-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১. তারা একে অন্যের কাছে কী বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে?
-
তাফসীরে জাকারিয়া১। তারা আপোসে কোন্ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে?[1]
[1] রসূল (সাঃ) যখন নবুঅতপ্রাপ্ত হলেন, তখন তিনি তাওহীদ, কিয়ামত ইত্যাদির কথা বয়ান করতে লাগলেন এবং কুরআন মাজীদ তিলাঅত করে শুনালেন, সেই সময় কাফের ও মুশরিকরা আপোসে জিজ্ঞাসা করতে লাগল যে, কিয়ামত কি সত্যিকারে ঘটবে -- যেমন এই লোকটি দাবী করছে? অথবা এই কুরআন কি সত্যিকারে আল্লাহর তরফ থেকে অবতীর্ণ করা হয়েছে -- যেমন মুহাম্মাদ বলছে? প্রশ্নবাচক শব্দ দ্বারা আল্লাহ প্রথমে সেই সমস্ত জিনিসের সেই মহত্ত্ব প্রকাশ করেছেন, যা তার আছে। অতঃপর তিনি নিজেই এর উত্তর দিয়েছেন যে,-------।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২. মহাসংবাদটির বিষয়ে(১),
(১) অর্থাৎ তারা কি বিষয়ে পরস্পরে জিজ্ঞাসাবাদ করছে? অতঃপর আল্লাহ নিজেই উত্তর দিয়েছেন যে, মহাখবর সম্পর্কে। তাফসীরবিদ মুজাহিদ বলেন, এখানে মহাখবর বলে কুরআনকে উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। কাতাদাহ বলেন, এখানে মহাখবর বলে কেয়ামত বোঝানো হয়েছে। এখানে এটাই প্রাধান্যপ্রাপ্ত মত। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া২। সেই মহা সংবাদ বিষয়ে।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩. যে বিষয়ে তারা মতানৈক্য করছে।(১)
(১) আয়াতের আরেকটি অর্থ হচ্ছেঃ “এ ব্যাপারে তারা নানা ধরনের কথা বলছে ও ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে ফিরছে।” অন্য অর্থ এও হতে পারে, দুনিয়ার পরিণাম সম্পর্কে তারা নিজেরাও কোন একটি অভিন্ন আকীদা পোষণ করে না বরং “তাদের মধ্যে এ ব্যাপারে বিভিন্ন মত পাওয়া যায়।” কেউ কেউ আবার আখেরাত পুরোপুরি অস্বীকার করতো না, তবে তা ঘটতে পারে কিনা, এ ব্যাপারে তাদের সন্দেহ ছিল। কুরআন মজীদে এ ধরনের লোকদের এ উক্তি উদ্ধৃত করা হয়েছে, “আমরা তো মাত্র একটি ধারণাই পোষণ করি, আমাদের কোন নিশ্চিত বিশ্বাস নেই।” [সূরা আল-জাসিয়াহঃ ৩২] আবার কেউ কেউ একদম পরিষ্কার বলতে, “আমাদের এ দুনিয়ার জীবনটিই সবকিছু এবং মরার পর আমাদের আর কখনো দ্বিতীয়বার উঠানো হবে না।” [সূরা আল-আন’আম: ২৯]; “আমাদের এই দুনিয়ার জীবনটিই সব কিছু। এখানেই আমরা মরি, এখানেই জীবন লাভ করি এবং সময়ের চক্র ছাড়া আর কিছুই নেই যা আমাদের ধ্বংস করে।” [সূরা আল-জাসিয়াহ: ২৪] [ফাতহুল কাদীর]
তাফসীরে জাকারিয়া৩। যে বিষয়ে তারা মতবিরোধী![1]
[1] অর্থাৎ, যে ‘মহা সংবাদ’ নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে সেই বিষয়েই ঐ জিজ্ঞাসাবাদ। কারো কারো মতে এই ‘মহা সংবাদ’-এর উদ্দেশ্য হল, পবিত্র কুরআন। কেননা, কাফেররা এ ব্যাপারে বিভিন্ন মন্তব্য করত। কেউ তাকে যাদু, কেউ জ্যোতিষীর কথা, কেউ কবিদের কাব্য, কেউ বা আবার পূর্বযুগের উপাখ্যান বলে অভিহিত করত। অনেকের মতে এর উদ্দেশ্য হল, কিয়ামত সংঘটিত হওয়া এবং পুনর্বার জীবিত হওয়ার সংবাদ। কেননা, এ ব্যাপারেও তাদের মাঝে কিছু মতভেদ ছিল। কেউ তো একেবারেই তা অস্বীকার করত। আবার কেউ তাতে সন্দেহ পোষণ করত। কোন কোন আলেম বলেন, জিজ্ঞাসাকারী মু’মিন-কাফের উভয়ই ছিল। মু’মিনদের জিজ্ঞাসা তাদের ঈমান এবং অন্তর্দৃষ্টি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ছিল। আর কাফেরদের জিজ্ঞাসা ছিল ঠাট্টা-ব্যঙ্গ ও উপহাসস্বরূপ।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৪. কখনো না(১), তারা অচিরেই জানতে পারবে;
(১) অর্থাৎ আখেরাত সম্পর্কে যেসব কথা এরা বলে যাচ্ছে এগুলো সবই ভুল। এরা যা কিছু মনে করেছে ও বুঝেছে তা কোনক্রমেই সঠিক নয়। [মুয়াসসার]
তাফসীরে জাকারিয়া৪। কখনই না, তারা শীঘ্রই জানতে পারবে।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৫. তারপর বলি কখনো না, তারা অচিরেই জানতে পারবে।
-
তাফসীরে জাকারিয়া৫। আবার বলি, কখনই না, তারা শীঘ্রই জানতে পারবে।[1]
[1] এটা হল ধমক ও তিরস্কার যে, অতি সত্বর সব কিছু জানতে পারবে। আগামীতে আল্লাহ তাআলা স্বীয় কর্মকুশলতা এবং মহা কুদরতের কথা উল্লেখ করছেন; যাতে তাওহীদের প্রকৃতত্ব তাদের সামনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে এবং আল্লাহর রসূল (সাঃ) তাদেরকে যে বিষয়ের প্রতি আহবান জানাচ্ছিলেন তার প্রতি ঈমান আনা সহজ হয়ে যায়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৬. আমরা কি করিনি যমীনকে শয্যা
-
তাফসীরে জাকারিয়া৬। আমি কি পৃথিবীকে শয্যা (স্বরূপ) সৃষ্টি করিনি? [1]
[1] অর্থাৎ, বিছানার মত তোমরা ভূপৃষ্ঠের উপর চলা-ফেরা কর, উঠা-বসা কর, শয়ন কর এবং সমস্ত কাজ-কর্ম করে থাক। পৃথিবীকে তিনি বিক্ষিপ্তভাবে হেলা-দোলা থেকে রক্ষা করেছেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৭. আর পর্বতসমূহকে পেরেক?
-
তাফসীরে জাকারিয়া৭। এবং পর্বতসমূহকে পেরেক (স্বরূপ সৃষ্টি করিনি?)[1]
[1] أوتاد শব্দটি وتد-এর বহুবচন; আর তার অর্থ পেরেক। অর্থাৎ, পর্বতসমূহকে পৃথিবীর জন্য পেরেকস্বরূপ সৃষ্টি করেছেন; যাতে পৃথিবী স্থির থাকে এবং হেলা-দোলা না করে। কেননা, হেলা-দোলা ও বিক্ষিপ্ত অস্থিরতার অবস্থায় পৃথিবী বাসযোগ্য হতো না। (প্রকাশ থাকে যে, ভূগর্ভে কীলক বা পেরেকের মতই পর্বতমালার মূল বা শিকড় গাড়া আছে; যা ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা থেকে প্রায় ১০ থেকে ১৫ গুণ বেশী দীর্ঘ! -সম্পাদক)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৮. আর আমরা সৃষ্টি করেছি তোমাদেরকে জোড়ায় জোড়ায়,
-
তাফসীরে জাকারিয়া৮। আমি সৃষ্টি করেছি তোমাদেরকে জোড়ায় জোড়ায়।[1]
[1] অর্থাৎ,পুরুষ ও স্ত্রী, নর ও নারী। অথবা أزواج -এর অর্থ হল নানা ধরন ও রঙ। অর্থাৎ, তিনি বিচিত্র ধরনের আকার-আকৃতি ও রঙে-বর্ণে সৃষ্টি করেছেন। সুশ্রী-কুশ্রী, লম্বা-বেঁটে, গৌরবর্ণ-কৃষ্ণবর্ণ ইত্যাদি বিভিন্ন বৈচিত্রে সৃষ্টি করেছেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৯. আর তোমাদের ঘুমকে করেছি বিশ্ৰাম(১),
(১) মানুষকে দুনিয়ায় কাজ করার যোগ্য করার জন্য মহান আল্লাহ অত্যন্ত কর্মকুশলতা সহকারে তার প্রকৃতিতে ঘুমের এক চাহিদা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। কর্মের ক্লান্তির পর ঘুম তাকে স্বস্তি, আরাম ও শান্তি দান করে। [সা'দী]
তাফসীরে জাকারিয়া৯। তোমাদের নিদ্রাকে করে দিয়েছি বিশ্রাম স্বরূপ। [1]
[1] سبات -এর অর্থ হল ছিন্ন করা বা কাটা। রাত্রি মানুষ ও পশু-পক্ষীর যাবতীয় বিচরণকে কেটে ক্ষান্ত করে দেয়। যাতে শান্তি ফিরে আসে এবং লোকে আরামের সাথে ঘুমাতে পারে। কিংবা এর ভাবার্থ হল এই যে, রাত্রি তোমাদের কাজকর্মকে কেটে ফেলে। অর্থাৎ, কাজের ধারাবাহিকতাকে ছিন্ন করে দেয়। আর কাজ শেষ হওয়া মানেই হল আরাম ও বিশ্রাম।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১০. আর করেছি রাতকে আবরণ,
-
তাফসীরে জাকারিয়া১০। রাত্রিকে করেছি আবরণ স্বরূপ। [1]
[1] অর্থাৎ, রাতের অন্ধকার এবং কালো বর্ণ প্রতিটি জিনিসকে নিজের আঁচলে আবৃত ও গোপন করে নেয়। যেমনভাবে, আবরণ বা পোষাক-পরিচ্ছদ মানুষের দেহকে আবৃত ও গোপন করে নেয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান