২২৯

পরিচ্ছেদঃ মুরাক্বাবাহ্ (আল্লাহর ধ্যান)

আল্লাহ তা’আলা বলেন,

الَّذِي يَرَاكَ حِينَ تَقُومُ وَتَقَلُّبَكَ فِي السَّاجِدِينَ

অর্থাৎ, যিনি তোমাকে দেখেন; যখন তুমি দণ্ডায়মান হও (নামাযে) এবং তোমাকে দেখেন সিজদাকারীদের সাথে উঠতে-বসতে। (সূরা শুআরা ২১৮-২১৯ আয়াত)

তিনি অন্যত্র বলেন,

وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُم

অর্থাৎ, তোমরা যেখানেই থাক না কেন তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন। (সূরা হাদীদ ৪ আয়াত)

তিনি আরো বলেন,

إِنَّ اللهَ لا يَخْفَى عَلَيْهِ شَيْءٌ فِي الأَرْضِ وَلا فِي السَّمَاءِ

অর্থাৎ, নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে দ্যুলোক-ভূলোকের কোন কিছুই গোপন নেই। (সূরা আলে ইমরান ৫)

তিনি আরো বলেন,

إِنَّ رَبَّكَ لَبِالْمِرْصَادِ

অর্থাৎ, নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক সময়ের প্রতীক্ষায় থেকে সতর্ক দৃষ্টি রাখেন। (সূরা ফাজর ১৪ আয়াত)

তাঁর অমোঘ বাণী,

يَعْلَمُ خَائِنَةَ الأَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُورُ

অর্থাৎ, চক্ষুর চোরা চাহনি ও অন্তরে যা গোপন আছে সে সম্বন্ধে তিনি অবহিত। (সূরা মু’মিন ১৯)

এ ছাড়া এ প্রসঙ্গে আরো অনেক আয়াত রয়েছে। উক্ত মর্মবোধক হাদীসসমূহঃ


(২২৯) উমার ইবনে খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন যে, আমরা একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে বসে ছিলাম। হঠাৎ একটি লোক আমাদের কাছে এল। তার পরনে ধবধবে সাদা কাপড় এবং তার চুল কুচকুচে কাল ছিল। (বাহ্যতঃ) সফরের কোন চিহ্ন তার উপর দেখা যাচ্ছিল না এবং আমাদের মধ্যে কেউ তাকে চিনছিল না।

শেষ পর্যন্ত সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বসল; তার দুই হাঁটু তাঁর (নবীর) হাঁটুর সঙ্গে মিলিয়ে দিল এবং তার হাতের দুই করতলকে নিজ জানুর উপরে রেখে বলল, ’হে মুহাম্মাদ! আমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন।’ সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইসলাম হল এই যে, তুমি সাক্ষ্য দেবে, আল্লাহ ছাড়া কোন (সত্য) উপাস্য নেই, আর মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল, নামায প্রতিষ্ঠা করবে, যাকাত প্রদান করবে, রমযানের রোযা রাখবে এবং কা’বা ঘরের হজ্জ্ব করবে; যদি সেখানে যাবার সঙ্গতি রাখ। সে বলল, ’আপনি ঠিকই বলেছেন।’ আমরা তার কথায় আশ্চর্য হলাম যে, সে জিজ্ঞাসাও করছে এবং ঠিক বলে সমর্থনও করছে!

সে (আবার) বলল, ’আপনি আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন।’ তিনি বললেন, তুমি আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফিরিশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রসূলসমূহ, পরকাল এবং ভাগ্যের ভাল-মন্দের প্রতি বিশ্বাস রাখবে। সে বলল, ’আপনি যথার্থ বলেছেন।’ সে (তৃতীয়) প্রশ্ন করল যে, ’আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলুন! তিনি বললেন, ইহসান হল এই যে, তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে; যেন তুমি তাঁকে দেখতে পাচ্ছ। যদি তুমি তাঁকে দেখতে না পাও, তাহলে তিনি কিন্তু তোমাকে দেখতে পাচ্ছেন। সে (পুনরায়) বলল, ’আপনি আমাকে কিয়ামতের দিন সম্পর্কে বলুন (সেদিন কবে সংঘটিত হবে?)’ তিনি বললেন, এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত (ব্যক্তি) জিজ্ঞাসকের চেয়ে বেশী অবহিত নয়। (অর্থাৎ কিয়ামতের নির্দিষ্ট দিন আমাদের দু’জনেরই অজানা)।

সে বলল, ’(তাহলে) আপনি ওর নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে আমাকে বলে দিন।’ তিনি বললেন, (ওর কিছু নিদর্শন হল এই যে,) কৃতদাসী তার মনিবকে প্রসব করবে (অর্থাৎ যুদ্ধবন্দী এত বেশী হবে যে, যুদ্ধ বন্দিনী ক্রীতদাসী তার মনিবের কন্যা প্রসব করবে)। আর তুমি নগ্নপদ, বস্ত্রহীন ও দরিদ্র ছাগলের রাখালদেরকে অট্টালিকা নির্মাণের কাজে পরস্পর গর্ব করতে দেখবে। অতঃপর সে (আগন্তুক প্রশ্নকারী) চলে গেল।

(উমার (রাঃ) বলেন,) ’আমি অনেকক্ষণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে থাকলাম।’ পুনরায় তিনি বললেন হে উমার! তুমি কি জান যে, প্রশ্নকারী কে ছিল? আমি বললাম, ’আল্লাহ ও তাঁর রসূল বেশী জানেন।’ তিনি বললেন, ইনি জিবরীল ছিলেন, তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিখানোর জন্য এসেছিলেন।

عَن عُمَرَ بنِ الخَطَّابِ قَالَ : بَيْنَما نَحْنُ جُلُوسٌ عَندَ رَسُول الله ﷺ ذَاتَ يَومٍ إذْ طَلَعَ عَلَينا رَجُلٌ شَديدُ بَياضِ الثِّيابِ شَديدُ سَوَادِ الشَّعْرِ لا يُرَى عَلَيهِ أثَرُ السَّفَرِ وَلا يَعْرِفُهُ مِنَّا أحَدٌ حَتَّى جَلَسَ إِلَى النَّبيّ ﷺ فَأَسْنَدَ رُكْبَتَيهِ إِلَى رُكْبتَيهِ وَوَضعَ كَفَّيهِ عَلَى فَخِذَيهِ وَقالَ : يَا مُحَمَّدُ أخْبرني عَن الإسلامِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ الإسلامُ : أنْ تَشْهدَ أنْ لا إلهَ إلاَّ الله وأنَّ مُحمَّداً رسولُ الله وتُقيمَ الصَّلاةَ وَتُؤتِيَ الزَّكَاةَ وَتَصومَ رَمَضَانَ وَتَحُجَّ البَيتَ إن اسْتَطَعْتَ إِلَيْهِ سَبيلاً قَالَ : صَدَقْتَ فَعَجِبْنَا لَهُ يَسْأَلُهُ وَيُصَدِّقهُ قَالَ : فَأَخْبرنِي عَن الإِيمَانِ قَالَ أنْ تُؤمِنَ باللهِ وَمَلائِكَتِهِ وَكُتُبهِ وَرُسُلِهِ وَاليَوْمِ الآخِر وتُؤْمِنَ بالقَدَرِ خَيرِهِ وَشَرِّهِ قَالَ : صَدقت قَالَ : فأَخْبرني عَن الإحْسَانِ قَالَ أنْ تَعْبُدَ اللهَ كَأنَّكَ تَرَاهُ فإنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فإنَّهُ يَرَاكَ قَالَ : فَأَخْبِرني عَن السَّاعَةِ قَالَ مَا المَسْؤُولُ عَنهَا بأعْلَمَ مِنَ السَّائِلِ قَالَ : فأخبِرني عَن أمَاراتِهَا قَالَ أنْ تَلِدَ الأَمَةُ رَبَّتَهَا وأنْ تَرَى الحُفَاةَ العُرَاةَ العَالَةَ رِعَاءَ الشَّاءِ يَتَطَاوَلُونَ في البُنْيَانِ ثُمَّ انْطَلقَ فَلَبِثْتُ مَلِيّاً ثُمَّ قَالَ يَا عُمَرُ أَتَدْري مَنِ السَّائِلُ ؟ قُلْتُ : اللهُ ورسُولُهُ أعْلَمُ قَالَ فإنَّهُ جِبْريلُ أَتَاكُمْ يعْلِّمُكُمْ أمْرَ دِينكُمْ رواه مسلم

عن عمر بن الخطاب قال : بينما نحن جلوس عند رسول الله ﷺ ذات يوم اذ طلع علينا رجل شديد بياض الثياب شديد سواد الشعر لا يرى عليه اثر السفر ولا يعرفه منا احد حتى جلس الى النبي ﷺ فاسند ركبتيه الى ركبتيه ووضع كفيه على فخذيه وقال : يا محمد اخبرني عن الاسلام فقال رسول الله ﷺ الاسلام : ان تشهد ان لا اله الا الله وان محمدا رسول الله وتقيم الصلاة وتوتي الزكاة وتصوم رمضان وتحج البيت ان استطعت اليه سبيلا قال : صدقت فعجبنا له يساله ويصدقه قال : فاخبرني عن الايمان قال ان تومن بالله وملاىكته وكتبه ورسله واليوم الاخر وتومن بالقدر خيره وشره قال : صدقت قال : فاخبرني عن الاحسان قال ان تعبد الله كانك تراه فان لم تكن تراه فانه يراك قال : فاخبرني عن الساعة قال ما المسوول عنها باعلم من الساىل قال : فاخبرني عن اماراتها قال ان تلد الامة ربتها وان ترى الحفاة العراة العالة رعاء الشاء يتطاولون في البنيان ثم انطلق فلبثت مليا ثم قال يا عمر اتدري من الساىل ؟ قلت : الله ورسوله اعلم قال فانه جبريل اتاكم يعلمكم امر دينكم رواه مسلم

হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
হাদীস সম্ভার
৪/ আন্তরিক কর্মাবলী