَسْتَيْقِظْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا بِلَالٌ وَلَا أَحَدٌ مِنْ أَصْحَابِهِ حَتَّى ضَرَبَتْهُمُ الشَّمْسُ فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوَّلَهُمُ اسْتِيقَاظًا فَفَزِعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ: (أَيْ بِلَالُ) فَقَالَ بِلَالٌ: أَخَذَ بِنَفْسِي الَّذِي أَخَذَ بِنَفْسِكَ بِأَبِي أَنْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ: (اقْتَادُوا رَوَاحِلَكُمْ) ثُمَّ تَوَضَّأَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَمَرَ بِلَالًا فَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَقَالَ: (مَنْ نَسِيَ الصَّلَاةَ أَوْ نَامَ عَنْهَا فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى قَالَ: {أَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْري} [طه: 14] وَقَالَ يُونُسُ وكان ابن شهاب يقرؤها {لِلْذِّكْرَى} الراوي : أَبُو هُرَيْرَةَ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان الصفحة أو الرقم: 2066 | خلاصة حكم المحدث: صحيح ـ ((الإرواء)) (263) قَالَ أَبُو حَاتِمٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: أَخْبَرَنَا ابْنُ قُتَيْبَةَ بِهَذَا الْخَبَرِ وَقَالَ فِيهِ: (خَيْبَرُ) وَأَبُو هُرَيْرَةَ لَمْ يَشْهَدْ خَيْبَرَ إِنَّمَا أَسْلَمَ وقَدِمَ الْمَدِينَةَ وَالنَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِخَيْبَرَ وَعَلَى الْمَدِينَةِ سِبَاعُ بْنُ عُرْفُطَةَ فَإِنْ صَحَّ ذِكْرُ خَيْبَرَ فِي الْخَبَرِ فَقَدْ سَمِعَهُ أَبُو هُرَيْرَةَ مِنْ صَحَابِيٍّ غَيْرِهِ فَأَرْسَلَهُ كَمَا يَفْعَلُ ذَلِكَ الصَّحَابَةُ كَثِيرًا وَإِنْ كَانَ ذَلِكَ حُنَيْنَ لَا خَيْبَرَ وَأَبُو هُرَيْرَةَ شَهِدَهَا وَشُهُودُهُ الْقِصَّةَ الَّتِي حَكَاهَا شُهُودُ صَحِيحٍ وَالنَّفْسُ إِلَى أَنَّهُ حُنَيْنٌ أَمْيَلُ.