-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১. আলিফ, লাম, মীম, সাদ।(১)
(১) এ হরফগুলোকে ‘হুরুফে মুকাত্তা'আত’ বলে। এ সম্পর্কে সূরা আল-বাকারার প্রথমে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
তাফসীরে জাকারিয়া(১) আলিফ লা-ম মী-ম স্বা-দ।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২. এ কিতাব(১) আপনার প্রতি নাযিল করা হয়েছে, সুতরাং আপনার মনে যেন এ সম্পর্কে কোন সন্দেহ(২) না থাকে। যাতে আপনি এর দ্বারা সতর্ক করতে পারেন।(৩) আর তা মুমিনদের জন্য উপদেশ।
(১) কিতাব বলতে এখানে কি বোঝানো হয়েছে এ ব্যাপারে সবচেয়ে স্বচ্ছমত হল- পবিত্র কুরআনকেই বুঝানো হয়েছে। [বাগভী] কারো কারো মতে এখানে শুধু এ সূরার প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে। [আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর]
(২) হারাজ হবার মানে হচ্ছে এই যে, বিরোধিতা ও বাধা-বিপত্তির মধ্য দিয়ে নিজের পথ পরিষ্কার না দেখে মানুষের মন সামনে এগিয়ে চলতে পারে না; থেমে যায়। তাই মুজাহিদ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, এখানে ‘হারাজ’ বলে ‘সন্দেহ' বুঝানো হয়েছে। [আত-তাফসীরুস সহীহ] কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে এ বিষয়বস্তুকে ‘দাইকে সদর’ শব্দের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। যেমন, সূরা আল-হিজরঃ ৯৭, সূরা আন-নাহলঃ ১২৭, সূরা আন-নামলঃ ৭০, সূরা হুদঃ ১২।
(৩) এ আয়াতে কাদেরকে সতর্ক করতে হবে তা বলা হয়নি। অন্য আয়াতে তা বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহ বলেন, “এবং বিতণ্ডাপ্রিয় সম্প্রদায়কে তা দ্বারা সতর্ক করতে পারেন।” [মারইয়াম: ৯৭] আরও বলেন, “বস্তুত এটা আপনার রব-এর কাছ থেকে দয়াস্বরূপ, যাতে আপনি এমন এক কওমকে সতর্ক করতে পারেন, যাদের কাছে আপনার আগে কোন সতর্ককারী আসেনি, যেন তারা উপদেশ গ্রহণ করে। [আল-কাসাস: ৪৬] আরও বলেন, “বরং তা আপনার রব হতে আগত সত্য, যাতে আপনি এমন এক সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারেন, যাদের কাছে আপনার আগে কোন সতর্ককারী আসেনি, হয়তো তারা হিদায়াত লাভ করবে। [সূরা আস-সাজদাহ: ৩] অনুরূপভাবে এ আয়াতে কিসের থেকে সতর্ক করতে হবে তাও বলা হয়নি। অন্যত্র তা বলে দেয়া হয়েছে, যেমন, “তার কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য।” [সূরা আল-কাহাফ: ২] “অতঃপর আমি তোমাদেরকে লেলিহান আগুন সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছি [সূরা আল-লাইল: ১৪] এ আয়াতে ভীতিপ্রদর্শন এবং সুসংবাদ প্রদান একসাথে বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে ভীতিপ্রদর্শন কাফেরদের জন্য আর সুসংবাদ মুমিনদের জন্য। [আদওয়াউল বায়ান]
তাফসীরে জাকারিয়া(২) তোমার নিকট কিতাব অবতীর্ণ করা হয়েছে; সুতরাং তোমার মনে যেন এর সম্পর্কে কোন প্রকার সংকীর্ণতা না থাকে।[1] যাতে তুমি এর দ্বারা সতর্ক কর এবং বিশ্বাসীদের জন্য এটি উপদেশ।
[1] অর্থাৎ, এর প্রচারের ব্যাপারে তোমার অন্তরে এই মনে করে যেন সংকীর্ণতা সৃষ্টি না হয় যে, হয়তো কাফেররা আমাকে মিথ্যাবাদী ভাববে, আমাকে কষ্ট দেবে। কারণ, মহান আল্লাহই হলেন তোমার রক্ষাকর্তা ও সাহায্যকারী। অথবা حَرَج অর্থ, সন্দেহ। অর্থাৎ, এটা যে আল্লাহ কর্তৃক অবতীর্ণ করা হয়েছে -এ ব্যাপারে যেন তুমি তোমার অন্তরে সন্দেহ অনুভব না কর। এখানে নিষেধ-সূচক বাক্য দিয়ে নবীকে সম্বোধন করা হলেও প্রকৃতার্থে সম্বোধন করা হয়েছে উম্মতকে। অর্থাৎ, তারা যেন সন্দেহ না করে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩. তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে যা নাযিল করা হয়েছে, তোমরা তার অনুসরণ কর এবং তাকে ছাড়া অন্য কাউকে অভিভাবকরূপে অনুসরণ করো না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর।(১)
(১) অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকেই নিজের পথ প্রদর্শক হিসেবে মেনে নিতে হবে এবং আল্লাহ তার রাসূলদের মাধ্যমে যে হিদায়াত ও পথ-নির্দেশনা দিয়েছেন একমাত্র তারই অনুসরণ করতে হবে। যারাই আল্লাহকে বাদ দিয়ে এবং আল্লাহর পাঠানো নবীর আদর্শ অনুসরণ না করে অন্যের কাছ থেকে কিছু নিতে চেষ্টা করবে, তারাই আল্লাহর হুকুমকে বাদ দিয়ে অন্যের হুকুম গ্রহণ করল। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া(৩) তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে, তোমরা তার অনুসরণ কর[1] এবং তাঁকে ছাড়া অন্যদেরকে অভিভাবকরূপে অনুসরণ করো না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ করে থাক।
[1] যা আল্লাহ কর্তৃক অবতীর্ণ করা হয়েছে অর্থাৎ, কুরআন এবং যা রসূল (সাঃ) বলেছেন অর্থাৎ, হাদীস। কেননা, তিনি (সাঃ) বলেছেন, ‘‘আমাকে কুরআন এবং তারই মত তার সাথে (আরো একটি জিনিস) দেওয়া হয়েছে।’’ এই উভয়েরই অনুসরণ করা অত্যাবশ্যক। এ ছাড়া আর কারো অনুসরণ করা চলবে না, বরং তা অস্বীকার করা জরুরী। যেমন, পরবর্তী অংশে বলেন, ‘‘আর তাঁকে বাদ দিয়ে (মনগড়া) অভিভাবকদের অনুসরণ করো না।’’ যেমন, জাহেলী যুগে সর্দার, জ্যোতিষী ও গণকদের কথার বড়ই গুরুত্ব দেওয়া হত, এমন কি হালাল ও হারাম করার ব্যাপারেও তাদেরকেই দলীল মানা হত।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৪. আর এমন বহু জনপদ রয়েছে, যা আমরা ধ্বংস করে দিয়েছি। তখনই আমাদের শাস্তি তাদের উপর আপতিত হয়েছিল রাতে অথবা দুপুরে যখন তারা বিশ্রাম করছিল।(১)
(১) পূর্ববর্তী লোকদের উপর রাতে বা দুপুরে যে শাস্তি এসেছিল তার বর্ণনা দিয়ে আল্লাহ তা'আলা মানুষদেরকে সতর্ক করছেন। অন্য আয়াতেও বলা হয়েছে, “তবে কি জনপদের অধিবাসীরা নিরাপদ হয়ে গেছে যে, আমাদের শাস্তি তাদের উপর রাতে আসবে, যখন তারা থাকবে গভীর ঘুমে? নাকি জনপদের অধিবাসীরা নিরাপদ হয়ে গেছে যে, আমাদের শাস্তি তাদের উপর আসবে দিনের বেলা, যখন তারা খেলাধুলায় মেতে থাকবে?” [সূরা আল-আরাফ: ৯৭–৯৮] আরও বলেন, “বলুন, তোমরা আমাকে জানাও, যদি তার শাস্তি তোমাদের উপর রাতে অথবা দিনে এসে পড়ে, তবে অপরাধীরা তার কোনটিকে তাড়াতাড়ি পেতে চায়। [সূরা ইউনুস: ৫০]
বিশেষ করে যারাই খারাপ কুটকৌশল ও ষড়যন্ত্র করেছে তাদের পরিণতি যে কি ভয়াবহ হতে পারে সে ব্যাপারেও অন্যত্র আল্লাহ সাবধান করেছেন, “যারা কুকর্মের ষড়যন্ত্র করে তারা কি এ বিষয়ে নির্ভয় হয়েছে যে, আল্লাহ তাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করবেন না অথবা তাদের উপর আসবে না শাস্তি এমনভাবে যে, তারা উপলব্ধিও করবে না? অথবা চলাফেরা করতে থাকাকালে তিনি তাদেরকে পাকড়াও করবেন না? অতঃপর তারা তা ব্যর্থ করতে পারবে না। অথবা তাদেরকে তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় পাকড়াও করবেন না? নিশ্চয় তোমাদের রব অতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।” [আন-নাহ্ল: ৪৫–৪৬]
তাফসীরে জাকারিয়া(৪) কত জনপদকে আমি ধ্বংস করেছি! আমার শাস্তি তাদের উপর আপতিত হয়েছিল রাত্রিতে অথবা দ্বিপ্রহরে যখন তারা বিশ্রামরত ছিল। [1]
[1] قَائِلُوْنَ শব্দটি قَيْلُوْلَةٌ থেকে গঠিত। দুপুরের সময় বিশ্রাম করাকে বলা হয়। অর্থ হল, আমার আযাব হঠাৎ করে এমন সময় এল, যখন তারা বিশ্রামের জন্য বিছানায় বেখবর অবস্থায় তৃপ্তিকর নিদ্রায় বিভোর ছিল।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৫. অতঃপর যখন আমাদের শাস্তি তাদের উপর আপতিত হয়েছিল, তখন তাদের দাবী শুধু এই ছিল যে, তারা বলল, নিশ্চয় আমরা যালিম ছিলাম।(১)
(১) অন্য আয়াতেও আল্লাহ তা’আলা তাদের এ অবস্থার কথা বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ বলেন, “আর আমরা ধ্বংস করেছি বহু জনপদ, যার অধিবাসীরা ছিল যালেম এবং তাদের পরে সৃষ্টি করেছি অন্য জাতি। তারপর যখন তারা আমাদের শাস্তি টের পেল তখনই তারা সেখান থেকে পালাতে লাগল। ‘পালিয়ে যেও না এবং ফিরে এসো যেখানে তোমরা বিলাসিতায় মত্ত ছিলে ও তোমাদের আবাসগৃহে, যাতে এ বিষয়ে তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হয়।” [সূরা আল-আম্বিয়া ১১-১৩]
তাফসীরে জাকারিয়া(৫) যখন আমার শাস্তি তাদের উপর আপতিত হয়েছিল, তখন তাদের কথা শুধু এটিই ছিল যে, নিশ্চয় আমরা সীমালংঘন করেছি। [1]
[1] কিন্তু আযাব এসে যাওয়ার পর এই ধরনের স্বীকারোক্তির কোনই লাভ নেই। যেমন, পূর্বেও এ কথা উল্লিখিত হয়েছে।{فَلَمْ يَكُ يَنْفَعُهُمْ إِيمَانُهُمْ لَمَّا رَأَوْا بَأْسَنَا} অর্থাৎ, যখন তারা আমার শাস্তি প্রত্যক্ষ করল, তখন তাদের ঈমান কোন উপকারে আসল না। (সূরা মু’মিনঃ ৮৫)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৬. অতঃপর যাদের কাছে রাসূল পাঠানো হয়েছিল অবশ্যই তাদেরকে আমরা জিজ্ঞেস করব এবং রাসূলগণকেও অবশ্যই আমরা জিজ্ঞেস করব।(১)
(১) অর্থাৎ কেয়ামতের দিন সর্বসাধারণকে জিজ্ঞেস করা হবে, আমি তোমাদের কাছে রাসূল ও গ্রন্থসমূহ প্রেরণ করেছিলাম, তোমরা তাদের সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছিলে? নবীগণকে জিজ্ঞেস করা হবেঃ যেসব বার্তা ও বিধান দিয়ে আমি আপনাদেরকে প্রেরণ করেছিলাম, সেগুলো আপনারা নিজ নিজ উম্মতের কাছে পৌছিয়েছেন কি না? এ আয়াতে রাসূলদেরকে কোন বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে এবং প্রেরিত লোকদেরকে কোন বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে তা বর্ণনা করা হয়নি। তবে কুরআনের অন্যত্র সেটা বর্ণিত হয়েছে। যেমন প্রথমটি সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, “স্মরণ করুন, যেদিন আল্লাহ রাসূলগণকে একত্র করবেন এবং জিজ্ঞেস করবেন, আপনারা কি উত্তর পেয়েছিলেন? [সূরা আল-মায়িদাহ: ১০৯] আর দ্বিতীয়টি সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, আর সেদিন আল্লাহ এদেরকে ডেকে বলবেন, তোমরা রাসূলগণকে কী জবাব দিয়েছিলে? [সূরা আল-কাসাস: ৬৫] অন্যত্র আল্লাহ বলেন যে, তিনি মানুষদেরকে তাদের আমল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন, “কাজেই শপথ আপনার রবের! অবশ্যই আমরা তাদের সবাইকে প্রশ্ন করবই, সে বিষয়ে, যা তারা আমল করত। [সূরা আল-হিজর: ৯২–৯৩]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজের ভাষণে উপস্থিত জনতাকে প্রশ্ন করেছিলেনঃ কেয়ামতের দিন আমার সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে যে, আমি আল্লাহর বাণী পৌছিয়েছি কি না? তখন তোমরা উত্তরে কি বলবে? সাহাবায়ে কেরাম বললেনঃ আমরা বলব, আপনি আল্লাহর বাণী আমাদের কাছে পৌছিয়ে দিয়েছেন এবং আল্লাহ-প্রদত্ত দায়িত্ব যথাযথ পালন করেছেন। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আল্লাহ, আপনি সাক্ষী থাকুন। [মুসলিমঃ ১২১৮]
অপর বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা'আলা আমাকে জিজ্ঞেস করবেনঃ আমি তার বাণী তার বান্দাদের কাছে পৌছিয়েছি কি না। আমি উত্তরে বলবঃ পৌছিয়েছি। কাজেই এখানে তোমরা এ বিষয়ে সচেষ্ট হও যে, যারা এখন উপস্থিত রয়েছ, তারা যেন অনুপস্থিতদের কাছে আমার বাণী পৌছে দেয়। [মুসনাদে আহমাদঃ ৫/৪]
তাফসীরে জাকারিয়া(৬) অতঃপর যাদের নিকট রসূল প্রেরণ করা হয়েছিল, তাদেরকে আমি অবশ্যই জিজ্ঞাসা করব এবং অবশ্যই জিজ্ঞাসা করব রসূলগণকেও। [1]
[1] প্রত্যেক উম্মতকেই জিজ্ঞাসা করা হবে যে, ‘তোমাদের কাছে কি আমার পয়গম্বর এসেছিল? তারা কি তোমাদের কাছে আমার বার্তা পৌঁছে দিয়েছিল?’ সেখানে তারা উত্তর দেবে, ‘হ্যাঁ, হে আল্লাহ! পয়গম্বর অবশ্যই আমাদের কাছে এসেছিলেন, কিন্তু আমরাই ছিলাম হতভাগ্য যে, তাঁদের কোন পরোয়া করিনি।’ আর নবীদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে যে, ‘তোমরা আমার বার্তা উম্মতের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলে কি না? তারা এর মোকাবেলায় কি আচরণ প্রদর্শন করেছিল?’ নবীরা এ প্রশ্নের উত্তর দেবেন। এর বিশ্লেষণ কুরআন মাজীদের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যমান রয়েছে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৭. অতঃপর অবশ্যই আমরা তাদের কাছে পূর্ণ জ্ঞানের সাথে তাদের কাজগুলো বিবৃত করব, আর আমরা তো অনুপস্থিত ছিলাম না।(১)
(১) আল্লাহ তা'আলা এ আয়াতে বলছেন যে, তিনি তার বান্দারা ছোট, বড়, গুরুত্বপূর্ণ, গুরুত্বহীন যা করত বা বলত সবকিছু সম্পর্কে কিয়ামতের মাঠে বিস্তারিত জানাবেন। তিনি বেখবর নন। বরং তিনি চোখের খিয়ানত ও অন্তরের গোপন ভেদ সম্পর্কেও অবগত। আল্লাহ বলেন, “তার অজানায় একটি পাতাও পড়ে না। মাটির অন্ধকারে এমন কোন শস্যকণাও অংকুরিত হয় না বা রসযুক্ত কিংবা শুষ্ক এমন কোন বস্তু নেই যা সুস্পষ্ট কিতাবে নেই [সূরা আল-আনআম: ৫৯] [ইবন কাসীর] সুতরাং আল্লাহ হাশরের মাঠে তাদেরকে যা জানাবেন তা জ্ঞানের ভিত্তিতেই জানাবেন। দুনিয়াতে যা কিছুই ঘটেছে সবই তার জ্ঞানের মধ্যে রয়েছে। সবকিছু তিনি জানার পরও তাঁর ফেরেশতাদের দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছেন। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, “আপনি কি লক্ষ্য করেন না যে, আসমানসমূহ ও যমীনে যা কিছু আছে আল্লাহ তা জানেন? তিন ব্যক্তির মধ্যে এমন কোন গোপন পরামর্শ হয় না যাতে চতুর্থ জন হিসেবে তিনি উপস্থিত থাকেন না এবং পাঁচ ব্যক্তির মধ্যেও হয় না যাতে ষষ্ট জন হিসেবে তিনি উপস্থিত থাকেন না।
তারা এর চেয়ে কম হোক বা বেশী হোক তিনি তো তাদের সংগেই আছেন তারা যেখানেই থাকুক না কেন। তারপর তারা যা করে, তিনি তাদেরকে কিয়ামতের দিন তা জানিয়ে দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছু সম্পর্কে সম্যক অবগত। [সূরা আল-মুজাদালাহ: ৭] অন্যত্র বলেন, “তিনি জানেন যা যমীনে প্রবেশ করে এবং যা তা থেকে নির্গত হয় আর যা আসমান থেকে নাযিল হয় এবং যা কিছু তাতে উত্থিত হয়। [সূরা সাবা: ২] আরও বলেন, “তিনি জানেন যা কিছু যমীনে প্রবেশ করে ও যা কিছু তা থেকে বের হয় এবং আসমান হতে যা কিছু নামে ও আসমানে যা কিছু উত্থিত হয়। তোমরা যেখানেই থাক না কেন—তিনি (জ্ঞানে) তোমাদের সংগে আছেন।” [সূরা আল-হাদীদ: ৪] আরও বলেন, “আর আপনি যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন এবং আপনি সে সম্পর্কে কুরআন থেকে যা-ই তিলাওয়াত করেন এবং তোমরা যে কাজই কর না কেন, আমরা তোমাদের সাক্ষী থাকি- যখন তোমরা তাতে প্রবৃত্ত হও। আর আসমানসমূহ ও যমীনের অণু পরিমাণও আপনার রবের দৃষ্টির বাইরে নয় এবং তার চেয়ে ক্ষুদ্রতর বা বৃহত্তর কিছুই নেই যা সুস্পষ্ট কিতাবে নেই। [সূরা ইউনুস: ৬১] [আদওয়াউল বায়ান]
তাফসীরে জাকারিয়া(৭) তারপর অবশ্যই আমি তাদের নিকট সজ্ঞানে তাদের কার্যাবলী বিবৃত করব।[1] আর আমি তো অনুপস্থিত ছিলাম না।
[1] যেহেতু আমি প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য প্রত্যেক বিষয়ের খবর রাখি, তাই (উম্মত ও পয়গম্বর) উভয়ের সামনেই সমস্ত ব্যাপার বিবৃত করব এবং তারা যা যা করেছিল, তা সবই তাদের সামনে পেশ করে দেব।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৮. আর সেদিন ওজন(১) যথাযথ হবে।(২) সুতরাং যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই সফলকাম হবে।(৩)
(১) সেদিনের সে দাঁড়িপাল্লায় কোন অপরাধীর অপরাধ বাড়িয়ে দেয়া হবে না। আর কোন নেককারের নেক কমিয়ে দেয়া হবে না। [আদওয়াউল বায়ান] অন্য আয়াতেও আল্লাহ সেটা বলেছেন, “আর কেয়ামতের দিনে আমরা ন্যায়বিচারের মানদণ্ড স্থাপন করব, সুতরাং কারো প্রতি কোন যুলুম করা হবে না এবং কাজ যদি শস্য দানা পরিমাণ ওজনেরও হয় তবুও তা আমরা উপস্থিত করব।” [সূরা আল-আম্বিয়া: ৪৭] তবে আল্লাহ তা'আলা কোন কোন নেক বান্দার আমলকে বহুগুণ বর্ধিত করবেন। আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয় আল্লাহ অণু পরিমাণও যুলুম করেন না। আর কোন পুণ্য কাজ হলে আল্লাহ সেটাকে বহুগুণ বর্ধিত করেন এবং আল্লাহ তার কাছ থেকে মহাপুরস্কার প্রদান করেন।” [সূরা আন-নিসা: ৪০] অনুরূপভাবে ‘হাদীসে বিতাকাহ’ নামে বিখ্যাত হাদীসেও [দেখুন, ইবন মাজাহঃ ৪৩০০; তিরমিযী ২১২৭] সেটা বর্ণিত হয়েছে।
(২) এ আয়াতে বলা হয়েছেঃ “সেদিন যে ভাল-মন্দ কাজকর্মের ওজন হবে তা সত্য সঠিকভাবেই হবে।” এতে কোনরূপ সন্দেহের অবকাশ নেই। এখানে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, এতে মানুষ ধোঁকায় পড়তে পারে যে, যেসব বস্তু ভারী, সেগুলোর ওজন ও পরিমান হতে পারে। মানুষের ভাল-মন্দ কাজকর্ম কোন জড় পদার্থ নয় যে, এগুলোকে ওজন করা যেতে পারে। এমতাবস্থায় কাজকর্মের ওজন কিরূপে করা হবে? উত্তর এই যে, প্রথমতঃ আল্লাহ্ তা'আলা সর্বশক্তিমান। তিনি সব কিছুই করতে পারেন। অতএব, আমরা যা ওজন করতে পারি না আল্লাহ্ তা'আলাও তা ওজন করতে পারবেন, এটা বিচিত্র কিছু নয়। দ্বিতীয়তঃ আজকাল জগতে ওজন প্রায়োজন নেই।
এসব নবাবিস্কৃত যন্ত্রের সাহায্যে আজকাল এমন বস্তুও ওজন করা যায়, যা ইতোপূর্বে ওজন করার কল্পনাও করা যেত না। আজকাল বাতাসের চাপ এবং বৈদ্যুতিক প্রবাহও ওজন করা যায়। এমনকি শীত-গ্রীষ্ম পর্যন্ত ওজন করা হয়। এগুলোর মিটারই এদের দাড়িপাল্লা। যদি আল্লাহ তা'আলা স্বীয় অসীম শক্তি-বলে মানুষের কাজকর্ম ওজন করে নেন, তবে এতে বিস্ময়ের কিছুই নেই। হাদীসে রয়েছে যে, যদি কোন বান্দার ফরয কাজসমূহে কোন ক্রটি পাওয়া যায়, তবে রাব্বুল আলামীন বলবেনঃ দেখ, তার নফল কাজও আছে কি না। নফল কাজ থাকলে ফরযের ক্রটি নফল দ্বারা পূরণ করা হবে। [মুসনাদে আহমাদঃ ৪/৬৫]
আমলের ওজন পদ্ধতিঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ কিয়ামতের দিন কিছু মোটাআ লোক আসবে। তাদের মূল্য আল্লাহ্র কাছে মশার পাখার সমানও হবে না। এ কথার সমর্থনে কুরআনুল কারীমের এ আয়াত পাঠ করলেন। (فَلَا نُقِيمُ لَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَزْنًا) অর্থাৎ কেয়ামতের দিন আমি তাদের কোন ওজন স্থির করবো না। [বুখারীঃ ৪৪৫২, মুসলিমঃ ২৭৮৫] আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর প্রশংসায় বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তার পা দু’টি বাহ্যতঃ যতই সরু হোক, যার হাতে আমার প্রাণ, সেই সত্তার কসম, কেয়ামতের দাড়িপাল্লায় তার ওজন ওহুদ পর্বতের চাইতেও বেশী হবে। [মুসনাদে আহমাদ: ১/৪২০]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, দুটি বাক্য উচ্চারণের দিক দিয়ে খুবই হালকা; কিন্তু দাঁড়িপাল্লায় অত্যন্ত ভারী এবং আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়। বাক্য দুটি হচ্ছে, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী’, ‘সুবহানাল্লাহিল আযীম’। [বুখারীঃ ৭৫৬৩]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেনঃ ‘সুবহানাল্লাহ’ বললে আমলের দাড়িপাল্লার অর্ধেক ভরে যায় আর ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বললে বাকী অর্ধেক পূর্ণ হয়ে যায়। [মুসনাদে আহমাদঃ ৪/২৬০, ৫/৩৬৫; সুনান দারমীঃ ৬৫৩] অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘আমলের ওজনের বেলায় কোন আমলই সচ্চরিত্রতার সমান ভারী হবে না’। [আবু দাউদঃ ৪৭৯৯; তিরমিযীঃ ২০০৩] অন্যত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি জানাযার সাথে কবরস্থান পর্যন্ত যায়, তার আমলের ওজনে দুটি কিরাত রেখে দেয়া হবে। [বুখারীঃ ১২৬১]। অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, এই কিরাতের ওজন হবে ওহুদ পাহাড়ের সমান। [মুসলিমঃ ৬৫৪] কেয়ামতে আমলের ওজন সম্পর্কে এ ধরণের বহু হাদীস রয়েছে।
(৩) মানুষের জীবনের সমগ্র কার্যাবলী দুটি অংশে বিভক্ত হবে। একটি ইতিবাচক বা সৎকাজ এবং অন্যটি নেতিবাচক বা অসৎকাজ। ইতিবাচক অংশের অন্তর্ভুক্ত হবে সত্যকে জানা ও মেনে নেয়া এবং সত্যের অনুসরণ করে সত্যের খাতিরে কাজ করা। আখেরাতে এটিই হবে ওজনদার, ভারী ও মূল্যবান। আর সে মূল্যবান কাজের ফলাফলও মূল্যবান হবে। এ আয়াতে তা উল্লেখ না হলেও অন্য আয়াতে সেটা বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ বলেন, “অতঃপর যার পাল্লাসমূহ ভারী হবে, সে তো থাকবে সন্তোষজনক জীবনে।” [সূরা আল-কারি'আহ: ৬–৭] অর্থাৎ জান্নাতে।
অন্যদিকে সত্য থেকে গাফিল হয়ে অথবা সত্য থেকে বিচ্যুত হয়ে মানুষ নিজের নফস-প্রবৃত্তি বা অন্য মানুষের ও শয়তানের অনুসরণ করে অসত্য পথে যা কিছুই করে, তা সবই নেতিবাচক অংশে স্থান লাভ করবে। আর এ নেতিবাচক অংশটি কেবল যে মূল্যহীন হবে তাই নয়, বরং এটি মানুষের ইতিবাচক অংশের মর্যাদাও কমিয়ে দেবে। কাজেই মানুষের জীবনের সমুদয় কার্যাবলীর ভাল অংশ যদি তার মন্দ অংশের ওপর বিজয় লাভ করে এবং ক্ষতিপূরণ হিসেবে অনেক কিছু দেবার পরও তার হিসেবে কিছু না কিছু অবশিষ্ট থাকে, তবেই আখেরাতে তার সাফল্য লাভ করা সম্ভব।
তাফসীরে জাকারিয়া(৮) সেদিন ওজন ঠিকভাবেই করা হবে, যাদের ওজন ভারী হবে তারাই সফলকাম হবে।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৯. আর যাদের পাল্লা হালকা হবে, তারাই সে সব লোক, যারা নিজেদের ক্ষতি করেছে(১), যেহেতু তারা আমাদের আয়াতসমূহের প্রতি যুলুম করত।
(১) এখানে ক্ষতি বলতে কি তা বলা হয়নি। অন্য আয়াতে সেটা স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, “আর যার পাল্লাসমূহ হালকা হবে, তার স্থান হবে ‘হা-ওয়িয়াহ’, আর আপনাকে কিসে জানাবে সেটা কী? অত্যন্ত উত্তপ্ত আগুন।” [সূরা আল-কারি'আহ: ৮–১১] আরও বলেন, “আর যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতি করেছে; তারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে। আগুন তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা সেখানে থাকবে বীভৎস চেহারায়। [সূরা আল-মুমিনুন: ১০৩–১০৪]
তাফসীরে জাকারিয়া(৯) আর যাদের ওজন হালকা হবে, তারাই নিজেদের ক্ষতি করেছে, যেহেতু তারা আমার নিদর্শনাবলীকে প্রত্যাখ্যান করত। [1]
[1] এই আয়াতসমূহে আমলসমূহ ওজন করার বিষয় বর্ণনা করা হয়েছে। আর এটা হবে কিয়ামতের দিন। কুরআন কারীমের বিভিন্ন স্থানে এবং বহু হাদীসেও এ কথা আলোচিত হয়েছে। যার অর্থ হল, ওজন করার যন্ত্র (দাঁড়িপাল্লা) দ্বারা আমলসমূহ ওজন করা হবে। সুতরাং যার নেকীর পাল্লা ভারী হবে, সে সফলকাম হবে। আর যার পাপের পাল্লা ভারী হবে, সে হবে অসফল। কিন্তু আমলসমূহ তো বিমূর্ত অশরীরী বস্তু যার বাহ্যিক কোন আকার ও ওজন নেই, অতএব তা কিভাবে ওজন করা হবে? এ ব্যাপারে একটি মত হল, মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন সেগুলোকে বাহ্যিক রূপ দান করবেন, অতঃপর সেগুলোর ওজন হবে। দ্বিতীয় মত হল, যে দপ্তর ও খাতাসমূহে আমলসমূহ লিপিবদ্ধ করা হয়, সেগুলোকে ওজন করা হবে। তৃতীয় মত হল, স্বয়ং আমলকারীকে ওজন করা হবে। এই তিনটি মত পোষণকারীদের কাছে স্ব স্ব মতের সমর্থনে অনেক সহীহ হাদীস ও আষার (সাহাবীদের উক্তিসমূহ) বিদ্যমান রয়েছে। এই জন্যই ইমাম ইবনে কাসীর বলেন, তিনটি মতই সঠিক হতে পারে। হতে পারে কখনো আমল, কখনো আমলনামা এবং কখনো আমলকারীকে ওজন করা হবে। (দলীলের জন্য দ্রষ্টব্যঃ তাফসীর ইবনে কাসীর) যাই হোক, দাঁড়িপাল্লা ও আমল ওজন করার ব্যাপারটা কুরআন ও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। এটা অস্বীকার অথবা তার অপব্যাখ্যা করা ভ্রষ্টতা। আর বর্তমানে তো এটাকে অস্বীকার করার মোটেই কোন অবকাশ নেই। কেননা, এখন তো ওজন হয় না, এমন জিনিসও ওজন করা হচ্ছে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১০. আর অবশ্যই আমরা তোমাদেরকে যমীনে প্রতিষ্ঠিত করেছি এবং তাতে তোমাদের জন্য জীবিকার ব্যবস্থাও করেছি; তোমরা খুব অল্পই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর।(১)
(১) মানুষের যাবতীয় প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র আল্লাহ্ তা'আলা ভূ-পৃষ্ঠে সঞ্চিত রেখেছেন। কাজেই সর্বদা সর্বাবস্থায় আল্লাহ্ তা’আলার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করাই মানুষের কর্তব্য। কিন্তু মানুষ গাফেল হয়ে স্রষ্টার অনুগ্রহরাজি বিস্মৃত হয়ে যায় এবং পার্থিব দ্রব্যসামগ্রীর মধ্যেই নিজেকে হারিয়ে ফেলে। তাই আয়াতের শেষে অভিযোগের সুরে বলা হয়েছেঃ “তোমরা খুব কম লোকই কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।”
তাফসীরে জাকারিয়া(১০) আমি তো তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করেছি এবং ওতে তোমাদের জীবিকার ব্যবস্থাও করেছি। তোমরা খুব অল্পই কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান