লগইন করুন
পরিচ্ছেদঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই নির্দেশ ফরয নির্দেশক; মুস্তাহাব নির্দেশক নয় মর্মে চতুর্থ হাদীস
২১০৭. ইমাম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, “আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন হাসান বিন সুফিয়ান, তিনি বলেন, আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন হাওসারাহ... পূর্বের সানাদের মতোই। তবে এই সানাদে বলা হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আর আমার অনুসরণের অন্তর্ভুক্ত হলো তোমরা তোমাদের শাসকদের অনুসরণ করবে।”[1]
আমাদেরকে এটি বর্ণনা করেছেন আবূ ইয়া‘লা আল মাওসিলী, তিনি বলেন, “আমি ইয়াহইয়া বিন মা‘ঈনকে উকবাহ বিন আবূ সাহবাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “তিনি নির্ভরযোগ্য রাবী।”
আবূ হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, “এই হাদীসে স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে যে, ইমাম যখন বসে সালাত আদায় করবে, তখন মুক্তাদীদেরও বসে সালাত আদায় করা মহান আল্লাহর আনুগত্যের অন্তর্ভুক্ত, যেই আনুগত্য করার তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। এটা আমার কাছে এমন ইজমার অন্তর্ভুক্ত, যার বৈধতার ব্যাপারে বিদ্বানগণ ঐক্যমত পোষন করেছেন। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চারজন সাহাবী এই মর্মে ফাতাওয়া দিয়েছেন। তাঁরা হলেন, জাবির বিন আব্দুল্লাহ, আবূ হুরাইরা, উসাইদ বিন হুদ্বাইর ও কাইস বিন কাহদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম। আর আমাদের নিকট বস্তুত ইজমা হলো সাহাবীদের ইজমা, যারা অহী অবতীর্ণ হওয়া প্রত্যক্ষ করেছেন। তাঁরা এতে পরিবর্তন, বিকৃতি সাধন করা প্রভৃতি থেকে মুক্ত, মহান আল্লাহ তাঁদের মাধ্যমে মুসলিমদের জন্য দ্বীন সংরক্ষন করেছেন এবং ছিদ্রকারীদের ছিদ্র থেকে হেফাযত করেছেন। আর সাহাবীদের মধ্যে কোন একজন সাহাবী এই চারজন সাহাবীর বিরোধিতা করেছেন এমন কোন বর্ণনা অবিচ্ছিন্ন বা বিচ্ছিন্ন কোন সানাদে বর্ণিত হয়নি। কাজেই যেন সমস্ত সাহাবা এই ব্যাপারে একমত যে, ইমাম যখন বসে সালাত আদায় করবেন, তখন মুক্তাদীদের জন্য কর্তব্য হলো তারাও বসে সালাত আদায় করবে।
তাবে‘ঈদের ব্যাপারে এই ব্যাপারে ফাতাওয়া দিয়েছেন : জাবির বিন যায়েদ আবূ শা‘সা রহিমাহুল্লাহ। আর তাবে‘ঈদের মধ্যে কোন তাবে‘ঈ তার বিরোধিতা করেছেন তা সহীহ কিংবা দুর্বল কোন সানাদে আদৌ বর্ণিত হয়নি। কাজেই যেন তাবে‘ঈনরাও এর বৈধতার ব্যাপারে ঐক্যমত পোষন করেছেন।
বস্তুত ইমাম বসে সালাত আদায় করলে, মুক্তাদীও যদি বসে সালাত আদায় করে, তবে মুক্তাদীদের সালাত হয়ে যাবে, এমন কথা এই উম্মাতের মাঝে প্রথম বলেছেন ইমাম নাখ‘ঈর ছাত্র মুগীরা বিন মিকসাম, তার কাছ ইলম গ্রহণ করেন হাম্মাদ বিন আবূ সালামা। তারপর হাম্মাদ বিন আবূ সালামা থেকে ইলম গ্রহণ করেন ইমাম আবূ হানিফা। পরবর্তীতে এই ব্যাপারে তাঁর অনুসারীরা তাঁর অনুসরণ করেন।
তারা সবচেয়ে বড় যেই জিনিস দিয়ে দলীল দেন, তা হলো একটা হাদীস যা জাবির আল জু‘ফী ইমাম শা‘বী থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমার পরে আর কেউ বসে যেন বসে ইমামতি না করে।” এই হাদীসটির সানাদ যদি বিশুদ্ধ হয়, তবুও সেটা মুরসাল হাদীস। আমাদের নিকট মুরসাল হাদীস এবং যে হাদীস বর্ণিত হয়নি- বিধানের ক্ষেত্রে উভয়টি সমান। কেননা আমরা যদি তাবে‘ঈর মুরসাল গ্রহণ করি, -যদিও উত্তম ধারণার ভিত্তিতে তাবে‘ঈ নির্ভরযোগ্য, মর্যাদাবান হন- তবে আমাদের জন্য অবধারিত হবে অনুরুপ তাবে তাবে‘ঈর মুরসাল হাদীস গ্রহণ করা, যখন আমরা সেটা গ্রহণ করবো, তখন আমাদের জন্য আবশ্যক হবে তার মতো তাবে তাবে‘ঈদের ছাত্রদের মুরসাল বর্ণনা। যখন আমরা সেটা গ্রহণ করবো, তখন আমাদের জন্য আবশ্যক হবে প্রত্যেক মানুষের বর্ণনা, যখন তিনি বলবেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন। এভাবে তো পুরো শরীয়তই ভেঙ্গে পড়বে!
আশ্চার্যের বিষয় হলো তারা এরকম মুরসাল হাদীস দিয়ে দলীল দেন অথচ তাদের নেতা জাবির আল জু‘ফীর বর্ণনার নিন্দা করেছেন। আমাদেরকে হুসাইন বিন আব্দুল্লাহ বিন ইয়াযিদ আল কাত্তান রাক্কায় বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন, “আমাদেরকে বর্ণনা করেছেন আহমাদ বিন আবুল হাওয়ারী, তিনি বলেছেন, আমি আবূ ইয়াহইয়া আল হিম্মানীকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমি আবূ হানিফা রহিমাহুল্লাহকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, “আমি যাদের সাথে সাক্ষাত করেছি, তাদের মাঝে আতা রহিমাহুল্লাহর চেয়ে উত্তম আর কাউকে দেখিনি আর জাবির আল জু‘ফীর চেয়ে বড় মিথ্যুক আর কাউকে দেখিনি।
আমি যখনই তার কাছে কোন মত উপস্থাপন করি, তখনই সে সেই বিষয়ে হাদীস পেশ করে! সে মনে করে যে, তার কাছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এতো এতো হাজার হাদীস আছে, যা সে বর্ণনা করেনি!
এই হলেন ইমাম আবূ হানিফা, যিনি জাবির আল জু‘ফীকে জারাহ করেছেন এবং তাকে মিথ্যুক আখ্যা দিয়েছেন, এটা তার কথার বিপরীত যিনি নিজেকে আবূ হানিফার অনুসারী দাবী করেন, তার মতে, আমাদের ইমামদের কিতাবে তাদের যে মন্তব্য রয়েছে “তিনি দুর্বল” –এগুলো গীবত! তারপর সে বাধ্য হয়ে এমন ব্যক্তির দলীল গ্রহণ করেন, যাকে তার ইমাম মিথ্যুক বলেছেন এবং তিনি এর মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি সুন্নাতকে প্রতিহত করতে চান।
আমরা জাবির আল জু‘ফীর ব্যাপারটি আমাদের ‘মাজরূহীন’ নামক কিতাবে এমন সুস্পষ্ট দলীলের মাধ্যমে বর্ণনা করেছি, যা কোন সুস্থ জ্ঞান সম্পন্ন মানুষের কাছে অস্পষ্ট থাকবে না। এজন্য এখানে তার আলোচনা পুনরায় করা প্রয়োজন মনে করছি না।”
ذِكْرُ خَبَرٍ خَامِسٍ يَدُلُّ عَلَى أَنَّ هَذَا الْأَمْرَ أَمْرُ فَرِيضَةٍ لَا فَضِيلَةٍ
2107 - أَخْبَرَنَا الْحَسَنُ بْنُ سُفْيَانَ قَالَ: حَدَّثَنَا حَوْثَرَةُ ...... بِإِسْنَادِهِ نَحْوَهُ إِلَّا أَنَّهُ قَالَ: (وَمِنْ طَاعَتِي أَنْ تُطِيعُوا أَئِمَّتَكُمْ) أَخْبَرْنَاهُ أَبُو يَعْلَى الْمَوْصِلِيُّ قَالَ: سَأَلْتُ يَحْيَى بْنَ مَعِينٍ عَنْ عُقْبَةَ بن أبي الصهباء فقال: ثقة الراوي : عَبْد اللَّهِ بْن عُمَرَ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان الصفحة أو الرقم: 2107 | خلاصة حكم المحدث: صحيح - ((صحيح أبي داود)) (620). قَالَ أَبُو حَاتِمٍ ـ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ـ: فِي هَذَا الْخَبَرِ بَيَانٌ وَاضِحٌ أَنَّ صَلَاةَ الْمَأْمُومِينَ قُعُودًا ـ إِذَا صَلَّى إِمَامُهُمْ قَاعِدًا ـ مِنْ طَاعَةِ اللَّهِ ـ جَلَّ وَعَلَا ـ الَّتِي أَمَرَ عِبَادَهُ وَهُوَ عِنْدِي ضربٌ مِنَ الْإِجْمَاعِ الَّذِي أَجْمَعُوا عَلَى أَجَازَتِهِ لِأَنَّ مِنْ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَرْبَعَةٌ أَفْتَوْا بِهِ: جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ وَأَبُو هُرَيْرَةَ وَأُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ وَقَيْسُ بْنُ قَهْدٍ وَالْإِجْمَاعُ عِنْدَنَا إِجْمَاعُ الصَّحَابَةِ الَّذِينَ شَهِدُوا هُبُوطَ الْوَحْيِ وَالتَّنْزِيلِ وأُعيذوا مِنَ التَّحْرِيفِ وَالتَّبْدِيلِ حَتَّى حَفِظَ اللَّهُ بِهِمُ الدِّينَ عَلَى الْمُسْلِمِينَ وَصَانَهُ عَنْ ثَلْمِ الْقَادِحِينَ ولم يروا عَنْ أَحَدٍ مِنَ الصَّحَابَةِ خِلَافٌ لِهَؤُلَاءِ الْأَرْبَعَةِ لَا بِإِسْنَادٍ مُتَّصِلٍ وَلَا مُنْقَطِعٍ فَكَأَنَّ الصَّحَابَةَ أَجْمَعُوا عَلَى أَنَّ الْإِمَامَ إِذَا صَلَّى قَاعِدًا كَانَ عَلَى الْمَأْمُومِينَ أَنْ يُصَلُّوا قُعُودًا. وَقَدْ أَفْتَى بِهِ مِنَ التَّابِعِينَ: جَابِرُ بْنُ زَيْدٍ أَبُو الشَّعْثَاءِ وَلَمْ يُرْوَ عَنْ أَحَدٍ مِنَ التَّابِعِينَ أَصْلًا بِخِلَافِهِ لَا بإسنادٍ صَحِيحٍ وَلَا واهٍ فكأنَّ التَّابِعِينَ أَجْمَعُوا عَلَى أَجَازَتِهِ. وَأَوَّلُ مَنْ أَبْطَلَ فِي هَذِهِ الْأُمَّةِ صَلَاةَ الْمَأْمُومِ قَاعِدًا ـ إِذَا صَلَّى إِمَامُهُ جَالِسًا ـ الْمُغِيرَةُ بْنُ مِقْسَمٍ صَاحِبُ النَّخَعِيِّ وَأَخَذَ عَنْهُ حَمَّادُ بْنُ أبي سلمة ثُمَّ أَخَذَ عَنْ حَمَّادٍ أَبُو حَنِيفَةَ وَتَبِعَهُ عَلَيْهِ مَنْ بَعْدَهُ مِنْ أَصْحَابِهِ. وَأَعْلَى شَيْءٍ احْتَجُّوا بِهِ فِيهِ شَيْءٌ رَوَاهُ جَابِرٌ الْجُعْفِيُّ عَنِ الشَّعْبِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (لَا يَؤُمَّنَّ أَحَدٌ بَعْدِي جَالِساً) وَهَذَا لَوْ صَحَّ إِسْنَادُهُ لَكَانَ مُرْسَلًا وَالْمُرْسَلُ مِنَ الْخَبَرِ وَمَا لَمْ يُرْوَ سِيَّانِ فِي الْحُكْمِ عِنْدَنَا لَأَنَّا لَوْ قَبلنَا إِرْسَالَ تَابِعِيٍّ ـ وَإِنْ كَانَ ثِقَةً فَاضِلًا عَلَى حُسْنِ الظَّنِّ ـ لَزِمَنَا قَبُولُ مِثْلِهِ عَنْ أَتْبَاعِ التَّابِعِينَ وَمَتَى قَبْلِنَا ذَلِكَ لَزِمَنَا قَبُولُ مِثْلِهِ عَنْ تُبَّاعِ التُّبَعِ وَمَتَى قَبْلِنَا ذَلِكَ لَزِمَنَا أَنْ نَقْبَلَ مِنْ كُلِّ إِنْسَانٍ إِذَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي هَذَا نَقْضُ الشَّرِيعَةِ. وَالْعَجَبُ مِمَّنْ يَحْتَجُّ بِمِثْلِ هَذَا الْمُرْسَلِ وَقَدْ قَدَحَ فِي رِوَايَتِهِ زعيمُهم فِيمَا أَخْبَرَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ يَزِيدَ الْقَطَّانُ بِالرَّقَّةِ قَالَ: حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ أَبِي الْحَوَارِيِّ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا يَحْيَى الْحِمَّانِيَّ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا حَنِيفَةَ يَقُولُ: مَا رَأَيْتُ فِيمَنْ لَقِيتُ أَفْضَلَ مِنْ عَطَاءٍ وَلَا لَقِيتُ فِيمَنْ لَقِيتُ أَكْذَبَ مِنْ جَابِرٍ الْجُعْفِيِّ مَا أَتَيْتُهُ بِشَيْءٍ قَطُّ مِنْ رَأْيٍ إِلَّا جَاءَنِي فِيهِ بِحَدِيثٍ وَزَعَمَ أَنَّ عِنْدَهُ كَذَا وَكَذَا أَلْفَ حَدِيثٍ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَنْطِقْ بِهَا. فَهَذَا أَبُو حَنِيفَةَ يَجْرَحُ جَابِرًا الْجُعْفِيَّ ويُكذبه ضِدَّ قَوْلِ مَنِ انْتَحَلَ مِنْ أَصْحَابِهِ مَذْهَبَهُ وَزَعَمَ أَنَّ قَوْلَ أَئِمَّتِنَا فِي كُتُبِهِمْ: ((فُلَانٌ ضَعِيفٌ)) غِيبَةٌ ثُمَّ لَمَّا اضْطَرُّهُ الْأَمْرُ جَعَلَ يحتجُّ بِمَنْ كَذَّبَهُ شَيْخُهُ فِي شَيْءٍ يَدْفَعُ بِهِ سُنَّةً مِنْ سُنَنِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. فَأَمَّا جابرٌ الْجُعْفِيَّ فَقَدْ ذَكَرْنَا قِصَّتَهُ فِي كِتَابِ: ((الْمَجْرُوحِينَ مِنَ الْمُحَدِّثِينَ)) بِالْبَرَاهِينِ الْوَاضِحَةِ الَّتِي لَا يَخْفَى عَلَى ذِي لُبٍّ صِحَّتها فَأَغْنَى ذَلِكَ عَنْ تِكْرَارِهَا فِي هَذَا.