পরিচ্ছেদঃ
১৩০। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা চোখে কালো মনি বিশিষ্ট সুন্দর চেহারার অধিকারীদের শাস্তি দেবেন না।
হাদীসটি জাল।
হাদীসটি দাইলামী বর্ণনা করেছেন। তার সূত্রে বেনজীর ইবনু মানসূর, জা’ফার ইবনু মুহাম্মাদ আল-আবহারী, আলী ইবনু আহমাদ আল-হারুরী, জাফর ইবনু আহমাদ আর-দাকাক এবং আব্দুল মালেক ইবনু মুহাম্মাদ আর-রুকাশী রয়েছেন। সুয়ূতী “আল-লাআলী” গ্রন্থে (১/১১৩-১১৪) উল্লেখ করে এটি সম্পর্কে কিছু না বলে চুপ থেকেছেন।
আমি এটি সম্পর্কে আলোচনা করা প্রয়োজন মনে করছি এর সমস্যা কি তা প্রকাশ করার জন্য। আমাকে এটি সম্পর্কে আমার অতি আপনজন আমার পিতা বিশেষভাবে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। আমি বলছিঃ এ হাদীসটির সনদে রুকাশীর নীচের বর্ণনাকারীগণ সকলেই মাজহুল। তাদের কারো সম্পর্কে আমার নিকট যে সব আসমায়ে রিজালের (বর্ণনাকারীদের তথ্য সম্বলিত) গ্রন্থ রয়েছে সে সবের কোনটিতেই (তাদের) আলোচনা পাইনি। তবে এ রুকাশীর জীবনী সম্পর্কে “তাহযীবুত তাহযীব” (৬/৪১৯-৪২১) এবং “তারীখু বাগদাদ” গ্রন্থে (১০/৪২৫-৪২৭) আলোচনা করা হয়েছে। তিনি হচ্ছেন ইবনু মাজার এক বর্ণনাকারী।
তিনি সত্যবাদী হলেও যখন তিনি বাগদাদে আগমন করেন তখন তার মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটেছিল। ফলে তার হাদীসের সনদ এবং মতনগুলোতে বহু ভুলের সমাহার ঘটে। সম্ভবত এ হাদীসটি সেগুলোর একটি। নতুবা এটি সে সব মাজহুল বর্ণনাকারীদের কোন একজনের তৈরিকৃত।
ইবনুল আররাক “তানীহুশ শারীয়াহ" গ্রন্থে (১/১৭৪) বলেনঃ তার সনদে জাফার ইবনু আহমাদ আদ-দাকাক রয়েছেন। তিনিই হচ্ছেন হাদীসটির বিপদ।
আমি (আলবানী) বলছিঃ এ হাদীসটি বাতিল হওয়ার ব্যাপারে কোন প্রকার সন্দেহ পোষণ করছি না। কারণ এটি শরীয়তে যা বর্ণিত হয়েছে তার সাথে বিরোধপূর্ণ। যেমন বলা হয়েছে প্রতিদান দেয়া হবে অর্জন এবং কর্মের উপর ভিত্তি করে।
فَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ ٭ وَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ
অর্থঃ “যে ব্যক্তি এক অণু পরিমাণ নেক আমল করবে সে তা দেখতে পাবে, আর যে ব্যক্তি এক অণু পরিমাণ বদ আমল করবে সে তা দেখতে পাবে।" (সূরা যিলযাল আয়াতঃ ৭-৮)
এমন কিছুর উপর ভিত্তি করে নয় যা মানুষের কৃত নয় এবং যাতে মানুষের কোন হাত নেই, যেমন ভাল-মন্দ। এ দিকেই ইঙ্গিত করে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
إن الله لا ينظر إلى أجسادكم ولا إلى صوركم ولكن ينظر إلى قلوبكم وأعمالكم
অর্থঃ নিশ্চয় আল্লাহ দৃষ্টি দিবেন না তোমাদের শরীর এবং তোমাদের আকৃতির দিকে, বরং দৃষ্টি দিবেন তোমাদের অন্তর ও তোমাদের কর্ম সমূহের দিকে। এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম ও অন্যান্য মুহাদ্দিসগণ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
অতএব আলোচ্য হাদীসটি যে বানোয়াট তাতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই।
إن الله تعالى لا يعذب حسان الوجوه سود الحدق
موضوع
-
أخرجه الديلمي، أنبأنا بنجير بن منصور عن جعفر بن محمد بن الحسين الأبهري وعن علي بن أحمد الحروري عن جعفر بن أحمد الدقاق عن عبد الملك بن محمد الرقاشي عن عمرو بن مرزوق عن شعبة عن قتادة عن أنس مرفوعا
أورده السيوطي في " اللآليء " (1 / 113 ـ 114) ، عند كلامه على الحديث الآتي بعد هذا، كأنه ساقه شاهدا له، وسكت عنه، فرأيت أن أتكلم عنه وأكشف عن علته ولا سيما وقد سألني عنه أقرب الناس إلي وهو والدي رحمه الله وجزاه الله عني خير الجزاء، فأقول: علة هذا الحديث من الرقاشي فمن دونه، وكلهم مجهولون لم
أجد لهم ذكرا في شيء من كتب الرجال التي تحت يدي إلا الرقاشي فإنه من رجال ابن ماجه وله ترجمة واسعة في " تهذيب التهذيب " (6 / 419 - 421) و" تاريخ بغداد " (10 / 425 - 427) ويتلخص مما جاء فيها أنه في نفسه صدوق، لكنه اختلط حين جاء بغداد فكثر خطؤه في الأسانيد والمتون، فلعل هذا الحديث من
تخاليطه! وإلا فهو من وضع أحد أولئك المجهولين، وقال ابن عراق في " تنزيه الشريعة " (1 / 174) في سنده جعفر بن أحمد الدقاق، وهو آفته فيما أظن، والله أعلم
قلت: ولست أشك في بطلان هذا الحديث لأنه يتعارض مع ما ورد في الشريعة، من أن الجزاء إنما يكون على الكسب والعمل (فمن يعمل مثقال ذرة خيرا يره، ومن يعمل مثقال ذرة شرا يره) لا على ما لا صنع ولا يد للإنسان فيه كالحسن أو القبح، وإلى هذا أشار صلى الله عليه وسلم بقوله: " إن الله لا ينظر إلى أجسادكم ولا إلى صوركم ولكن ينظر إلى قلوبكم وأعمالكم " رواه مسلم (8 / 11) ، وغيره وهو مخرج في " غاية المرام " (415) ، وراجع التعليق عليه في مقدمتي على " رياض الصالحين " للنووي (ص: ل ـ ن) ، فإنه مهم جدا، ومثل هذا الحديث الموضوع في البطلان الحديث الآتي