স্ত্রী যদি নিজের নগ্ন ছবি স্বামীকে প্রবাসে পাঠায়—এর বিধান কী?

এ ব্যাপারে শাইখ সালেহ আল-ফাওযানের একটি বক্তব্য তাঁর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এসেছে, তাতে উপরের প্রশ্নের উত্তর এভাবে দেওয়া হয়েছে যে:

নারীদের ছবি তোলা সম্পূর্ণভাবে হারাম, কারণ এর মাধ্যমে বহু ফিতনা ও অনিষ্টের সৃষ্টি হয়, এর সাথে সাথে ছবির হুকুম মৌলিকভাবেও হারাম। তাই ভ্রমণের জন্য হোক বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে হোক, নারীদের ছবি তোলা বৈধ নয়। সৌদি আরবের “হাইয়াতু কিবারিল উলামা”-ও এ বিষয়ে হারামের ফতওয়া দিয়েছেন।
সুতরাং

  • স্বামী, স্ত্রী হওয়ার অজুহাতে স্ত্রীর নগ্ন ছবি তুলতে পারবে না। এই জঘন্য কাজ স্ত্রীর সাথে বৈধ সম্পর্ক থাকলেও হালাল হয়ে যায় না।
  •  প্রবাসে স্ত্রীর অনুপস্থিতি এটিকে বৈধ করে না বরং নারীদের ছবি তোলাই মূলত নিষিদ্ধ।

তাছাড়া,
স্ত্রীর নগ্ন বা অর্ধনগ্ন ছবি সংরক্ষণ করলে যা যা ক্ষতি হতে পারে:

  • ছবিগুলো চুরি হয়ে যেতে পারে, হারিয়ে যেতে পারে, বা অসতর্কতাবশত কোথাও ফেলে রাখা হতে পারে—এর ফলে সেই ছবি অন্যদের হাতে পড়ে সমাজে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং নানা অনৈতিক কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।
  • যদি পরে তাদের তালাক হয়ে যায়, তাহলে সেই নারী স্বামীর জন্য পরপুরুষে পরিণত হবে—তখন তার নগ্ন ছবি রাখা বা দেখা সম্পূর্ণ হারাম হবে।
  • স্বামীই হয়তো পরে সেই ছবি দিয়ে স্ত্রীর উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যেমন: অর্থিক পাওনা ছেড়ে দিতে বলা, কিংবা অবৈধ চাহিদা পূরণ করতে বাধ্য করা ইত্যাদি। বাস্তবে এমন বহু কাহিনী ঘটেছে যেখানে স্বামী স্ত্রীর ছবি দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করেছে।
  • স্ত্রীর নগ্ন ছবি দেখলে তা যৌন উত্তেজনা কমানোর বদলে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে স্বামী হস্তমৈথুন, ব্যভিচার বা সমকামিতার মতো পাপ কাজে লিপ্ত হয়ে পড়তে পারে – আল্লাহর কাছে পানাহ চাই!


অতএব, স্ত্রীর নগ্ন ছবি তোলা বা রাখা কোনো অজুহাতে বৈধ নয়, বরং এটি স্পষ্টভাবে হারাম এবং বহু অনিষ্ট ও ফিতনার দরজা খুলে দেয়।
একজন স্বামীর উচিত স্ত্রীকে ঢেকে রাখা, নগ্ন করা নয়। কারণ আল্লাহ বলেন: “তারা তোমাদের জন্য পোশাক, আর তোমরা তাদের জন্য পোশাক।” [সূরা আল-বাকারা: ১৮৭]
স্বামীর উচিত পরিবার থেকে দীর্ঘ সময় বিচ্ছিন্ন না থাকা, বরং নিজের ইফফাহ-চরিত্র রক্ষা ও পরিবারের দায়িত্ব পালনের জন্য যত দ্রুত সম্ভব পরিবারের কাছে ফিরে আসা।

যদি দূরে থাকাটাই আবশ্যক হয় এবং স্ত্রী এতে রাজি থাকে, তাহলে স্বামীর অবশ্যই:
• নারীদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা,
• হারাম দৃষ্টির থেকে বাঁচা,
• একাকিত্ব ও হারাম পরিবেশ থেকে দূরে থাকা,
• বেশি বেশি নেক আমল করা (বিশেষত রোযা রাখা) এবং
• সৎ সঙ্গীদের সাথে থাকা জরুরি।

আল্লাহ তাআলা যেন আমাদের সকলকে তাঁর নিজের সন্তুষ্টির পথে পরিচালিত করেন এবং সকল প্রকার ফিতনা থেকে হেফাজত করেন।

https://www.facebook.com/abubakar.m.zakaria/posts/pfbid0fD2xHNPbKH2b7v1rfzx9U3WembpuavQCXJpib5uVShSeotfKucq8DwiA6yXQZBB2l
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১ পর্যন্ত, সর্বমোট ১ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে