৩৫৯

পরিচ্ছেদঃ ৭৯. জাহান্নাম থেকে সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যাক্তি প্রসঙ্গ

৩৫৯ আবূ বকর ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) ... ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সবার শেষে এক ব্যাক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। সে হাটবে আবার উপূড় হয়ে পড়ে যাবে। জাহান্নামের আগুন তাকে ঝাপটা দেবে। অগ্নিসীমা অতিক্রম করার পর সে তার দিকে ফিরে দেখবে এবং বলবে, সে সত্তা কত মহিমাময়, যিনি আমাকে তোমা থেকে নাজাত দিয়েছেন। তিনি আমাকে এমন জিনিস দান করেছেন, যা পূর্বাপর কাউকেও প্রদান করেননি। এরপর তাঁর সম্মুখে একটি বৃক্ষ উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে, (যা দেখে) সে বলবে, হে প্রতিপালক! আমাকে এ বৃক্ষটির নিকটবর্তী করে দিন, যেন আমি এর ছায়া গ্রহন করতে পারি এবং এর নিচে প্রবাহিত পানি থেকে পিপাসা নিবারণ করতে পারি।

আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ হে আদম সন্তান! যদি আমি তোমাকে তা দান করি, তবে হয়তো তুমি আবার অন্য একটি প্রার্থনা করে বসবে। তখন সে বলবে, না, হে প্রভু! সে এর অতিরিক্ত আর চাইবে না বলে আল্লাহ তা’আলার কাছে অঙ্গীকার করবে এবং আল্লাহও তার ওযর গ্রহণ করবেন। কারণ সে এমন সব জিনিস প্রত্যক্ষ করেছে, যা দেখে সবর করা যায় না। অতএব, আল্লাহ জন্য তাকে ঐ বৃক্ষটির নিকটবর্তী করে দিবেন। আর সে এর ছায়া গ্রহণ করবে ও পানি পান করবে।

তারপর আবার একটি বৃক্ষ উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে; যেটি প্রথমটি অপেক্ষা অধিক সুন্দর। তা দেখেই সে প্রার্থনা করবে, হে পরওয়ারদিগার! আমাকে এর নিকটবর্তী করে দিন যেন আমি তা থেকে পানি পান করতে পারি এবং এর ছায়া গ্রহণ করতে পারি। তারপর আর কিছুর প্রার্থনা করব না। আল্লাহ উত্তর দিবেনঃ আদম সন্তান! তুমি না আমায় কসম করে বলেছিলে আর কোনটি প্রার্থনা জানাবে না। তিনি আরো বলবেনঃ যদি আমি তোমাকে তার নিকটবর্তী করে দেই, তরে তুমি হয়তো আরও কিছুর জন্য প্রার্থনা করবে। সে আর কিছু চাইবে না বলে অঙ্গীকার করবে। আল্লাহ তা’আলা তার এ ওযর কবুল করবেন। কারণ সে এমন সব জিনিস প্রত্যক্ষ করেছে যা দেখে সবর কবা যায় না। যাহোক তিনি তাকে এর নিকটবতী করে দিবেন। আর সে ছায়া গ্রহণ করবে ও পানি পান করবে।

এরপর আবার জান্নাতের দরজার কাছে আরেকটি বৃক্ষ উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে, এটি পূর্বের বৃক্ষদ্বয় অপেক্ষাও নয়নাভিরাম। তাই সে বলে উঠবে, হে প্রতিপালক! আমাকে এ বৃক্ষটির নিকটবর্তী করে দিন, যেন আমি এর ছায়া গ্রহণ করতে ও পানি পান করতে পারি। আমি আর কিছু প্রর্থেনা করব না। আল্লাহ বলবেনঃ হে আদম সন্তান! তুমি আমার কাছে আর কিছু চাইবে না বলে কসম করনি? সে উত্তরে বলবে, অবশ্যই করেছি। হে প্রভু! তবে এটই আর কিছু চাইব না। আল্লাহ তার ওযর গ্রহণ করবেন। কারণ সে এমন সব জিনিস প্রত্যক্ষ করেছে, যা দেখে সবর করা যায় না। তিনি তাকে এর নিকটবতী করে দিবেন। যখন তাকে নিকটবতী করে দেওয়া হবে, আর জান্নাতীদের কণ্ঠসূর তাঁর কানে ধ্বনিত হরে, তখন সে বলবে, হে প্রতিপালক! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিন। আল্লাহ বলবেনঃ হে আদম সন্তান! তোমার কামনা কোথায় গিয়ে শেষ হবে? আমি যদি অেমাকে পৃথিবী এবং তার সমপরিমাণ বস্তু দান করি তবে কি তুমি পরিতৃপ্ত হবে? সে বলবে, হে প্রতিপালক! আপনি কৌতূক করছেন! আপনি তো সারা জাহানের প্রভূ।

এ কথাটি বর্ণনা করতে গিয়ে বর্ণনাকারী ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হেসে ফেললেন। আর বললেন, আমি কেন হেসেছি তা তোমরা জিজ্ঞেস করলে না? তারা বলল, কেন হেসেছেন? তখন তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুরুপ হেসেছিলেন। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করেছিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! কেন হাসছেন? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এজন্য যে, ব্যাক্তিটির এ উক্তি “আপনি আমার সাথে কৌতূক করছেন, আপনি তো সারা জাহানের প্রতিপালক? শুনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হেসেছেন বলে আমিও হাসলাম। যা হোক, আল্লাহ তাকে বলবেনঃ তোমার সাথে কৌতুক করছি না। মনে রেখ, আমি আমার সকল ইচ্ছার ওপর ক্ষমতাবান।

باب آخِرِ أَهْلِ النَّارِ خُرُوجًا ‏‏

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَفَّانُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنَا ثَابِتٌ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ آخِرُ مَنْ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ رَجُلٌ فَهُوَ يَمْشِي مَرَّةً وَيَكْبُو مَرَّةً وَتَسْفَعُهُ النَّارُ مَرَّةً فَإِذَا مَا جَاوَزَهَا الْتَفَتَ إِلَيْهَا فَقَالَ تَبَارَكَ الَّذِي نَجَّانِي مِنْكِ لَقَدْ أَعْطَانِيَ اللَّهُ شَيْئًا مَا أَعْطَاهُ أَحَدًا مِنَ الأَوَّلِينَ وَالآخِرِينَ ‏.‏ فَتُرْفَعُ لَهُ شَجَرَةٌ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْنِنِي مِنْ هَذِهِ الشَّجَرَةِ فَلأَسْتَظِلَّ بِظِلِّهَا وَأَشْرَبَ مِنْ مَائِهَا ‏.‏ فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ يَا ابْنَ آدَمَ لَعَلِّي إِنْ أَعْطَيْتُكَهَا سَأَلْتَنِي غَيْرَهَا ‏.‏ فَيَقُولُ لاَ يَا رَبِّ ‏.‏ وَيُعَاهِدُهُ أَنْ لاَ يَسْأَلَهُ غَيْرَهَا وَرَبُّهُ يَعْذِرُهُ لأَنَّهُ يَرَى مَا لاَ صَبْرَ لَهُ عَلَيْهِ فَيُدْنِيهِ مِنْهَا فَيَسْتَظِلُّ بِظِلِّهَا وَيَشْرَبُ مِنْ مَائِهَا ثُمَّ تُرْفَعُ لَهُ شَجَرَةٌ هِيَ أَحْسَنُ مِنَ الأُولَى فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْنِنِي مِنْ هَذِهِ لأَشْرَبَ مِنْ مَائِهَا وَأَسْتَظِلَّ بِظِلِّهَا لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهَا ‏.‏ فَيَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ أَلَمْ تُعَاهِدْنِي أَنْ لاَ تَسْأَلَنِي غَيْرَهَا فَيَقُولُ لَعَلِّي إِنْ أَدْنَيْتُكَ مِنْهَا تَسْأَلُنِي غَيْرَهَا ‏.‏ فَيُعَاهِدُهُ أَنْ لاَ يَسْأَلَهُ غَيْرَهَا وَرَبُّهُ يَعْذِرُهُ لأَنَّهُ يَرَى مَا لاَ صَبْرَ لَهُ عَلَيْهِ فَيُدْنِيهِ مِنْهَا فَيَسْتَظِلُّ بِظِلِّهَا وَيَشْرَبُ مِنْ مَائِهَا ‏.‏ ثُمَّ تُرْفَعُ لَهُ شَجَرَةٌ عِنْدَ بَابِ الْجَنَّةِ هِيَ أَحْسَنُ مِنَ الأُولَيَيْنِ ‏.‏ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْنِنِي مِنْ هَذِهِ لأَسْتَظِلَّ بِظِلِّهَا وَأَشْرَبَ مِنْ مَائِهَا لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهَا ‏.‏ فَيَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ أَلَمْ تُعَاهِدْنِي أَنْ لاَ تَسْأَلَنِي غَيْرَهَا قَالَ بَلَى يَا رَبِّ هَذِهِ لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهَا ‏.‏ وَرَبُّهُ يَعْذِرُهُ لأَنَّهُ يَرَى مَا لاَ صَبْرَ لَهُ عَلَيْهَا فَيُدْنِيهِ مِنْهَا فَإِذَا أَدْنَاهُ مِنْهَا فَيَسْمَعُ أَصْوَاتَ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيَقُولُ أَىْ رَبِّ أَدْخِلْنِيهَا ‏.‏ فَيَقُولُ يَا ابْنَ آدَمَ مَا يَصْرِينِي مِنْكَ أَيُرْضِيكَ أَنْ أُعْطِيَكَ الدُّنْيَا وَمِثْلَهَا مَعَهَا قَالَ يَا رَبِّ أَتَسْتَهْزِئُ مِنِّي وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ ‏"‏ ‏.‏ فَضَحِكَ ابْنُ مَسْعُودٍ فَقَالَ أَلاَ تَسْأَلُونِّي مِمَّ أَضْحَكُ فَقَالُوا مِمَّ تَضْحَكُ قَالَ هَكَذَا ضَحِكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَقَالُوا مِمَّ تَضْحَكُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏"‏ مِنْ ضِحْكِ رَبِّ الْعَالَمِينَ حِينَ قَالَ أَتَسْتَهْزِئُ مِنِّي وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ فَيَقُولُ إِنِّي لاَ أَسْتَهْزِئُ مِنْكَ وَلَكِنِّي عَلَى مَا أَشَاءُ قَادِرٌ ‏"‏ ‏.‏

حدثنا ابو بكر بن ابي شيبة، حدثنا عفان بن مسلم، حدثنا حماد بن سلمة، حدثنا ثابت، عن انس، عن ابن مسعود، ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ‏"‏ اخر من يدخل الجنة رجل فهو يمشي مرة ويكبو مرة وتسفعه النار مرة فاذا ما جاوزها التفت اليها فقال تبارك الذي نجاني منك لقد اعطاني الله شيىا ما اعطاه احدا من الاولين والاخرين ‏.‏ فترفع له شجرة فيقول اى رب ادنني من هذه الشجرة فلاستظل بظلها واشرب من ماىها ‏.‏ فيقول الله عز وجل يا ابن ادم لعلي ان اعطيتكها سالتني غيرها ‏.‏ فيقول لا يا رب ‏.‏ ويعاهده ان لا يساله غيرها وربه يعذره لانه يرى ما لا صبر له عليه فيدنيه منها فيستظل بظلها ويشرب من ماىها ثم ترفع له شجرة هي احسن من الاولى فيقول اى رب ادنني من هذه لاشرب من ماىها واستظل بظلها لا اسالك غيرها ‏.‏ فيقول يا ابن ادم الم تعاهدني ان لا تسالني غيرها فيقول لعلي ان ادنيتك منها تسالني غيرها ‏.‏ فيعاهده ان لا يساله غيرها وربه يعذره لانه يرى ما لا صبر له عليه فيدنيه منها فيستظل بظلها ويشرب من ماىها ‏.‏ ثم ترفع له شجرة عند باب الجنة هي احسن من الاوليين ‏.‏ فيقول اى رب ادنني من هذه لاستظل بظلها واشرب من ماىها لا اسالك غيرها ‏.‏ فيقول يا ابن ادم الم تعاهدني ان لا تسالني غيرها قال بلى يا رب هذه لا اسالك غيرها ‏.‏ وربه يعذره لانه يرى ما لا صبر له عليها فيدنيه منها فاذا ادناه منها فيسمع اصوات اهل الجنة فيقول اى رب ادخلنيها ‏.‏ فيقول يا ابن ادم ما يصريني منك ايرضيك ان اعطيك الدنيا ومثلها معها قال يا رب اتستهزى مني وانت رب العالمين ‏"‏ ‏.‏ فضحك ابن مسعود فقال الا تسالوني مم اضحك فقالوا مم تضحك قال هكذا ضحك رسول الله صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فقالوا مم تضحك يا رسول الله قال ‏"‏ من ضحك رب العالمين حين قال اتستهزى مني وانت رب العالمين فيقول اني لا استهزى منك ولكني على ما اشاء قادر ‏"‏ ‏.‏


Ibn Mas'ud reported:
Verily the Messenger of Allah said: The last to enter Paradise would be a man who would walk once and stumble once and be burnt by the Fire once. Then when he gets beyond it, he will turn to it and say: Blessed is He Who has saved me from thee. Allah has given me something He has not given to any one of those in earlier or later times. Then a tree would be raised up for him and he will say: O my Lord I bring me near this tree so that I may take shelter in its shade and drink of its water. Allah, the Exalted and Great, would say: O son of Adam, if I grant you this, you will ask Me for something else. He would say: No. my Lord. And he would promise Him that he would not ask for anything else. His Lord would excuse him because He sees what he cannot help desiring; so He would bring him near it, and he would take shelter in its shade and drink of its water. Afterwards a tree more beautiful than the first would be raised up before him and he would say: O my Lord! bring me near this tree in order that I may drink of its water and take shelter in its shade and I shall not ask Thee for anything else. He (Allah) would say: O son of Adam, if I bring you near it you may ask me for something else. He would promise Him that he would not ask for anything else. His Lord will excuse him because He would see something he cannot help desiring. So He would bring him near it and he would enjoy its shade and drink its water. Then a tree would be raised up for him at the gate of the Paradise, more beautiful than the first two. He would say: O my Lord! bring me near this (tree) so that I may enjoy its shade and drink from its water. I shall not ask Thee for anything else. He (Allah) would say: O son of Adam! did you not promise Me that you would not ask Me anything else? He would say: Yes, my Lord, but I shall not ask Thee for anything else. His Lord would excuse him for He sees something the temptation of which he could not resist. He (Allah) would bring him near to it, and when He would bring him near it he would hear the voices of the inhabitants of the Paradise. He would say: O my Lord! admit me to it. He (Allah) would say: O son of Adam, what will bring an end to your requests to Me? Will it please you if I give you the whole world and a like one along with it? He will say: O my Lord! art Thou mocking at me, though Thou art the Lord of the worlds? Ibn Mas'ud laughed and asked (the hearers): Why don't you ask me what I am laughing at. They (then) said: Why do you laugh? He said: It is in this way that the Messenger of Allah (ﷺ) laughed. They (the companions of the Holy Prophet) asked: Why do you laugh. Messenger of Allah? He said: On account of the laugh of the Lord of the universe, when he ldesirer of Paradise) sai Thou mocking at me though Thou art the Lord of the worlds? He would say: I am not mocking at you, but I have power to do whatever I will.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
সহীহ মুসলিম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
১/ কিতাবুল ঈমান (كتاب الإيمان)