১১১৯

পরিচ্ছেদঃ ২৬. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ইমামতির বর্ণনা

১১১৯-[৩] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের যে লোক সবচেয়ে উত্তম তাঁরই আযান দেয়া উচিত। আর তোমাদের যে ব্যক্তি সবচেয়ে ভাল ক্বারী তাকেই তোমাদের ইমামতি করা উচিত। (আবূ দাঊদ)[1]

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لِيُؤَذِّنْ لَكُمْ خِيَارُكُمْ وليؤمكم قراؤكم» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

عن ابن عباس قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ليوذن لكم خياركم وليومكم قراوكم رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: অত্র হাদীসে ‘আমর-এর শব্দ দ্বারা মুস্তাহাব হুকুম বুঝানো হয়েছে। (خِيَارُكُمْ) থেকে উদ্দেশ্য- যারা সময়সমূহের ব্যাপারে সংরক্ষণ করে এবং হারাম ও লজ্জাস্থানসমূহের ব্যাপারে সংরক্ষণ করে। কেননা তাদেরকে সুউচ্চ মিনারের উপরে সম্মানের উপর সম্মান জানানো হবে। এ অভিমতটি সিনদীর। ক্বারী (রহঃ) বলেন, যে সর্বাধিক সততার অধিকারী হবে সে আযান দিবে যাতে যে লজ্জাস্থানসমূহ থেকে তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং সময় সম্পর্কে যথার্থভাবে সংরক্ষণ করে।

জাওহারী বলেছেন, মুয়াযযিনদেরকে সর্বোত্তম হতে হবে, এর কারণ হাদীসে মুয়াযযিনদের আমানাতদার হওয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে। কেননা সিয়াম পালনকারী ইফত্বার, পানাহার এবং স্ত্রীর সাথে মেলামেশার বিষয়টি তাদের আযানের সাথে সম্পৃক্ত। এভাবে সালাতের সময়সমূহ সংরক্ষণের ব্যাপারে মুসল্লীর বিষয় তাদের সাথে সম্পৃক্ত। এ বিবেচনাতে তাদের ভাল ব্যক্তি হতে হবে। এ অভিমতটি ত্বীবী (রহঃ) পেশ করেছেন। হাদীসে উল্লেখিত (قراؤكم) অংশটি সকল নুসখাহ্ বা কপিতে এভাবে এসেছে। এভাবে মাসাবীহ, সুনান আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহতে এসেছে। জাযারী জামি‘উল উসূলে ষষ্ঠ খন্ডে ৩৭৭ পৃষ্ঠাতে আবূ দাঊদ হতে (ليؤمكم أقرأوكم) শব্দে বর্ণনা করছেন। এমনিভাবে ইমাম বায়হাক্বী তার কিতাবে ১ম খন্ডে ৪২৬ পৃষ্ঠাতে বর্ণনা করেছেন।

উল্লেখিত হাদীসাংশে ইমামতিতে কুরআন পাঠে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকে সুন্নাহ সম্পর্কে অধিক অবগত ব্যক্তির ওপর প্রাধান্য দেয়ার উপর দলীল রয়েছে। সিনদী বলেছেন, হাদীসের বাহ্যিক দিক হল ইমামতির ক্ষেত্রে কুরআন পাঠে সর্বাধিক শ্রেয় ব্যক্তি সুন্নাহ সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত ব্যক্তি অপেক্ষা বেশি অধিকার রাখে এবং ক্বারী (রহঃ) বলেছেন, যখনই কুরআন পাঠে সর্বাধিক শ্রেয় ব্যক্তির আলোচনা আসবে তখন সে ব্যক্তি সালাতের মাসআলাসমূহ সম্পর্কে জ্ঞাত হয় তাহলে সে ব্যক্তিই ইমামতিতে সর্বোত্তম ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।

কেননা সালাতে সর্বোত্তম যিকর সর্বাধিক দীর্ঘ ও সর্বাধিক কঠিন বিষয় হচ্ছে ক্বিরাআত (কিরআত)। তাতে আছে আল্লাহর কালামের সম্মান প্রদর্শন এবং পাঠককে অগ্রগামীতা দান উভয় জগতে এর পাঠককে সুউচ্চ মর্যাদার দিকে ইঙ্গিত করণ; যেমন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাফনের ক্ষেত্রে কুরআন পাঠে সর্বোত্তম ব্যক্তিকে অগ্রগামীতা দানের ক্ষেত্রে নির্দেশ করতেন। (ইমাম আবূ দাঊদ একে বর্ণনা করেছেন) ইমাম ইবনু মাজাহ ও বায়হাক্বীও একে সংকলন করেছেন।

আবূ দাঊদ এ ব্যাপারে চুপ থেকেছেন। মুনযিরী (রহঃ) বলেছেন, এর সানাদে হুসায়ন বিন ‘ঈসা আল হানাফী আল কূফী আছে; তার সম্পর্কে আবূ হাতিম আর্ রাযী ও আবূ যুর‘আহ্ আর্ রাযী সমালোচনা করেছেন। ইমাম দারাকুত্বনী (রহঃ) উল্লেখ করেছেন, নিশ্চয় হুসায়ন বিন ‘ঈসা এ হাদীসটি হাকাম বিন আবান থেকে একাকী বর্ণনা করেছেন। ‘উবায়দুল্লাহ মুবারকপূরী (রহঃ) বলেন, আমি বলবঃ ইমাম বুখারী হুসায়ন বিন ‘ঈসাকে মাজহূল ও তার হাদীসকে মুনকার বলেছেন। আবূ যুর‘আহ্ বলে মুনকারুল হাদীস। আবূ হাতিম বলেন, সে শক্তিশালী নয়; সে হাকাম বিন আবান থেকে অনেক মুনকার হাদীস বর্ণনা করেছেন। আজুরী আবূ দাঊদ কর্তৃক বর্ণনা করেন আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে নিশ্চয়ই সে দুর্বল। ইবনু হিব্বান তাকে নির্ভরশীল রাবীদের মাঝে গণ্য করেছেন (ইবনু হিব্বান রাবীদের হাদীসের ক্ষেত্রে হুকুম লাগানোতে শিথিল) হাফিয (রহঃ) তাক্বরীবে গ্রন্থে বলেছেন, তিনি দুর্বল।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة)