পরিচ্ছেদঃ আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার হাদীসে যে ব্যাখ্যাহীন শব্দ রয়েছে, সেটাকে ব্যাখ্যাকারী হাদীস
২১১৯. জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থ্ হলে আমরা তাঁর পিছনে সালাত আদায় করি। এসময় তিনি বসে সালাত আদায় করছিলেন। আবূ বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু তাকবীর দিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তাকবীর লোকদের শুনাচ্ছিলেন। তিনি আমাদের দিকে তাকিয়ে আমাদেরকে দাঁড়ানো দেখতে পেলাম। অতঃপর তিনি আমাদেরকে (বসার জন্য) ইশারা করলেন। ফলে আমরা বসে পড়লাম। অতঃপর যখন সালাম ফেরালেন, তখন বলেন, “তোমরা তো প্রায় পারসিক ও রোমকদের মতো করছিলে। তাদের রাজা-বাদশা বসা থাকলে, তারা দাঁড়িয়ে থাকতো। তোমরা এরকম করবে না। তোমরা তোমাদের ইমামদের অনুসরণ করবে। যদি তিনি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করেন, তবে তোমরাও দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে। আর যদি বসে সালাত আদায় করেন, তবে তোমরাও বসে সালাত আদায় করবে।”[1]
আবূ হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, “এই ব্যাখ্যাকারী হাদীসে স্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে যে, নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বাম পার্শ্বে দাঁড়িয়েছিলেন আর আবূ বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু মুক্তাদীতে পরিণত হয়েছিলেন, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সালাতের অনুসরণ করছিলেন এবং লোকদেরকে তাঁর তাকবীর শুনাচ্ছিলেন, যাতে তারা তাঁর অনুসরণ করতে পারেন। এসময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাদেরকে দেখলেন যে, তারা দাঁড়িয়ে আছেন, তখন তিনি তাদেরকে বসে সালাত আদায় করার নির্দেশ দেন। অতঃপর যখন সালাত শেষ করলেন, তখনও তিনি তাদেরকে বসে সালাত আদায় করার নির্দেশ দেন, যখন ইমাম বসে সালাত আদায় করবেন।
জাবির বিন আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেই সালাতেও উপস্থিত ছিলেন, যখন তিনি ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়েছিলেন এবং ডান পার্শ্বে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোড়া থেকে পড়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন হিজরী পঞ্চম বছরের শেষ দিকে জিলহজ্জ মাসে। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেই সালাতেও উপস্থিত ছিলেন, যখন তিনি অসুস্থতাকালিন আদায় করেছেন। অতঃপর তিনি প্রত্যেকটি হাদীস স্বস্ব শব্দে বর্ণনা করেছেন। তুমি কি দেখতে পাও না যে, তিনি এই সালাতের ক্ষেত্রে বর্ণনা করেছেন যে, আবূ বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু উচ্চ আওয়াজে তাকবীর দিচ্ছিলেন যাতে লোকজন তাঁর অনুসরণ করতে পারেন। আর যেই সালাত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোড়া থেকে পড়ে যাওয়ার পর বাড়িতে আদায় করেছেন, সেখানে মানুষকে শুনানোর জন্য তাকবীরের সময় আওয়াজ করার প্রয়োজন হয়নি, যদিও আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার ঘরটি ছোট ছিল। বস্তুত তাকবীরের সময় আওয়াজ উচু করার প্রয়োজন হয়েছিল, যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বড় মাসজিদে আদায় করছিলেন।
আমরা যা বর্ণনা করলাম, যখন তা বিশুদ্ধরুপে প্রমাণিত হলো, সুতরাং এটা জায়েয হবে না যে, এসব হাদীসগুলোর মাঝে একটিকে রহিতকারী হিসেবে সাব্যস্ত করা, যা আমরা ইতিপু্র্বে বর্ণনা করেছি।”
ذِكْرُ الْخَبَرِ الْمُفَسِّرِ لِلْأَلْفَاظِ الْمُجْمَلَةِ الَّتِي تَقَدَّمَ ذِكْرُنَا لَهَا فِي خَبَرِ عَائِشَةَ
2119 - أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْحَسَنِ بْنِ قُتَيْبَةَ قَالَ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ مَوْهَبٍ قَالَ: حَدَّثَنِي اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرٍ قَالَ: اشْتَكَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَصَلَّيْنَا وَرَاءَهُ وَهُوَ قَاعِدٌ وَأَبُو بَكْرٍ يُكَبِّرُ يُسْمِعُ النَّاسَ تَكْبِيرَهُ.
قَالَ: فَالْتَفَتَ إِلَيْنَا فَرَآنَا قِيَامًا فَأَشَارَ إِلَيْنَا فَقَعَدْنَا فَصَلَّيْنَا بِصَلَاتِهِ قُعُودًا فَلَمَّا سَلَّمَ قَالَ: (كِدْتُمْ أَنْ تَفْعَلُوا فِعْلَ فَارِسَ وَالرُّومَ يَقُومُونَ عَلَى مُلُوكِهِمْ وَهُمْ قُعُودٌ فَلَا تَفْعَلُوا ائْتَمُّوا بِإِمَامِكُمْ إِنْ صَلَّى قَائِمًا فَصَلُّوا قِيَامًا وَإِنْ صَلَّى قَاعِدًا فصلُّوا قعوداً)
الراوي : عَائِشَة | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان
الصفحة أو الرقم: 2119 | خلاصة حكم المحدث: صحيح - ((صحيح أبي داود)) (619)
قَالَ أَبُو حَاتِمٍ ـ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ـ: فِي هَذَا الْخَبَرِ الْمُفَسِّرِ بَيَانٌ وَاضِحٌ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا قَعَدَ عَنْ يَسَارِ أَبِي بَكْرٍ وَتَحَوَّلَ أَبُو بَكْرٍ مَأْمُومًا يَقْتَدِي بِصَلَاتِهِ ويُكَبِّرُ يُسْمِعُ النَّاسَ التَّكْبِيرَ لِيَقْتَدُوا بِصَلَاتِهِ أَمَرَهُمْ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَئِذٍ بِالْقُعُودِ حِينَ رَآهُمْ قِيَامًا وَلَمَّا فَرَغَ مِنْ صَلَاتِهِ أَمَرَهُمْ أَيْضًا بِالْقُعُودِ إِذَا صَلَّى إِمَامُهُمْ قَاعِدًا.
وَقَدْ شَهِدَ جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ صَلَاتهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَيْثُ سَقَطَ عَنْ فَرَسِهِ فَجُحِشَ شِقُّهُ الْأَيْمَنُ وَكَانَ سُقُوطُهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْفَرَسِ فِي شَهْرِ ذِي الْحِجَّةِ آخِرَ سَنَةِ خَمْسٍ مِنَ الْهِجْرَةِ وَشَهِدَ هَذِهِ الصَّلَاةَ فِي عِلَّتِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَدَّى كُلَّ خَبَرٍ بِلَفْظِهِ أَلَا تَرَاهُ يَذْكُرُ فِي هَذِهِ الصَّلَاةِ رَفْعَ أَبِي بَكْرٍ صَوْتَهُ بِالتَّكْبِيرِ لِيَقْتَدِيَ النَّاسُ بِهِ وَتِلْكَ الصَّلَاةُ الَّتِي صَلَّاهَا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَيْتِهِ عِنْدَ سُقُوطِهِ عَنْ فَرَسِهِ لَمْ يَحْتَجْ أَبُو بَكْرٍ إِلَى أَنْ يَرْفَعَ صَوْتَهُ بِالتَّكْبِيرِ لَيُسْمِعَ النَّاسَ تَكْبِيرَهُ عَلَى صِغَرُ حجرة عائشة وإنما كان رَفْعُهُ بِالصَّوْتِ بِالتَّكْبِيرِ فِي الْمَسْجِدِ الْأَعْظَمِ الَّذِي صَلَّى فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي عِلَّتِهِ.
فَلَمَّا صَحَّ مَا وَصَفْنَا لَمْ يَجُزْ أَنْ يُجْعَلَ بَعْضُ هَذِهِ الْأَخْبَارِ ناسخاً لم تَقَدَّمَ عَلَى حَسْبِ مَا وَصَفْنَاهُ.
হাদীসটিকে আল্লামা শুআইব আল আরনাঊত রহিমাহুল্লাহ সহীহ বলেছেন। আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (সহীহ আবূ দাঊদ: ৬১৯)