পরিচ্ছেদঃ
৯৯৫। তোমরা মাথার (মাসার) জন্য নতুন পানি গ্রহণ কর।
হাদীছটি নিতান্তই দুর্বল।
এটি তাবারানী (১/২১৪/২) দাহছাম ইবনু কুররান হতে তিনি নেমরান ইবনু জারিয়াহ হতে তিনি তার পিতা হতে মারফু হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ এ সনদটি খুবই দুর্বল। এই দাহছাম সম্পর্কে হাফিয ইবনু হাজার বলেনঃ তিনি মাতরূক। হায়ছামী "আল-মাজমা" (১/২৩৪) গ্রন্থে বলেনঃ তাতে দাহছাম রয়েছেন, তাকে একদল দুর্বল আখ্যা দিয়েছেন আর ইবনু হিব্বান তাকে নির্ভরযোগ্যদের মধ্যে উল্লেখ করেছেন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ ইবনু হিব্বান তাকে "আয-যোয়াফা" গ্রন্থেও উল্লেখ করে (১/২৯০) বলেছেনঃ তিনি প্রসিদ্ধদের উদ্ধৃতিতে এককভাবে মুনকার হাদীছ বর্ণনাকারীদের অন্তর্ভুক্ত। তিনি নির্ভরযোগ্যদের উদ্ধৃতিতে এমন কিছু বর্ণনা করেছেন যেগুলোর কোন ভিত্তি নেই। ইবনু মাঈন বলেনঃ তার হাদীছ লিখা যাবে না।
আমি (আলবানী) বলছিঃ ইবনু হাজার যে বলেছেনঃ মাতরূক, এগুলো তারই অর্থ। একই কথা ইবনুল জুনায়েদও বলেছেন। ইমাম আহমাদ বলেনঃ তিনি মাতরূকুল হাদীছ। নাসাঈ বলেছেনঃ তিনি শক্তিশালী নন। আর নেমরান ইবনু জারিয়াহ মাজহুল, তাকে চেনা যায় না যেমনটি যাহাবী আসকালানী বলেছেন।
এ হাদীছের অর্থবোধক একটি হাদীছ বাইহাকী (১/৬৫) হায়ছাম ইবনু খারেজাহ সূত্রে ইবনু ওয়াহাব হতে ... বর্ণনা করেছেন। তাতে বলা হয়েছেঃ
আব্দুল্লাহ ইবনু যায়েদ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে উযু করতে দেখেছেন। তিনি তার মাথা ও তাঁর দু’ কান মাসাহ করার জন্য পৃথক পৃথক পানি গ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি বলেছেনঃ এ সনদটি সহীহ।
হাদীছটি ইমাম মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ তার “সাহীহ” গ্রন্থে হারুণ ইবনু মা’রূফ, হারূণ ইবনু সাঈদ আল-আয়লী ও আবু তাহের ইবনু ওয়াহাব হতে সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে উযু করতে দেখেছেন-তিনি তাঁর উযূর নিয়ম উল্লেখ করে বলেনঃ তিনি তার মাথা মাসাহ করেন তার দু’ হাতের বেঁচে যাওয়া পানি ছাড়া অন্য পানি দিয়ে।’ তিনি দু’ কানের কথা উল্লেখ করেননি। এটিই বেশী বিশুদ্ধ পূর্বের বর্ণনাটির চেয়ে। (এ পর্যন্ত হচ্ছে বাইহাকীর ভাষ্য)।
ইবনুত তুরকুমানী তার সমালোচনা করে বলেছেনঃ ইমাম মুসলিম ইবনুল মুকরীর বর্ণনায় হারমালাহ হতে, তিনি ইবনু ওয়াহাব হতে এ সনদে উল্লেখ করেছেন। তিনি তাতে বলেছেনঃ তিনি তার মাথা মাসাহ করেন তার দু’ হাতের বেঁচে যাওয়া পানি ছাড়া অন্য পানি দিয়ে।’ তিনি দু’ কানের কথা উল্লেখ করেননি।
বাইহাকীর বর্ণনায় ইবনু ওয়াহাব হতে দু’ ধরণের বর্ণনা পাওয়া যাচ্ছে। একটিতে কান মাসাহ করার জন্য নতুন পানি নেয়ার কথা বলা হয়েছে। এটি ইবনু ওয়াহাব হতে হায়ছাম ইবনু খারেজাহ, ইবনু মিকলাস ও হারমালাহ ইবনু ইয়াহইয়া বর্ণনা করেছেন।
আরেকটিতে পাওয়া যাচ্ছে যে, তিনি মাথা মাসাহ করার জন্য নতুন পানি নিয়েছেন তাতে দু’ কান মাসাহ করার কথা উল্লেখ করা হয়নি। এটি ইবনু ওয়াহাব হতে ইবনু মা’রূফ, ইবনু সাঈদ আল-আয়লী ও আবু তাহের বর্ণনা করেছেন। প্রথমটি বাইহাকী বর্ণনা করেছেন। আর দ্বিতীয়টি ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেছেন। প্রথম বর্ণনাটি সম্পর্কে বাইহাকী বলেনঃ সনদটি সহীহ। আর দ্বিতীয়টি সম্পর্কে বলেনঃ পূর্বেরটির চেয়ে এটি বেশী সহীহ।
তার এ কথা প্রমাণ করছে যে, প্রথমটি শায। ইবনু হাজার "বুলুগুল মারাম" গ্রন্থে স্পষ্ট করেই বলেছেনঃ সেটি শায। তাতে আমার নিকট কোন সন্দেহ নেই। কারণ আবু তাহের সহ এ তিনজনের আরো তিনজন মুতাবায়াত করেছেন। (তার নাম আহমাদ ইবনু আবদির রহমান ইবনে ওয়াহাব)। তাদের দু’জন হতে আবু আওয়ানাহ তার "সাহীহ" (১/২৪৯) গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। আর তৃতীয়জন হচ্ছেন সুরায়েজ ইবনুন নুমান। তার থেকে ইমাম আহমাদ (৪/৪১) বর্ণনা করেছেন। কোন সন্দেহ নেই তিনজনের বর্ণনার বিপরীতে ছয়জনের বর্ণনা অগ্রাধিকার পাবে। এ ছাড়া এই ছয়জনের বর্ণনাকে আব্দুল্লাহ ইবনু লাহীআহর বর্ণনা শক্তি যোগাচ্ছে। তিনি হিব্বান ইবনু ওয়াসে’ হতে ছয়জনের বর্ণনার ন্যায় বর্ণনা করেছেন। এটি দারেমী (১/১৮০) ও ইমাম আহমাদ (৪/৩৯-৪২) বর্ণনা করেছেন।
ইবনু লাহী’আহ যদিও দুর্বল, তার থেকে তিন আব্দুল্লাহর বর্ণনা সহীহ। যেমনটি একাধিক ইমাম বলেছেন। তার (ইবনু লাহী’আহ) থেকে এটি আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাক বর্ণনা করেছেন। তিনি হচ্ছেন তিন আব্দুল্লাহর একজন। এ বর্ণনাটি ছয়জনের বর্ণনাকে শক্তিশালী করছে এবং তিন জনের বর্ণনাকে শায হিসাবে সাব্যস্ত করছে।
আমি (আলবানী) বলছিঃ যে সব হাদীছে মাথা ও দু’ কান মাসাহ করার বিবরণ এসেছে সেগুলোতে কোন একজনও উল্লেখ করেননি যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নতুন করে পানি নিয়েছেন। যদি তা করতেন তাহলে অবশ্যই সেগুলোতে তার বিবরণ আসত। নতুন করে পানি না নেয়াটাই সুন্নাত হওয়াকে আরো শক্তিশালী করছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ বাণীঃ দু’ কান মাথারই অংশ বিশেষ।
এটি সহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে। আমি "আল-আহাদীছুস সাহীহাহ" গ্রন্থে ৩৬ নং হাদীছে আলোচনা করেছি।
মোটকথা, সুন্নতের মধ্যে এমন কিছু পাওয়া যায় না যা দু’ কান মাসাহ করার জন্য নতুন করে পানি নেয়াকে ওয়াজিব করে। বরং মাথা মাসাহ করার পর অবশিষ্ট পানি দ্বারা কানদু’টি মাসাহ করবে। এমনকি দু’ হাত ধুয়ে নেয়ার পরে দু’ হাতের অবশিষ্ট পানি দ্বারা মাথা মাসাহ করাও জায়েয। রুবাইয়ে বিনতু মুয়াওয়ায-এর হাদীছঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাতের বেঁচে যাওয়া অবশিষ্ট পশি দ্বারা মাথা মাসাহ করেছেন। এটি আবু দাউদ ও অন্য বিদ্বানগণ হাসান সনদে বর্ণনা করেছেন। যেমনটি আমি "সাহীহ আবী দাউদ" গ্রন্থে’ (১২১) বিবরণ দিয়েছি। এ হাদিছটিও আলোচ্য হাদীছটিকে দুর্বল সাব্যস্ত করে।
خذوا للرأس ماء جديدا
ضعيف جدا
-
رواه الطبراني (1 / 214 / 2) عن دهثم بن قران عن نمران بن جارية عن أبيه مرفوعا. قلت: وهذا سند ضعيف جدا دهثم قال الحافظ ابن حجر: " متروك ". وقال الهيثمي في " المجمع " (1 / 234) : " رواه الطبراني في " الكبير " وفيه دهثم بن قران ضعفه جماعة، وذكره ابن حبان في الثقات
قلت: وذكره ابن حبان في " الضعفاء " أيضا وقال (1 / 290) : " كان ممن يتفرد بالمناكير عن المشاهير، ويروي عن الثقات أشياء لا أصول لها، قال ابن معين: لا يكتب حديث ". قلت: وهذا معناه أنه متروك كما قال الحافظ، وهو قول ابن الجنيد، ومثله قول أحمد: " متروك الحديث ". وقال النسائي: " ليس بثقة
ونمران بن جارية مجهول لا يعرف كما قال الذهبي والعسقلاني. ونحو هذا الحديث في المعنى ما أخرجه البيهقي (1 / 65) من طريق الهيثم بن خارجة: حدثنا عبد الله بن وهب قال: أخبرني عمرو بن الحارث عن حبان بن واسع الأنصاري أن أباه حدثه أنه سمع عبد الله بن زيد أنه رأى رسول الله صلى الله عليه وسلم يتوضأ، فأخذ لأذنيه ماء خلاف الماء الذي أخذ لرأسه، وقال: " وهذا إسناد صحيح، وكذلك روي عن عبد العزيز بن عمران بن مقلاص وحرملة بن يحيى عن ابن وهب، ورواه مسلم بن الحجاج في " الصحيح " عن هارون بن معروف وهارون بن سعيد الأيلي وأبي الطاهر عن ابن وهب بإسناد صحيح أنه رأى رسول الله صلى الله عليه وسلم يتوضأ - فذكر وضوءه، قال - ومسح برأسه بماء غير فضل يديه، ولم يذكر الأذنين، وهذا أصح من الذي قبله
وتعقبه ابن التركماني فقال: " قلت: ذكر صاحب الإمام أنه رأى في رواية ابن المقرىء عن حرملة عن ابن وهب بهذا الإسناد وفيه: ومسح بماء غير فضل يديه لم يذكر الأذنين
قلت: فقد اختلف في هذا الحديث على ابن وهب، فالهيثم بن خارجة وابن مقلاص وحرملة بن يحيى - والعهدة في ذلك على البيهقي - رووه عنه باللفظ الأول الذي فيه أخذ الماء الجديد لأذنيه. وخالفهم ابن معروف وابن سعيد الأيلي وأبو الطاهر، فرووه عنه باللفظ الآخر الذي فيه أخذ الماء لرأسه لم يذكر الأذنين، وقد صرح البيهقي بأنه أصح كما سبق، ومعنى ذلك أن اللفظ الأول شاذ، وقد صرح بشذوذه الحافظ بن حجر في " بلوغ المرام "، ولا شك في ذلك عندي لأن أبا الطاهر وسائر الثلاثة قد تابعهم ثلاثة آخرون، وهم حجاج بن إبراهيم الأزرق، وابن أخي بن وهب - واسمه أحمد بن عبد الرحمن بن وهب، أخرجه عنهما أبو عوانة في " صحيحه " (1 / 249) ، وسريج بن النعمان عند أحمد (4 / 41) ولا ريب أن اتفاق الستة على الرواية أولى بالترجيح من رواية الثلاثة عند المخالفة، ويؤيد ذلك أن عبد الله بن لهيعة قد رواه عن حبان بن واسع مثل رواية الستة، أخرجه الدارمي (1 / 180) وأحمد (4 / 39 - 42) ، وابن لهيعة وإن كان ضعيفا، فإن رواية العبادلة الثلاثة عنه صحيحة، كما نص على ذلك غير واحد من الأئمة، وهذا مما رواه عنه عبد الله بن المبارك عند الإمام أحمد في رواية، وهو أحد العبادلة الثلاثة، فهو شاهد قوي لرواية الجماعة يؤكد شذوذ رواية الثلاثة وعليه فلا يصلح شاهدا لهذا الحديث الشديد الضعف، ولا نعلم في الباب غيره، على أنها لوكانت محفوظة لم تصلح شاهدا له لأنه أمر، وهو بظاهره يفيد الوجوب بخلاف الفعل كما هو ظاهر
إذا عرفت هذا، فقد اختلف العلماء في مسح الأذنين هل يؤخذ لهما ماء جديد أم يمسحان ببقية ما مسح به الرأس؟ فذهب إلى الأول أحمد والشافعي، قال الصنعاني (1 / 70) : " وحديث البيهقي هذا هو دليل ظاهر "، وقال في مكان آخر (1 / 65) : " والأحاديث قد وردت بهذا وهذا
قلت: وفيما قاله نظر، فإنه ليس في الباب ما يمكن الاعتماد عليه إلا حديث البيهقي وقد أشار هو إلى شذوذه، وصرح بذلك الحافظ كما سبق، فلا يحتج به، ويؤيد ذلك أن الأحاديث التي ورد فيها مسح الرأس والأذنين لم
يذكر أحد أنه صلى الله عليه وسلم أخذ ماء جديدا، ولوأنه فعل ذلك لنقل ويقويه ظاهر قوله صلى الله عليه وسلم: " الأذنان من الرأس ". قال الصنعاني (1 / 71) " وهو وإن كان في أسانيده مقال، إلا أن كثرة طرقه يشد بعضها بعضا ". قلت: بل له طريق صحيح وقد سقته وغيره في " الأحاديث الصحيحة " (رقم 36) . وخلاصة القول: أنه لا يوجد في السنة ما يوجب أخذ ماء جديد للأذنين فيمسحهما بماء الرأس، كما يجوز أن يمسح الرأس بماء يديه الباقي عليهما بعد غسلهما، لحديث الربيع بنت معوذ: " أن النبي صلى الله عليه وسلم مسح برأسه من
فضل ماء كان في يده ". أخرجه أبو داود وغيره بسند حسن كما بينته في " صحيح أبي داود " (121) وهو مم يؤكد ضعف حديث الترجمة، وبالله تعالى التوفيق