ইল্লিয়্যীন (ইল্লীন) বিষয়ক আয়াতসমূহ ৪ টি
৮৩ আল-মুতাফফিফীন
৮৩:১৮ کَلَّاۤ اِنَّ کِتٰبَ الۡاَبۡرَارِ لَفِیۡ عِلِّیِّیۡنَ ﴿ؕ۱۸﴾

কখনো নয়, নিশ্চয় নেককার লোকদের আমলনামা থাকবে ইল্লিয়্যীনে ।* আল-বায়ান

(ভাল-মন্দের বিচার হবে না, শাস্তি-পুরস্কার কিছুই হবে না তা) কক্ষনো না, নিশ্চয়ই সৎলোকদের ‘আমালমানা ‘ইল্লিয়ীনে (সংরক্ষিত) আছে। তাইসিরুল

অবশ্যই পুণ্যবানদের ‘আমলনামা ইল্লিয়্যীনে থাকবে, মুজিবুর রহমান

No! Indeed, the record of the righteous is in 'illiyyun. Sahih International

*আমল নামা। অথবা সপ্তম আকাশে জান্নাতের নিচে অবস্থিত একটি স্থান। অথবা জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ স্থান।

১৮. কখনো নয়, নিশ্চয় পূণ্যবানদের আমলনামা ইল্লিয়্যীনে(১),

(১) কারও কারও মতে عِلِّيِّينَ শব্দটি علوّ এর বহুবচন। উদ্দেশ্য উচ্চতা। [ইবন কাসীর] আবার কেউ কেউ বলেন, এটা জায়গার নাম- বহুবচন নয়। [কুরতুবী; ইবন কাসীর] বারা ইবনে আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর হাদীসে এসেছে যে, ফেরশেতাগণ রূহ নিয়ে উঠতেই থাকবেন حَتّٰى يُنْتَهٰى بِهِ إِلَى السَّمَاءَ السَّابِعَةِ فَيَقُوْلُ اللهُ عزَّ وَجَلَّ اكْتُبُوا كِتَابَ عَبْدِي فِي عِلِّيِّينَ “শেষ পর্যন্ত সপ্তম আসমানে উঠবেন তখন মহান আল্লাহ বলবেন, আমার বান্দার কিতাব ইল্লিয়্যীনে লিখে নাও।” [মুসনাদে আহমাদ: ৪/২৮৭]। এ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ইল্লিয়্যীন সপ্তম আকাশে আরশের কাছে এক স্থানের নাম। এতে মুমিনদের রূহ ও আমলনামা রাখা হয়। [ইবন কাসীর ইবন আব্বাস থেকে]

তাফসীরে জাকারিয়া

১৮। অবশ্যই পুণ্যবানদের আমলনামা ইল্লিয়্যীনে থাকবে। [1]

[1] عليين (ইল্লিয়্যীন) শব্দটি علو থেকে এসেছে (যার অর্থ মহা উচ্চ), এটা হল ‘সিজ্জীন’ শব্দের বিপরীত। এটা আসমানে অথবা জান্নাতে কিংবা সিদরাতুল মুন্তাহায় কিংবা আরশের নিকটবর্তী এক স্থান। যেখানে নেক লোকদের আত্মা এবং তাদের আমল-নামা সংরক্ষিত আছে। যার নিকটে আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত ফিরিশতা উপস্থিত হন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৮৩ আল-মুতাফফিফীন
৮৩:১৯ وَ مَاۤ اَدۡرٰىکَ مَا عِلِّیُّوۡنَ ﴿ؕ۱۹﴾

কিসে তোমাকে জানাবে ‘ইল্লিয়্যীন’ কী? আল-বায়ান

তুমি কি জান ইল্লিয়ীন কী? তাইসিরুল

ইল্লিয়্যীন কি তা কি তুমি জান? মুজিবুর রহমান

And what can make you know what is 'illiyyun? Sahih International

১৯. আর কিসে আপনাকে জানাবে ইল্লিয়্যীন কী?

-

তাফসীরে জাকারিয়া

১৯। কিসে তোমাকে জানাল, ইল্লিয়্যীন কি?

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৮৩ আল-মুতাফফিফীন
৮৩:২০ کِتٰبٌ مَّرۡقُوۡمٌ ﴿ۙ۲۰﴾

লিখিত কিতাব। আল-বায়ান

সীলমোহরকৃত কিতাব। তাইসিরুল

(তা হচ্ছে) লিখিত পুস্তক। মুজিবুর রহমান

It is [their destination recorded in] a register inscribed Sahih International

২০. চিহ্নিত আমলনামা।(১)

(১) এখানেও এটাই সঠিক যে, এটা ‘ইল্লীয়্যীন’ এর কোন বিশেষণ নয়, বরং পূর্বে উল্লেখিত (كِتَابَ الْأَبْرَارِ) এর বিশেষণ। [দেখুন: কুরতুবী; ইবন কাসীর] এর প্রমাণ উপরোক্ত বারা ইবনে আযেব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীসে এসেছে, فَيَقُوْلُ اللهُ عزَّ وَجَلَّ اكْتُبُوا كِتَابَ عَبْدِي فِي عِلِّيِّينَ “অতঃপর মহান আল্লাহ্ বলবেন, আমার বান্দার আমলনামা ইল্লিয়্যীনে লিখে রাখ”। সুতরাং ইল্লিয়্যীন কিতাব নয় বরং আমলনামা বা কিতাব কপি করে রাখার স্থান।

তাফসীরে জাকারিয়া

২০ (তা হচ্ছে) লিপিবদ্ধ পুস্তক।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
৮৩ আল-মুতাফফিফীন
৮৩:২১ یَّشۡهَدُهُ الۡمُقَرَّبُوۡنَ ﴿ؕ۲۱﴾

নৈকট্যপ্রাপ্তরাই তা অবলোকন করে। আল-বায়ান

আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত (ফেরেশতারা) তার তত্ত্বাবধান করে। তাইসিরুল

আল্লাহর সান্নিধ্য প্রাপ্তরা ওটা প্রত্যক্ষ করবে। মুজিবুর রহমান

Which is witnessed by those brought near [to Allah]. Sahih International

২১. (আল্লাহর) সান্নিধ্যপ্রাপ্তরাই তা অবলোকন করে।(১)

(১) يشهد শব্দটি شهود থেকে উদ্ভূত। شهود এর এক অর্থ প্রত্যক্ষ করা, তত্ত্বাবধান করা। তখন আয়াতের উদ্দেশ্য হবে এই যে, সৎকর্মশীলদের আমলনামার প্রতি আসমানের নৈকট্যশীল ফেরেশতাগণ দেখবে অর্থাৎ তত্ত্বাবধান ও হেফাযত করবে। [ইবন কাসীর] তাছাড়া شهود এর আরেক অর্থ উপস্থিত হওয়া। [উসাইমীন, তাফসীরুল কুরআনিল আযীম]। তখন يشهده এর সর্বনাম দ্বারা ইল্লিয়্যীন বোঝানো হবে। আর এর অর্থ হবে, প্রতি আসমানের নৈকট্যপ্রাপ্তগণ সেখানে হাজির হবেন এবং সেটাকে হেফাযত করবেন; কেননা এটা নেক আমলকারীর জন্য জাহান্নাম থেকে নিরাপত্তা পত্র এবং জান্নাতে যাওয়ার সফলতার গ্যারান্টি। [আইসারুত তাফসীর]

এটা ঐ সময়ই হবে, যখন ইল্লিয়্যীন দ্বারা আমলনামা বোঝানো হবে। আর যদি ইল্লিয়্যীন দ্বারা নৈকট্যপ্রাপ্তদের রূহের স্থান ধরা হয়, তখন আয়াতের অর্থ হবে, নৈকট্যশীলগণের রূহ এই ইল্লিয়্যীন নামক স্থানে উপস্থিত হবে। সে হিসেবে ইল্লিয়্যীন ঈমানদারদের রুহের আবাসস্থল; যেমন সিজ্জীন কাফেরদের রূহের আবাসস্থল। এর স্বপক্ষে একটি হাদীস থেকে ধারণা পাওয়া যায়, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বৰ্ণিত একটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “শহীদগণের রূহ আল্লাহর সান্নিধ্যে সবুজ পাখিদের মধ্যে থাকবে এবং জান্নাতের বাগ-বাগিচা ও নহরসমূহে ভ্রমণ করবে। তাদের বাসস্থানে আরশের নিচে ঝুলন্ত প্ৰদীপ থাকবে।” [মুসলিম: ১৮৮৭]

এ থেকে বোঝা গেল যে, শহীদগণের রূহ আরশের নিচে থাকবে এবং জান্নাতে ভ্ৰমণ করতে পারবে। তাছাড়া পবিত্র কুরআনের অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, (عِندَ سِدْرَةِ الْمُنتَهَىٰ عِندَهَا جَنَّةُ الْمَأْوَىٰ) এ থেকে পরিষ্কার জানা যায় যে, জান্নাত সিদরাতুল মুনতাহার সন্নিকটে। সিদরাতুল মুনতাহা যে সপ্তম আকাশে, এ কথা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। তাই আত্মার স্থান ইল্লিয়্যীন জান্নাতের সংলগ্ন এবং আত্মাসমূহ জান্নাতের বাগিচায় ভ্ৰমণ করে। অতএব, আত্মার স্থান জান্নাতও বলা যায়। তাই কোন কোন মুফাস্‌সির ইল্লিয়্যীন এর ব্যাখ্যা করেছেন জান্নাত। [সা'দী]

তাফসীরে জাকারিয়া

২১। আল্লাহর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত (ফিরিশতা)গণ তা প্রত্যক্ষ করে।

-

তাফসীরে আহসানুল বায়ান
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৪ পর্যন্ত, সর্বমোট ৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে