পরিচ্ছেদঃ ২২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ভালো কাজের আদেশ
৫১৪৭-[১১] ’আদী ইবনু ’আদী আল কিন্দী (রহিমাহুল্লাহ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক মুক্ত গোলাম আমাদের নিকট বর্ণনা করেন যে, আমার দাদাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা’আলা কোন জাতিকে তাদের বিশেষ কোন লোকের পাপের কারণে শাস্তি প্রদান করবেন না, যতক্ষণ না ঐ জাতির অধিকাংশ লোক ঐ পাপের কথা জানতে পারবে যে, তাদের মধ্যে খারাপ কাজ করা হচ্ছে এবং তারা সেটা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও প্রতিরোধ না করে। যখন তারা এরূপ করে, তখন আল্লাহ তা’আলা ঐ জাতির সকলকে ব্যাপকভাবে শাস্তি প্রদান করেন। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]
হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ এর সনদে ‘‘মাওলা’’র অজ্ঞতা থাকার কারণে য‘ঈফ। দেখুন- হিদায়াতুর্ রুওয়াত ৪/৪৮৮। য‘ঈফুল জামি‘ ১৬৭৫, আহমাদ ১৭৭২০, আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১৩৭৮৮।
وَعَنْ عَدِيِّ
بْنِ عَدِيٍّ الْكِنْدِيِّ قَالَ: حَدَّثَنَا مَوْلًى لَنَا أَنَّهُ سَمِعَ جَدِّي رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى لَا يُعَذِّبُ الْعَامَّةَ بِعَمَلِ الْخَاصَّةِ حَتَّى يَرَوُا الْمُنْكَرَ بَيْنَ ظَهْرَانِيهِمْ وَهُمْ قَادِرُونَ عَلَى أَنْ يُنْكِرُوهُ فَلَا يُنْكِرُوا فَإِذَا فَعَلُوا ذَلِكَ عَذَّبَ اللَّهُ العامَّةَ والخاصَّةَ» . رَوَاهُ فِي «شرح السّنة»
পরিচ্ছেদঃ ২২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ভালো কাজের আদেশ
৫১৪৮-[১২] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বনী ইসরাঈল গোত্র যেখন পাপাচারে লিপ্ত হয়ে গেল, তখন তাদের ’আলিমগণ প্রথমত তাদেরকে সেটা থেকে নিষেধ করলেন। যখন তারা বিরত হলো না, তখন তারাও তাদের মাজলিসে বসতে লাগল এবং তাদের সাথে একত্রে খাদ্য খেতে ও মদ পান করতে লাগল। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা তাদের কারো কারো অন্তর কারো কারো অন্তর দ্বারা কলুষিত করে দিলেন। তখন আল্লাহ তা’আলা দাঊদ (আ.) ও ’ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ.)-এর যবানিতে তাদের ওপর অভিসম্পাত করলেন। এ অভিসম্পাত তাদের পাপের কারণে ও সীমালঙ্ঘন করার কারণে হয়েছে।
রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বালিশে হেলান দিয়ে শুয়েছিলেন। এ কথা বলে তিনি উঠে বসলেন এবং বললেনঃ ঐ পবিত্র সত্তার কসম! যাঁর হাতে আমার জীবন, তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর শাস্তি থেকে রেহাই পাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা অত্যাচারী ও পাপীদের পাপকার্য থেকে নিষেধ করবে। (তিরমিযী ও আবূ দাঊদ)[1]
অন্য বর্ণনায় আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর কসম! তোমরা তাদেরকে অবশ্যই সৎকাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে। অত্যাচারীদের হস্তদ্বয় ধরে ফেলবে, তাদেরকে সৎকাজের প্রতি অনুপ্রাণিত করবে এবং সৎকাজের উপর স্থিতিশীল রাখবে। নতুবা আল্লাহ তা’আলা তোমাদের কারো কারো অন্তরকে কারো কারো অন্তরের সাথে মিলিয়ে দেবেন। তারপর বনী ইসরাঈলকে যেভাবে অভিসম্পাত করেছিলেন, সেভাবে তোমাদেরকেও অভিসম্পাত করবেন।
হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ, ‘‘ইবনু মাস্‘ঊদ’’-এর মাঝে তার বিচ্ছিন্নতার কারণে, আর তার ছেলের নাম আবূ ‘উবায়দাহ্। দেখুন- য‘ঈফাহ্ ১১০৫, হিদায়াতুর্ রুওয়াত ৪/৪৮৯, আহমাদ ৩৭১৩।
وَعَنْ
عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَمَّا وَقَعَتْ بَنُو إِسْرَائِيلَ فِي الْمَعَاصِي نَهَتْهُمْ عُلَمَاؤُهُمْ فَلَمْ يَنْتَهُوا فَجَالَسُوهُمْ فِي مَجَالِسِهِمْ وَآكَلُوهُمْ وَشَارَبُوهُمْ فَضَرَبَ اللَّهُ قُلُوبَ بَعْضِهِمْ بِبَعْضٍ فَلَعَنَهُمْ عَلَى لسانِ دَاوُد وَعِيسَى ابْن مَرْيَمَ ذَلِكَ بِمَا عَصَوْا وَكَانُوا يَعْتَدُونَ» . قَالَ: فَجَلَسَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَ مُتَّكِئًا فَقَالَ: «لَا وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ حَتَّى تَأْطِرُوهُمْ أَطْرًا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَفِي رِوَايَتِهِ قَالَ: «كَلَّا وَاللَّهِ لَتَأْمُرُنَّ بِالْمَعْرُوفِ وَلَتَنْهَوُنَّ عَنِ الْمُنْكَرِ وَلَتَأْخُذُنَّ عَلَى يَدَيِ الظَّالِمِ ولنأطرنه على الْحق أطرا ولنقصرنه عَلَى الْحَقِّ قَصْرًا أَوْ لَيَضْرِبَنَّ اللَّهُ بِقُلُوبِ بَعْضِكُمْ عَلَى بَعْضٍ ثُمَّ لَيَلْعَنَنَّكُمْ كَمَا لَعَنَهُمْ»
ব্যাখ্যাঃ (فَضَرَبَ اللهُ قُلُوبَ بَعْضِهِمْ بِبَعْضٍ) ‘আল্লামা ইবনুল মালিক (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ এখানে بِبَعْضٍ শব্দের শুরুর "ب" হরফটি কারণ বর্ণনা করার অর্থে ব্যবহার হয়েছে। কাজেই এর অর্থ হলো, অন্যায়কারী ব্যক্তির সহচার্যে থাকার কারণে তা দুষ্কৃতির দ্বারা একজন সৎ ব্যক্তির অন্তরকে আল্লাহ মলিন করে দিয়েছেন। এক কথায় পাপী ব্যাক্তির সহচার্যে সৎলোকের অন্তর কলুষিত হয়। এভাবে তাদের সকলের অন্তর সঠিক ও কল্যাণকর বিষয় গ্রহণ করার ব্যাপারে কঠোর ও নির্দয় হয়েছিল। এটি ছিল বানী ইসরাঈলের ওপর আল্লাহর বিশেষ ধরনের অভিসম্পাত। (‘আওনুল মা‘বূদ ৭ম খন্ড, হাঃ ৪৩২৮; তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৭ম খন্ড, হাঃ ৩০৪৭; মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ২২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ভালো কাজের আদেশ
৫১৫০-[১৪] ’আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মূসা (আ.)-এর কওমের ওপর আকাশ থেকে রুটি ও মাংসের থালা অবতীর্ণ করা হয়েছিল এবং তাদেরকে আদেশ করা হয়েছিল আমানাতে খিয়ানাত না করার। অর্থাৎ- প্রয়োজনের অধিক নেবে না ও অন্যের অংশেও হাত দেবে না এবং আগামীকালের জন্য সঞ্চয় করে রাখবে না। কিন্তু তারা খিয়ানাত করল ও সঞ্চয়ও করল এবং অন্য দিনের জন্য কিছু খাবার রেখেও দিলো। এজন্য আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক তাদের আকৃতি-অবয়ব পরিবর্তন করে বানর ও শূকর বানিয়ে দেয়া হলো। (তিরমিযী)[1]
হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ এর সনদে ‘‘কতাদাহ্’’ নামক বর্ণনাকারীগণ একজন প্রসিদ্ধ মুদাল্লিস ব্যক্তি। আর সে ‘‘আন’’ দ্বারা হাদীস বর্ণনা করেছেন। মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ১৬৫১।
وَعَنْ عَمَّارِ
بْنِ يَاسِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أُنْزِلَتِ الْمَائِدَةُ مِنَ السَّمَاءِ خُبْزًا وَلَحْمًا وَأُمِرُوا أَنْ لَا يَخُونُوا وَلَا يَدَّخِرُوا لِغَدٍ فَخَانُوا وَادَّخَرُوا وَرَفَعُوا لغَدٍ فمُسِخوا قَردةً وخَنازيرَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যাঃ (أُنْزِلَتِ الْمَائِدَةُ مِنَ السَّمَاءِ) ‘আল্লামা রাগিব আল আসবাহানী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ الْمَائِدَةُ হলো এক ধরনের প্রশস্ত প্লেট যাতে বিভিন্ন প্রকারের খাবার থাকে।
ইমাম ইবনু কাসীর (রহিমাহুল্লাহ) তাঁর তাফসীর গ্রন্থ ‘তাফসীর ইবনু কাসীর’-এ উল্লেখ করেছেন যে, ‘ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ.)-এর যুগে বানী ইসরাঈলের কাছে আল্লাহর পক্ষ হতে এ খাবার অবতীর্ণ হত। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৭ম খন্ড, হাঃ ৩০৬১; মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ২২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ভালো কাজের আদেশ
৫১৫১-[১৫] ’উমার ইবনুল খত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শেষ যামানায় আমার উম্মাতের ওপর তাদের শাসকদের পক্ষ থেকে কঠিন বিপদ আপতিত হবে। ঐ বিপদ থেকে শুধু সেসব লোকই রেহাই পাবে, যারা আল্লাহ তা’আলার দীন সম্পর্কে জ্ঞাত থাকবে। সে তার নিজের মুখ, হাত ও অন্তর দ্বারা সত্যকে প্রকাশ করার জন্য জিহাদ করবে। এ ব্যক্তির সৌভাগ্য তার জন্য অগ্রগামী হয়েছে। অন্য আরেক ব্যক্তি হবে, যে আল্লাহ তা’আলার দীন সম্পর্কে জানবে, এতে বিশ্বাস স্থাপন করবে। অন্য এক ব্যক্তি হবে, যে আল্লাহর দীন সম্পর্কে জানবে; কিন্তু চুপচাপ থাকবে। যখন কাউকে কোন নেক কাজ করতে দেখবে, তখন তাকে ভালোবাসবে। আর যখন কাউকে অসৎকাজ করতে দেখবে, তখন তাকে ঘৃণা করবে। এ ব্যক্তিও অন্তরে ভালোবাসা ও বিদ্বেষভাব লুকায়িত রাখার কারণে পরিত্রাণ পাবে।[1]
হাদীসটি দু’টি কারণে য‘ঈফ : ১ম- ইনক্বিতা‘ জাবির ইবনু যায়দ-এর মাঝে। আর ২য়টি- য‘ঈফ সালিম আল মুরাদী। আর সে হলো ইবনু ‘আবদুল ওয়াহিদ, অথবা ইবনুল আ‘লা অথবা ‘আবদুল ‘আলা; তাকে ইমাম নাসায়ী ও ইবনু মা‘ঈন য‘ঈফ বলেছেন। দেখুন- য‘ঈফাহ্ ৬৭২৫।
عَنْ عُمَرَ
بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّهُ تُصِيبُ أُمَّتِي فِي آخِرِ الزَّمَانِ مِنْ سُلْطَانِهِمْ شَدَائِدُ لَا يَنْجُو مِنْهُ إِلَّا رَجُلٌ عَرَفَ دِينَ اللَّهِ فَجَاهَدَ عَلَيْهِ بِلِسَانِهِ وَيَدِهِ وَقَلْبِهِ فَذَلِكَ الَّذِي سَبَقَتْ لَهُ السَّوَابِقُ وَرَجُلٌ عَرَفَ دِينَ اللَّهِ فَصَدَّقَ بِهِ وَرَجُلٌ عَرَفَ دِينَ اللَّهِ فَسَكَتَ عَلَيْهِ فَإِنْ رَأَى مَنْ يَعْمَلُ الْخَيْرَ أَحَبَّهُ عَلَيْهِ وَإِنْ رَأَى مَنْ يَعْمَلُ بِبَاطِلٍ أَبْغَضَهُ عَلَيْهِ فَذَلِكَ يَنْجُو على إبطانه كُله»
পরিচ্ছেদঃ ২২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ভালো কাজের আদেশ
৫১৫২-[১৬] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ মহীয়ান-গরীয়ান জিবরীল (আ.)-কে আদেশ করেন যে, অমুক শহর বা জনপদটিকে সেটার বাসিন্দাসহ উল্টিয়ে দাও। তখন জিবরীল (আ.)বললেনঃ হে প্রভু! ঐ জনপদে তোমার অমুক বান্দা রয়েছে, যে এক মুহূর্ত তোমার নাফরমানি করেনি। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেন, তার ও তাদের সকলের ওপর শহরটিকে উল্টিয়ে দাও। কারণ ঐ ব্যক্তির মুখমণ্ডলে পাপীদের পাপাচার দেখে আমার সন্তুষ্টির জন্য এক মুহূর্তের জন্যও পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ- সে পাপীদের পাপ এক মুহূর্তের জন্যও খারাপ মনে করেনি।[1]
হাদীসটি য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর সনদে ‘‘আম্মার ইবনু সায়ফ’’ নামের বর্ণনাকারী য‘ঈফ। ইমাম যাহাবী তাকে য‘ঈফ বলেছেন, আর ইমাম দারাকুত্বনী তাকে মাতরূক বলেছেন। আর ‘উবায়দুল্লাহ ইবনু ইসহাকব আল আত্বার নামের বর্ণনাকারী সম্পর্কেও ইমাম যাহাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ তারা তাকে য‘ঈফ বলেছেন। দেখুন- য‘ঈফাহ্ ১৯০৪, হিদায়াতুর্ রুওয়াত ৪/৪৯১।
وَعَنْ جَابِرٍ
قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَوْحَى اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلى جبريلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ: أَنِ اقْلِبْ مَدِينَةَ كَذَا وَكَذَا بِأَهْلِهَا قَالَ: يارب إِنَّ فِيهِمْ عَبْدَكَ فُلَانًا لَمْ يَعْصِكَ طَرْفَةَ عَيْنٍ . قَالَ: فَقَالَ: اقْلِبْهَا عَلَيْهِ وَعَلَيْهِمْ فَإِنَّ وَجهه لم يتمعر فِي سَاعَة قطّ
পরিচ্ছেদঃ ২২. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ভালো কাজের আদেশ
৫১৫৪-[১৮] আবূ মূসা আল আশ্’আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সেই পবিত্র সত্তার কসম! যাঁর হাতে মুহাম্মাদ-এর প্রাণ, কিয়ামতের দিন সৎ ও অসৎ কাজগুলোকে বিশেষ আকৃতিতে তৈরি করা হবে এবং তাদের সম্মুখে উপস্থাপন করা হবে। ভালো কাজগুলো তার ’আমলকারীকে সুসংবাদ দেবে এবং ভালো ফলাফলের অঙ্গীকার করবে। আর মন্দ কাজগুলো তার ’আমলকারীকে বলবে, দূর হয়ে যাও, দূর হয়ে যাও। প্রকৃতপক্ষ তারা দূর হয়ে যাওয়ার শক্তি পাবে না; বরং তার সাথেই জড়িয়ে থাকবে। (আহমাদ ও বায়হাক্বী’র ’’শু’আবুল ঈমানে’’ বর্ণনা করেছেন।)[1]
হাদীসিট য‘ঈফ হওয়ার কারণ, এর বর্ণনাকারীগুলো বিশ্বস্ত তবে ‘‘কতাদাহ্ ও হাসান বাসরী’’ মুদাল্লিস রাবী। আর তারা দু’ জনের ‘আন দ্বারা হাদীস বর্ণনা করেছে। দেখুন- হিদায়াতুর্ রুওয়াত ৪/৪৯১ পৃঃ।
وَعَنْ أَبِي
مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ إِنَّ الْمَعْرُوفَ وَالْمُنْكَرَ خَلِيقَتَانِ تُنْصَبَانِ لِلنَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَأَمَّا الْمَعْرُوفُ فَيُبَشِّرُ أَصْحَابَهُ وَيُوعِدُهُمُ الْخَيْرَ وَأَمَّا الْمُنْكَرُ فَيَقُولُ: إِلَيْكُمْ إِلَيْكُمْ وَمَا يَسْتَطِيعُونَ لَهُ إِلَّا لُزُومًا «. رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالْبَيْهَقِيّ فِي» شعب الإِيمان
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৭৩-[১৯] জাবির (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সা.) -এর নিকট এমন এক ব্যক্তির আলোচনা করা হলো, যে আল্লাহর ইবাদাত-বন্দেগীতে খুব চেষ্টা করে (কিন্তু গুনাহ হতে বেঁচে থাকার প্রতি তেমন লক্ষ্য রাখে না) এবং এমন আরেক ব্যক্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো (যে ইবাদত-বন্দেগী কম করে) কিন্তু সে পরহেজগারী অবলম্বন করে (গুনাহ হতে বেঁচে চলে), তখন নাবী (সা.) বলেন, তা (ইবাদত করা এবং ’ইবাদতে সচেষ্ট থাকা) পরহেজগারীর সমতুল্য হতে পারবে না। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ
وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: ذُكِرَ رَجُلٌ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعِبَادَةٍ وَاجْتِهَادٍ وَذُكِرَ آخَرُ بِرِعَّةٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا تَعْدِلْ بِالرِّعَّةِ» . يَعْنِي الْوَرَعَ. رَوَاهُ الترمذيُّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2519 وقال : غریب) * محمد بن عبد الرحمن بن نبیہ : مجھول الحال ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : (لَا تَعْدِلْ بِالرِّعَّةِ) অর্থাৎ ‘ইবাদাতকে পরহেজগারিতা দিয়ে মাপা যায় না। (الرِعَّةِ) মূলত (الورع) ছিল। এর অর্থ হলো, হারাম কার্যকলাপ থেকে বেঁচে থাকা।
হাদীসের মূল অর্থ হলো, একজন লোক অনেক ‘ইবাদত করে কিন্তু হারাম থেকে বেঁচে থাকার পরহেজগারিতা কম। পক্ষান্তরে আরেকজন লোক ‘ইবাদত-বন্দেগী কম করলেও হারাম কার্যকলাপ সম্পর্কে খুবই পরহেজগারী। এ দুই ব্যক্তির মধ্যে কে উত্তম? এটা নাবী (সা.) এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বললেন, ‘ইবাদাতকে পরহেজগারিতার সাথে মিলিও না। অর্থাৎ মুত্তাক্বী লোকেদের ‘ইবাদত এমনিতে বেশি হয়। পরিমাণে এবং মর্যাদায় উভয় স্তরে সমান থাকে।
রাগিব (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, শারী'আতের পরিভাষায় (وَرَعَ) বলা হয় দুনিয়ার সহায়-সম্পদ অর্জনের জন্য তাড়াহুড়া বর্জন করা। অর্থাৎ দুনিয়ার জন্য ব্যতিব্যস্ত না হওয়াকে (وَرَعَ) তথা পরহেজগারিতা বলা হয়। এটা তিন প্রকার- (১) ওয়াজিব : সমস্ত হারাম কাজ হতে বিরত থাকা। এটা সকলের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। (২) মানদূব : সন্দেহজনক জিনিস হতে বিরত থাকা। অর্থাৎ কোন কাজ ইসলামী শারী'আতে জায়িয নাকি হারাম তা অস্পষ্ট হলে সে কাজ হতে বিরত থাকা। এটা তা মধ্যম পর্যায়ের লোকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। (৩) ফযীলত বা মর্যাদাপূর্ণ কাজ : অনেক বৈধ কাজ হতে বিরত থাকা এবং সর্বনিম্ন প্রয়োজনীয়তার মধ্যে স্বীমাবদ্ধ থাকা। আর এটা নবী, শহীদ, সিদ্দীক ও সালিহীনদের জন্য প্রযোজ্য। (মিক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৭৫-[২১] আবু হুরায়রাহ্ (রা.) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন, তিনি (সা.) বলেছেন: তোমাদের অনেকে কেবল এমন সচ্ছল হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে যা পাপাচারে লিপ্ত করবে অথবা এমন দরিদ্রতার যা আল্লাহকে ভুলিয়ে দেবে। অথবা এমন ব্যাধির যা ধ্বংসকারী হবে। অথবা এমন বার্ধক্যের যা বিবেকশূন্য করে ফেলবে অথবা মৃত্যুর যা অতর্কিতে আগমন করবে অথবা দাজ্জালের; আর দাজ্জাল তো সবচাইতে অদৃশ্য বিষয়ের মধ্যে সর্বাপেক্ষা মন্দ অথবা কিয়ামতের, অথচ কিয়ামত হলো অত্যন্ত কঠিন ও তিতার ন্যায়। (তিরমিযী ও নাসায়ী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا يَنْتَظِرُ أَحَدُكُمْ إِلَّا غِنًى مُطْغِيًا أَوْ فَقْرًا مُنْسِيًا أَوْ مَرَضًا مُفْسِدًا أَوْ هَرَمًا مُفَنِّدًا أَوْ مَوْتًا مُجْهِزًا أَوِ الدَّجَّالَ فَالدَّجَّالُ شَرٌّ غَائِبٌ يُنْتَظَرُ أَوِ السَّاعَةَ وَالسَّاعَةُ أَدْهَى وَأَمَرُّ» رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَالنَّسَائِيّ
اسنادہ ضعیف جذا ، رواہ الترمذی (2306 وقال : غریب حسن) و النسائی (لم اجدہ) * محرز بن ھارون : متروک ضعفہ الجمھور ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : (قاَلَباَدِرُواباِلْأَعُمالِسَبْعً) অর্থাৎ বিভিন্ন প্রকার ফিতনায় জর্জরিত হওয়ার আগেই বেশি বেশি সৎ ‘আমাল করতে হোক। বিশেষ করে উল্লেখিত সাতটি ফিতনাহ্ (বিপদ) দেখা দেয়ার আগেই। কারণ এগুলোর কোন একটি যখন আক্রমণ করে ফেলবে তখন সৎ ‘আমাল করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে।
(مُنْسِ) শব্দটি আরবী ব্যাকরণে(باب الإفعل) অথবা (التفعيل) থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। এর অর্থ হলো, এমন দারিদ্রতা যা কোন ব্যক্তিকে অস্থির করে ফেলে। ফলে সে অভাব আর ক্ষুধার তাড়নায় ‘ইবাদত বন্দেগীর কথা ভুলে যায়।
(مَوْتًا مُجْهِزًا) দ্রুত আগমনকারী মৃত্যু। অর্থাৎ হঠাৎ মৃত্যু যা অসুস্থতা অথবা বৃদ্ধ হবার কারণে ঘটে । বরং হত্যা, পানিতে ডুবে মৃত্যু অথবা ধ্বংস স্তুপের নীচে পরে মৃত্যু ইত্যাদি যা মানুষের ধারণার বাহিরে রয়েছে।
(وَالسَّاعَةُ أَدْهَى وَأَمَرُّ) কিয়ামত অধিক আতঙ্ক, কঠিন ও তিক্তের। অর্থাৎ যে ব্যক্তি কিয়ামত সম্পর্কে গাফেল এবং সেজন্য কোন প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ না করে অলস জীবন কাটায় কিয়ামত তার জন্য সর্বাধিক আতঙ্ক ও তিক্তের বস্তু। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খণ্ড, হা. ২৩০৬, মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮০-[২৬] আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) নাবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন, দীনারের দাসকে ও দিরহামের দাসকে অভিসম্পাত করা হয়েছে। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «لُعِنَ عَبْدُ الدِّينَارِ وَلُعِنَ عَبْدُ الدِّرْهَمِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2375 وقال : حسن غریب) * یونس بن عبید و شیخہ الحسن البصری مدلسان و عنعنا و صح الحدیث بلفظ :’’ تعس عبد الدینار و الدرھم ‘‘ (رواہ البخاری : 886 وغیرہ) ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : (لُعِنَ عَبْدُ الدِّينَارِ) অর্থাৎ এ ব্যক্তি রহমত ও অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হোক, যে ব্যক্তি স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা (অর্থাৎ টাকা পয়সা) পুঞ্জিভূত করতে চরম আগ্রহী এবং অঢেল সম্পদের মালিক হিসেবে বেঁচে থাকার আশায় গুণে গুণে সম্পদ হিফাযাত করে রাখে। এ ধরনের ব্যক্তিরা যেন অর্থ সম্পদের খাদেম ও গোলাম, এজন্য (عَبْدُ) শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।
ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, সম্পদ পুঞ্জিভূতকারীকে দীনার ও দিরহামের গোলাম বলে উল্লেখ করা হয়েছে তার মালিক বলা হয়নি, কারণ সে সম্পদের মুহাব্বাতে এতটাই মোহগ্রস্ত যে, সে তা হতে কক্ষনো মুক্ত হতে পারে না। যেমন গোলাম তার মুনীবমুক্ত হতে পারে না। আর সম্পদের মধ্য হতে দীনার ও দিরহাম উল্লেখ করার কারণ হলো তা দুনিয়ার সম্পদের মূল। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খণ্ড, হা. ২৩৭৫)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮৩-[২৯] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : (কোন ব্যক্তির জীবনধারণের) প্রত্যেকটি খরচ আল্লাহ তা’আলার রাস্তায় খরচ করার মধ্যে গণ্য- কেবল ঘর-বাড়ি ব্যতীত। কেননা তাতে কোন উপকার নেই। [ইমাম তিরমিযী (রহিমাহুল্লাহ) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন : হাদীসটি গরীব]
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «النَّفَقَةُ كُلُّهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ إِلَّا الْبِنَاءَ فَلَا خَيْرَ فِيهِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2482) * زافر : صدوق ضعیف الحدیث ضعفہ الجمھور من کثرۃ اوھامہ کما حققتہ فی التعلیق علی تھذیب التھذیب ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: (إِلَّا الْبِنَاءَ) এখানে প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থাৎ অপচয় করার কারণে কোন সওয়াব নেই।
(মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮৬-[৩২] ’উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী (সা.) বলেছেন: আদম সন্তানের জন্য বসবাসের একখানা ঘর, লজ্জাস্থান ঢাকার একখানা কাপড়, একখণ্ড শুকনা রুটি ও কিছু পানি ব্যতীত আর কিছুই রাখার হাক্ব বা অধিকার নেই। (তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ
وَعَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَيْسَ لِابْنِ آدَمَ حَقٌّ فِي سِوَى هَذِهِ الْخِصَالِ: بَيْتٌ يَسْكُنُهُ وَثَوْبٌ يُوَارِي بِهِ عَوْرَتَهُ وجلف الْخبز وَالْمَاء . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
اسنادہ حسن ، رواہ الترمذی (2341 وقال : صحیح) ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : ‘আল্লামাহ্ কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেন : (الحَقٌّ) শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, মানুষ প্রয়োজনের কারণে যার প্রতি মুখাপেক্ষী হয় এবং তা দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করে। এটাই হলো (المال) শব্দের প্রকৃত উদ্দেশ্য। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৬ষ্ঠ খণ্ড, হা. ২৩৪১; মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৮৯-[৩৫] আবু উমামাহ্ (রাঃ) নবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: আমার বন্ধুদের মধ্যে সে মু’মিনই আমার নিকট ঈর্ষার পাত্র, যে ইহকাল ঝামেলামুক্ত, সালাতের ব্যাপারে আন্তরিক, আল্লাহর ’ইবাদত ভালোভাবে আদায় করে এবং গোপনীয় অবস্থায় আল্লাহর আনুগত্যে থাকে। মানুষের কাছে অপরিচিত- তার প্রতি অঙ্গুলি দ্বারা ইঙ্গিত করা হয় না, তার রিযক প্রয়োজন পরিমাণ হয় এবং তাতেই সে তুষ্ট থাকে। এ কথাগুলো বলে নবী (সা.) নিজের হাতের অঙ্গুলির মধ্যে চুটকি মেরে বললেন: এ অবস্থায় হঠাৎ একদিন তাকে মৃত্যু গ্রাস করে। তার জন্য ক্রন্দনকারিণীও কম হয় এবং মীরাসের সম্পদও স্বল্প ছেড়ে যায়। (আহমাদ, তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ
وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَغْبَطُ أَوْلِيَائِي عِنْدِي لَمُؤْمِنٌ خَفِيفُ الْحَاذِ ذُو حَظٍّ مِنَ الصَّلَاةِ أَحْسَنَ عِبَادَةَ رَبِّهِ وَأَطَاعَهُ فِي السِّرِّ وَكَانَ غَامِضًا فِي النَّاسِ لَا يُشَارُ إِلَيْهِ بِالْأَصَابِعِ وَكَانَ رِزْقُهُ كَفَافًا فَصَبَرَ عَلَى ذَلِكَ» ثُمَّ نَقَدَ بِيَدِهِ فَقَالَ: «عُجِّلَتْ مَنِيَّتُهُ قَلَّتْ بَوَاكِيهِ قَلَّ تُراثُه» . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه
اسنادہ ضعیف ، رواہ احمد (5 / 252 ح 22520) و الترمذی (2347) [و ابن ماجہ (4117) بسند آخر فیہ صدقۃ بن عبداللہ و ایوب بن سلیمان ضعیفان)] * علی بن یزید : ضعیف جدًا و عبید اللہ بن زحر : ضعیف ، و للحدیث طرق کلھا ضعیفۃ کما حققتہ فی تخریج مسند الحمیدی (911) و النھایۃ (30) ۔
(ضَعِيفٌ)
ব্যাখ্যা : (أَغْبَطُ أَوْلِيَائِي عِنْدِي لَمُؤْمِنٌ) আমার নিকটে অধিক ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য ও আমার সাহায্যকারী যার প্রতি ঈর্ষা করা যায় এবং যার অবস্থায় কামনা করা যায় সে এমন মু'মিন যার মধ্যে। পরবর্তীতে বর্ণিত গুণাবলি রয়েছে। অর্থাৎ অত্র হাদীসে বর্ণিত গুণাবলিসম্পন্ন মু'মিন ব্যক্তিই আমার নিকট অধিক প্রিয়।।
(عُجِّلَتْ مَنِيَّتُهُ) তার মৃত্যু দ্রুত সম্পন্ন হয়। অর্থাৎ হাদীসে বর্ণিত গুণাবলি যার মধ্যে আছে সে তার সুন্দর অবস্থার জন্য নিজেই তাজ্জব বনে যাবে। আর তার মৃত্যু হবে সহজে। দুনিয়ার সাথে তার সম্পর্কের বেরিয়ে যাবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)।
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৯০-[৩৬] উক্ত রাবী [আবূ উমামাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : আমার রব্ মক্কার বাতহা’ (প্রশস্ত উপত্যকা) আমার জন্য স্বর্ণে পরিণত করে দেয়ার বিষয় আমার নিকট পেশ করলেন, তখন আমি বললাম : না, হে আমার প্রভু! বরং আমি একদিন পরিতৃপ্ত এবং আরেক দিন ক্ষুধার্ত থাকতে চাই। অতএব আমি যখন অভুক্ত থাকব তখন তোমার কাছে সকাতরে বিনয় প্রকাশ করব এবং তোমাকে স্মরণ করব। আর যখন পরিতৃপ্ত হব তখন তোমার গুণকীর্তন করব এবং তোমার শোকর আদায় করব। (আহমাদ ও তিরমিযী)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عَرَضَ عَلَيَّ رَبِّي لِيَجْعَلَ لِي يطحاء مَكَّة ذَهَبا فَقلت: لَا يارب وَلَكِنْ أَشْبَعُ يَوْمًا وَأَجُوعُ يَوْمًا فَإِذَا جُعْتُ تَضَرَّعْتُ إِلَيْكَ وَذَكَرْتُكَ وَإِذَا شَبِعَتُ حَمِدْتُكَ وَشَكَرْتُكَ . رَوَاهُ أَحْمد وَالتِّرْمِذِيّ
اسنادہ ضعیف جذا ، رواہ احمد (5 / 254 ح 22543) و الترمذی (2347) * علی بن یزید ضعیف جدًا و عبید اللہ بن زحر ضعیف ، انظر الحدیث السابق (5189) ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : (فَإِذَا جُعْتُ تَضَرَّعْتُ إِلَيْكَ وَذَكَرْتُكَ وَإِذَا شَبِعَتُ حَمِدْتُكَ وَشَكَرْتُكَ) উক্ত হাদীসাংশের ব্যাখ্যায় ‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন : এখানে রাসূলুল্লাহ (সা.) ধৈর্য এবং কৃতজ্ঞতার মাঝে সমন্বয় সাধন করেছেন। কারণ এ দুটি হলো একজন মুমিনের পরিপূর্ণ গুণাবলির অন্তর্ভুক্ত। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৯৫-[৪১] আনাস (রাঃ) নাবী (সা.) হতে বর্ণনা করেন। তিনি (সা.) বলেছেন: কিয়ামতের দিন আদম সন্তানকে এমন অবস্থায় আনা হবে যেন সে একটি অসহায় বকরীর বাচ্চা। অতঃপর তাকে আল্লাহ তা’আলার সামনে দাঁড় করানো হবে। তখন আল্লাহ তা’আলা তাকে জিজ্ঞেস করবেন, আমি তোমাকে (হায়াত ও স্বাস্থ্য) দান করেছিলাম, (দাস-দাসী, ধন-দৌলতের) মালিক বানিয়েছিলাম এবং আমি তোমাকে (দীনে হকের) নি’আমাত দান করেছিলাম, আমার সে সমস্ত নিয়ামতকে কি কাজে খরচ করেছ? সে বলবে, হে আমার রব! আমি তাকে জমা করেছি, (ব্যবসা করে) তাতে বাড়িয়েছি এবং (অবশেষে) প্রথমে যা ছিল তদপেক্ষা অধিক পরিমাণে ছেড়ে এসেছি। অতএব আমাকে আবার (দুনিয়াতে) ফিরিয়ে দিন, আমি উক্ত সমুদয় সম্পদ আপনার নিকট নিয়ে আসব। আল্লাহ তাআলা তাকে বলবেন, যা কিছু তুমি আগে পাঠিয়েছ তা আমাকে দেখাও। উত্তরে সে (পূর্বের ন্যায়) আবার বলবে, হে আমার রব! আমি তা জমা করেছি, তাতে বৃদ্ধি করেছি এবং পূর্বে যা ছিল তা হতে অধিক ছেড়ে এসেছি। অতএব আমাকে পুনরায় দুনিয়াতে পাঠিয়ে দিন। আমি সমুদয় সম্পদ নিয়ে আপনার নিকট আসব। তখন প্রকাশ পাবে যে, সে এমন এক বান্দা, যে পরকালের জন্য কোন নেক আমল প্রেরণ করেনি। অতএব তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। (তিরমিযী; তিনি বলেছেন : হাদীসটি যঈফ)
اَلْفصْلُ الثَّنِفْ
وَعَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: يُجَاءُ بِابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَأَنَّهُ بَذَجٌ فَيُوقَفُ بَيْنَ يَدَيِ اللَّهِ فَيَقُولُ لَهُ: أَعْطَيْتُكَ وَخَوَّلْتُكَ وَأَنْعَمْتُ عَلَيْكَ فَمَا صَنَعْتَ؟ فَيَقُولُ: يَا رَبِّ جَمَعْتُهُ وَثَمَّرْتُهُ وَتَرَكْتُهُ أَكْثَرَ مَا كَانَ فَارْجِعْنِي آتِكَ بِهِ كُلِّهِ. فَيَقُولُ لَهُ: أَرِنِي مَا قَدَّمْتَ. فَيَقُولُ: رَبِّ جَمَعْتُهُ وَثَمَّرْتُهُ وَتَرَكْتُهُ أَكثر ماكان فَارْجِعْنِي آتِكَ بِهِ كُلِّهِ. فَإِذَا عَبْدٌ لَمْ يُقَدِّمْ خَيْرًا فَيُمْضَى بِهِ إِلَى النَّارِ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَضَعفه
اسنادہ ضعیف ، رواہ الترمذی (2427) * اسماعیل بن مسلم : ضعیف الحدیث و للحدیث شاھد ضعیف ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : (فَيَقُولُ لَهُ) তাকে বলবেন : এখানে (قايل) অর্থাৎ বক্তা মালাক (ফেরেশতা)-ও হতে পারেন অথবা আল্লাহ তা'আলা স্বয়ংও হতে পারেন।
(أَعْطَيْتُكَ وَخَوَّلْتُكَ) ‘আমি তোমাকে দান করেছি ও নি'আমাতের অধিকারী করেছি', অর্থাৎ আমি তোমাকে জীবন, অনুভূতি শক্তি, সুস্থতা দান করেছি। (خَوَّلْتُكَ) খাওয়ালের মালিক বানিয়েছি। খাদেম, পরিবার-পরিজন, সম্পদ ও প্রতিপত্তি ইত্যাদিকে ‘আরবীতে (خَوَّلْ) বলা হয়। আমি তোমাকে এ সমস্ত জিনিস দান করেছি। (فَمَا صَنَعْتَ) তুমি কি করেছ? অর্থাৎ তোমাকে যে এত এত নিআমাত দান করেছি বিনিময়ে তুমি কি করেছ?
(فَارْجِعْنِي آتِكَ بِهِ كُلِّهِ) “আমাকে আবার দুনিয়ায় পাঠিয়ে দিন আমি সবকিছু নিয়ে আসব।
অর্থাৎ আপনি যদি আমাকে পুনরায় দুনিয়াতে পাঠান তাহলে আমি এসব সম্পদ আপনার পথে দান করে আসব।
(أَرِنِي مَا قَدَّمْتَ) “তুমি কি প্রেরণ করেছ আমাকে দেখাও” অর্থাৎ পরকালের জন্য কি ভালো কাজ করেছ তা আমাকে দেখাও।
(فَإِذَا عَبْدٌ لَمْ يُقَدِّمْ خَيْرًا) তখন দেখা যাবে যে, সে এমন এক বান্দা যে কোন ভালো কাজই করেনি। অর্থাৎ তাকে যে নি'আমাত দান করা হয়েছিল তা দ্বারা সে কোন ভালো কাজ সম্পাদন করেনি। তাকে যে আদেশ করা হয়েছিল তা সে পালন করেনি এবং যে ওয়াজ-নসীহত করা হয়েছিল সে নাসীহাতও গ্রহণ করেনি।
(فَيُمْضَى بِهِ إِلَى النَّا) “অতঃপর তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন : এ লোকটি সম্পর্কে যা বলা হলো তাতে এটা বুঝা যায়, সে এমন একজন গোলামের ন্যায় যার মালিক তাকে কিছু মূলধন দিয়ে ব্যবসা করতে বলে এবং তা দ্বারা লাভবান হতে বলে এবং এজন্য তাকে কিছু দিক-নির্দেশনা দেয়। কিন্তু সে গোলাম মালিকের দিক-নির্দেশনা অমান্য করে মূলধন নষ্ট করে ফেলে যার ফলে সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫১৯৯-[৪৫] উক্ত রাবী (আবূ যার [রাঃ]) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যে বান্দা দুনিয়ার সম্পদ হতে বিমুখ থাকে আল্লাহ তা’আলা তার হৃদয়ে সূক্ষ্ম জ্ঞান সৃষ্টি করেন এবং আল্লাহ তার জিহ্বা দ্বারা তা প্রকাশ করান। দুনিয়ার দোষ-ত্রুটি, তার রোগ ও প্রতিষেধক তাকে দেখিয়ে দেন এবং তাকে দুনিয়া হতে নিরাপদে বের করে দারুস্ সালামে (জান্নাতে) প্রবেশ করান। (বায়হাক্বী’র শুআবুল ঈমান)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا زَهِدَ عَبْدُ فِي الدُّنْيَا إِلَّا أَنْبَتَ اللَّهُ الْحِكْمَةَ فِي قَلْبِهِ وَأَنْطَقَ لِسَانَهُ وَبَصَّرَهُ عَيْبَ الدُّنْيَا وَدَاءَهَا وَدَوَاءَهَا وَأَخْرَجَهُ مِنْهَا سَالِمًا إِلَى دَارِ السَّلَامِ» رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي «شعب الْإِيمَان»
اسنادہ ضعیف جذا ، رواہ البیھقی فی شعب الایمان (10532 ، نسخۃ محققۃ : 10050) * فیہ عمر بن صبح : متروک متھم و بشیر بن زاذان : ضعیف جدًا ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : প্রয়োজনের অতিরিক্ত দুনিয়ার সহায়-সম্পদ থেকে বিমুখ অনাসক্ত হওয়াই (زهد فىِ الدُّ نْيَا) বা দুনিয়া বিরাগী। একদল রয়েছে যারা বিয়ে-শাদী, সংসার কিছুই করে না, তাদের সন্ন্যাসী বৈরাগী বলা হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, (لارهبنية فى الاسلام) ইসলামে বৈরাগ্যতা নেই।
ইসলামের যাবতীয় বিধি-বিধান অনুসরণ করে, সংসার জীবনের মধ্যে থেকে দুনিয়ার লোভ-লালসা ত্যাগ করে জীবন নির্বাহের ন্যূনতম বস্তুতে সন্তুষ্ট থেকে আল্লাহর ইবাদতে নিয়োজিত থাকে, আল্লাহ তা'আলা তার অন্তরে হিকমাত বা সূক্ষ্মজ্ঞান সৃষ্টি করে দেন। সেই জ্ঞান দ্বারা তিনি নিজের যথাযথ চলার পথ দেখে থাকেন এবং আল্লাহর মারিফাত অর্জন করে কথা বলে থাকেন, ফলে তার কথা হিকমাতপূর্ণ হয়। অতঃপর সে হয় দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। ফলে দুনিয়ার দোষ-ত্রুটি আল্লাহ তা'আলা তাকে দেখিয়ে দেন, আর দুনিয়ার রোগ-ব্যাধি এবং তার প্রতিকারও তাকে অবলোকন করিয়ে দেন।
‘আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এটা দ্বিতীয় স্তরের তাক্বওয়ার প্রতি ইশারা, অর্থাৎ দুনিয়া বিরাগীর মাধ্যমে যখন ‘ইলমে ইয়াক্বীন হয় এবং দুনিয়ার ত্রুটিসমূহ তার সামনে উদ্ভাসিত হয়ে যায় আল্লাহ তাআলা তখন তাকে এক দূরদৃষ্টির ওয়ারিস বানিয়ে দেন, ফলে সে তা দ্বারা হার্কে ইয়াক্বীন অর্জন করতে সক্ষম হয়।
দুনিয়ার রোগ হলো- দুনিয়াপ্রীতি এবং তা অর্জনের সীমাহীন আকাঙ্ক্ষা ও প্রচেষ্টা।
আর ইলম ও ‘আমলের উপায় দ্বারা হয় তার প্রতিবিধান ও চিকিৎসা। বিপদে ধৈর্যধারণ, অল্পে তুষ্ট থাকা এবং আল্লাহ যা নির্ধারণ করে রেখেছেন তাতে তুষ্ট থাকাও দুনিয়াপ্রীতি রোগের প্রতিকার হতে পারে।
অতঃপর আল্লাহ তা'আলা তাকে দুনিয়ার ফিতনাহ্ ও বালা-মুসীবাত থেকে সম্মানের সাথে পরকালের শুভ পরিণতির দিকে নিয়ে যায়। হাদীসে (دَارِ السَّلَامِ) শব্দ ব্যবহার করে এদিকে ইশারা করা হয়েছে যে, যিনি দুনিয়াতে (زهد) ইখতিয়ার করবেন না তিনি দুনিয়ার ত্রুটি এবং তার রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে অবহিত হতে পারবেন না। ফলে সে প্রথম পর্যায়েই নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, বরং শাস্তি বা ‘আযাব ভোগের পর জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ, শাবুহু মিশকাত্ লিত্ব ত্বীবী আল কাশিফু আন হাকায়িকিস্ সুনান ১০ম খণ্ড, ৩২৯৬ পৃ.)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২০০-[৪৬] উক্ত রাবী (আবু যার [রাঃ]) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: নিঃসন্দেহে সে কামিয়াব হয়েছে আল্লাহ তা’আলা যার হৃদয়কে ঈমানের জন্য খালেস করে দিয়েছেন এবং আল্লাহ তা’আলা তার হৃদয়কে (হিংসা ও মুনাফিক্বী হতে) নিবৃত্ত, রসনাকে সত্যভাষী, নাফসকে স্থিতিশীল ও স্বভাবকে সঠিক করেছেন, আর তার কানকে বানিয়েছেন (সত্য কথা) শ্রবণকারী ও চক্ষুকে করেছেন (সত্য প্রমাণাদির প্রতি) দৃষ্টিদানকারী। মূলত হৃদয় যা সংরক্ষণ করে তার জন্য কান হলো চুঙ্গির ন্যায় এবং চক্ষু হলো স্থাপনকারী। আর অবশ্যই ঐ ব্যক্তি কামিয়াব হয়েছে, যে তার হৃদয়কে সংরক্ষক বানায়। (আহমাদ ও বায়হাকী’র শুআবুল ঈমান)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «قَدْ أَفْلَحَ مَنْ أَخْلَصَ اللَّهُ قلبَه للإِيمان وجعلَ قلبَه سليما ولسانَه صَادِقا وَنَفْسَهُ مُطْمَئِنَّةً وَخَلِيقَتَهُ مُسْتَقِيمَةً وَجَعَلَ أُذُنَهُ مُسْتَمِعَةً وَعَيْنَهُ نَاظِرَةً فَأَمَّا الْأُذُنُ فَقَمِعٌ وَأَمَّا الْعَيْنُ فَمُقِرَّةٌ لِمَا يُوعَى الْقَلْبُ وَقَدْ أَفْلَحَ مَنْ جَعَلَ قَلْبَهُ وَاعِيًا» رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي «شعب الْإِيمَان»
اسنادہ ضعیف ، رواہ احمد (5 / 147 ح 21635) و البیھقی فی شعب الایمان (108 ، نسخۃ محققۃ : 107) * خالد بن معدان عن ابی ذر رضی اللہ عنہ : منقطع ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা: রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর বাণী, “আল্লাহ যার হৃদয়কে ঈমানের জন্য খালেস করে দিয়েছেন”, এর অর্থ হলো তার অন্তরকে ঈমানের জন্য এভাবে খালেস বা নিখাদ করে দেন যে, অন্তরে অন্য কিছুই স্থান পায় না, কেবল আল্লাহ ও তার রাসূলের ভালোবাসা ও আনুগত্যই স্থান পায়।
“আল্লাহ তার অন্তরকে নিরাপদ বানিয়ে দেন” এর অর্থ হলো অন্তরকে সকল প্রকার হিংসা-বিদ্বেষ, ঈর্ষা এবং নিন্দনীয় চারিত্রিক গুণাবলি ও দুনিয়াপ্রীতিজনিত কারণে আল্লাহকে ভুলে যাওয়া থেকে নিরাপদে রাখেন। আল্লাহ তা'আলা বলেন, (یَوۡمَ لَا یَنۡفَعُ مَالٌ وَّ لَا بَنُوۡنَ اِلَّا مَنۡ اَتَی اللّٰهَ بِقَلۡبٍ سَلِیۡمٍ) “সেদিন সম্পদ এবং সন্তান-সন্ততি কোন উপকারে আসবে না, তবে যে ক্বলবে সালীম নিয়ে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হবে।”
(সূরাহ্ আশ শুআরা- ২৬: ৮৮-৮৯) আল্লাহ তাআলা তার জিহ্বাকে কথা, ওয়াদা-প্রতিশ্রুতি ইত্যাদিতে সত্যবাদী বানিয়ে দেন এবং অন্তরকে আল্লাহর যিক্র ও তার মুহাব্বাতে স্থিতিশীল ও প্রশান্ত করে দেন। আল্লাহ তার সৃষ্টিগত স্বভাব ও প্রবৃত্তিকে সীমাহীন বাড়াবাড়ি অথবা সম্পূর্ণ দায়িত্বহীনতার মাঝেও সঠিক পথে পরিচালিত করেন। আর তার জিহ্বা, কান ও দৃষ্টিশক্তিকে হাক্ব কথা বলা, শ্রবণ করা ও তা সংরক্ষণ করার সক্ষমতা দান করেন। অতঃপর মৃত্যু পর্যন্ত আল্লাহ তা'আলা তার অন্তরকে এগুলো সংরক্ষণের ক্ষমতা দান করে থাকেন, আর এই ব্যক্তিই প্রকৃত সফলকাম।
(মিক্বাতুল মাফাতীহ, আস্ সীরাজুম মুনীর শারূহু জামিউস্ সগীর ৩য় খণ্ড, ফায়জুল ক্বদীর ৪র্থ খণ্ড, ৫০৮ পৃ.)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২০৫-[৫১] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: তোমাদের কেউ পা না ভিজিয়ে পানিতে চলতে পারে কি? তারা বললেন: না (এটা কখনো সম্ভব নয়) হে আল্লাহর রসূল! তখন তিনি (সা.) বললেন: অনুরূপভাবে দুনিয়াদারের অবস্থাও তাই, সে গুনাহ হতে নিরাপদে থাকতে পারে না। (হাদীস দু’টি ঈমাম বায়হাক্বী “শুআবুল ঈমানে” বর্ণনা করেছেন)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَلْ مِنْ أَحَدٍ يَمْشِي عَلَى الْمَاءِ إِلَّا ابْتَلَّتْ قَدَمَاهُ؟» قَالُوا: لَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ: «كَذَلِكَ صَاحِبُ الدُّنْيَا لَا يسلمُ منَ الذُّنُوب» . رَوَاهُمَا الْبَيْهَقِيّ فِي «شعب الْإِيمَان»
اسنادہ ضعیف ، رواہ البیھقی فی شعب الایمان (10457 ، نسخۃ محققۃ : 9973) * خضر بن ابان الھاشمی و ھلال بن محمد العجلی ضعیفان و فی السند علل أخری ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : হাদীসের অর্থ স্পষ্ট, পানিতে চললে পা যেমন ভিজবেই তেমনি দুনিয়া হাসিল করতে গেলে পাপে পতিত হবেই। আল্লামাহ্ ত্বীবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন : এখানে মুত্তাকীদের দুনিয়ার মুহাব্বাতে জড়িয়ে পড়া থেকে ভীতিপ্রদর্শন এবং যুহদ ফি দুনিয়াকে জোরদার করার জন্য এ দৃষ্টান্ত দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও আখিরাতকে দুনিয়ার উপর অগ্রাধিকার দেয়া এবং দারিদ্রতার কষ্টকে ধৈর্যের সাথে বরণ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কেননা গরীব ফকীরগণ ধনীদের পাঁচশত বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আল্লাহ তা'আলা স্বীয় অনুগ্রহে দুনিয়াপ্রীতির পাপ থেকে আমাদের ক্ষমা করুন। (মিক্বাতুল মাফাতীহ, ফায়জুল ক্বদীর ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৩৫৪ পৃ.)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২০৭-[৫৩] আবু হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যে ব্যক্তি ভিক্ষাবৃত্তি হতে বেঁচে থাকার জন্য, পরিবারের খরচ নির্বাহের উদ্দেশে এবং প্রতিবেশীর প্রতি সদাচরণের লক্ষ্যে হালাল উপায়ে দুনিয়ার বৈধ-সম্পদ অন্বেষণ করে সে আল্লাহ তাআলার সাথে কিয়ামতের দিন এমনভাবে মিলিত হবে যে, তার চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল থাকবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি বৈধ উপায়ে মাল অর্জন করল বটে; কিন্তু গর্ব অহংকার ও সম্পদের আধিক্য প্রকাশের নিয়্যাতে, সে আল্লাহ তা’আলার সাথে এমন অবস্থায় মিলিত হবে যে, তিনি তার ওপর ভীষণভাবে ক্রোধান্বিত হবেন। (বায়হাক্বী’র শুআবুল ঈমান এবং আবু নুআয়ম তাঁর “হিলইয়াহ্” গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ طَلَبَ الدُّنْيَا حَلَالًا اسْتِعْفَافًا عَنِ الْمَسْأَلَةِ وَسَعْيًا عَلَى أَهْلِهِ وَتَعَطُّفًا عَلَى جَارِهِ لَقِيَ اللَّهَ تَعَالَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَوَجْهُهُ مِثْلُ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ. وَمَنْ طَلَبَ الدُّنْيَا حَلَالًا مُكَاثِرًا مفاخرا مرائيا لَقِي الله وَهُوَ عَلَيْهِ غَضْبَانُ» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَانِ» وَأَبُو نُعَيْمٍ فِي «الْحِلْية»
اسنادہ ضعیف ، رواہ البیھقی فی شعب الایمان (10374 ۔ 10375 ، نسخۃ محققۃ : 9889 ۔ 9890) و ابو نعیم فی حلیۃ الاولیاء (8 / 215) [و عبد بن حمید فی المنتخب من السند (1433)] * مکحول لم یسمع من ابی ھریرۃ رضی اللہ عنہ و فی السند الآخر رجل (مجھول) و فی السندین علل أخری ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : হালাল উপার্জন মানে হালাল পথে উপার্জন। আর যে মানুষের কাছে কোন কিছু চাওয়া বা যাঞ্ছা থেকে নিজকে বাঁচিয়ে রাখে। নিহায়াহ্ গ্রন্থে(الاِسْتِعَفَافُ) শব্দের ব্যাখ্যা করা হয়েছে, (الاِسْتِعَفَافُ طَلَبُ الْعفَافِ) অর্থাৎ, ইস্তিফাফ হলো (طَلَبُ الْعفَافِ) বা পবিত্রতা চাওয়া, সংযমতা অবলম্বন করা।(الْعفَافُ) এর অর্থ হলো (وَهُوَالْكفُّ عِنِ الْحَرَامِ وَالسُّؤَالِ مِنَ النَّاسِ) হারাম থেকে বেঁচে থাকা এবং মানুষের কাছে যাচনা থেকে বিরত থাকা। নিজের পরিবারের খরচ নির্বাহের জন্য খরচের পর অতিরিক্ত অর্থ দ্বারা প্রতিবেশীদের ওপর ইহসান বা দয়া করা প্রকৃত মুমিনের অন্যতম গুণ।
এসব গুণাবলি অর্জনকারীদের জন্য অতীব সুসংবাদ এই যে, কিয়ামতের দিন তারা এমন অবস্থায় মিলিত হবে যে, অতি খুশি ও আনন্দে তাদের চেহারাগুলো পূর্ণিমা চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি দুনিয়ার সম্পদ হালাল পথেই অর্জন করল বটে, (অর্থাৎ হারাম পথ অবলম্বন করল না) কিন্তু সে সম্পদের আধিক্যতা নিয়ে অভাবী গরীবদের ওপর গর্ব অহংকার এবং দান-সদাক্বার দ্বারা লোক দেখানোর নিয়্যাত করল এ ব্যক্তি আল্লাহ তা'আলার সাথে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় মিলিত হবে যে, তিনি তার ওপর ভীষণ রাগান্বিত হবেন। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, শারহুল মিশকাতু লিত্ব ত্বীবী, বাহরুল ফাওয়ায়িদ হা. ২৮৪)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২০৯-[৫৫] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যখন কোন ব্যক্তির ধন-সম্পদে বারাকাত দান করা না হয়, তখন সে তাকে পানি ও মাটিতে ব্যয় করে।
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا لَمْ يُبَارَكْ لِلْعَبْدِ فِي مَالِهِ جَعَلَهُ فِي المَاء والطين»
اسنادہ ضعیف جذا ، رواہ البیھقی فی شعب الایمان (10719 ، نسخۃ محققۃ : 10234) * فیہ عبد الاعلی بن ابی المساور (متروک) عن خالد الاحول عن علی الخ و فی السند علۃ أخری ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : যখন কোন বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সম্পদ ব্যয় করবে না, পরকাল বিনির্মাণে খরচ করবে না এবং ভালো মাল ব্যয় করবে না তখন তার সম্পদ যে পথেই সে খরচ করুক না কেন তা হবে মাটি ও পানিতে ফেলা ধ্বংসের শামিল।
দুনিয়া হলো মাটি আর পানি, অতএব আল্লাহর অভিপ্রেত পথ পরিহার করে দুনিয়া সর্বস্ব জীবনের জন্য খরচের হিসাব হলো মাটি আর পানিতে ফেলে দেয়া। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ, লু'আহ্ আত্ তানকীহ ফী শারূহে মিশকাতিল মাসাবীহ ৮ম খণ্ড, ৪৪০ পৃ.)
পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ
৫২১০-[৫৬] ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী (সা.) বলেছেন: তোমরা ঘর-বাড়ি তৈরির মধ্যে হারাম মাল লাগানো হতে বেঁচে থাকো। কেননা তা হলো ধ্বংসের মূল। (হাদীস দুটি ইমাম বায়হাকী তাঁর “শুআবুল ঈমানে” বর্ণনা করেছেন)
اَلْفصْلُ الثَّالِثُ
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «اتَّقُوا الْحَرَامَ فِي الْبُنْيَانِ فَإِنَّهُ أَسَاسُ الْخَرَابِ» . رَوَاهُمَا الْبَيْهَقِيُّ فِي «شُعَبِ الْإِيمَان»
اسنادہ ضعیف ، رواہ البیھقی فی شعب الایمان (10722 ، نسخہ محققۃ : 10237) * فیہ معاویۃ بن یحیی الصدفی ضعیف و علل أخری ۔
(ضَعِيف)
ব্যাখ্যা : বাড়ী ঘর নির্মাণে হারাম থেকে আত্মরক্ষার অর্থ হলো হারাম মাল বা অর্থ দ্বারা বাড়ীঘর নির্মাণ থেকে বেঁচে থাকা। জামি' গ্রন্থে বলা হয়েছে: (اتَّقُوا الْحَرَامَ) অর্থাৎ হারাম পাথর বা ইট দ্বারা বাড়ীঘর নির্মাণ থেকে বেঁচে থাক। কেননা এটা দুনিয়াবী ধ্বংসের মূল ভিত্তি।
হাদীসের বাণী : (فَإِنَّهُ أَسَاسُ الْخَرَابِ) “নিশ্চয় তা ধ্বংসের মূলভিত্তি”- এ কথার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কেউ কেউ বলেছেন, এর অর্থ মূলত দীন ধ্বংসের কারণ। অতএব হালাল পথে দুনিয়ার গৃহাদি নির্মাণের মাধ্যমে তার দীনের ভিত্তি সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে এবং হারাম থেকে বাঁচতে হবে।
(মিক্বাতুল মাফাতীহ; লু'আহ্ আহ্ তানকীহ ৮ম খণ্ড, ৪৪০-৪১ পৃ.)