পরিচ্ছেদঃ
২০৮। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বলেন, বদরের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের সাহাবীদের দিকে দৃষ্টি দিলেন। তাদের সংখ্যা তিনশোর কিছু বেশি ছিল। মুশরিকদের দিকে দৃষ্টি দিলেন। তাদের সংখ্যা ছিল এক হাজারের কিছু বেশি। তৎক্ষণাত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবলামুখী হলেন ও তার দু’হাত মেললেন, তখন তার গায়ে ছিল তার চাদর ও পাজামা। তারপর বললেন, হে আল্লাহ, তুমি আমাকে যা (সাহায্য) প্রতিশ্রুতি দিয়েছ, তা কোথায়? হে আল্লাহ, আমাকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছ, তা পূরণ কর। হে আল্লাহ, তুমি যদি মুসলিমদের এই দলটিকে ধ্বংস করে দাও তাহলে আর কোনদিন পৃথিবীতে তোমার ইবাদাত হবে না।
এভাবে তিনি ক্রমাগত আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করতে ও তাঁকে ডাকতে লাগলেন। ফলে এক সময় তাঁর চাদর পড়ে গেল। তৎক্ষণাত আবু বাকর তাঁর কাছে এলেন। তিনি তাঁর চাদর ধরলেন, তা ফিরিয়ে দিলেন এবং তাঁর পেছন দিক থেকে তা সেঁটে দিলেন। তারপর বললেন, হে আল্লাহর নবী, আপনার প্রতিপালককে আপনি যে মিনতি করেছেন, তা আপনার জন্য যথেষ্ট, তিনি আপনাকে দেয়া তার প্রতিশ্রুতি পালন করবেন। আর আল্লাহ নাযিল করলেনঃإِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ أَنِّي مُمِدُّكُمْ بِأَلْفٍ مِّنَ الْمَلَائِكَةِ مُرْدِفِينَ “যখন তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করলে, আর তিনি তোমাদের সে প্রার্থনা গ্রহণ করলেন এবং বললেন যে, আমি তোমাদেরকে এক হাজার ফেরেশতা দিয়ে সাহায্য করবো –যারা একের পর এক আসবে”। [আনফালঃ ৯]
এরপর যখন সে দিনটি এল উভয় দল মুখোমুখি হলো। তারপর আল্লাহ মুশরিকদেরকে পরাজিত করলেন। তাদের সত্তর জন নিহত হলো এবং সত্তর জন বন্দী হলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বাকর, আলী ও উমারের পরামর্শ চাইলেন। আবু বাকর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর নবী, এরা সব চাচাতো ভাই, জ্ঞাতি ভাই ও আত্মীয়-স্বজন। তাই আমি মনে করি, আপনি তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণ নিন। এভাবে আমরা তাদের কাছ থেকে যা নেব, তা কাফিরদের ওপর আমাদের শক্তি যোগাবে। এমনও হতে পারে যে, আল্লাহ তাদেরকে হিদায়াত করবেন। তাহলে তো তারা আমাদের সহায়ক হবে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে খাত্তাবের ছেলে, তোমার মত কী? আমি বললাম, আল্লাহর কসম, আবু বাকরের মত আমার মনোপুত নয়। আপনি আমার অমুক আত্মীয়কে আমার নিয়ন্ত্রণে দিন, আমি তাকে হত্যা করি, আর আকীলকে আলীর নিয়ন্ত্রণে দিন, সে তাকে হত্যা করুক, হামযার নিয়ন্ত্রণে দিন তার অমুক ভাইকে, সে তাকে হত্যা করুক, যাতে আল্লাহ দেখে নেন যে, আমাদের মনে মুশরিকদের জন্য কোন অনুকম্পা নেই। এরা হলো তাদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি, নেতা ও সরদার।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বাকরের মতের দিকে ঝুঁকে পড়লেন, আমি যা বললাম, তার দিকে আকৃষ্ট হলেন না। তিনি তাদের [মুশরিক যুদ্ধবন্দীদের] কাছ থেকে মুক্তিপণ নিলেন। পরদিন সকালে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলাম। দেখলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবু বাকর বসে কাঁদছেন। আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমাকে বলুন, কী কারণে আপনি ও আপনার সাথী কাঁদছেন? আমার যদি কান্না আসে তবে আমিও কাঁদবো, নচেত আপনাদের দু’জনের কাঁদার জন্য কৃত্রিমভাবে হলেও কাঁদবো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার সাথীরা আমার কাছে যে মুক্তিপণ দিয়েছে, সেটিই আমাদের কাঁদারকারণ। এই গাছটির চেয়েও কাছাকাছি আমার সামনে এসেছিল তোমাদের আযাব।
আর আল্লাহ নাযিল করলেনঃ(مَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَكُونَ لَهُ أَسْرَى حَتَّى يُثْخِنَ فِي الْأَرْضِ ... إِلَى ... لَوْلَا كِتَابٌ مِّنَ اللَّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمْ فِيمَا أَخَذْتُمْ) “কোন নবীর জন্য এটা শোভনীয় নয় যে, তার কাছে বন্দীরা থাকবে, আর সে তাদের রক্তপাত করবে না। তোমরা দুনিয়ার সম্পদ চাও। আর আল্লাহ চান আখিরাত। আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী মহা প্রজ্ঞাময়। আল্লাহর পক্ষ থেকে যদি ইতিপূর্বে একটা লিখিত বিধান না এসে থাকতো, তাহলে তোমরা যা (মুক্তিপণ) নিয়েছ তার দায়ে তোমাদের ওপর ভয়ানক আযাব আসতো।”
তারপর তাদের জন্য গণিমত হালাল করা হলো। পরবর্তী বছর যখন উহুদ যুদ্ধ সংঘটিত হলো। তখন মুসলিমরা বদরের যুদ্ধে মুক্তিপণ গ্রহণের শাস্তি পেল, তাই তাদের সত্তর জন নিহত হলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথীরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট থেকে পালালো, তাঁর দাত ভেঙ্গে গেল, তাঁর মাথার খুলি ভাঙলো এবং তাঁর গণ্ড বেয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়লো।
আল্লাহ নাযিল করলেনঃ
أَوَلَمَّا أَصَابَتْكُمْ مُّصِيبَةٌ قَدْ أَصَبْتُمْ مِثْلَيْهَا قُلْتُمْ أَنَّى هَذَا قُلْ هُوَ مِنْ عِنْدِ أَنْفُسِكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
“যখন তোমাদের উপর এক বিপদ এল, যার চেয়ে দ্বিগুণ বিপদ তোমরা (কাফিরদের ওপর) ঘটিয়েছিলে, তখন তোমরা কি বলছিলে যে, এ বিপদ কোথা থেকে এল? তুমি বল, এ বিপদ তোমাদের পক্ষ থেকেই এসেছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান”।
বদরের মুক্তিপণ গ্রহণ করার কারণেই উহুদের মুসিবত এসেছিল।
[সূরা আলে-ইমরান-১৬৫; মুসলিম, ইবনু হিব্বান, মুসনাদে আহমাদ-২২১]
حَدَّثَنَا أَبُو نُوحٍ قُرَادٌ، أَخْبَرَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا سِمَاكٌ الْحَنَفِيُّ أَبُو زُمَيْلٍ، حَدَّثَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ، قَالَ: لَمَّا كَانَ يَوْمُ بَدْرٍ، قَالَ: نَظَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَصْحَابِهِ وَهُمْ ثَلاثُ مِائَةٍ وَنَيِّفٌ، وَنَظَرَ إِلَى الْمُشْرِكِينَ فَإِذَا هُمْ أَلْفٌ وَزِيَادَةٌ، فَاسْتَقْبَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْقِبْلَةَ، ثُمَّ مَدَّ يَدَيْهِ، وَعَلَيْهِ رِدَاؤُهُ وَإِزَارُهُ، ثُمَّ قَالَ: " اللهُمَّ أَيْنَ مَا وَعَدْتَنِي؟ اللهُمَّ أَنْجِزْ مَا وَعَدْتَنِي، اللهُمَّ إِنَّكَ إِنْ تُهْلِكْ هَذِهِ الْعِصَابَةَ مِنْ أَهْلِ الْإِسْلامِ، فَلا تُعْبَدْ فِي الْأَرْضِ أَبَدًا " قَالَ: فَمَا زَالَ يَسْتَغِيثُ رَبَّهُ عَزَّ وَجَلَّ، وَيَدْعُوهُ حَتَّى سَقَطَ رِدَاؤُهُ، فَأَتَاهُ أَبُو بَكْرٍ، فَأَخَذَ رِدَاءَهُ فَرَدَّاهُ ثُمَّ الْتَزَمَهُ مِنْ وَرَائِهِ، ثُمَّ قَالَ: يَا نَبِيَّ اللهِ، كَذَاكَ مُنَاشَدَتُكَ رَبَّكَ، فَإِنَّهُ سَيُنْجِزُ لَكَ مَا وَعَدَكَ، وَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: (إِذْ تَسْتَغِيثُونَ رَبَّكُمْ فَاسْتَجَابَ لَكُمْ أَنِّي مُمِدُّكُمْ بِأَلْفٍ مِّنَ الْمَلَائِكَةِ مُرْدِفِينَ) [الأنفال: ٩]
فَلَمَّا كَانَ يَوْمُئِذٍ، وَالْتَقَوْا، فَهَزَمَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ الْمُشْرِكِينَ، فَقُتِلَ مِنْهُمْ سَبْعُونَ رَجُلًا، وَأُسِرَ مِنْهُمْ سَبْعُونَ رَجُلًا، فَاسْتَشَارَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَبَا بَكْرٍ وَعَلِيًّا وَعُمَرَ، فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ: يَا نَبِيَّ اللهِ، هَؤُلاءِ بَنُو الْعَمِّ وَالْعَشِيرَةُ وَالْإِخْوَانُ، فَإِنِّي أَرَى أَنْ تَأْخُذَ مِنْهُمُ الْفِدْيَةَ، فَيَكُونُ مَا أَخَذْنَا مِنْهُمْ قُوَّةً لَنَا عَلَى الْكُفَّارِ، وَعَسَى اللهُ أَنْ يَهْدِيَهُمْ فَيَكُونُونَ لَنَا عَضُدًا، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " مَا تَرَى يَا ابْنَ الْخَطَّابِ؟ " قَالَ: قُلْتُ: وَاللهِ مَا أَرَى مَا رَأَى أَبُو بَكْرٍ، وَلَكِنِّي أَرَى أَنْ تُمَكِّنَنِي مِنْ فُلانٍ - قَرِيبًا لِعُمَرَ - فَأَضْرِبَ عُنُقَهُ، وَتُمَكِّنَ عَلِيًّا مِنْ عَقِيلٍ فَيَضْرِبَ عُنُقَهُ، وَتُمَكِّنَ حَمْزَةَ مِنْ فُلانٍ، أَخِيهِ فَيَضْرِبَ عُنُقَهُ، حَتَّى يَعْلَمَ اللهُ أَنَّهُ لَيْسَ فِي قُلُوبِنَا هَوَادَةٌ لِلْمُشْرِكِينَ، هَؤُلاءِ صَنَادِيدُهُمْ وَأَئِمَّتُهُمْ وَقَادَتُهُمْ، فَهَوِيَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا قَالَ أَبُو بَكْرٍ، وَلَمْ يَهْوَ مَا قُلْتُ، فَأَخَذَ مِنْهُمُ الْفِدَاءَ.
فَلَمَّا أَنْ كَانَ مِنَ الْغَدِ، قَالَ عُمَرُ: غَدَوْتُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَإِذَا هُوَ قَاعِدٌ وَأَبُو بَكْرٍ وَإِذَا هُمَا يَبْكِيَانِ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، أَخْبِرْنِي مَاذَا يُبْكِيكَ أَنْتَ وَصَاحِبَكَ؟ فَإِنْ وَجَدْتُ بُكَاءً بَكَيْتُ، وَإِنْ لَمْ أَجِدْ بُكَاءً تَبَاكَيْتُ لِبُكَائِكُمَا، قَالَ: فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " الَّذِي عَرَضَ عَلَيَّ أَصْحَابُكَ مِنَ الْفِدَاءِ، لَقَدْ عُرِضَ عَلَيَّ عَذَابُكُمْ أَدْنَى مِنْ هَذِهِ الشَّجَرَةِ " - لِشَجَرَةٍ قَرِيبَةٍ - وَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: (مَا كَانَ لِنَبِيٍّ أَنْ يَكُونَ لَهُ أَسْرَى حَتَّى يُثْخِنَ فِي الْأَرْضِ) إِلَى: (لَوْلَا كِتَابٌ مِّنَ اللَّهِ سَبَقَ لَمَسَّكُمْ فِيمَا أَخَذْتُمْ) [الأنفال: ٦٧ - ٦٨] مِنَ الْفِدَاءِ، ثُمَّ أُحِلَّ لَهُمُ الْغَنَائِمُ
فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ أُحُدٍ مِنَ الْعَامِ الْمُقْبِلِ عُوقِبُوا بِمَا صَنَعُوا يَوْمَ بَدْرٍ مِنْ أَخْذِهِمُ الْفِدَاءَ، فَقُتِلَ مِنْهُمْ سَبْعُونَ، وَفَرَّ أَصْحَابُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكُسِرَتْ رَبَاعِيَتُهُ، وَهُشِمَتِ الْبَيْضَةُ عَلَى رَأْسِهِ، وَسَالَ الدَّمُ عَلَى وَجْهِهِ، وَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى: (أَوَلَمَّا أَصَابَتْكُمْ مُّصِيبَةٌ قَدْ أَصَبْتُمْ مِثْلَيْهَا قُلْتُمْ أَنَّى هَذَا قُلْ هُوَ مِنْ عِنْدِ أَنْفُسِكُمْ إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ) [آل عمران: ١٦٥] بِأَخْذِكُمُ الْفِدَاءَ
إسناده حسن، رجاله رجال الصحيح. أبو نوح: اسمه عبد الرحمن بن غزوان الضبي، وقُراد لقب له
وأخرجه أبو داود (2690) عن أحمد بن حنبل، بهذا الإسناد. مختصرا
وأخرجه ابن أبي شيبة 10 / 350 و14 / 365 - 366، ويعقوب بن شيبة في " مسند عمر " ص 63 - 64، وأبو عوانة 4 / 157 من طريق أبي نوح قُراد، به، وحسن يعقوب بن شيبة إسناده
وأخرجه عبد بن حميد (31) ، ومسلم (1763) ، ويعقوب بن شيبة ص 57 - 58 و58 - 60 و60 - 62، والترمذي (3081) ، والبزار (196) ، والبيهقي 9 / 189 و10 / 44، وأبو عوانة 4 / 152 و155 و156، وابن حبان (4793) ، والبيهقي في " السنن " 6 / 321 وفي " الدلائل " 3 / 51 - 52، وأبو نعيم في " الدلائل " (408) من طرق عن عكرمة بن عمّار، به. وقد سقط من المطبوع من " دلائل أبي نعيم ": ابنُ عباس. وسيأتي برقم (221)
والرباعية: هي السن التي بين الثنية والناب
والبيضة: هي خوذة الحديد نوضمع على الرأس، من آلات الحرب