রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাফিরদের অনুসরণে প্রবেশের ‘গর্ত’ হিসেবে (جُحر الضبّ) ‘ষাণ্ডার গর্ত’ শব্দটি কেন বেছে নিলেন?

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাফিরদের অনুসরণে প্রবেশের ‘গর্ত’ হিসেবে (جُحر الضبّ) ‘ষাণ্ডার গর্ত’ শব্দটি কেন বেছে নিলেন?

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা কিছু বলেন, তা সবই হচ্ছে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে ওহী। তাহলে কেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা'আলা অন্য কোনো প্রাণীর গর্ত না বেছে নিয়ে ষাণ্ডার গর্তকেই বেছে নিলেন?

ইমাম বুখারি তাঁর সহীহ বুখারিতে আবূ সাঈদ আল-খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "তোমরা অবশ্যই তোমাদের পূর্ববর্তীদের পথ অনুসরণ করবে একেবারে হুবহু—হাতের পর হাত, বাহুর পর বাহু পর্যন্ত, এমনকি তারা যদি ‘ষাণ্ডার গর্তে’ প্রবেশ করে, তবে তোমরাও তাদের অনুসরণ করবে!"
আমরা বললাম: হে আল্লাহর রাসূল, আপনি কি ইয়াহূদি-নাসারাদের কথা বলছেন?
তিনি বললেন: "তাহলে আর কার কথা?"

এই হাদীসের আরও অনেক বর্ণনা আছে, যেগুলোর মর্ম একই এবং তুলনাও ‘ষাণ্ডার গর্ত’ দিয়েই করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে অনেক গবেষণার পর্যায়ে একবার একটি ভিডিও দেখি—যেটা ছিল আরব উপদ্বীপের কিছু ভাইয়ের ষাণ্ডা শিকারের দৃশ্য—সেখানে দেখা গেল এক চমকপ্রদ ব্যাপার!
তারা ষাণ্ডা শিকার করছিল এইভাবে যে, তারা ষাণ্ডার গর্তে ঘন পানি ঢালছিল, ফলে ষাণ্ডাটি বাধ্য হয়ে বেরিয়ে আসছিল এবং সাথে সাথে তারা সেটিকে ধরে ফেলছিল।
এর কারণ হলো, ষাণ্ডা সাধারণত তার গর্তে শুধু একটি মাত্র পথ রাখে। বিপরীতে, অন্য অনেক প্রাণী তাদের গর্তে একাধিক পথ তৈরি করে, যেন হাওয়া চলাচল করে এবং শত্রুর আক্রমণ হলে পালানোর সুযোগ থাকে।
অতএব, ষাণ্ডার গর্ত হচ্ছে একটি ধ্বংসের ফাঁদ—যে এতে ঢোকে, সে মৃত্যুর মুখে পড়ে। যদি কেউ সেই একমাত্র ফাঁকা পথটি বন্ধ করে দেয়, তাহলে ষাণ্ডাটি বের হতে পারে না এবং ভিতরে থেকেই মারা যায়। অথবা যদি পানি ঢালা হয়, তাহলে তাকে বের হয়ে আসতেই হয়।

প্রাণীবিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, ষাণ্ডার গর্ত একদিকে যেমন খুব নোংরা, অন্যদিকে খুবই সরু ও অস্বস্তিকর। তার ভিতরে এমন কিছুই নেই যা কারো দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে!

এ যেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলতে চাচ্ছেন:
"তোমরা কাফিরদের পথ, ধ্বংসাত্মক কাজগুলো, এমনকি যেগুলোর স্পষ্টতই কোনো সৌন্দর্য নেই এবং যেগুলো ঘৃণিত, সেসবও অন্ধভাবে অনুসরণ করবে!" এবং বাস্তবে সেটাই তো আজ আমরা দেখছি।
পশ্চিমা বিশ্বের বহু কিছু যেগুলোর বাস্তবতা আজ পরিষ্কার হয়ে গেছে—যেগুলোর ব্যর্থতা ও ক্ষতিকর দিকগুলো তারাই আজ স্বীকার করছে—আমরা তবুও সেগুলোর অনুসরণে ব্যস্ত!
যেমন:
• পরিবারবিনাশী আইন
• বিয়ের ধর্মহীন (সিভিল) পদ্ধতি
• সমকামিতার রোগ
• ধ্বংসাত্মক ফ্যাশন
• নারীদের অভিভাবকতা থেকে মুক্তির দাবি
• ব্যভিচার ও মদ্যপানের স্বাধীনতা


এসব বিষয় সুস্থ প্রকৃতির মনগুলোকে ঘৃণা করে, তবুও আমরা সেগুলোর দিকে ঝুঁকছি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ব্যাপারে সত্য কথাই বলেছেন—
আমরা পশ্চিমাদের অনুসরণ করছি, যাদের পেছনে ইয়াহূদী ও নাসারারা নেতৃত্ব দিচ্ছে, একেবারে হুবহু কদমে কদম মিলিয়ে।
এমনকি আজকের দিনে শয়তান-পূজাও ‘ব্যক্তিস্বাধীনতা’র একটি রূপ হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে!
আমরা আমাদের পরিচয় হারিয়ে ফেলেছি।
আমরা পশ্চিমাদের মতো হওয়ার চেষ্টা করছি, ষাণ্ডার গর্তে ঢুকে পড়েছি।

অতএব, আমাদের দরকার—
নিজেদের ব্যক্তিত্বকে পুনর্গঠন করা,
এই 'ষাণ্ডা চরিত্র' বর্জন করা,
এবং আল্লাহর এই বাণীকে জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করা:


﴿ وَأَنَّ هَٰذَا صِرَٰطِي مُسۡتَقِيمٗا فَٱتَّبِعُوهُۖ وَلَا تَتَّبِعُواْ ٱلسُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمۡ عَن سَبِيلِهِۦۚ ذَٰلِكُمۡ وَصَّىٰكُم بِهِۦ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ﴾

“এটাই আমার সরল পথ, সুতরাং তোমরা একে অনুসরণ করো। অন্য পথগুলো অনুসরণ করো না, তা হলে সেগুলো তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে। তিনি এসব কথাই তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পারো।” [সূরা আল-আন'আম: ১৫৩]

অন্যথায়, আমাদের নিয়তি হবে—
চিরকাল ষাণ্ডার গর্তে পড়ে থাকা!

https://www.facebook.com/abubakar.m.zakaria/posts/pfbid02ZXZM5HNCW1LwzYEBxkjBVNrU8T2jwymmT3atEy89TaY4dThtPZBcrSBBTVWmDyYkl
গম্বুজ ও মাজার নির্মাণ হারাম হওয়ার প্রমাণে ৬টি সহীহ হাদীস

গম্বুজ ও মাজার নির্মাণ হারাম হওয়ার প্রমাণে ৬টি সহীহ হাদীস


প্রথম হাদীস: গম্বুজ নির্মাণকারীরা সবচেয়ে নিকৃষ্ট সৃষ্টি:
আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন, উম্মে হাবীবা ও উম্মে সালামা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা হাবাশায় একটি গির্জা দেখেছিলেন, সেখানে কিছু ছবি ছিল। তাঁরা সেই ব্যাপারটি নবী ﷺ-কে জানালেন। নবী ﷺ বললেন:
“নিশ্চয়ই তাদের মাঝে যখন কোনো নেক লোক মারা যেত, তখন তারা তার কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ করত এবং সেখানে ছবি তৈরি করত। এরা আল্লাহর নিকট কিয়ামতের দিন সবচেয়ে নিকৃষ্ট সৃষ্টি।”
 [সহীহ বুখারী: ৪২৭]


 দ্বিতীয় হাদীস: মাজারকে মসজিদে পরিণতকারীদের প্রতি আল্লাহর লা’নত:
আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর মৃত্যুর সময় অসুস্থ অবস্থায় বলেছিলেন:
“ইয়াহূদী ও নাছারাদের প্রতি আল্লাহর লা’নত, কারণ তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়েছিল।”
আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেন: “এই কারণেই নবী ﷺ-এর কবর প্রকাশ্যে করা হয়নি, কারণ আশঙ্কা ছিল এটি যেন মসজিদে পরিণত না হয়।”

 [সহীহ বুখারী: ১৩৯০]


তৃতীয় হাদীস: কবরকে মসজিদ বানানোর স্পষ্ট নিষেধ:
জুন্দুব ইবনু আবদুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
আমি নবী ﷺ-কে মৃত্যুর পাঁচ দিন আগে বলতে শুনেছি: 
“জেনে রাখো, তোমাদের পূর্ববর্তী লোকেরা তাদের নবী ও সৎ ব্যক্তিদের কবরকে মসজিদ বানিয়েছিল। তোমরা কবরকে মসজিদে পরিণত করো না। আমি তোমাদেরকে তা থেকে নিষেধ করছি।”
[সহীহ মুসলিম: ৫৩২]

চতুর্থ হাদীস: শাসকের দায়িত্ব — মাজারসমূহ ভেঙে সমান করে ফেলা। 
আবু হাইয়্যাজ আল-আসাদী বলেন, 
আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু আমাকে বললেন, “আমি কি তোমাকে সেই কাজের জন্য প্রেরণ করব না, যেই কাজের জন্য রসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে পাঠিয়েছিলেন?
তা হলো — কোনো মূর্তি দেখলে তা ভেঙে ফেলবে, আর কোনো উঁচু কবর দেখলে তা সমান করে দেবে।”

 [সহীহ মুসলিম: ৯৬৯]

পঞ্চম হাদীস: কবরের উপর নির্মাণ করা নিষিদ্ধ: 
জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
“রসূলুল্লাহ ﷺ নিষেধ করেছেন যে, কবর পাকা করা, তার উপর বসা বা তার উপর ভবন নির্মাণ করা।”

[সহীহ মুসলিম: ৯৭০]

ষষ্ঠ হাদীস: কবরকে মসজিদ বানানোদের বলা হয়েছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ: 
আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি: “মানুষের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট হলো তারা, যাদের উপর কিয়ামত সংঘটিত হবে, এবং যারা কবরকে মসজিদ বানাবে।”
[মুসনাদ আহমাদ: ৩৮৪৪]


আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও নিরাপত্তা চাই।

https://www.facebook.com/abubakar.m.zakaria/posts/pfbid02PXuncPiqo7kitTyMWrAL5fQuLGHnz23vbe6afbEB6wr1D4Bsgn6sGiGDC1uByT2Hl
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২ পর্যন্ত, সর্বমোট ২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে