পরিচ্ছেদঃ বিপদের সময় ইন্না লিল্লাহ... বলা এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা যাতে তিনি এর বিনিময়ে উত্তম কিছু দান করেন
২৯৩৮. উম্মু সালামাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যাকে কোন বিপদ পেয়ে বসবে, সে যেন বলে, إِنَّا لِلَّهِ وَأنَا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ اللَّهُمَّ عِنْدَكَ أَحْتَسِبُ مُصِيبَتِي فَأْجُرْنِي فِيهَا وَأَبْدِلْنِي بِهَا خَيْرًا مِنْهَا (নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য, এবং নিশ্চয়ই তাঁর কাছেই ফিরে যাবো। হে আল্লাহ, আপনার নিকটই আমার মুসীবতের প্রতিদান আশা করি। অতএব আপনি আমাকে এতে প্রতিদান দান করুন এবং এর বদৌলতে এর চেয়ে উত্তম কিছু দান করুন)।”
উম্মু সালামাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন, “তারপর যখন আবূ সালামাহ মারা যান, তখন আমি উক্ত দু‘আ করি। যখনই আমি দু‘আর এই অংশে পৌঁছি “এবং এর বদৌলতে এর চেয়ে উত্তম কিছু দান করুন” তখন আমি মনে মনে বলি, “আবূ সালামাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর চেয়ে উত্তম আর কে আছে?”
তারপর যখন ইদ্দত শেষ হয়ে যায়, তখন তার কাছে আবূ বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বিবাহের জন্য প্রস্তাব পাঠায় কিন্তু তিনি তাকে বিবাহ করেননি। তারপর উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বিবাহের জন্য প্রস্তাব পাঠায় কিন্তু তিনি তাকেও বিবাহ করেননি। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিবাহের প্রস্তাব দিয়ে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে পাঠান। তখন তিনি জবাবে বলেন, “আপনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গিয়ে আমার কথা বলবেন, “নিশ্চয়ই আমি অত্যধিক ঈর্ষাপরায়ন নারী, আমার অনেকগুলো ছোট বাচ্চা রয়েছে, উপরন্তু আমার কোন অভিভাবক উপস্থিত নেই।” তারপর উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গিয়ে সেটা অবহিত করেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে বলেন, “আপনি তার কাছে পুনরায় যান এবং তাকে গিয়ে বলুন: “নিশ্চয়ই আমি অত্যধিক ঈর্ষাপরায়ন নারী” তোমার এই আপত্তির ব্যাপারে কথা হলো, আমি আল্লাহর কাছে দু‘আ করবো, যেন তিনি তোমার অত্যধিক ঈর্ষাপরায়নের এই অবস্থা দুর করে দেন। তোমার বক্তব্য “, আমার অনেকগুলো ছোট বাচ্চা রয়েছে” এই ব্যাপারে কথা হলো, “তোমার বাচ্চার দায়িত্ব নেওয়া হবে।” তোমার বক্তব্য “আমার কোন অভিভাবক উপস্থিত নেই” এই ব্যাপারে কথা হলো, তোমার উপস্থিত কিংবা অনুপস্থিত কোন অভিভাবক এটা অপছন্দ করবে না।”
তখন উম্মু সালামাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা তার ছেলেকে বলেন, “হে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু, দাঁড়াও। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বিবাহ দিয়ে দাও।” অতঃপর তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বিবাহ দিয়ে দেন।
তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাসর করার জন্য তার কাছে আসেন। যখন তিনি রাসূল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেন, তখন তিনি তার মেয়ে যাইনাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহাকে তার কোলে নেন। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলে যান। অতঃপর ব্যাপারটি আম্মার বিন ইয়াসার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু জানতে পারেন। তিনি উম্মু সালামাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার দুধ ভাই ছিলেন। অতঃপর তিনি তার কাছে এসে বলেন, “কোথায় সেই বালিকা, যার কারণে তুমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কষ্ট দিয়েছো?” তারপর তিনি তাকে নিয়ে যান। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসেন এবং তার কাছে প্রবেশ করেন। অতঃপর ঘরের কোণে দৃষ্টিপাত করতে থাকেন এবং বলেন, “যাইনাব কী করে?” জবাবে উম্মু সালামাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন, “আম্মার বিন ইয়াসার এসে নিয়ে গিয়েছেন।” তারপর তিনি তার সাথে বাসর করেন। তিনি তাকে বলেন, “আমি ওমুককে যা দিয়েছি, তার থেকে আমি তোমাকে কম দিবো না। দুটি জাঁতাকল, দুটি পাত্র, একটি বালিশ, যার ভিতরে খেজুর গাছের আঁশ রয়েছে।” তিনি তাকে আরো বলেন, “যদি আমি তোমার জন্য সাত রাত নির্ধারণ করি, তবে আমার অন্যান্য স্ত্রীদের জন্যও সাত রাত নির্ধারণ করবো।”[1]
আবু হাতিম ইবনু হিব্বান রহিমাহুল্লাহ বলেন, “হাদীসের সানাদের শব্দগুলো হলো ইবরাহিম বিন হাজ্জাজের আর হাদীসের মূল ব্ক্তব্য হলো ইয়াযিদ বিন হারূনের।”
ذِكْرُ الْأَمْرِ بِالِاسْتِرْجَاعِ لِمَنْ أَصَابَتْهُ مُصِيبَةٌ وَسُؤَالِهِ اللَّهَ جَلَّ وَعَلَا أَنْ يُبْدِلَهُ خَيْرًا مِنْهَا
2938 - أَخْبَرَنَا أَبُو يَعْلَى قَالَ: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْحَجَّاجِ السَّامِيُّ وَأَخْبَرَنَا ابْنُ خُزَيْمَةَ قَالَ: حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ ـ قَالَ يَزِيدُ: أَخْبَرَنَا وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ ـ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ عَنْ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ عَنِ ابْنِ عُمَرَ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: (مَنْ أَصَابَتْهُ مُصِيبَةٌ فَلْيَقُلْ: إِنَّا لِلَّهِ وَأَنَا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ اللَّهُمَّ عِنْدَكَ أَحْتَسِبُ مُصِيبَتِي فَأْجُرْنِي فِيهَا وَأَبْدِلْنِي بِهَا خَيْرًا مِنْهَا) فَلَمَّا مَاتَ أَبُو سَلَمَةَ قُلْتُها فَجَعَلْتُ كُلَّمَا بَلَغْتُ: (أَبْدَلَنِي خَيْرًا مِنْهَا) قُلْتُ فِي نَفْسِي: وَمَنْ خيرٌ مِنْ أَبِي سَلَمَةَ؟ فَلَمَّا انْقَضَتْ عِدَّتُهَا بَعَثَ إِلَيْهَا أَبُو بَكْرٍ يَخْطُبُهَا فَلَمْ تُزَوِّجْهُ ثُمَّ بَعَثَ إِلَيْهَا عُمَرُ يَخْطُبُهَا فَلَمْ تُزَوِّجْهُ فَبَعَثَ إِلَيْهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عُمَرُ بن الْخَطَّابِ يَخْطُبُهَا عَلَيْهِ قَالَتْ: أخْبِرْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنِّي امْرَأَةٌ غَيْرَى وَأَنِّي امْرَأَةٌ مُصْبِيَةٌ وَلَيْسَ أَحَدٌ مِنْ أَوْلِيَائِي شَاهِدًا فَأَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ: (ارْجِعْ إِلَيْهَا فَقُلْ لَهَا: أَمَّا قَوْلُكِ: إِنِّي امْرَأَةٌ غَيْرَى فَأُسْأَلُ اللَّهَ أَنْ يُذْهِبَ غَيْرَتَكِ وَأَمَّا قَوْلُكِ: إِنِّي امْرَأَةٌ مُصْبِيةٌ فَتُكْفَيْنَ صِبيانك وَأَمَّا قَوْلُكِ: إنه ليس أحد من أوليائك شاهد فَلَيْسَ مِنْ أَوْلِيَائِكِ شَاهِدٌ وَلَا غَائِبٌ يَكْرَهُ ذَلِكَ) فَقَالَتْ لِابْنِهَا: يَا عُمَرُ قُمْ فَزَوِّجْ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَزَوَّجَهُ فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْتِيهَا لِيَدْخُلَ بِهَا فَإِذَا رَأَتْهُ أَخَذَتِ ابْنَتَهَا زَيْنَبَ فَجَعَلْتُهَا فِي حِجْرِهَا فَيَنْقَلِبُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَعَلِمَ بِذَلِكَ عَمَّارُ بْنُ يَاسِرٍ ـ وَكَانَ أَخَاهَا مِنَ الرَّضَاعَةِ ـ فَجَاءَ إليها فقال: أين هَذِهِ الْمَقْبُوحَةُ الَّتِي قَدْ آذَيْتِ بِهَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخَذَهَا فَذَهَبَ بِهَا فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَدَخَلَ عَلَيْهَا فَجَعَلَ يَضْرِبُ بِبَصَرِهِ فِي جَوَانِبِ الْبَيْتِ وَقَالَ: (مَا فَعَلَتْ زَيْنَبُ؟ ) قَالَتْ: جَاءَ عَمَّارٌ فَأَخَذَهَا فَذَهَبَ بِهَا فَبَنَى بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ: (إني لا أَنْقُصُكِ مما أعطيتُ فلانة رحائين وجرَّتين وَمِرْفَقَةً حَشْوُهَا لِيفٌ) وَقَالَ: (إِنْ سَبَّعْتُ لك سَبَّعْتُ لنسائي)
الراوي : أُمّ سَلَمَةَ | المحدث : العلامة ناصر الدين الألباني | المصدر : التعليقات الحسان على صحيح ابن حبان
الصفحة أو الرقم: 2938 | خلاصة حكم المحدث: صحيح ـ ((الصحيحة)) (293): م ونحوه.
قَالَ أَبُو حَاتِمٍ ـ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ـ: لَفْظُ الْإِسْنَادِ لِإِبْرَاهِيمَ بْنِ الْحَجَّاجِ وَالْمَتْنُ لِيَزِيدَ بْنِ هارون.
আল্লামা শু‘আইব আল আরনাঊত রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। আল্লামা নাসিরুদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। (আস সহীহাহ: ২৯৩)