পুরুষদের মাঝে নারীদের শিক্ষকতা ও দাওয়াতী কাজ - এই বিষয়ে কুরআন ও সুন্নাহর দিকনির্দেশনা
পুরুষদের মাঝে নারীদের শিক্ষকতা ও দাওয়াতী কাজ - এই বিষয়ে কুরআন ও সুন্নাহর দিকনির্দেশনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও প্রশ্নত্তর - ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ এবং ড. মাঞ্জুর ই ইলাহী
দ্বীন ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি
আমরা মুসলিম কিন্তু আমরা বুঝি না যে কিভাবে কখন আমাদের ঈমান চলে যাচ্ছে। একটু বায়ু নির্গত হলে যেমন ওজু ভেঙ্গে যায় তেমনি ঈমান ভেঙ্গে যাবারও বহু কারন রয়েছে।
আর আমরা আজ দলে দলে বিভক্ত হয়েছি, একে অপরের বিরুদ্ধে লেগে গেছি এমন বিষয় নিয়ে যেগুলি নিয়ে ঝগড়া, বচসা করার কোন অবকাশ নেই, কিন্তু আমরা জানিই না যে মুসলিমদের মুল সমস্যা কোথায়, কারা আমাদের মুল শত্রু।
আসল বাদ দিয়ে আজ নকলের পিছনে ছুটছি আমরা।
আসুন ধৈর্য ধরে খুৎবাটি দেখুন, নিজের দ্বীনের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করুন।
যেতে চাই জান্নাতের বাড়ি, কিন্তু জানিনা আমি চড়ব এখন কোন গাড়ি?
আমরা জান্নাতে যেতে চাই কিন্তু জান্নাতে যাবার জন্য যে পথ, যে গাড়িতে চড়ে আমরা আমাদের গন্ত্যবে পৌঁছুতে চাই সেই পথ কি আদৌ জান্নাতের পথ নাকি মাঝপথে বিভ্রান্ত শয়তান এবং মানুষেরা আমাদেরকে ভুল পথের ঠিকানা দিয়েছে।
জান্নাতের পথ বলে আমারা কি জাহান্নামের পথের পথিক হয়েছি? আজ ডানে বামে চলে গেছি আমরা, দলে দলে বিভক্ত হয়ে গেছি, নিজেদের খেয়াল খুশী মত নিজ নিজ পথ তৈরি করেছি জান্নাতে যাবার জন্য, কিন্তু আসল পথ কি আমরা খুঁজে পেয়েছি আদৌ?
জেনে নিন সেই সহজ সরল পথ কোনটি আর কোন গাড়িতে চড়ে আমরা সেই কাঙ্ক্ষিত জান্নাতের বাড়িতে পৌঁছুতে পারি।
তাওহীদ সবচেয়ে বড় ফরজ কেন?
ইসলামের প্রথম স্তম্ভ হচ্ছে তাওহীদ অর্থাৎ যা ঈমানের সাথে সম্পৃক্ত এবং এটি একটি ইবাদত, কিন্তু দুঃখজনক হলেও এটাই সত্য যে আমাদের দেশে ইসলামের এই এক নম্বর স্তম্ভকেই মানুষের কাছে সঠিক ভাবে তুলে ধরা হয় না বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করা হয় এবং মানুষ এখনো বিকৃত ঈমান আকিদার উপরেও চলছে।
আর এর প্রেক্ষিতেই একজন মুসলিম দেখা যাচ্ছে সে নামায আদায় করছে, হজ্জ করছে, যাকাত দিচ্ছে, রোযা রাখছে কিন্তু তার পরেও সে মুসলিমদের মত আচরণ করছে না বা তার জীবনে এর কোন প্রভাবও দেখা যাচ্ছে না।
আর এর একমাত্র কারন এই যে আমরা ইসলামের সেই এক নম্বর স্তম্ভকেই বুঝি নাই এবং সব সময় অবহেলা করে চলেছি আর এর কারনে আজ ইসলামকে বিকৃত করা হচ্ছে যার যার খুশী মত, ইসলাম নিয়ে চলছে ব্যবসা বানিজ্য, ইসলাম যেন আজ টাকা ইনকামের হাতিয়ার।
আমরা আজ নিজেরাই জানি না যে, আমাদের তাওহীদ যদি ঠিক না হয় তাহলে কোন ভাবেই হাজারো ইবাদত করেও কিন্তু আমরা জান্নাতে যেতে পারব না কেননা সমস্ত ইবাদত বরবাদ হবে যদি তাওহীদ আমাদের ঠিক না থাকে।
তাই আসুন আমরা আমাদের তাওহীদকে ঠিক করি সবার আগে, বুঝি তাওহীদ আসলে কি, এর দাবী কি যাতে আমরা আসলেই মুসলিম হতে পারি কেননা লেবাসী মুসলিমের গ্রহনযোগ্যতা আল্লাহর কাছে নেই।
জান্নাতের পথ কোনটি ও এর পথিক কারা?
আমরা সকলেই জান্নাতে যেতে চাই কিন্তু জান্নাতে যাবার জন্য কোন পথে চলতে হবে, কোন বাহনের উপর ভর করে আমরা জান্নাতে যেতে পারি সেই বিষয়ে আমাদের অধিকাংশেরই কোন জ্ঞান নেই।
ছোটকাল থেকেই আমরা অধিকাংশ জেনেছি যে নামায জান্নাতের চাবি কিন্তু আদৌ এটি সঠিক কথা নয় কেননা বিশুদ্ধ হাদিসে বলা হয়েছে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ হচ্ছে জান্নাতের চাবি।
আর আল্লাহ তার কিতাবের প্রথম সূরার মাধ্যমে অর্থাৎ সূরা ফাতিহার মধ্যেই সংক্ষিপ্ত আকারে জান্নাতে যাবার পথ, বাহন ও পথিক বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন।
আসুন সূরা ফাতিহার আলোকে আমরা জেনে নিই আমরা কিভাবে জান্নাতে যেতে পারব। আর যে পথ আল্লাহ বাতলে দিয়েছেন এর থেকে বিচ্যুত হলে আমাদের গন্তব্য হবে জাহান্নাম (হয় সেটা খন্ডকালীন সময় বা চিরকালের জন্য)।
তাই জান্নাত পেতে হলে আমাদেরকে জানতে হবে জান্নাতের চাবি কি এবং কিভাবে জান্নাতে যাওয়া যাবে।
যারা ঈমান ছাড়া মুসলিম তারা কারা?
ইসলামের উপর অটল থেকে ঈমান নিয়ে কবরে যেতে চান? তাহলে কষ্ট করে হলেও এই খুৎবাটি দেখুন, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি খুৎবা এবং প্রতিটি মুসলিমের এটি শোনা একান্ত কর্তব্য আর তার কারন এই যে আমরা নিজেরা নিজেদেরকে মুসলিম দাবী করছি বা পরিচয় দিচ্ছি কিন্তু পাশাপাশি এমন কিছু কাজ বা আকিদা পোষণ করছি যার কারনে নিজের অজান্তেই আমাদের ঈমান ভঙ্গ হয়ে যাচ্ছে এবং আমরা মুসলিম থাকছি না।
আমাদের দেশে এই ধরনের মানুষ প্রচুর রয়েছে এমনকি বহু আলেমও রয়েছে যারা মূলত ইহুদী, নাসারা বা মূর্তিপুজকদের থেকে খারাপ আকিদা বিশ্বাস পোষণ করে থাকে। তাই দ্বীন ইসলাম নিয়ে কবরে যেতে হলে এই বিষয়গুলি অবশ্যই আমাদের জানতে হবে।
ঈমান আনার পরেও যেভাবে আমরা ঈমান হারাচ্ছি
আমরা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাক্ষ্য দিয়ে ঈমান এনেছি, মুসলিম হয়েছি কিন্তু আদৌ আমরা নিজেরা জানিই না কতটুকু ঈমানের মধ্যে আছি নাকি ঈমান থেকে বের হয়ে মুশরিক হয়ে গেছি।
আজ ইসলামের নামে, রাসুল (সা.) কে ভালোবাসার নামে কত শিরক কুফর বিদআত আমরা করছি সমাজে, বাইরের দিকে থেকে দেখে মনে হয় আমরা মুসলিম কিন্তু আসলে আমরা মুশরিকদের খাতায় নাম তুলেছি জেনে বা না জেনে।
তাই বাঁচতে হলে জানতে হবে, ঈমান নিয়ে বাঁচতে চাইলে অবশ্যই জানতে হবে দ্বীনের বিষয়ে, জ্ঞান অর্জন করতে হবে নতুবা আমরা হয়ত আশায় আছি জান্নাতে যাব কিন্তু ফলাফল আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে আসলে জাহান্নাম।
হানাফী, শাফেয়ী, মালেকী, হাম্বলি, আহলে হাদিস নয়, মুসলিম হয়েই কবরে যেতে হবে
আল্লাহ আমাদেরকে মুসলিম হিসাবে অবিহিত করেছেন এবং মুসলিম হয়েই কবরে যেতে বলেছেন। কিন্তু আমরা এখন এক মুসলিম আরেক মুসলিমের বিরুদ্ধে বিষেদাগার, কাঁদা ছোড়াছুঁড়িতেই ব্যাস্ত। কে কাকে মুসলিম মিল্লাত থেকে বের করে দিবে কাফির মুশরিক ফতোয়া দিয়ে, এগুলি নিয়েই আমরা দিন পার করছি।
মুসলিমরা আজ একে অপরের শত্রু কিন্তু মুসলিমদের আসল শত্রু কে তাদেরকে কি আদৌ আমরা চিনেছি কি?
আসুন বাড়াবাড়ি নয় মধ্যমপন্থা অবলম্বন করি, দ্বীনের উপর থাকি যাতে জান্নাতে যেতে পারি।
কাফির মুশরিকরা কখনোই মুসলিমদের বন্ধু হতে পারে না
আজকে আমরা কাফির মুশরিকদেরকে বন্ধু বানিয়ে নিয়েছি, তাদের জন্য আমাদের অন্তরে অফুরন্ত ভালোবাসা পুঞ্জীভূত, তাদের জন্য আমরা হেন কিছু নেই যা করতে পারি না কিন্তু মুসলিমদের জন্য সেখানে রয়েছে ঘৃণা আর ধিক্কার।
আজ আপনি যদি কাফির মুশরিকদের বন্ধু বানান, তাহলে কিয়ামতের দিন অবশ্যই আপনি তাদের সাথেই উঠবেন এবং তাদের সাথেই একত্রে জাহান্নামে বসবাস করবেন চিরকালের জন্য এতে কোন সন্দেহ নেই।
আপনার বন্ধু হবার কথা ছিল মুসলিমরা কিন্তু আপনি বন্ধু বানালেন তাদের যারা আল্লাহ্র শত্রু, রাসুল (সা.) এর শত্রু।
ঈমানটা আপনার দাড়ি, টুপি বা জুব্বার মধ্যে কিন্তু নেই
আমরা অনেক সময় বাহ্যিক দৃষ্টিতে দাড়ি, টুপি জুব্বা ইত্যাদি দেখে একজন মানুষকে ইমানদার হিসাবে চিনে থাকি, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে উক্ত মানুষটিই এমন সব কাজের সাথে জড়িত যে যা তার ঈমানের সাক্ষ্য দেয় না, মুলত একজন মানুষের ঈমানের পরিচয় পাওয়া যায় তার কাজে কর্মে কেননা লেবাস দিয়ে মানুষকে অনেক ক্ষেত্রেই যে কেউ ধোঁকা দিতে পারে।