কুরআনের আয়াতের অনুবাদ/তাফসীর 'টি ইমেইলে পাঠাতে নিচের ফর্মটি পূরণ করুন
security code

৯৮ সূরাঃ আল-বায়্যিনাহ | Al-Bayyina | سورة البينة - আয়াত নং - ১ মাদানী

৯৮ : ১ لَمۡ یَکُنِ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا مِنۡ اَهۡلِ الۡکِتٰبِ وَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ مُنۡفَکِّیۡنَ حَتّٰی تَاۡتِیَهُمُ الۡبَیِّنَۃُ ۙ﴿۱﴾

কিতাবীদের মধ্যে যারা কুফরী করে তারা ও মুশরিকরা, তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ না আসা পর্যন্ত (নিজদের অবিশ্বাসে) অটল থাকবে। আল-বায়ান

কিতাবধারীদের মধ্যে যারা কাফির ছিল তারা আর মুশরিকরা (তাদের ভ্রান্ত মত ও পথ হতে) সরে আসত না যতক্ষণ না তাদের কাছে আসত সুস্পষ্ট প্রমাণ। তাইসিরুল

কিতাবীদের মধ্যে যারা কুফরী করেছিল এবং মুশরিকরা আপন মতে অবিচল ছিল তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমান না আসা পর্যন্ত। মুজিবুর রহমান

Those who disbelieved among the People of the Scripture and the polytheists were not to be parted [from misbelief] until there came to them clear evidence - Sahih International

১. আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা কুফরী করেছে এবং মুশরিকরণ(১), তারা নিবৃত্ত হবে না যতক্ষন না তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ আসবে(২)—

(১) আহলে কিতাব ও মুশরিক উভয় দলই কুফরী কর্মকাণ্ডে জড়িত হলেও দু’দলকে দুটি পৃথক নাম দেয়া হয়েছে। যাদের কাছে আগের নবীদের আনা কোন আসমানী কিতাব ছিল, তা যত বিকৃত আকারেই থাক না কেন, তারা তা মেনে চলতো, তাদেরকে বলা হয় আহলি কিতাব; আর তারা হল ইয়াহুদী ও নাসারীগণ। আর যারা মূর্তি-পূজারী বা অগ্নি-পূজারী, তারা-ই মুশরিক। [ইবন কাসীর]

(২) অর্থাৎ তারা তাদের কুফরী থেকে নিবৃত্ত হবে না যতক্ষণ না একটি সুস্পষ্ট প্রমাণ এসে তাদেরকে কুফরীর প্রতিটি গলদ ও সত্য বিরোধী বিষয় বুঝাবে এবং যুক্তিপ্রমাণের সাহায্যে সুস্পষ্ট পদ্ধতিতে সত্য সঠিক পথ তাদের সামনে পেশ করবে, এর মাধ্যমে তারা কুফরী থেকে বের হতে পারবে। এর মানে এ নয় যে, এই সুস্পষ্ট প্রমাণটি এসে যাবার পর তারা সাবাই কুফরী পরিত্যাগ করবে। তবে তার আসার পরও তাদের মধ্য থেকে যারা নিজেদের কুফরীর ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল তার দায়িত্ব তাদের ওপরই বর্তায়। এরপর তারা আল্লাহর কাছে অভিযোগ করতে পারবে না যে, আপনি আমাদের হেদায়াতের কোন ব্যবস্থা করেননি। আল্লাহ অন্যত্র বলেন, “অনেক রাসূল পাঠিয়েছি যাদের কথা আগে আমি আপনাকে বলেছি এবং অনেক রাসূল, যাদের কথা আপনাকে বলিনি এবং মূসার সাথে আল্লাহ সাক্ষাত কথা বলেছিলেন। এই রাসূলদেরকে সুসংবাদদানকারী ও সতর্ককারী করা হয়েছে যাতে রাসূলদের পর লোকদের জন্য আল্লাহর বিরুদ্ধে কোন যুক্তি না থাকে।” [সূরা আন-নিসা: ১৬৪–১৬৫]

আরও বলেন, “হে আহলে কিতাব! রাসূলদের সিলসিলা দীর্ঘকাল বন্ধ থাকার পর প্রকৃত সত্যকে সুস্পষ্ট করার জন্য তোমাদের কাছে আমার রাসূল এসেছে। যাতে তোমরা বলতে না পারো আমাদের কাছে না কোন সুসংবাদদানকারী এসেছিল, না এসেছিল কোন সতর্ককারী। কাজেই নাও, এখন তোমাদের কাছে সুসংবাদদানকারী এসে গেছে এবং সতর্ককারীও।” [সূরা আল-মায়িদাহ: ১৯]

তাফসীরে জাকারিয়া

১। আহলে কিতাব[1] ও মুশরিকদের[2] মধ্যে যারা কুফরী করেছিল, তারা আপন মতে অবিচলিত ছিল, যতক্ষণ না এল তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ;

[1] এ থেকে উদ্দেশ্য ইয়াহুদী ও নাসারা (খ্রিষ্টান)।

[2] ‘মুশরিক’ (অংশীবাদী) বলে আরব এবং অনারবের ঐ সমস্ত লোকদেরকে বুঝানো হয়েছে যারা অগ্নি ও মূর্তি পূজা করত। مُنفَكِّين মানে বিরত বা বিচলিত। البَيِّنة (দলীল বা সুস্পষ্ট প্রমাণ) বলে নবী (সাঃ)-কে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, ইয়াহুদী ও নাসারা, আরব এবং অনারবের মুশরিক বা অংশীবাদীরা নিজেদের কুফর ও শিরক থেকে ফিরে আসার নয়; যতক্ষণ পর্যন্ত না মুহাম্মাদ (সাঃ) তাদের নিকট পবিত্র কুরআনসহ এসে উপস্থিত হয়েছেন এবং তাদের অজ্ঞতা ও ভ্রষ্টতা ব্যক্ত করে তাদেরকে ইসলামের প্রতি আহবান করেছেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান