৬০৭

পরিচ্ছেদঃ ৭১: মু’মিনদের জন্য বিনয়ী ও বিনম্র হওয়ার গুরুত্ব

পরিচ্ছেদঃ ৭০: মানুষের সাথে মিলামিশা, জুম’আহ, জামা’আত, ঈদ ও যিকিরের মজলিস (জালসায় ও দ্বীনী মজলিসে) লোকদের সাথে উপস্থিত হওয়া, রোগীকে সাক্ষাৎ করে কুশল জিজ্ঞাসা করা, জানাযায় অংশগ্রহণ করা, অভাবীদের সাথে সমবেদনা প্রকাশ করা, অজ্ঞকে পথ প্রদর্শন করা এবং অনুরূপ অন্যান্য কল্যাণময় কাজের জন্য মানুষের সাথে সম্পর্ক রাখা তার জন্য মুস্তাহাব, যে ভাল কাজের নির্দেশ এবং মন্দ কাজ থেকে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। আর অপরকে কষ্ট দেওয়া থেকে সে নিজেকে বিরত রাখে এবং অপরের পক্ষ থেকে কষ্ট পৌঁছলে ধৈর্য ধারণ করে।

(ইমাম নাওয়াবী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,) জেনে রাখো যে, লোকদের সাথে মিলামিশার যে পদ্ধতি আমি বর্ণনা করেছি সেটাই স্বীকৃত; যা রসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং বাকী নবীদের পদ্ধতি ছিল। অনুরূপ পদ্ধতি ছিল খুলাফায়ে রাশেদীন এবং তাঁদের পরে সাহাবা ও তাবেঈনদের এবং তাঁদের পরে মুসলিমদের উলামা ও সজ্জনদের। এই অভিমত অধিকাংশ তাবেঈন ও তাঁদের পরবর্তীদেরও। ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমাদ এবং অধিকাংশ ফিক্হবিদও এই মত পোষণ করেছেন। (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম আজমা’ঈন) আল্লাহ তা’আলা বলেন,

﴿ وَتَعَاوَنُواْ عَلَى ٱلۡبِرِّ وَٱلتَّقۡوَىٰۖ﴾ [المائ‍دة: ٢]

অর্থাৎ “কল্যাণকর ও সংযমশীলতার পথে একে অপরের সহযোগিতা কর।” (সূরা মায়েদা ২ আয়াত)

এ মর্মে আর অনেক বিদিত আয়াত রয়েছে।[1]


মহান আল্লাহ বলেন,

﴿ وَٱخۡفِضۡ جَنَاحَكَ لِمَنِ ٱتَّبَعَكَ مِنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٢١٥ ﴾ [الشعراء: ٢١٥]

অর্থাৎ “তুমি তোমার অনুসারী বিশ্বাসীদের প্রতি সদয় হও।” (সূরা শু’আরা ২১৫ আয়াত)

আল্লাহ তা’আলা বলেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ مَن يَرۡتَدَّ مِنكُمۡ عَن دِينِهِۦ فَسَوۡفَ يَأۡتِي ٱللَّهُ بِقَوۡمٖ يُحِبُّهُمۡ وَيُحِبُّونَهُۥٓ أَذِلَّةٍ عَلَى ٱلۡمُؤۡمِنِينَ أَعِزَّةٍ عَلَى ٱلۡكَٰفِرِينَ﴾ [المائ‍دة: ٥٤]

অর্থাৎ “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ দ্বীন থেকে ফিরে গেলে আল্লাহ এমন এক সম্প্রদায় আনয়ন করবেন, যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন ও যারা তাঁকে ভালবাসবে, তারা হবে মুমিনদের প্রতি কোমল ও কাফিরদের প্রতি কঠোর।” (সূরা মাইদাহ ৫৪ আয়াত)

তিনি আরো বলেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّا خَلَقۡنَٰكُم مِّن ذَكَرٖ وَأُنثَىٰ وَجَعَلۡنَٰكُمۡ شُعُوبٗا وَقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوٓاْۚ إِنَّ أَكۡرَمَكُمۡ عِندَ ٱللَّهِ أَتۡقَىٰكُمۡۚ﴾ [الحجرات: ١٣]

অর্থাৎ “হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে অধিক আল্লাহ-ভীরু।” (সূরা হুজরাত ১৩ আয়াত)

তিনি আরো বলেন,

﴿فَلَا تُزَكُّوٓاْ أَنفُسَكُمۡۖ هُوَ أَعۡلَمُ بِمَنِ ٱتَّقَىٰٓ﴾ [النجم: ٣٢]

অর্থাৎ “তোমরা আত্মপ্রশংসা করো না। তিনই সম্যক জানেন আল্লাহভীরু কে।” (সূরা নাজ্ম ৩২আয়াত)

তিনি অন্য জায়গায় বলেন,

﴿ وَنَادَىٰٓ أَصۡحَٰبُ ٱلۡأَعۡرَافِ رِجَالٗا يَعۡرِفُونَهُم بِسِيمَىٰهُمۡ قَالُواْ مَآ أَغۡنَىٰ عَنكُمۡ جَمۡعُكُمۡ وَمَا كُنتُمۡ تَسۡتَكۡبِرُونَ ٤٨ أَهَٰٓؤُلَآءِ ٱلَّذِينَ أَقۡسَمۡتُمۡ لَا يَنَالُهُمُ ٱللَّهُ بِرَحۡمَةٍۚ ٱدۡخُلُواْ ٱلۡجَنَّةَ لَا خَوۡفٌ عَلَيۡكُمۡ وَلَآ أَنتُمۡ تَحۡزَنُونَ ٤٩ ﴾ [الاعراف: ٤٨، ٤٩]

অর্থাৎ “আ’রাফবাসিগণ কিছু লোককে তাদের লক্ষণ দ্বারা চিনতে পেরে তাদেরকে আহবান করে বলবে, তোমাদের দল ও তোমাদের অহংকার কোন কাজে আসল না। দেখ এদেরই সম্বন্ধে কি তোমরা শপথ করে বলতে যে, আল্লাহ এদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করবেন না। এদেরকেই বলা হবে, তোমরা বেহেশ্তে প্রবেশ কর, তোমাদের কোন ভয় নেই এবং তোমরা দুঃখিতও হবে না।” (সূরা আ’রাফ ৪৮-৪৯ আয়াত)


১/৬০৭। ’ইয়াদ ইবনে হিমার রাদিয়াল্লাহু ’আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’’আল্লাহ তা’আলা আমার নিকট অহী পাঠালেন যে, তোমরা পরস্পরে নরম ব্যবহার অবলম্বন কর। যাতে কেউ যেন কারো প্রতি গর্ব না করে এবং কেউ যেন কারো প্রতি যুলুম না করে।’’ (মুসলিম) [2]

بَابُ التَّوَاضُعِ وَخَفْضِ الْجَنَاحِ لِلْمُؤْمِنِيْنَ - (71)

وَعَن عِيَاضِ بنِ حِمَارٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: « إنَّ الله أوْحَى إِلَيَّ أنْ تَوَاضَعُوا حَتَّى لاَ يَفْخَرَ أحَدٌ عَلَى أحَدٍ، وَلاَ يَبْغِي أحَدٌ عَلَى أحَدٍ ». رواه مسلم

وعن عياض بن حمار رضي الله عنه، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم: « ان الله اوحى الي ان تواضعوا حتى لا يفخر احد على احد، ولا يبغي احد على احد ». رواه مسلم

(71) Chapter: Modesty and Courtesy towards the Believers


Excellence of mixing with People and attending their social activities
Imam An-Nawawi says: Remember! Mixing with people in the way I have mentioned earlier is most desirable. This was the way of Messenger of Allah (PBUH) and other Prophets of Allah, the Righteous Caliphs (May Allah be pleased with them), the followers of the Companions, scholars and pious people. The majority of the followers of the Companions and their followers adopted it. Imam Ash-Sha-fi`i, Imam Ahmad and the majority of other jurists followed it.

Allah, the Exalted, says:
"Help you one another in Al-Birr and At-Taqwa (virtue, righteousness and piety).'' (5:2)
The Quranic Verses on the subject are many and well-known.
---
Modesty and Courtesy towards the Believers
Allah, the Exalted, says:
"And be kind and humble to the believers who follow you.'' (26:215)

"O you who believe! Whoever from among you turns back from his religion (Islam), Allah will bring a people whom He will love and they will love Him; humble towards the believers, stern towards the disbelievers.'' (5:54)

"O mankind! We have created you from a male and a female, and made you into nations and tribes, that you may know one another. Verily, the most honourable of you with Allah is that (believer) who has At-Taqwa
[he is one of the Muttaqun (the pious)].'' (49:13)

"So ascribe not purity to yourselves. He knows best him who fears Allah and keeps his duty to Him [i.e., those who are Al-Muttaqun (the pious)].'' (53:32)

"And the men on Al-a`raf (the wall) will call unto the men whom they would recognise by their marks, saying: `Of what benefit to you were your great numbers (and hoards of wealth), and your arrogance (against
Faith)?' Are they those, of whom you swore that Allah would never show them mercy. (Behold! It has been said to them): `Enter Jannah, no fear shall be on you, nor shall you grieve.''' (7:48,49)
---
'Iyad bin Himar (May Allah be pleased with him) reported:
Messenger of Allah (ﷺ) said, "Allah has revealed to me that you should humble yourselves to one another. One should neither hold himself above another nor transgress against another."

[Muslim].

Commentary: To treat each other humbly, leniently and lovingly is understood as humility. One, under this principle, is also required not to despise anybody on the basis of wealth, social distinction and lineage. Moreover, one should also not adopt an unkind attitude towards others. Besides, if Allah has bestowed honour on somebody, he is supposed to be grateful to Him, instead of behaving disrespectfully towards people and subjecting them to unkindness and tyranny.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
রিয়াযুস স্বা-লিহীন (রিয়াদুস সালেহীন)
বিবিধ (كتاب المقدمات)